২৬ এপ্রিল ২০১২, শুক্রবার, ০৮:২৭:৩৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :


মিজানুর রহমান মিল্টন ভূইয়ার সংবর্ধনায় নেতৃবৃন্দ
বাংলাদেশ কাউকে ইজারা দেওয়া হয়নি এবং কারো বাপ-দাদার সম্পত্তি নয়
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ১০-০৫-২০২৩
বাংলাদেশ কাউকে ইজারা দেওয়া হয়নি এবং কারো বাপ-দাদার সম্পত্তি নয় বক্তব্য রাখছেন মিজানুর রহমান মিল্টন ভূইয়া


বাংলাদেশ কাউকে ইজারা দেওয়া হয়নি এবং বাংলাদেশ কারো বাপ-দাদার সম্পত্তি নয়। শহিদের রক্তে অর্জিত এই বাংলাদেশ। বাংলাদেশের মালিকানা বাংলাদেশের জনগণের হাতে তুলে দিতে হবে। গত ৪ মে জ্যাকসন হাইটসের নবান্ন পার্টি হলে চট্টগ্রাম বিভাগীয় জাতীয়তাবাদী ফোরাম আয়োজিত মিজানুর রহমান মিল্টন ভুইয়ার সংবর্ধনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। অতিসম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এবং স্বাধীনতা সুবর্ণজয়ন্তী কমিটির সদস্যসচিব মিজানুর রহমান মিল্টন ভুইয়াকে বিএনপির কেন্দ্রীয় জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মনোনীত করায় এই সংবর্ধনা সভার আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রনেতা এবং যুক্তরাষ্ট্র স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক আব্দুস সবুরের সভাপতিত্বে এবং স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মাকসুদুল হক চৌধুরী এবং নিউইয়র্ক বিএনপি দক্ষিণের সদস্যসচিব বদিউল আলমের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য, সাবেক মন্ত্রী ড. খন্দকার মোশররফ হোসেন, বিশেষ অতিথি ছিলেন নোয়াখালী থেকে নির্বাচিত পাঁচ বারের সংসদ সদস্য ও বেগম খালেদা জিয়ার অন্যতম উপদেষ্টা জয়নাল আবেদীন ফারুক, বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামিম, বিএনপির কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ মোস্তাক মিয়া, ঢাকার জনতার মেয়র হিসাবেখ্যাত ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য জিল্লুর রহমার জিল্লু  ও গিয়াস আহমেদ, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির  সাবেক সহসভাপতি  মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরী, আনোয়ার হোসেন, সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক হেলাল উদ্দিন, বাসেত রহমান ও সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোশারফ হোসেন সবুজ,  মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান সেলিম রেজা, সাবেক জেলা জজ নূর মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর সরকার, বাংলাদেশ সোসাইটির সহসাধারণ সম্পাদক বাবুল চৌধুরী, নিউইয়র্ক বিএনপি দক্ষিণের যুগ্ম-আহ্বায়ক এমলাখ হোসেন ফয়সাল, বিএনপি নেতা ফারুক হোসেন মজুমদার, আল আমিন সুমন, মার্শাল মুরাদ, যুবদলের সাবেক সহ আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক এম এ বাতিন।

ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন মিজানুর রহমান মিল্টন ভূইয়াকে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মনোনীত করায় অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, আপনারা জানেন বাংলাদেশ মহাসংকটের মধ্যে অতিবাহিত হচ্ছে। বাংলাদেশের অনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গায়ের জোরে এবং ভোট চুরি-ডাকাতি করে প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। তিনি বিশ্বব্যাংকের নিমন্ত্রণে ওয়াশিংটন গিয়েছেন। কোনো প্রধানমন্ত্রী বিশ্বব্যাংকের অনুষ্ঠানে গিয়েছেন এমন উদাহরণ নেই। আপনারা তার বিরুদ্ধে যে বিক্ষোভ করেছেন তার জন্য আপনাদের ধন্যবাদ। আপনাদের আন্দোলন আমাদের উৎসাহিত করছেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী তার শেষ সময়ে টিকে থাকার শেষ চেষ্টা করছেন। তবে তিনি যত চেষ্টাই করেন না, তিনি টিকে থাকতে পারবেন না। তিনি বলেন, শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশের জনগণ আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না। এই সরকার ক্ষমতায় থাকার জন্য গণতন্ত্রকে হত্যা করছে, সাংবাদপত্রে স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে, মানুষের বাকস্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে। তিনি আরো বলেন, ১/১১-এর সরকার তাদের ক্ষমতায় বসিয়ে গিয়েছে। তার ফলস্বরূপ ১/১১-এর অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীরা নিরাপদে দেশ ত্যাগ করেছেন। তারা এখন আমেরিকায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা আবারো ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের মতো নির্বাচনের ষড়যন্ত্র করছে। সেই সঙ্গে চলছে লুটপাটের রাজত্ব। তারা দেশের অর্থ লুট করে বিদেশে বাড়ি করছে, ব্যবসা-বাণিজ্য করছে, সুইস ব্যাংকে অর্থ রাখছে, কানাডায় বেগমপাড়া গড়ে তুলেছে, মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম করেছে। গত ১৪ বছরে ১০ হাজার কোটি টাকা পাচার করা হয়েছে। এটা বাংলাদেশ ব্যাংকের রিপোর্ট। তিনি বলেন, বর্তমান শেখ হাসিনার সরকার বাংলাদেশকে অনেকেটা দেউলিয়া রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে দলীয় প্রতিষ্ঠানের পরিণত করেছে। এই অবস্থা থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে। একদলীয় সরকারকে বিদায় ঘটনাতে হবে। এই সরকারের পতন হবে গণ-অভ্যুথনের মাধমে। আগামী কিছু দিনের মধ্যে বিএনপি কর্মসূচি ঘোষণা করবে। সেই আন্দোলনে শেখ হাসিনার পতন হবে এবং দেশ চলবে খালেদা জিয়ার এবং তারেক রহমানের নেতৃত্বে।

জয়নাল আবদিন ফারুক বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমান অপরিহার্য। আপনারা যারা যুক্তরাষ্ট্রে রাজনীতি করছেন তারা এখন পদ-পদবি এবং কমিটি নিয়ে চিন্তা না করে অবৈধ শেখ হাসিনা সরকারকে কীভাবে হটানো যায় সেই আন্দোলন নিয়ে চিন্তা করেন। তবে ওয়াশিংটনে আপনারা যে আন্দোলন দেখেছি, শেখ হাসিনাকে যেভাবে ভোর চোর বলতে দেখেছি, তাতে আমরা অনুপ্রাণিত হয়েছি। এই জন্য আপনাদের ধন্যবাদ। মনে রাখতে হবে আমাদের মাকে মুক্ত করতে হবে এবং তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে। তিনি বলেন, তারেক রহমানের রাজনৈতিক কৌশলের কারণে শেখ হাসিনা পাগলের মতো ঘুরছেন। কিন্তু কোনো লাভ হবে না, তিনি তারেকের কৌশলের কাছে এবার পরাজিত হবেন।

ইশরাফ হোসেন বলেন, বাংলাদেশের অবস্থা আপনারা জানেন। অবৈধ শেখ হাসিনা সরকার বাংলাদেশকে ভয়াল রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। গুম, খুন এবং নির্যাতনের মাধ্যমে এখনো টিকে রয়েছে। তিনি বলেন, শুধু তাই নয় আয়না ঘরের মতো এই সরকার গোপন বন্দিশালা তৈরি করে রেখেছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ কাউকে ইজারা দেওয়া হয়নি এবং বাংলাদেশ কারো বাপ-দাদার সম্পত্তি নয়। শহিদের রক্তে অর্জিত এই বাংলাদেশ। বাংলাদেশের মালিকানা বাংলাদেশের জনগণের হাতে তুলে দিতে হবে। বাংলাদেশের মালিক বাংলাদেশের জনগণ। রক্ত দিয়ে তারা এই দেশ স্বাধীন করেছে। তিনি আরো বলেন, এই দুঃশাসন থেকে বাংলাদেশের মানুষকে মুক্ত করতে হবে। এই বছরই এই সরকারের পতন হবে এবং জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে। এজন্য প্রয়োজনে জীবন দিতেও প্রস্তুত আছি। আল্লাহ ছাড়া আমরা আর কাউকে ভয় পাই না।

জিল্লুর রহমান জিল্লু বলেন, বাংলাদেশ এখন আর গণপ্রজাতন্ত্রী সরকার নয়, শেখ হাসিনাতন্ত্রী সরকার। এর থেকে উত্তরণে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবো।

গিয়াস আহমেদ বলেন, সব অবৈধ সরকারের বিরুদ্ধে আমরা প্রবাস থেকে আন্দোলন শুরু করেছিলাম, এই সরকারের বিরুদ্ধেও আন্দোলন শুরু করেছি। যতদিন এই সরকারের পতন না হবে, ততদিন আন্দোলন চলবে।

মিজানুর রহমান মিল্টন ভূইয়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ধন্যবাদ জানান তাকে বিএনপির কেন্দ্রীয় জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য করার জন্য। তিনি বলেন, আমাদের মূল্যায়ন করেছেন সেই জন্য আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক আনেক ত্যাগী নেতা রয়েছেন, আশা করি তাদেরও মূল্যায়ন করবেন। তিনি বলেন, বর্তমান অবৈধ শেখ হাসিনা সরকার আমার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। গত ৮ বছর আমি দেশে যেতে পারছি না। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ আমি নাকি তার ছেলেকে হত্যার ষড়যন্ত্র করেছি আমেরিকায়। কিন্তু আমেরিকায় মামলা না করে আমার বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে বাংলাদেশে। আমি আমেরিকার বিচার বিভাগের কাছে গিয়ে যখন বলেছি তখন তারা বলেছে এটা হাস্যকর। তিনি আরো বলেন, শেখ হাসিনা ওয়াশিংটন এসে বাংলাদেশের মান-ইজ্জতকে ভূলুণ্ঠিত করেছে। আমি মনে করি, এটাই আমেরিকায় তার শেষ সফর।

অনুষ্ঠানে অতিথি, মিল্টন ভূইয়াসহ কেন্দ্রীয় কমিটির তিন সদস্য ও মাকসুদুল হক চৌধুরীকে ফুলেল অভিনন্দন জানানো হয়। মিল্টন ভূইয়াকে বিভিন্ন সংগঠন থেকে ফুল দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে কোরআন তেলাওয়াত করেন আমানত হোসেন আমার এবং দোয়া পরিচালনা করেন মাওলানা আবুল কালাম আজাদ।

অনুষ্ঠান পরিচালনায় সহযোগিতায় ছিলেন সাবেক ছাত্রনেতা শরিফ হোসাইন  ও রাশেদ রহমান।

শেয়ার করুন