২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ০৫:১১:৫১ পূর্বাহ্ন


নিক্কেই এশিয়ার রিপোর্ট
মেঘা প্রজেক্টের ঋণ নিয়ে দুশ্চিন্তায় বাংলাদেশ
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৩-০৮-২০২৩
মেঘা প্রজেক্টের ঋণ নিয়ে দুশ্চিন্তায় বাংলাদেশ


বাংলাদেশে মেগা প্রজেক্টসমূহ নির্মাণে নেয়া বিদেশী ঋণ ক্রমেই দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে খবর প্রকাশ করেছে জাপানি প্রভাবশালী মিডিয়া নিক্কেই এশিয়া। গত ১৮ আগস্ট তাদের এক প্রতিবেদন এসব তথ্য উঠে এসেছে। বিশেষ করে বড় বড় অবকাঠামো নির্মাণ ও প্রকল্প বা মেগা প্রকল্পে যেসব ঋণ নেয়া হয়েছে তার কিস্তি দেয়ার সময় ঘনিয়ে আসায় ওই দুশ্চিন্তার খবর। 

বাংলাদেশের বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তাদের বরাত দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনে বলা হয়, চীনের ঋণে তৈরি বড় দুটি প্রকল্প কর্ণফুলী টানেল ও পদ্মা সেতুর রেল সংযোগে ঋণের কিস্তি বাংলাদেশকে আসছে নভেম্বর ও ডিসেম্বরে দেওয়া শুরু করতে হবে। 

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের দুই প্রকল্পের জন্য রাশিয়ার কাছ থেকে নেয়া ১ হাজার ১৮৮ কোটি ডলারের ঋণ চলতি বছরের শুরু থেকেই ইতিমধ্যে পরিশোধ শুরু হয়েছে। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিম জোটের  নিষেধাজ্ঞার কারণে এই ঋণের কিস্তির কিছু অর্থ এসক্রো অ্যাকাউন্টে আটকে (এসক্রো অ্যাকাউন্ট হলো দুই পক্ষের মধ্যে লেনদেন নিষ্পত্তিতে আইনিভাবে নিয়োজিত কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে খোলা হিসাব) আছে। 

এসব ঋণের মধ্যে ২০১৫ সালে নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার পর বাংলাদেশ যেসব ঋণ নিয়েছে সেগুলো বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর বেশি চাপ সৃষ্টি করেছে বলে ওই রিপোর্টে প্রকাশ। এর পাশাপাশি ডলারের বিপরীতে টাকার রেকর্ড অবমূল্যায়ণ বা মান কমে যাওয়ার কারণেও পরিস্থিতির অবনতি ঘটাচ্ছে। এক্ষেত্রে এশিয়ায় সবচেয়ে বাজে পরিস্থিতিতে পড়া শ্রীলঙ্কা বা পাকিস্তানের চেয়ে বাংলাদেশের পরিস্থিতি অনেক স্বস্তিদায়ক হলেও বাংলাদেশের বৈদেশিক রিজার্ভ সঙ্কট কমছে না। ফলে এহেন পরিস্থিতি যথাযথভাবে মোকাবিলা না করতে পারলে, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ মোস্তফা কামাল মুজেরী। তিনি নিক্কেই এশিয়াকে বলেন, ‘পরিস্থিতির যথাযথ ব্যবস্থাপনা না হলে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি অস্থিতিশীল হতে পারে।’ 

এসব মেগা প্রকল্পগুলোর প্রত্যাশিত সুফল ও বাস্তবতার মধ্যে সবসময় একটা পার্থক্য থেকে গেছে। এ কারণে অনেক প্রকল্পের জন্য নেওয়া ঋণ এখন বোঝায় পরিণত হয়েছে। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) তথ্য বলছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ হয়েছে ২৭৪ কোটি ডলার, যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ৩৭ শতাংশ বেশি। অর্থ মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সরকারকে আরো ৩২৮ কোটি ডলারে বিদেশি ঋণ পরিশোধ করতে হবে। এই ঋণ পরিশোধের পরিমাণ বেড়ে ২০২৯-২০৩০ অর্থবছরে ৫১৫ কোটি ডলারে দাঁড়াতে পারে। 

বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩০ বিলিয়ন বা ৩ হাজার কোটি ডলারের নিচে নেমেছে। ২০২১ সালের আগস্টে এর পরিমাণ ছিল ৪ হাজার ৮০০ কোটি ডলার। রিজার্ভ কমার কারণ হিসেবে ইউক্রেন সংকটের কারণে আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়াকে কিছুটা দায়ী করা হয়। 

তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কঠোর মানদ- বিবেচনায় রিজার্ভের পরিমাণ কমে ২ হাজার ৩০০ কোটি ডলারের কাছাকাছি নামতে পারে। রিজার্ভ বাড়াতে এবছরের (২০২৩) শুরুর দিকে আইএমএফের কাছ থেকে ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ নিয়েছে। কিন্তু বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের চাপে এই অর্থ খুব বেশি ইতিবাচক ফলাফল বয়ে আনবে না বলে সংশ্লিষ্টদের মত। 

ইআরডির কর্মকর্তারা বলছেন, চীন, রাশিয়া ও ভারতের কাছ থেকে নেওয়া ঋণ রিজার্ভের ওপর বাড়তি চাপ তৈরি করেছে। কারণ আন্তর্জাতিক ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর তুলনায় তাদের কাছ থেকে নেওয়া ঋণ পরিশোধের সময় কম এবং সুদের হারও বেশি। 

কর্ণফুলী টানেল প্রকল্পের জন্য ৭০ কোটি ৫০ লাখ ডলার ঋণ নিতে ২০১৫ সালের জুনে চীনের সঙ্গে চুক্তি করে বাংলাদেশ। পরে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের জন্য ২০১৮ সালের এপ্রিলে আরও ২৬৭ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি চুক্তি করে। ইআরডির তথ্য বলছে, চীন থেকে নেওয়া বাংলাদেশের মোট ঋণ এখন ১ হাজার ৭৫০ কোটি ডলার। 

সব মিলে বাংলাদেশের ঋণের বোঝা বেড়েই চলেছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৭ হাজার ৬৪৫ কোটি ডলারের বৈদেশিক ঋণ বেড়ে পরের অর্থবছরে ৮ হাজার ৫২৪ কোটি ডলারে দাঁড়াবে। 

তবে বিপদের এখানেই শেষ নয়, আরও আছে সামনে। কারণ, ২০২৬ সাল থেকে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের কাতারে চলে যাবে। এর সহজ অর্থ, বিশ্ববাজারে প্রবেশে বাংলাদেশি পণ্য আগে যে ছাড় পেত, তা পাবে না। এর ফলে দেশের রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে ওই রিপোর্টে তুলে ধরা হয়েছে।


নিক্কেই এশিয়ার আরেকটি রিপোর্ট

পর্যবেক্ষক বিতর্ক নির্বাচনের ওপর নতুন সংশয়ের সৃষ্টি

আগামী বছর শুরুতে জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ। কিন্তু পর্যবেক্ষকদের একটি তালিকা এই নির্বাচনের বৈধতার বিষয়ে নতুন করে সংশয় সৃষ্টি করেছে। তাদেরকে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশে নির্বাচন কমিশন এ মাসে ৬৮টি পর্যবেক্ষককে অনুমোদন দিয়ে তাদের নাম প্রকাশ করেছে অনলাইনে। তাদের উপস্থিতিতে ভোটগ্রহণ সুষ্ঠুভাবে নিশ্চিত হবে বলে ধরে নেয়া হয়। কিন্তু বিরোধীদের ও আন্তর্জাতিক সমালোচকদের আতঙ্ক প্রশমিত করার পরিবর্তে এই নির্বাচনে কারচুপি হতে পারে। সরকারের উদ্দেশ্য নিয়ে আরও গভীর সন্দেহ সৃষ্টি করেছে পর্যবেক্ষকদের এ তালিকা। 

স্থানীয় মিডিয়াগুলোর অনুসন্ধানে দেখা গেছে- ওই তালিকায় যে-সব পর্যবেক্ষকের নাম আছে তার প্রায় অর্ধেকেরই নির্বাচন পর্যবেক্ষণের কোনো রেকর্ড নেই অথবা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে তাদের আছে শক্তিশালী সম্পর্ক। এটা নির্বাচনী আইনের পরিষ্কার লঙ্ঘন। এ নিয়ে বেশকিছু পর্যবেক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে নিক্কেই এশিয়া। তাতেও একই ইস্যু পাওয়া গেছে। 

পর্যবেক্ষকদের একটি হলো ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনের একজন সাবেক প্রেসিডেন্ট এবং ঢাকায় একটি ওয়ার্ড কমিটির সদস্য মিজানুর রহমানের ‘শিশু প্রতিভা বিকাশ কেন্দ্র’। যোগাযোগ করা হলে তিনি স্বীকার করেছেন তার সংগঠনের স্থানীয় বা জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণের কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তবে বিস্তারিত না জানিয়ে তিনি দাবি করেন তার সংগঠনের পর্যবেক্ষক হওয়ার মতো পূর্ণ সক্ষমতা আছে। 

এই বিতর্কের কথা স্বীকার করেছেন নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা। তারা বলেছেন, পর্যবেক্ষক তালিকা সংশোধন করার সুযোগ আছে। কোনো নামের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেলে তারা এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। বর্তমান নির্বাচন কমিশনে ৬ সদস্যের প্যানেলের একজন কমিশনার আনিসুর রহমান। তিনি নিক্কেইকে বলেছেন, কমিশনের ওয়েবসাইটে একটি নোটিশ পোস্ট করা হয়েছে। তাতে এমন তদন্তকে স্বাগত জানানো হয়েছে। তিনি বলেন, যদি কোনো অভিযোগ পাওয়া যায় তাহলে তা অনুসন্ধানের পর আমরা চূড়ান্ত তালিকা প্রস্তুত করবো। 

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের এমপি ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোহাম্মদ আলি আরাফাতও নিশ্চিত করেছেন যে, যদি নিরেট প্রমাণ দিয়ে কোনো অভিযোগ করা হয় তাহলে সংশ্লিষ্ট সংগঠনকে চূড়ান্ত অনুমোদন দেবে না নির্বাচন কমিশন। কিন্তু সমালোচকরা বলছেন, আগের নির্বাচনগুলোতে ভোট কারচুপির অভিযোগ থাকার পর এ ঘটনা কমিশনের বিশ্বাসযোগ্যতাকে আরও ক্ষুণœ করেছে। তবে তা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকার অস্বীকার করেন। বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্যরা বিশ্বাস করেন, নির্বাচন কমিশন একটি দলের প্রতি পক্ষপাতী, তারা ক্ষমতাসীন দলের হয়ে কাজ করছে। 

সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে প্রধান বিরোধী দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির অন্য এমপিদের সঙ্গে জাতীয় সংসদ থেকে গত বছর শেষের দিকে পদত্যাগ করেন রুমিন ফারহানা। তিনি বলেছেন, আরেকটি লজ্জার নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার অব্যাহতভাবে ক্ষমতা ধরে রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের এই তালিকা তা-ই প্রমাণ করে। 

এরই মধ্যে আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ‘বয়লিং পয়েন্টে’ উঠে গেছে। বিএনপি ও তার মিত্ররা নিয়মিত রাজপথে প্রতিবাদ বিক্ষোভ করছে। তারা নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়ে আসছে। আওয়ামী লীগের টানা তিন মেয়াদের প্রথম মেয়াদে ২০১১ সালে এই ধরনের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আইনি ধারা বাতিল করে দেয় দেশের সর্বোচ্চ আদালত। 

বাংলাদেশের শত শত কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানির প্রধান দুটি গন্তব্য হলো যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন। তারা সহ বৈশ্বিক শক্তিগুলো ঢাকায় বর্তমান সরকারের অধীনে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের সম্ভাব্যতা নিয়ে বার বার সংশয় প্রকাশ করছে। এই বছর যুক্তরাষ্ট্র একটি কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। তারা বলেছে, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচনকে যারাই বাধাগ্রস্ত করবে, তাদের বিরুদ্ধে ভিসায় নিষেধাজ্ঞা দেবে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু আভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক চাপ থাকা সত্ত্বেও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনঃস্থাপনের দাবি প্রত্যাখ্যান করছে শেখ হাসিনার সরকার। পক্ষান্তরের তারা বলছে, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে তারা নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করেছে। 

ওয়েস্টার্ন সিডনি ইউনিভার্সিটির রিসার্চ ফেলো মুবাশ্বার হাসান সন্দিহান। তিনি বলেন, ভুয়া পর্যবেক্ষক ব্যবহার করা হলো কর্তৃত্ববাদী শাসকগোষ্ঠীর একটি সাধারণ কৌশল। তিনি বাংলাদেশে নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের বর্তমান তালিকাকে এমন একটি চিহ্ন হিসেবে আখ্যায়িত করেন, যা বলে দেয় কমিশন অবাধ ও পক্ষপাতিত্বহীন নয়। আওয়ামী লীগ সম্ভবত এমন একটি নির্বাচন করার পরিকল্পনা করছে, যা এসব পক্ষপাতী পক্ষবেক্ষকরা অনুমোদন দেবে।

যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেটস ইউনিভার্সিটির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ডিস্টিংগুইশড প্রফেসর ড. আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, সরকার ও নির্বাচন কমিশনের বার বার দেয়া ন্যায্যতার প্রতিশ্রুতি যদি সত্য হয়, তাহলে তাদেরকে আইন লঙ্ঘন করা বা কিছু পর্যবেক্ষক সংগঠনকে বেছে নেয়ার প্রয়োজন হবে না। অন্য সব পদক্ষেপের সঙ্গে এই ঘটনাটি (পর্যবেক্ষক বাছাই) এমন একটি ইঙ্গিত যে, বর্তমান পরিস্থিতির অধীনে একটি অবাধ, সুষ্ঠু এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন, যেখানে ভোটারদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হবে- সরকার বা নির্বাচন কমিশনের লক্ষ্য তেমন নয়। 

আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে ২০১৪ ও ২০১৮ সালে দুটি নির্বাচন হয়েছে। সেসব নির্বাচন জালিয়াতির ছিল। প্রধান বিরোধী দলসহ বিরোধীরা সেই নির্বাচন বর্জন করে। অভিযোগ গণহারে ব্যালটবাক্স ভর্তি করা হয়েছে। বিরোধী দলগুলো এবং সমমনা নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষকদের তরফ থেকে কড়া সমালোচনার শিকার হয়েছে নির্বাচন কমিশন। ২০১৮ সালে নির্বাচনের সময় কমিশন বিদেশি পর্যবেক্ষকদের স্বাগত জানিয়েছিল। তবে তারা সেইসব পর্যবেক্ষক, যাদের কোনো অভিজ্ঞতা নেই বলে স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় রিপোর্ট প্রকাশ হয়েছে। ওইসব পর্যবেক্ষক নির্বাচনের ফলকে অবাধ ও সুষ্ঠু বলে সাফাই গেয়েছে। কিন্তু ওয়াশিংটন পোস্ট ওই নির্বাচনকে তুলনা করেছে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে। ওই নির্বাচনে শতকরা ৯৬ ভাগ জয়ী হয়েছে আওয়ামী লীগ। ওয়াশিংটন পোস্ট বলেছে, এমন ঘটনা প্রত্যাশা করা যায় উত্তর কোরিয়ায়। 

বাংলাদেশের সুপরিচিত একটি নির্বাচন পর্যবেক্ষক গ্রুপ জানিপপ। এর চেয়ারম্যান ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ। তিনি বলেছেন, ২০১৮ সালে যে-সব পর্যবেক্ষক এসেছিলেন তারা নির্বাচন পর্যবেক্ষকের বদলে ছিলেন ‘ইলেকশন ট্যুরিস্ট’। নির্বাচন পর্যবেক্ষক হতে হলে আপনার কিছু বৈশিষ্ট্য এবং ট্র্যাক রেকর্ড থাকতে হয়। স্পষ্টতই তাদের তা ছিল না। 

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ অধ্যায়ের নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। তিনি এক নামেই পরিচিত। বলেছেন, ২০১৮ সালের ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নেয়া উচিত বর্তমান নির্বাচন কমিশনের। বর্তমান যে আইন আছে তাতে কমিশনকে প্রচুর কর্তৃত্ব দিয়েছে। তারা নিরপেক্ষ এবং পক্ষপাতিত্বহীন পর্যবেক্ষক বাছাই করতে পারে, যাদের কোনো স্বার্থ নেই। এটা করতে ব্যর্থ হওয়া শুধু নির্বাচন পর্যবেক্ষণকে নিয়ে উপহাসই করা হবে না, কমিশন এরই মধ্যে যে বিশ্বাসযোগ্যতার সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে, তা আরও গভীর ও প্রশস্ত হবে।

শেয়ার করুন