২৮ এপ্রিল ২০১২, রবিবার, ০৮:১১:১৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম :


মৃতের সংখ্যা ১২ হাজার
আমেরিকায় ফ্লু ভাইরাস ১৮ মিলিয়ন আক্রান্ত :
মো. জামান তপন:
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৮-১২-২০২২
আমেরিকায় ফ্লু ভাইরাস  ১৮ মিলিয়ন আক্রান্ত :


  থ্যাঙ্কগিভিংয়ের পরপরই সারা আমেরিকায় প্রথম সপ্তাহে সিজনের আগেই ফ্লু ভাইরাসের প্রকোপ মারাত্মক আকার ধারণ করেছে এবং কোনো কোনো স্টেটে কমলেও অধিকাংশ স্টেটে তা বেড়েই চলছে। সেই সাথে বাড়ছে প্রাণহানির সংখ্যাও। চলতি বছরের ২৩ ডিসেম্বর প্রকাশিত সেন্টার ফর ডিজিস কন্ট্রোলের (সিডিসি) এক তথ্যে জানা যায়, সবমিলিয়ে মৌসুমে কমপক্ষে ১৮ মিলিয়ন ( কোটি ৮০ লাখ) মানুষ ফ্লু ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হয়েছে। লাখ ৯০ হাজার হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। আর ফ্লু ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ১২ হাজার। সংখ্যা গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি। যদিও অন্য বছরেও আমেরিকায় বহু মানুষ ফ্লুতে মৃত্যুবরণ করে। গত বছর প্রায় মিলিয়ন মানুষ ফ্লু ভাইরাসে অসুস্থ হয়েছিলেন। এক লাখ মানুষ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছিলেন। আর মৃত্যুবরণের সংখ্যা ছিল হাজার। রিপোর্টে আরো জানা যায়, গত ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ২৫টি অঙ্গরাজ্যে ফ্লু ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যাভেরি হাইএবং প্রায় ২০টি অঙ্গরাজ্যেহাইলেবেলে রয়েছে আর বাকি ৩টি রাজ্যে মধ্যম পর্যায়ে। বাকি ২টি অঙ্গরাজ্য আলাস্কা নিউহ্যাম্পায়ারে আক্রান্তের সংখ্যা কম। তবে নিউইয়র্কে সংক্রমণের সংখ্যা লেভেল থেকে ১৩ লেভেলে গিয়েছে। এবং সেখান থেকে কমে থেকে এসেছে। (সর্বোচ্চ লেভেল হচ্ছে ১৩) একই সময়ে ২৩ অঙ্গরাজ্যে মাত্রা অপরিবর্তিত রয়েছে। আর ২০ টিতে মাত্র লেভেল কমেছে।

অনেকের ধারণা থ্যাংঙ্কগিভিংয়ে ইনডোর পার্টির কারণে ফ্লু ব্যাপকভাবে দ্রæ ছড়িয়েছে। বছরব্যাপী সামান্য মাত্রায় ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস ছড়ালেও সাধারণত আমেরিকায় শরৎকাল শীতকালে ফ্লু মৌসুমের আগমন ঘটে এবং অতিমাত্রায় ফ্লু ভাইরাস বিস্তারের পিক সময় হলো ডিসেম্বর থেকে ফেব্রæয়ারি মাস। অপর এক পরিসংখ্যান প্রকাশ করে আমেরিকান ফ্লু বার্ডেন। তাদের তথ্য অনুযায়ী, গত ২০১০-১১ সালে মৃতের সংখ্যা ছিল ৩৭ হাজার, আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২১ মিলিয়ন। আর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছিল লাখ ৯০ হাজার। ২০১১-১২ সালে মৃতের সংখ্যা ছিল ১২ হাজার, আক্রান্তের সংখ্যা ছিল . মিলিয়ন। আর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছিল লাখ ৪০ হাজার। ২০১২-১৩ সালে মৃতের সংখ্যা ছিল ৪৩ হাজার। আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৩৪ মিলিয়ন আর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছিল লাখ ৭০ হাজার। ২০১৩-১৪ সালে মৃতের সংখ্যা ছিল ৩৮ হাজার। আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৩০ মিলিয়ন আর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছিল লাখ ৫০ হাজার। ২০১৪-১৫ সালে মৃতের সংখ্যা ছিল ৫১ হাজার। আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৩০ মিলিয়ন আর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছিল লাখ ৯০ হাজার। ২০১৫-১৬ সালে মৃতের সংখ্যা ছিল ২৩ হাজার। আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২৪ মিলিয়ন। আর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছিল লাখ ৮০ হাজার। ২০১৬-১৭ সালে মৃতের সংখ্যা ছিল ৩৮ হাজার। আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২৯ মিলিয়ন। আর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছিল লাখ। ২০১৭-১৮ সালে মৃতের সংখ্যা ছিল ৫২ হাজার। আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৪১ মিলিয়ন। আর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছিল লাখ ১০ হাজার। ২০১৮-১৯ সালে মৃতের সংখ্যা ছিল ২৮ হাজার। আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২৯ মিলিয়ন। আর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছিল লাখ ৮০ হাজার। ২০১৯-২০ সালে মৃতের সংখ্যা ছিল ২৫ হাজার। আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৩৬ মিলিয়ন। আর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছিল লাখ ৯০ হাজার।

২০২৩ সালের জানুয়ারি-ফেব্রæয়ারি মাসে ফ্লু ভাইরাস বর্তমান সংখ্যা বহুগুণে বৃদ্ধি পেতে পারে। এজন্য সবাইকে সতর্ক হতে হবে। সিডিসি অক্টোবর থেকে ১৭ ডিসেম্বর ২০২২ সালের হিসাব থেকে সম্ভাব্য ধারণা করা হচ্ছে যে ১৮-২২ মিলিয়ন মানুষ ফ্লুতে অসুস্থ হতে পারে। -১৮ মিলিয়ন মানুষ মেডিকেল ভিজিট করতে পারে। লাখ ৯০ হাজার থেকে লাখ মানুষ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে পারে। মৃতের সংখ্যা হতে পারে ১২ হাজার থেকে ৩৫ হাজার।

এদিকে কোভিড-১৯ বা করোনা সারা আমেরিকায় ছড়াচ্ছে ভ্যাকসিন-বুস্টার নেয়ার কারণে তা আগের মতো মহামারী আকারে মৃত্যুর ঝুঁকি নেই। কিন্তু বয়স্ক অসুস্থদের জন্য করোনা এখনো বিপজ্জনক। করোনা এখনো আমেরিকায় রয়েছে এবং তা বাড়ছে। তাই অভিজ্ঞ মহল মনে করে করোনা প্রতিরোধে ভ্যাকসিন বুস্টার প্রয়োজন অনুযায়ী নেয়া জরুরি। হলিডে সিজনে করোনা ৪৪ ভাগ বৃদ্ধি পেয়েছে। সময়ে কোল্ড, ফ্লু আর করোনায় আক্রান্ত রোগী বেড়ে যাওয়ায় অনেক হাসপাতালে স্থান সংকুলান হচ্ছে না। সেই সাথে স্টাফ সমস্যাও দেখা দিয়েছে। আমেরিকায় পুরোপুরি ভ্যাকসিনেড ৬৪ শতাংশ। এর মধ্যে বুস্টার নিয়েছেন ৩৪ শতাংশ। আর ৬৫ বয়স ঊর্ধ্ব ভ্যাকসিন নিয়েছেন ৯৩ শতাংশ, আর বুস্টার নিয়েছেন ৬৭ শতাংশ।

শেয়ার করুন