২৬ এপ্রিল ২০১২, শুক্রবার, ০২:৩৩:৩৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ইউরোপে ভারতীয় ৫২৭ পণ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারি উপাদন শনাক্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি বিএনপির আন্দোলন ঠেকানোই ক্ষমতাসীনদের প্রধান চ্যালেঞ্জ বিএনপিকে মাঠে ফেরাচ্ছে আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে অদৃশ্য চাপে বিএনপি


জ্যাকসন হাইটসের অন্যরকম একজন চিকিৎসক ডা. ইউসুফ
আকবর হায়দার কিরন
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৫-১১-২০২২
জ্যাকসন হাইটসের অন্যরকম একজন চিকিৎসক ডা. ইউসুফ ডা. ইউসুফ (বাঁ থেকে তৃতীয়)


বছর পাঁচেক আগে জ্যাকসন হাইটসের আড়ং-এর মালিক এবং আমার প্রিয় বেয়াই লিটন ভাই খুব আন্তরিক পরিবেশে পরিচয় করিয়ে দেন একজন ডাক্তারের সাথে। একই বিল্ডিংয়ে এবং তাঁর প্রায় উল্টোদিকে ডা. এটিএম ইউসুফ সাহেবের চেম্বার। প্রথম আলাপেই চমৎকার সম্পর্ক হয়ে গেলো। তাঁর চেম্বারের দেয়ালে টাংগানো পেইন্টিং গুলোও পছন্দ করে দিতেন লিটন ভাই। তাঁর আড়ংয়ে গিয়ে শপিং করার চেয়ে বেশি সময় কাটতো আড্ডা দিয়ে। বিশেষ করে আমাদের (নিহার ভাই ও আমার) প্রিয় দুলাভাই মাসুম ইকবাল (সীগাল হোটেল, হোয়াইট হাউস ইত্যাদির মালিক ও বিশিষ্ট শিল্পপতি) ও কনা বুবুসহ সেখানে গিয়ে হতো এক ঢিলে দুই পাখী অর্থাৎ ডাক্তারের চেম্বার ও টুকটাক শপিং।

করোনাকাল আসার আগে জানা গেলো এই প্রাণবন্ত মানুষটা, লিটন ভাই ক্যান্সারে আক্রান্ত। ডাক্তার ইউসুফ ভাইয়ের অফিস ম্যানেজার শিলু আপাসহ সবাই মর্মাহত এই খবর পেয়ে। ক্যামো থেরাপির সময় প্রায়ই তাঁর সাথে দেখা হতো, আর দেখা হতো মসজিদে নামাজ শেষে কিংবা যাওয়ার সময়। হৃদয় থেকে তাঁকে বললাম: ইনশাআল্লাহ পুরোপুরি সুস্থ হয়ে যাবেন। লিটন ভাইয়ের কথা লিখতে গিয়ে বেশি মনে পড়ে মান্নান গ্রোসারির প্রতিষ্ঠাতা সৈয়দ রহমান মান্নান ভাইকেও। তিনিও আমাদের চোখের সামনে বদলে গেলেন এবং অকালে চলে গেলেন। যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত এই নিউ ইয়র্ক এবং সেই মার্চে অকালে স্মৃতি হয়ে গেলেন। জ্যাকসন হাইটসের আশেপাশে গেলে কিংবা থাকলে কোনদিন লিটন ভাইকে ভুলবো কি করে!

আমার যখন চরম অসুস্থতায় অন্য জীবনে গিয়ে আল্লাহর রহমত ও সবার দোয়া এবং আশীর্বাদে ফিরে আসার সাথে জড়িত থাকলেন আমার প্রিয় ডা. ফেরদৌস খন্দকার এবং ডা. ইউসুফ ভাইয়েরসহ আরো অনেকে। সবার উৎকন্ঠা। নিহার ভাই সব খোঁজ খবর নিতেন ফেরদৌস ভাইয়ের কাছ থেকে। তাঁর চেম্বার ছেড়ে ইউসুফ ভাইয়ের এখানে এলেও আন্তরিক সম্পর্কের কোন ঘাটতি ছিলো না। ফেরদৌস ভাই, তাঁর স্ত্রী আমার খুবই প্রিয়জন অনেক দিনের। কিন্তু তাঁর চেম্বারের কিছু রিসেপশন স্টাফ কেমন যেন প্রফেশনাল নন। রোগী কিংবা ভিজিটর গেলে আর সব জায়গার মতো অভ্যর্থনা জানাতেন না সেখানে।

আমার জীবনে ব্রেন স্ট্রোক, হার্ট খুলে ভাল্ব রিপেয়ার করা ইত্যাদির পর থেকে এই প্রিয় ডাক্তার ইউসুফ ভাইয়ের সাথে যেন সুখে দুঃখেই আছি সবসময়। মাঝে মাঝে আমার হার্ট স্পেশালিস্টের কাছে ফলো আপ করতে গেলে ইউসুফ ভাই খোঁজ খবর রাখতেন। এর মাঝে ৭৩-এর আড়ং বিল্ডিং ছেড়ে ইউসুফ ভাইয়ের চেম্বার হলো ৭২ স্ট্রিটে ইটজি ও ডেরার মাঝে। তাঁর অফিসে গেলে কিযে ভালো লাগে- চমৎকার পরিবেশ, সাজানো গোছানো টিপটপ একটি ডাক্তার চেম্বার। তাঁর দেয়ালে অত্যন্ত চমৎকার পেইন্টিং, লাইভ প্ল্যান্ট ও গোছালো রিসেপশন। যখনই যাই ইউসুফ ভাইকে দেখার আগে শিলু আপা ও সুষমা বডুয়াকে দেখি- তাঁদের হাসিমুখ।

মাঝে মাঝে গিয়ে ইউসুফ ভাইকে বলি আপনাকে চেক করবো। আমার অনেক ঘনিষ্ঠ আত্মার আত্মীয়দের সাথে তিনি কাছের একজন। আমার পরম শ্রদ্ধেয় বড় ভাইজান জনাব গোফরান, লুতফা ভাবী, কামাল ভাইজান ও লিপি ভাবী। জ্যাকসন হাইটসের মামা’স রেস্তোরাঁ যখন শুরু হয় তখন সেখানকার অন্যতম মালিক নাহিদ ভাইয়ের তত্ত্বাবধানে ইউসুফ ভাইয়ের চেম্বারে বিশেষ খাবার দাবার পাঠিয়েছিলাম। শুধু আন্তরিকতার কারণে এই গরীবের আবদার। প্রিয় ডাক্তার ইউসুফ ভাই আপনার এই অসাধারণ মানবিক আচরণ ও ট্রিটমেন্ট যেন বাকি জীবনটায় অব্যাহত থাকে- এই প্রার্থনা জানাই। 

শেয়ার করুন