২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ০৪:৬:৪৬ পূর্বাহ্ন


বিএনপির খুলনার বিভাগীয় মহাসম্মেলনে মির্জা ফখরুল
‘শুধু শক্তি দিয়ে রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে মানুষকে দমিয়ে রাখা যায় না’
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৩-১০-২০২২
‘শুধু শক্তি দিয়ে রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে মানুষকে দমিয়ে রাখা যায় না’ খুলনায় বিশাল জনসভায় বক্তব্য দিচ্ছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল/ছবি সংগৃহীত


একের পর এক বিভাগীয় সম্মেলন চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠছে বিএনপি'র জন্য। আর ওই চ্যালেঞ্জ অনেকটা হাসিমুখে গ্রহণ করছে বিএনপি নেতাকর্মীরা। ময়মনসিংহের পর খুলনাতে যাতে সম্মেলনে লোকের উপস্থিতি কম হয় সে ব্যাপারে আপ্রান চেষ্টা করেছিল বিএনপি বিরোধী পক্ষ। কিন্তু সে চেষ্টা সফল হয়নি বরং বাস লঞ্চ সহ সকল যানবহনে ধর্মঘট ডেকে বন্ধ করে করে দিয়ে চরম ভোগান্তিতে ফেলা হয় সাধারণ মানুষকে। এবং এ সব উপেক্ষা করেই খুলনার শনিবারের জনসভায় উপচে পড়ে সাধারণ মানুষ।

তাইতো মঞ্চে দাঁড়িয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আপনারা (খুলনাবাসী) অসাধ্যকে সাধন করেছেন। তিন দিন ধরে জলে-স্থলে সব পরিবহন বন্ধ করে দিয়েছে। তারা বাস, লঞ্চ, বন্ধ করেছে। নৌকা বন্ধ করেছে। খেয়াঘাট বন্ধ করেছে। কিছু চলতে দেয়নি। তার পরও কি আপনাদের গণতন্ত্রের আকাঙ্ক্ষা ও অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে- তারা কী বাধা দিতে পেরেছে?  ইতিহাস বলে কোনদিন জনগণের ন্যায়সঙ্গত দাবি উপেক্ষা করে শুধু শক্তি দিয়ে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে মানুষকে দমিয়ে রাখা যায় না-সেটি আপনার আবার প্রমাণ করেছেন। 

মির্জা ফখরুল বলেন, গত দুই-তিন দিন ৫ শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্তত এক হাজার নেতা-কর্মীকে আহত করা হয়েছে। বহু নেতা-কর্মীকে আহত করা হয়েছে। ট্রলার ডুবিয়ে দেওয়া হয়েছে। রূপসা, তেরখাদায় অনেক নেতাকর্মীকে আহত করেছে। ট্রেন স্টেশনে নেতাকর্মীদের আহত করা হয়েছে। সমাবেশস্থলে হুন্ডা দিয়ে মহড়া চালানো হয়েছে যাতে সমাবেশে আসা লোকজন ভয় তটস্থ হয়। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি।  

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমি পুলিশ-প্রশাসন ভাইদের বলতে চাই, আপনাদের ফোন করলে বলেন সব ঠিক আছে, আজকের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন আমরা তো বিএনপির সমাবেশে বাধা দেই না বরং সহযোগিতা করি। কিন্তু কী সহযোগিতা করেছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী উদ্দেশ্যে মির্জা ফখরুল অরো বলেন, স্টেশনে নামার পর আমাদের ছেলেদের গ্রেপ্তার করেছেন। আমাদের চোখের সামনে আমাদের ছেলেদের কে কুপিয়েছেন। আপনার কিছুই বলেননি। তার মানে এমন ব্যবস্থা করেছেন, যাতে সমাবেশে না আসতে পারে। তারপর তারা (বিএনপি বিরোধী) পারেনি। 

তিনি বলেন, এই যে এত মানুষ আহত হলো এত মানুষ গ্রেফতার হলো তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হল এটা কেন? আজকের এই জনসভা আমাদের ভোটের অধিকার ভাতের অধিকার বাসস্থানের অধিকার এই অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য। জনসভা থেকে সরকারক অবিলম্বে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, হাতে সময় নেই এখনই পদত্যাগ করুন। নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন। 

মির্জা ফখরুল বলেন আমাদের অর্থনীতি ধ্বংস করেছেন। আমাদের রাষ্ট্রীয় কাঠামো ধ্বংস করেছেন, শুধু একটা কারনে। তারা জোর করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়। তারা বিনা ভোটে জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে ক্ষমতা চিরস্থায়ী করার জন্য তারা জোর করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়। তারা বিনা ভোটে জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়। 

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি পুনর্ব্যক্ত করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা পরিষ্কার করে বলে দিয়েছি এদেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। সুতরাং আর কোন কথা নেই, তত্ত্বাবধায়ক না দিলে কোনো নির্বাচন হবে না। সেজন্য এ সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। অনেক ক্ষতি করছেন, আমাদের যা কিছু অর্জন সেগুলো নষ্ট করেছেন। মেগা প্রকল্পের নামে মেগা লুট করেছেন।ব্যাংকিং, শেয়ারবাজার, বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ধ্বংস করেছেন। বিদ্যুতের উন্নয়নের নামে প্রতিবছর ২৮ হাজার কোটি টাকা শুধু ক্যাপাসিটি চার্জ দিচ্ছেন। তারপরও এখন দিনের চার থেকে পাঁচবার করে লোডশেডিং হচ্ছে। 

 মির্জা ফখরুল বলেন কয়েকদিন আগে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, দুর্ভিক্ষের কথা শুনতে পাচ্ছেন। কেন? আপনি তো বলেছেন বাংলাদেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। তারা জাতির সামনে মিথ্যা প্রচার করে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করেছে। এখন বলছে, দুর্ভিক্ষের পদধ্বনি শুনতে পাচ্ছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, এখনো সময় আছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে চলে যান। নতুবা পালানোর পথ পালানোর পথ থাকবে না। 


শেয়ার করুন