২৫ এপ্রিল ২০১২, বৃহস্পতিবার, ০১:৫৮:০০ অপরাহ্ন


বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে অবিচল যুক্তরাষ্ট্র
জাতিসংঘ শান্তি মিশনে বাংলাদেশী সৈন্যদের নিষেধাজ্ঞার অনুরোধ
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৭-০৬-২০২৩
জাতিসংঘ শান্তি মিশনে বাংলাদেশী সৈন্যদের নিষেধাজ্ঞার অনুরোধ অ্যাডমিরাল জন কিরবি ও ভেদান্ত প্যাটেল


বাংলাদেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিতের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র তার অবস্থানে অবিচল রয়েছে। গত ৫জুন  সোমবার হোয়াইট হাউসে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল (এনএসসি)’র স্ট্র্যাটেজিক কমিউনিকেশন পরিচালক অ্যাডমিরাল জন কিরবি। এসময় তার কাছে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন যে, বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধে জরুরি পদক্ষেপ নিতে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে চিঠি দিয়েছেন ৬ জন কংগ্রেসম্যান। ওই চিঠিতে বাংলাদেশের জনগণকে অবাধ ও সুষ্ঠু সংসদ নির্বাচনের জন্য সম্ভাব্য সর্বোত্তম সুযোগ নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। প্রেসিডেন্টের কাছে সম্প্রতি এই আইন প্রণেতাদের লেখা চিঠি সম্পর্কে আপনার প্রতিক্রিয়া কী? এর জবাবে কিরবি বলেন, আমরা আমাদের অবস্থানে অবিচল রয়েছি। এই চিঠি পাঠানোর বিষয়ে আমি অবগত। যুক্তরাষ্ট্র বরাবরই বাংলাদেশে অবাধ এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে অবিচল রয়েছে। সেই অবস্থান স্পষ্ট করতেই সম্প্রতি স্টেট ডিপার্টমেন্ট বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণভাবে আয়োজন করতে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বাধাদানকারীদের বিরুদ্ধে নতুন ভিসা নিষেধাজ্ঞা নীতি ঘোষণা করেছে।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে লেখা এক চিঠিতে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন ছয় কংগ্রেসম্যান। একইসঙ্গে তারা বাংলাদেশের জনগণ যাতে অবাধ এবং সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ পায় সেজন্য ব্যবস্থা গ্রহণে বাইডেনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। সেই সাথে জাতিসংঘের শান্তি মিশন থেকে বাংলাদেশের সৈন্যদের ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা দেয়ার অনুরোধ করা হয়।

 বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসানীতি পুনর্ব্যক্ত স্টেট ডিপার্টমেন্টের 

বাংলাদেশে একটি অবাধ, নিরপেক্ষ এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের সুযোগ করে দিতে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি পুনর্ব্যক্ত করেছে দেশটির স্টেট ডিপার্টমেন্ট। গত ৫ জুন সোমবার মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের প্রধান ডেপুটি মুখপাত্র ভেদান্ত প্যাটেল এক নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ নীতির কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সারা বিশ্বে গণতন্ত্রের ব্যাপ্তি এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বাংলাদেশের সরকার, রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ এবং গণমাধ্যমসহ সকলেই আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হওয়ার আকাঙ্খা প্রকাশ করেছেন। এই আকাঙ্খা বাস্তবায়নেই যুক্তরাষ্ট্র কয়েক সপ্তাহ আগে একটি নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে। এর আওতায় বর্তমান ও সাবেক বাংলাদেশি কর্মকর্তাসহ, সরকার কিংবা বিরোধিদল অথবা গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে দুর্বল করার জন্য যারা দায়ী বা জড়িত বলে মনে করা করা হবে তাদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।

একই ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে আরও একটি প্রশ্ন পান ভেদান্ত প্যাটেল। সম্প্রতি প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে ছয় মার্কিন কংগ্রেমম্যান যে চিঠি দিয়েছেন তা বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে প্রভাব ফেলবে কিনা তা জানতে চান ওই সাংবাদিক। জবাবে প্যাটেল বলেন, আমি নির্দিষ্ট করে কোনো চিঠির বিষয়ে কথা বলবো না এবং তা নিয়ে কোনো মন্তব্য করবো না। কংগ্রেসের সঙ্গে চিঠিপত্রের বিষয়টি আমরা গোপন রাখি। কিন্তু বিস্তৃতভাবে আমি বলতে পারি যে, গত বছর বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্ণ হয়েছে। জ্বালানি, জলবায়ু এবং অর্থনৈতিক সম্পর্কের মতো বেশ কিছু ক্ষেত্রে এই সম্পর্ককে আরও গভীর করার চেষ্টা করছি আমরা। প্যাটেল আরও যুক্ত করেন, আমরা বিশ্বের সকল মানুষের ধর্ম ও বিশ্বাসের মত প্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে কথা বলা অব্যাহত রাখব। 

প্রানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ও আইনমন্ত্রীর সঙ্গে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বৈঠক

প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস। গত ৫ জুন মঙ্গলবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টার গুলশানের অফিসে এই বৈঠক হয়। বৈঠকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উত্তর আমেরিকা অনুবিভাগের মহাপরিচালক খন্দকার মাসুদুল আলম এবং ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের পলিটিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কাউন্সেলর স্কট ব্রেনডন উপস্থিত ছিলেন। 

কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, ওই বৈঠকে রাজনীতি, অর্থনীতি, মানবাধিকারসহ বাংলাদেশের সম-সাময়িক পরিস্থিতি নিয়ে বিশেষ আলোচনা হয়েছে। সেই সঙ্গে আসন্ন নির্বাচনকে অবাধ ও সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে সদ্য যুক্তরাষ্ট্র ঘোষিত স্বতন্ত্র ভিসা নীতির প্রভাব নিয়ে কথা হয়েছে। বাংলাদেশের শ্রম আইনের সংশোধন-সংযোজন এবং পরিমার্জনের বিষয়টিও আলোচনায় স্থান পেয়েছে। বাংলাদেশের রাজনীতি, অর্থনীতি, মানবাধিকার পরিস্থিতি বিশেষত অত্যাসন্ন নির্বাচন এবং বিদ্যমান শ্রম আইন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের গভীর উদ্বেগ রয়েছে।

শেয়ার করুন