০২ মে ২০১২, বৃহস্পতিবার, ০৩:৪১:৫৯ পূর্বাহ্ন


দেশকে জেবেল রহমান গানি
৫০ বছরে রাজনীতির ধারা একই রকম চলছে
সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৬-১১-২০২২
৫০ বছরে রাজনীতির ধারা একই রকম চলছে জেবেল রহমান গানি


বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি বলেছেন, গত ৫০ বছরের রাজনীতির ধারা একই রকম চলছে। ক্ষমতায় টিকে থাকা ও ক্ষমতায় যাওয়ার লড়াইয়ে ব্যস্ত দেশের রাজনৈতিক দলগুলো। দেশ ও জনগণের কল্যাণের চাইতে তারা ক্ষমতাকেই বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে।

আমেরিকা থেকে প্রকাশিত পাঠকপ্রিয় দেশ পত্রিকার সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে জেবেল রহমান গানি এসব কথা বলেন। 

জেবেল রহমান গানি এদেশের প্রগতিশীল ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের জাতীয় নেতা মশিউর রহমান যাদু মিয়ার নাতি, সাবেক মন্ত্রী শফিকুল গানি স্বপনের জেষ্ঠ্যপুত্র ও বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ চেয়ারম্যান। জেবেল রহমান গানি ১৯৭২ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী পরবর্তী ন্যাপ’র চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রী মর্যাদায় সরকারের সিনিয়র মন্ত্রী জাতীয় নেতা মশিউর রহমান যাদু মিয়ার নাতি হলেন জেবেল রহমান গানি।


এছাড়া যাদু মিয়ার জ্যেষ্ঠপুত্র সাবেক মন্ত্রী শফিকুল গানি স্বপন ও নাজহাত গানি শাবনম দম্পতির জ্যেষ্ঠপুত্র তিনি। ২০০৯ সালের ২৩ আগস্ট পিতার মৃত্যুর পর বাংলাদেশ ন্যাপ’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মনোনীত হন জেবেল রহমান। একই বছরের ডিসেম্বরে জরুরি জাতীয় কাউন্সিলে দলের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তিনি। বিএনপির নেতৃত্বাধিন ১৮ দলীয় জোট যা পরবর্তীতে ২০ দলীয় জোটে রূপান্তরিত হয়েছিল তার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসাবে দীর্ঘসময় রাজনৈতিক অঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৮ সালে তিনি দেশের ৩টি মার্কা নৌকা, নাঙ্গল, ধানের শীষের বিরুদ্ধে নীলফামারী-১ আসন থেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। সেসময়ে তার অভিযোগ ছিল (২০১৮ সালে) বিএনপি তার লক্ষ্যচ্যুত হয়ে ২০ দলীয় জোটকে গুরুত্বহীন করে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করেছে। তাই  জেবেল রহমান গানি তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ জোট ত্যাগ করেন। আন্তর্জাতিক নেতৃত্বের সাথেও জেবেল রহমান গানি বেশ স্বক্ষতা। বিশেষ করে ভারতের প্রয়াত রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির সাথে তার ছিল ঘনিষ্ঠ সক্ষতা। জেবেল রহমান গানি অল্প সময়ের মধ্যে বাংলাদেশের জাতীয় রাজনীতিতে নিজের প্রতিভার স্বাক্ষর রাখতে সক্ষম হন। বাংলাদেশের জাতীয় রাজনীতিতে বর্তমান সময়ের তরুণ, মেধাবী ও পরিচ্ছন্ন রাজনৈতিক নেতৃত্ব হিসেবে পরিচিতি অর্জন করেন তিনি।

মওলানা ভাসানীর রাজনৈতিক উত্তরাধিকারী হিসেবে তাঁর প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ ন্যাপ (নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনের সময়) জেবেল রহমান গানির নেতৃত্বে দেশের জাতীয় রাজনীতিতে ভূমিকা রাখছে। তবে জানা যায়, দলটির মূল লক্ষ্য বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হওয়া। আর সে লক্ষ্যে বাংলাদেশ ন্যাপ তার কার্যক্রম পরিচালনা করছে। জেবেল রহমান গাণির সাক্ষাৎকারটি নিচে তুলে ধরা হলো। 

দেশ: দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি কেমন বলে মনে করেন?

জেবেল রহমান গানি : গত দুটি নির্বাচন নিয়ে তুমুল বিতর্কিত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে যে সহিংস পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, বর্তমানে দেশটিতে একই অবস্থা বিরাজ করছে। রাজনীতির মাঠ গরমের চেষ্টা চলছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও ক্ষমতাপ্রত্যাশী বিএনপি পরস্পরের বিরুদ্ধে হুমকি, হুংকার দিয়ে চলেছে। বিএনপি সরকারবিরোধী আন্দোলনে বৃহত্তর ঐক্য গঠনের ঘোষণা দিয়েও এখন পর্যন্ত তা গড়ে তুলতে পারেনি। আবার ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে পাল্টা যেসব উদ্যোগের কথা শোনা যায়, তারও তেমন কিছু এখনও দৃশ্যমান হয়ে ওঠেনি। তবে উভয় পক্ষ যে তৎপর রয়েছে, অন্তত পরস্পরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দিয়ে তা প্রতিদিনের খবরের কাগজের পাঠকদের জানা।

দেশ: এর আগে কি দেশের অবস্থা এমন খারাপ থাকেনি?

জেবেল রহমান গানি : গত ৫০ বছরের রাজনীতির ধারা একই রকম চলছে। ক্ষমতায় টিকে থাকা ও ক্ষমতায় যাওয়ার লড়াইয়ে ব্যস্ত দেশের রাজনৈতিক দলগুলো। দেশ ও জনগণের কল্যাণের চাইতে তারা ক্ষমতাকেই বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে। গত ৫০ বছরে ক্রমবর্ধমান বৈষম্যই বাংলাদেশের প্রধান রাজনৈতিক সমস্যা। দেশে ক্রমবর্ধমান উন্নয়নের ফলে দারিদ্র্য কমলেও বেড়েছে মানুষের মধ্যে বৈষম্য। কোনো দেশে বৈষম্য বেড়ে গেলে কর ফাঁকি দিয়ে বিদেশে টাকা পাচারও বেড়ে যায়, সেটি অনেকেরই জানা। গত কয়েক দশকে ব্যাপক উন্নয়ন হলেও অনেক ক্ষেত্রে সুশাসনকে পাশ কাটানো হয়েছে। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের চর্চায় বেশ ধস নেমেছে। গত ৫০ বছরে ওষুধ, চামড়া, জাহাজ নির্মাণ, সিরামিকসহ বিভিন্ন শিল্প বিকাশ লাভ করেছে। তবে আমাদের রপ্তানি ক্ষেত্রে বহুমুখীকরণ এখনো অনেক পিছিয়ে আছে। ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে নানা বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন। এই অবস্থায় আধুনিক শিক্ষা ও দক্ষ জনশক্তি উন্নয়ন, বিজ্ঞানমনস্ক চিন্তাচেতনা, প্রযুক্তির ক্রমাগত ব্যবহার বৃদ্ধি এবং একটি পরমতসহিষ্ণু জাতি গঠনই নির্ধারণ করবে বাংলাদেশের আগামী দিনের অগ্রযাত্রা।

দেশ: শুধু কি আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকার কারণে তাদের বিরুদ্ধে বিরোধীতা করছেন?

জেবেল রহমান গানি : বিষয়টি এমন নয়। শাসকগোষ্ঠির ব্যার্থতার কারণে এখন দুর্নীতি মহামারিতে রূপ নিয়েছে। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনের ফলে জনগণের ভোটাধিকার আজ লুন্ঠিত প্রায়। জনগণ এখন আর বিশ্বাস করতে চায় না যে তাদের ভোট গণনা হয়। তারা মনে করে সরকার তার ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী করার জন্য জনগণের ভোট গনণায় আনে না। এটাই সরকারের চরম ব্যর্থতা। অতিতেও যখনই জনগণের ভোটাধিকার প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে তখনই আন্দোলন হয়েছে। আজ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অন্য কোন দল ক্ষমতায় থাকলেও তাই হতো। দেশ পরিচালনায় সরকারের মন্ত্রীরা অনেকটাই ব্যর্থ। মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণহীন। এখন দেশের ভেতর মূলত অর্থনৈতিক চাপ বিদ্যমান। আমদানি-রপ্তানি, শিল্প উৎপাদন, দ্রব্যমূল্য, খাদ্য পরিস্থিতি, রিজার্ভের অবস্থা এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানিসংকট নিয়ে বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে যা শোনা যাচ্ছে, তা বেশ উদ্বেগজনক। প্রধানমন্ত্রী অবশ্য নিজেই দুর্ভিক্ষের আশঙ্কার কথা প্রকাশ করে জনগণকে সতর্ক করে দিয়েছেন। ‘রাজনীতি সক্রিয়’ জনগণের এই দেশে ২০১৪ ও ২০১৮ সালে দুটি নির্বাচন হয়েছে। যে কৌশলে এই দুটি নির্বাচন হয়েছে, তা জনগণের বিশ্বাসকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। যে ভোটের রাজনীতি জনগণকে ‘রাজনীতি-সক্রিয়’ করেছে, সেই ভোটে তাঁদের আর কোনো অধিকার নেই। ভোট আর ‘উৎসব’ নয়, ভোট মানে নতুন কোনো কৌশল। একই সঙ্গে ভোটবঞ্চিত জনগণ এখন টের পেতে শুরু করেছে, গণতন্ত্রের বিকল্প হিসেবে ‘উন্নয়নের’ যে স্লোগান আওয়ামী লীগ সামনে নিয়ে এসেছিল, সেখানে বড় ফাঁকি রয়ে গেছে। দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক দুর্দশার জন্য যে শুধু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নয়। দুর্নীতি, লুটপাট ও অর্থ পাচার বড় ভূমিকা রেখেছে, সেটাও জনগণের সামনে পরিষ্কার হতে শুরু করেছে।

দেশ: এসরকার কি দেশের উন্নয়নে কাজ করেনি?

জেবেল রহমান গানি : ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জনের পর থেকে বাংলাদেশের উন্নয়ন পরিক্রমায় বিভিন্ন সময়, বিভিন্ন সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। বিশেষ করে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ ও খাদ্যনিরাপত্তা (যার সঙ্গে কৃষির উন্নয়ন ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিল) কাজ দুটি স্বাধীনতার পর পরই শুরু হয়ে গিয়েছিল। পরবর্তী সরকারগুলো এ কাজ আরো এগিয়ে নিয়েছে। এ ধারা এখনো অব্যাহত আছে।

দেশ: এসরকারের কি কি সফলতা আপনার চোখে পড়ে?

জেবেল রহমান গানি : বর্তমান সরকারের সবচাইতে বড় সফলতা হচ্ছে, পদ্মা সেতু। দক্ষিণাঞ্চল বা পদ্মা পাড়ের মানুষ অবহেলিত ছিল। সেখানে পদ্মা সেতু নির্মাণ বর্তমান সরকারের অবশ্যই বড় ধরনের সফলতা। পৃথিবীর অনেক দেশের আশঙ্কা ছিল বাংলাদেশে খাদ্যাভাব ও করোনা সংক্রমণে অসংখ্য মানুষের মৃত্যু ঘটবে। কিন্তু বাংলাদেশে তেমনটি ঘটেনি। সেটা অবশ্যই সফলতা। বাংলাদেশ আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে পরিবর্তন হয়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন, কৃষি-খাদ্য, মৎস্য-গার্মেন্টস শিল্পসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের ব্যাপক পরিবর্তন সাধন করতে সক্ষম হয়। বাংলাদেশে পদ্মা সেতু, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপন, পায়রা সমুদ্রবন্দর, মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্র, গভীর সমুদ্রবন্দর, কর্ণফুলী টানেলের, মেট্রোরেল ব্যবস্থার নির্মাণ ইত্যাদি বহুসংখ্যক মেগা প্রকল্প হাতে নেয়। এর ফলে বাংলাদেশে গত একযুগে ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে।

দেশ: দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করছেন। বলছেন গণতন্ত্র নেই। কিন্তু কই আপনাদের এমন দাবির পক্ষেতো জনগণকে সমর্থ দিতে দেখা যায় না।

জেবেল রহমান গানি : দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় বেশ কিছু অগ্রগতি হলেও এখনো অনেক অতৃপ্তি রয়ে গেছে। হিন্দু সম্প্রদায় ও সাঁওতালদের ওপরে হামলার ঘটনাসহ বিভিন্ন গঠনা দেশে সুশাসন পুরোপুরি প্রতিষ্ঠিত না হওয়ায় বিষয়টিকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। তাই তৃণমূল থেকে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান সব জায়গায় সুশাসন প্রতিষ্ঠার লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। বাংলাদেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠার অর্জন কম নয়। তবে সামগ্রিকভাবে আমাদের কিছু অপ্রাপ্তি আছে। দেশে জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটেছে। তাই সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সকল সময় কাজ চলমান রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে সুশাসন তখনই হবে, যখন তা হবে স্বশাসন। কারণ, জনগণের মতামতের ভিত্তিতেই সুশাসন ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। সুশাসনের সঙ্গে গণতন্ত্র, সাম্য ও স্বাধীনতার সম্পর্ক রয়েছে। যে রাজনীতি গণতন্ত্রকে লালন করে, তার অবসান ঘটানো হয়েছে, এর ফলে সহজেই নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করা সম্ভব হচ্ছে। নির্বাচনের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার গঠিত হলেও সে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধও বটে! নির্বাচিত ব্যক্তিদের থাকতে হয় আমলাদের অধীন হয়ে। এভাবে পরিপূর্ণ সুশাসন প্রতিষ্ঠা হওয়া সম্ভব নয়।

দেশ: বিএনপির শাসনামল কি খুব ভালো ছিলো?  জনগণ কি তা মনে করে?

জেবেল রহমান গানি : বিএনপি আমল ভাল ছিল না বলে কি এই আমল ভাল হবে না? আমাদের শাসগোষ্ঠির সমস্যা হলো অতিতের চর্বিত চর্বন করা। এভাবে তো একটা দেশ চলতে পারে না। বিএনপি শাসনামলে বাংলাদেশ ২০০১ থেকে ২০০৫ সাল টানা পাঁচ বছর দুর্নীতিতে ছিল চ্যাম্পিয়ন। যেটি ছিল বাংলাদেশের জন্য লজ্জাজনক। সে সময়ের শাসকগোষ্ঠির বিভিন্ন নেতার বিরুদ্ধে বিভিন্ন দুর্নীতি ও সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কারণে বহির্বিশ্বে লজ্জাজনক এক পরিচিতি পেয়েছিল। এখন প্রশ্ন হলো এখন কি দুর্নীতি হচ্ছে না? হচ্ছে। এবং সেই দুর্নীতি এখন মহামারীতে পরিণত হয়েছে। ৫০ বছরের শাসকগোষ্ঠির শাসনামলে সর্বগ্রাসী দুর্নীতিতে ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামীতে হয়ত আরো বৃদ্ধি পাবে। এভাবে একটি দেশ ও রাষ্ট্র ক্রমান্বয়ে ধ্বংস হয়ে যাবে। সুতরাং আমি মনে করি শুধু অতীতের উদাহরণ টেনে সমস্যা সমাধান হবে না। দুর্নীতিমুক্ত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করতে হবে।

দেশ: দেশে কোনো একটি বড়ো ধরনের  আন্দোলন গড়ে উঠছে না? জনগণ কি এসরকারের আমলে শান্তিতে আছে বলে রাস্তায় নামেন না?

জেবেল রহমান গানি : আন্তর্জাতিক রাজনীতির নানা পরিবর্তন ঘটেছে। কিন্তু আমাদের রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব হয়তো সেই পরিবর্তনের সাথে সমন্বয় রেখে আন্দোলনের কর্মসূচি নির্ধারণ করতে পারছে না। অন্যদিকে সরকারের পক্ষ থেকে আন্দোলনের গলা টিপে ধরতে চলে নানা ধরনের নির্যাতন। এ ফলে হযতো বড়ো ধরনের আন্দোলন গড়ে উঠছে না। তবে, এটি সত্য আন্দোলন হঠাৎ করেই তৈরি হয়। পরিকল্পনা করে যে আন্দোলন তৈরি হয় না হঠাৎই দেখবেন আন্দোলন তৈরি হয়ে গেছে। সেটা সময় বলে দিবে ।

দেশ: আপনার দলে রাজনৈতিক ভবিষ্যত লক্ষ্য কি? কোন জোটে থাকবেন?

জেবেল রহমান গানি : মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ সকল সময়ই জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার রাজনীতি করে থাকে। আমরা জনগনের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আমাদের সাধ্যমত কথা বলে থাকি। অতিতেও বলেছি-ভবিষ্যতেও বলবো। কোন জোটে থাকবো কিনা কিংবা নিজেরাই কোন জোটের নেতৃত্ব দিব কিনা এখনও তা বলা সম্ভব নয়। রাজনীতিতে ভবিষ্যত নির্ধান করা খুবই কঠিন। তবে, যাই করি জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার রাজনীতি করে যাব।

দেশ: এ সরকারকে আপনি কি পরামর্শ দিবেন?

জেবেল রহমান গানি : দেশের গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে প্রয়োজন জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা। সকল দলের অংশগ্রহণে একটি কার্যকরি নির্বাচন ও সংসদ প্রতিষ্ঠা। এই লক্ষ্যে সরকার জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করবেন বলে আশা করি।

শেয়ার করুন