২৭ এপ্রিল ২০১২, শনিবার, ১০:৫৬:০৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জের, বিএনপির বহিস্কার ৭৬ থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান ‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়


দেশকে নুরুল হক নুর
আ’লীগের কৃপা নিয়ে বিএনপি কেনো নির্বাচনে অংশ নেবে
সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ
  • আপডেট করা হয়েছে : ২০-১২-২০২৩
আ’লীগের কৃপা নিয়ে বিএনপি কেনো নির্বাচনে অংশ নেবে নুরুল হক নুর


গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক (নুর) বলেছেন, এটা কেমন কথা যে আওয়ামী লীগের কৃপা নিয়ে বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে? নির্বাচনে অংশ নেয়ার পাশাপাশি ভোট দানের পরিবেশ থাকে তাহলে-তো স্বতঃস্ফূর্তভাবেই সবাই এমনিতেই অংশ নেবে।আমেরিকা থেকে প্রকাশিত পাঠকপ্রিয় দেশ পত্রিকার সাথে সাক্ষাৎকারে নুরুল হক (নুর) একথা বলেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন পত্রিকার বিশেষ প্রতিনিধি সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ। 

দেশ: আপনারা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে যাচ্ছেন। আপনাদের মতে একটি অগণান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে আপনাদের লড়াই সংগ্রাম। অভিযোগ করে যাচ্ছেন এসরকারা বারবার একতরফা নির্বাচন করে যাচ্ছে। আর একারণে এধরনের নির্বাচন আপনারা বর্জন করেছেন। প্রশ্ন হচ্ছে বিএনপি’সহ আপনারা সমমনারা বর্জন করলেও সরকারতো ঠিকই আরেকটি নির্বাচন করে ফেলতে যাচ্ছে। এমন অবস্থায় আপনি কি মনে করেন আপনারাসহ যারা আন্দোলন করছেন একটি সুষ্ঠু অংশগ্রহণমূল নির্বাচনের জন্য তারা পুরোপুরি ব্যর্থ?

নুরুল হক (নুর) : সফলতা বা ব্যর্থতার চেয়ে বলতে গেলে বলতে হবে যে আমরা যে দাবিতে আন্দোলনর করে যাচ্ছি সেটাতো দেশের অস্তিত্ব রক্ষার জন্যই। সমাজ সভ্যতা রক্ষার জন্য। একটি দেশের জনগণের যদি ভোটের অধিকার না থাকে গণতন্ত্র না থাকে তাহলে তো সেটা কোনো রাষ্ট্রই থাকে না। এই যে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রাজ্জাক সাহেব বলেছেন যে বিরোধী দলের নেতাদের একরাতেই মুক্তি দেয়ার অফার দেয়া হয়েছে, যেনো তারা নির্বাচনে অংশ নেন। এটা কেমন কথা যে আওয়ামী লীগের কৃপা নিয়ে বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে? নির্বাচনে অংশ নেয়ার পাশাপশি যদি ভোট দানের পরিবেশ থাকে তাহলেতো স্বতঃস্ফূর্তভাবেই সবাই অংশ নেবে তাতে। আসলে আওয়ামী লীগ জোর জবরদস্তি করে একটা রাম রাজত্ব কায়েম করতে চায়। একটা স্বৈরতান্ত্রিক রাষ্ট্র কায়েম করতে চায়। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষতো গণতন্ত্রমনা মানুষ। আমরাতো তা সমর্থন করতে পারি না। দেখেন যুগে যুগে মানুষ ফ্যাসিবাদ, স্বৈরাচাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। সংগ্রাম করেছে। আমরাও করিছ। সেখানে হয়তো আমরা সরকারকে আমাদের দাবি মনে নেয়ার ব্যাপারে যেভাবে বাধ্য করার দরকার সেভাবে পারছি না। ভবিষ্যতে যে পারবো না-এমন তো না। এই দেশের সমাজ সংস্কৃতি সভ্যতা রক্ষার আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে। আমাদের তো পেছনে ফেরার সুযোগ নেই। 

দেশ: আচ্ছা আপনিতো প্রায়ই রাজপথে জোর গলায় অনেকটা বলা চলে কনফার্ম করতেন নেতাকর্মীদের যে বর্তমান সরকার এবার ভোটারবিহীন নির্বাচন করতে পারবে না। আপনার এমন অবস্থানের ব্যাপারে কি আপনি এখনো সে জায়গায় আছেন? এখনো মনে করেন সরকার আপনাদের ছাড়া নির্বাচন করতে পারবে না?

নুরুল হক (নুর) : হ্যাঁ আমি এখনো মনে করি এই সরকার বেশিদিন টিকতে পারবে না। সেটা ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত হয় না-কি এর পরপরই হয়..না-কি সাত দিন বা এক মাস হয় সেটা আমরা পয়েন্ট আউট করতে পারি না। কিন্তু এটাতো ঠিক দেশে-বিদেশ এই সরকারের জনভিত্তি নেই। সে-ই সরকার জোর-জবরদস্তি করে কতদিন টিকে থাকতে পারে বলেন? এখন এই সরকার বর্তমানে আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের সমর্থন নিয়ে টিকে থাকতে চাইছে। ভারত চাইছে তাদেরই স্বার্থে এই সরকারকে ক্ষমতায় টিকে রাখতে। কিন্তু এই দেশের নিরস্ত্র মানুষ তো পাকিস্তানীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে জয়লাভ করেছিল। এখানে ভারতীয় আধিপত্য কতদিন মেনে নেবে বলেন? আজকে আওয়ামী লীগের মধ্যেও একটা বড়ো ধরনের রাজনৈতিক অসন্তোষ আছে। অন্যদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমারা বহুদিন ধরে চাচ্ছে বাংলাদেশে একটি কর্তৃত্ববাদী শাসনের অবসান। এভাবে সরকার চলতে থাকলে একে একে বিভিন্ন ধরনের নিষেধাজ্ঞা আসবে, সেক্ষেত্রে তো অর্থনীতি তলানিতে চলে যাবে। এভাবে কয়েক মাস গেলেতো দেশই চালাতো পারবে না। 

দেশ: আপনারা কি মনে করেন বিএনপিসহ সমমনা এবং আপনাদের প্রতি জনগণের সমর্থন আছে? সমর্থন থাকলে জনগণ আপনাদের ডাকে রাজপথে নেমে আসছে না কেনো?

নুরুল হক (নুর) : গত একবছর ধরে কি দেখেননি? অন্য দলদের কথা বাদ দেন। বিএনপি গত একবছরে সারা দেশে কিভাবে সভা সমাবেশ করেছে। দেখেছেনতো কিভাবে এসব স্থানে জনগণের সমাবেশ হয়েছে। সরকার পথে পথে বাধা দিয়েছে। জেলা সমাবেশগুলিতে সর্বস্তরের জনগণ নেমে এসেছে। সড়ক পথ, নৌ-পথ বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু তারপরেও প্রতিটি স্থানে ছিল লোকে লোকারণ্য। এই যে বিজয় দিবসের কথাই ধরেন। এসময়ে এটা চিন্তা করতে পারেন? দলের শীর্ষ নেতারা কারাগারে। ২৫ হাজার নেতাকর্মী কারাগারে। তারপরেও সে-ই র‌্যালিতে লক্ষ লক্ষ লোক অংশ নিয়ে নেয়। এটাতো পরিষ্কার বার্তা যে সরকারের প্রতি জনগণের অনাস্থা। র‌্যালিতে এমন অংশগ্রহণতো প্রমাণ করে যে জনগণ সরকারের পরিবর্তন চায়। যখন নিরস্ত্র জনগণ রাস্তায় নেমেছে তখন একটা ফ্যাসিবাদি সরকার আইন শৃংখলা বাহিনী দিয়ে মোকাবেলা করছে, অস্ত্রধারী গ্রুপকে নামাচ্ছে। সেখানেতা নিরস্ত্র জনগণ টিকে থাকা অনেক কষ্টসাধ্য। সরকার যদি এভাবেই করতে থাকে তাহলেতো জনগণ পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। জনগণ নিজেদের আত্মরক্ষার্থে তারাতো তাদের প্রতিরোধ দেখাবেই। যেটা আমরা পাশে মিয়ানমারে দেখছি। 

দেশ: এখন আপনি বলছেন বা আশঙ্কা করছে একটি খারাপ পরিস্থিতিতির। তাহলে এমন অবস্থা চললে দেশের ভবিষ্যত কি?

নুরুল হক (নুর) : দেশের ভবিষ্যত তো দেখবে চ্যানেল আইতে দেয়া একটি টক-শোতে দেখবেন কি বলেছেন পরিকল্পনা মন্ত্রী মান্নান সাহেব। তিনি তো বলেই ফেলেছেন যে বাণিজ্যিক বা অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আসে সেটা তো সবাইকেই ভোগাবে। এখন ক্ষমতায় থেকে বিশ্বে বাংলাদেশকে একটি ব্ল্যাক লিস্টের রাষ্ট্রে পরিণত করবে। এখন জনগণ যদি তাদের ভালো বুঝে এসরকারের বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলতে না পারে সেক্ষেত্রে এটাও হবে আফ্রিকার একটি দুর্ভিক্ষপীড়িত দেশের অন্যতম। সেটাই হয়তো আমরা চেয়ে চেয়ে দেখবো।

শেয়ার করুন