২৭ এপ্রিল ২০১২, শনিবার, ৬:২১:০৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ইউরোপে ভারতীয় ৫২৭ পণ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারি উপাদন শনাক্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি বিএনপির আন্দোলন ঠেকানোই ক্ষমতাসীনদের প্রধান চ্যালেঞ্জ বিএনপিকে মাঠে ফেরাচ্ছে আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে অদৃশ্য চাপে বিএনপি


দেশকে ফজলুল হক মিলন
পতন ভীতিতে প্রলাপ বকে যাচ্ছে সরকার
সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৬-০৯-২০২৩
পতন ভীতিতে প্রলাপ বকে যাচ্ছে সরকার ফজলুল হক মিলন


গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন বলেছেন, এসরকারের পতন অনিবার্য হয়ে গেছে। এই সরকারের পতনের ভীতি থেকে এধরনের প্রলাপ বকে যাচ্ছে। সমসাময়িক বলতে কথা বলতে গিয়ে আমেরিকা থেকে প্রকাশিত পাঠকপ্রিয় দেশ পত্রিকায় তিনি এসব কথা বলেন। এব্যপারে কথা বলেছেন পত্রিকার বিশেষ প্রতিনিধি সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ।  

দেশ : ‘বিএনপি ক্ষমতায় এলে এক রাতেই শেষ আওয়ামী লীগ’ কিংবা ক্ষমতা হারালে প্রথম রাতেই ৩ লাখ নেতাকর্মী মারা যাবে -ক্ষমতাসীন দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের এমন বক্তব্য কিভাবে দেখছেন?

ফজলুল হক মিলন : বিএনপিতো বহুবার জনগণের ভোটে ক্ষমতায় ছিলো- তা-ই না? বিশেষ করে আওয়ামী লীগের লুটপাটে দেশ যখন তলানিতে, দেশ যখন সবচেয়ে অনিরাপদ ছিলো, জাসদের ত্রিশ হাজার নেতাকর্মীদের যখন হত্যা করা হয়েছিলো- অর্থ্যাৎ যখন একটি স্বাধীন দেশ টোটাল ব্যর্থতায় পর্যবেশিত হতে যাচ্ছিল, ঠিক সেসময়ে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সিপাপী-জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসে দেশে শান্তি শৃঙখলা প্রতিষ্ঠা করেন। শিল্প কলকারাখানা স্থাপন করেন। ক্ষেত ক্ষামারে উৎপাদন বৃদ্ধি করে দেশকে সমৃদ্ধি করেছেন। মানুষ তখন শান্তিতে ঘুমাতে পেরেছিল। শান্তিকে ব্যবসা বাণিজ্য করেছে। এরপরে নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থানে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসেছেন। এবং এরপরে ২০০১ ’এ নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় এসেছে বিএনপি। এসময় দেখা গেছে, দেশের মানুষ সম্পূর্ণ  শান্তিতে ছিলো। জনগণ কোনোদিনই গুম, খুনের রাজনীতিতে বিএনপি’র শাসনামলে দেখেনি। এই যে দেশ থেকে মানুষকে উধাও করে ফেলে, দেশের জানমাল এবং নিরাপত্তার ওপর যে বিভিষীকাময় অবস্থা বিরাজ করছে-এরকম কখনো বিএনপি আমলে হয়নি। তারপরেও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমন কথা বলছেন? কারণ একটাই। চোরের মনে পুলিশ পুলিশ। অপরাধ প্রবণতা যখন মানুষকে আষ্টেপৃষ্ঠে গিলে ফেলে, তখন নিজে যে সব অপরাধ করেছে- সে অপরাধে সে অপরাধী মনে করে। নিজে যে অপরাধ করেছে অন্য মানুষকেও সে একইভাবে অপরাধী মনে করে। তারা এতো বেশি অন্যায় অপকর্ম দুনীতিসহ মানুষ খুন করেছে-সেই অপরাধের ভীতিন তাদের তাড়া করছে। এটা হচ্ছে তারা যে অন্যায় অবিচার করেছে সেইসব কর্মকান্ডের যে ভয়- তা তাদেরকে গ্রাস করে ফেলেছে। ফলে তারা এখন আত্মপ্রলাপ বকছে। 

দেশ: কিন্তু ক্ষমতাসীন দলের এমন আশঙ্কা কি দেশে বিদেশে আপনাদের ব্যাপারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না? 

ফজলুল হক মিলন: সব সময় দেখা গেছে মানুষ নিজের অপরাধ বা যে কোনো ধরনের ভুল দোষ-ত্রুটি অন্যের ওপর চাপানোর চেষ্টা করে। এটা তার সহজাত বৈশিষ্ট। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ তাদের অপরাধ প্রবণতা থেকেই এমন কাজ করছে। চেষ্টা করে যাচ্ছেন বিএনপি’র বিরুদ্ধে নানান ধরনের অপপ্রচার করে যেনো দলটি ক্ষমতায় না যেতে পারে।  কিন্তু ইতোমধ্যে দেশে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে বিএনপি একটি উদার গণতান্ত্রিক দল। গত দুই বছরের রাজপথে বিএনপি যেভাবে আন্দোলন সংগ্রাম করেছে, তাতে করে দেশে বিদেশে প্রমাণ হয়েছে বিএনপি একটি শান্তিপ্রিয় দল। জণগণকে সাথে নিয়ে অহিংস আন্দোলন করে যাচ্ছে। সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আন্দোলন করে যাচ্ছে। তাই বলতে হবে আওয়ামী লীগের হীনমন্যতা ও মিথ্যা প্রচারে দেশবাসীসহ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিএনপি’র বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রচার করে কিছু করতে পারবে না। তবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের চেষ্টাতো থাকবেই-নেতিবাচক প্রচারণা চালিয়ে যাবার ব্যাপারে। এসরকারের পতন অনিবার্য হয়ে গেছে। এই সরকারের পতনের ভীতি থেকে এধরনের প্রলাপ বকে যাচ্ছে।

দেশ: আপনি কি এই ম্যাসেজ দিতে চাচ্ছেন যে বিএনপি এখন রাজপথে গণতান্ত্রিকভাবে আন্দোলন করে যাচ্ছে ঠিক ক্ষমতা গিয়েও কারো বিরুদ্ধে প্রতিহিংসা পরায়ন হবে না। নিপীড়ন নির্যাতন চালাবে না? 

ফজলুল হক মিলন : বিএনপি’র চরিত্রই হচ্ছে সম্পূর্ণ অহিংস ও শান্তিপূর্ণভাবে দেশ পরিচালনা করা। দেশের মানুষকে শান্তিতে রাখা। এটা বিএনপি’র একটি রাজনৈতিক বৈশিষ্ট্য ও দলীয় কাঠামোও এমন। নেতাকর্মীদেরও বৈশিষ্ট্য এটি। ক্ষমতায় গেলে দেশে অরাজকতা না, দেশের মানুষকে শান্তিতে রেখে দেশের উন্নয়ন স্বার্বভৌম রক্ষায় যে ধরনের পদক্ষেপ নেয়ার দরকার সেটি তারা নেবে। ভবিষ্যতেও নেবে। 

দেশ: কিন্তু বলা হয়ে থাকে বিএনপি’র শাসনামলে অন্য সম্প্রদায়ের মানুষ বিশেষ করে হিন্দুরা আতংকিত থাকে। আপনাদের শাসনামলে বলা হয়ে থাকে সাম্প্রদায়িক হামলার অনেক নজির দেখা গেছে। বিএনপি’র বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগ কিভাবে দেখেন?

ফজলুল হক মিলন: আরে দেশে যে মাইনরিটি আছে আওয়ামী লীগতো তাদেরকে তার পৈত্রিক সম্পত্তি মনে করে। তদন্ত করেই দেখা গেছে যতো জমি দখল, নারী নির্যাতন, মন্দিরের সম্পত্তি দখল-যা কিছুই ঘটেছে, তার শেষ পর্যন্ত তদন্তে এটাই প্রমাণিত হয়েছে যে এটা আওয়ামী লীগই করেছে। আওয়ামী লীগের কাজই হলো নিজেরা অপরাধ করে তার দায়ভার অন্যদের ওপর চাপিয়ে দেয়া। আমাদের দল সম্পূর্ণ অসাম্প্রদায়িক। শান্তি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখেই দেশ পরিচালনা করে বিএনপি। আপনার নিশ্চয় মনে আছে ১৯৯১ সালে বিএনপি যখন ক্ষমতায় তখন বাবরী মসজিদ নিয়া ভারতে দাঙ্গা হয়। তখন বাংলাদেশে ক্ষমতায় ছিলো বিএনপি। সেসময়ে বিএনপি’র কঠোর অসাম্প্রদায়িক ভূমিকার কারণে বাংলাদেশে একটি জায়গায়ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। সেসময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন মতিন চৌধুরী। আমার সেদিনের ঘটনা স্পষ্ট মনে আছে। ইতিহাস ঘেটেও দেখতে পারেন। সেদিন সেই স্বরাস্ট্রমন্ত্রী সারারাত নিজে আইন শৃংখলা বাহিনী নিয়ে দেশে শান্তি-শৃংখলা তথা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে কাজ করে গেছেন। সেসময় কোথায়ও কোনো অরাজকতা সৃষ্টি হয়নি। বরং হিন্দুদের সম্পত্তি তাদের দেবোত্তর সম্পত্তি দখল, চাদাবাজি-এসবের পেছনে তো আওয়ামী লীগই দায়ী। কেনো পুরান ঢাকায় যে বিশ্বজিৎকে হত্যা করা হয়েছে, করা করেছে? দেখলেনতো? বিএনপি’র বিরুদ্ধে কি এই ধরনের উদাহরণ আছে? না নেই। কেনো এই যে এই আমলেই তাদের গুন্ডা বাহিনী চট্টগ্রামে যে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়ি ঘর জ্বালিয়ে দিলো? এগুলোতো জ্বলন্ত প্রমাণ। দেখছেনই এই আওয়ামী লীগ আমলে কিভাবে হিন্দু কমিউনিটির ওপর হামলা করা হয়েছে? উত্তর বঙ্গেতো দেখলেন কিভাবে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা করা হয়েছে? দেশে যতোবারই ঘটেছে ততবারই প্রমাণ হয়েছে আওয়ামী এসব অপকর্মে জড়িত। তাই বিএনপি’র বিরুদ্ধে এসব অভিযোগের ভিত্তি নেই। আসলে আওয়ামী লীগের পতন ত্বরান্বিত হয়ে গেছে। আর এর থেকে বাঁচার জন্য তারা পাগলের প্রলাপ বকছে। তাই বলি বিএনপি সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে কোনো লাভ হবে না।

শেয়ার করুন