২৭ এপ্রিল ২০১২, শনিবার, ১১:৫২:০৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ইউরোপে ভারতীয় ৫২৭ পণ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারি উপাদন শনাক্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি বিএনপির আন্দোলন ঠেকানোই ক্ষমতাসীনদের প্রধান চ্যালেঞ্জ বিএনপিকে মাঠে ফেরাচ্ছে আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে অদৃশ্য চাপে বিএনপি


দেশকে সাবিলা নূর
এই অপ্রাপ্তি হয়তো সব শিল্পীর থাকে
আলমগীর কবির
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৩-০৩-২০২৪
এই অপ্রাপ্তি হয়তো সব শিল্পীর থাকে সাবিলা নূর


সাবিলা নূর। বর্তমান সময়ের ব্যস্ততম অভিনেত্রী। ওয়েব সিরিজ এবং নাটকে সমানতালে অভিনয় করছেন। সর্বশেষ তার অভিনীত ‘বিদিশা’ নাটকটি বেশ দর্শক প্রিয়তা পেয়েছেন। ওই নাটক এবং বর্তমান ব্যস্ততা নিয়ে তিনি কথা বলেছেন নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত পাঠকপ্রিয় দেশ পত্রিকার সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আলমগীর কবির

প্রশ্ন: নাটক এবং ওয়েব সিরিজে কাজ করছেন, প্রশংসাও পাচ্ছেন। কাজের সমালোচকদের মুখোমুখি হয়েছেন কখনো?

সাবিলা নূর: সমালোচকদের সঙ্গেই আমি থাকি। যারা আমার কাছের মানুষ তারাই আমার সমালোচক। আমার স্বামী, বোন, আমার আম্মাসহ অনেকেই আছেন। তাঁরা ধরে ধরে আমার অভিনয়ের খুঁত বের করেন। আবার প্রশংসা করেন। যেমন তাঁরা কেউ কেউ বলেন যে, এই চরিত্রের জার্নি শুরুর অংশ থেকে গতি স্লো ছিল, তৃতীয় পর্বে গিয়ে সেটা একদমই ব্যতিক্রম হয়ে যায়। আবার গল্পে কখনো আমাকে খুব বেশি ইমোশনাল, কখনো খুবই প্র্যাকটিক্যাল মনে হয়েছে, আমি এটা না করলেও পারতাম। এগুলো নিয়েই কিন্তু বাড়িতে অনেক কথা হয়। কিন্তু অনেক কিছুই তো পরিচালকের হাতে থাকে। এটা-ওটা করলে ভালো হতো, এগুলো ঘরে শুনতেই হয়।

প্রশ্ন: সম্প্রতি ‘বিদিশা’ নাটকে আপনার অভিনয় প্রশংসিত হয়েছে। এর জন্য কিভাবে তৈরি হয়েছিলেন?

সাবিলা নূর: বিদিশা দেখতে কালো বলে নানাজনের নানারকম কটু কথা শুনতে হয়। পরিবারের সদস্যরাও চায়, কোনো রকমে তার একটি বিয়ে দিয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে। কিন্তু বিদিশা চায়, সবকিছুর ঊর্ধ্বে গিয়ে নিজেকে প্রমাণ করতে। এই যে তার চাওয়া, নিজের মতো করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা, লোকনিন্দা সহ্য করে সমাজে টিকে থাকা-তা নিয়ে যে মানসিক অবস্থা তৈরি হয়েছে, সেটাই নিজের মধ্যে ধারণ করার চেষ্টা করেছি। এককথায়, বিদিশাকে নিজের মধ্যে ধারণ করেছি, মিশে গেছি তার জীবনের গল্পে। নিজেকে ভিন্নরূপে পর্দায় তুলে ধরার আগে পরামর্শ করেছি নির্মাতা ও কলাকুশলীদের সঙ্গে। যাতে করে কাজটি দর্শকের কাছে বিশ্বাসযোগ্য করে তোলা যায়। 

প্রশ্ন: ইদানিং আপনার নাটকের সংখ্যা কমে গেছে, কারণ কী? 

সাবিলা নূর: এখন বেছে বেছে কাজ করার চেষ্টা করছি। গল্প ও চরিত্রে ভিন্নতা থাকলে, আমার ভালো লাগলে, তবেই কাজ করছি। আগে রেগুলার শুটিং করতাম। আমার মনে হয়, তখন নিয়মিত শুটিংয়ের প্রয়োজন ছিল। আমি তো থিয়েটার থেকে আসিনি। কাজ করতে করতে অভিনয়টা শিখেছি। শুটিং করতে করতে টেকনিক্যাল বিষয়গুলো জেনেছি। সেটা মেকআপ থেকে শুরু করে লাইট, ক্যামেরা অ্যাঙ্গেল সব। যতটুকু শিখেছি, বুঝেছি, সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে এখন ভালো মানের কাজগুলোই করতে চাইছি। দর্শকদের কাছ থেকে ভালো সাড়া পাচ্ছি। তাই ভালো কাজের সঙ্গেই থাকতে চাই। স্ক্রিনে কম দেখা গেলেও দর্শক যেন আমার কাজ নিয়ে সন্তুষ্ট থাকে। 

প্রশ্ন: অর্থাৎ ভালো গল্পের অভাবে পর্দায় আপনার উপস্থিতি কম থাকে।

সাবিলা নূর: অনেকটা তাই। দেখুন, জনপ্রিয়তাকে পুঁজি করে অনেক কাজ করা যায়। কিন্তু দর্শক তা মনে রাখবে কিনা– সেটাও ভাবতে হবে। অভিনয় তো শুধু পেশা নয়, এটা নেশা। এর প্রতি আছে অগাধ ভালোবাসা। অভিনয়ের মধ্য দিয়ে পরিণত শিল্পী হয়ে ওঠার স্বপ্ন। হোক না কাজের সংখ্যা কম, তবু সেটাই করব, যা অনেক দিন দর্শকমনে বেঁচে থাকবে। তাই একের পর এক কাজ না করে, সে রকম কাজই বেছে নিচ্ছি, যা দর্শকের কাছে নতুন ও অভিনব মনে হবে। সে ধরনের কাজ প্রতিদিন হচ্ছে না বলেই পর্দায় একটু কম দেখা যাচ্ছে। 

প্রশ্ন: সিনেমাতেও কি অভিনয়ের ইচ্ছে আছে? 

সাবিলা নূর: ভিন্ন স্বাদের গল্প, নতুন চরিত্র আর অভিনয়ে নিজেকে ভেঙে নতুন কিছু করে দেখানোর সুযোগ থাকলে সিনেমাতেও অভিনয় করব। এখন দেখার অপেক্ষা, প্রত্যাশামাফিক কাজের সুযোগ কবে আসে।

প্রশ্ন: সামনে রোজার ঈদ। এবারের ঈদের নাটক নিয়ে কী পরিকল্পনা? 

সাবিলা নূর: ঈদের জন্য আগেই কয়েকটি নাটকের শুটিং করা আছে। ইচ্ছা আছে, আরও কয়েকটি নাটকে কাজ করার। সংখ্যায় কম হলেও ভিন্ন ধরনের কিছু নিয়েই দর্শকের সামনে আসতে চাই। চ্যানেল কনফার্ম হলে বিস্তারিত জানাব।

প্রশ্ন: গত বছর প্রথমবার ওয়েব সিরিজে অভিনয় করলেন। কিন্তু উপস্থিতি কম কেন?

সাবিলা নূর: ‘মারকিউলিস’ রিলিজের পর কয়েকটি ওয়েব ফিল্ম নিয়ে কথাবার্তা হয়েছিল। ব্যাটে-বলে না মেলায় শেষ পর্যন্ত কাজগুলো করা হয়নি। সম্প্রতি নতুন একটি ওয়েব সিরিজে চুক্তিবদ্ধ হয়েছি। এ মাসেই শুটিং শুরু হবে। এখন এর চেয়ে বেশি বলা যাবে না। কাজটি নিয়ে আমি বেশ আশাবাদী।

প্রশ্ন : ক্যারিয়ারের চ্যালেঞ্জিং চরিত্রের মধ্যে কোনটির কথা আগে আনবেন?

সাবিলা নূর: অবশ্যই মারকিউলিস-এর জয়িতার কথা বলব। কারণ, এখানে লম্বা একটা ইমোশনাল জার্নির গল্প বলা হয়েছে। ইমোশনগুলোর প্রতিটি স্তরে চেঞ্জ হচ্ছে, ডেভেলপমেন্ট হচ্ছে। তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে জয়িতার চরিত্রের সঙ্গে অ্যাডজাস্ট করাটা চ্যালেঞ্জিং ছিল। আমি আমার শতভাগ দিয়ে চেষ্টা করেছি। যদিও দেখার পর মনে হয়েছে, কিছু জায়গায় আরও ভালো করতে পারতাম, সেগুলো করলে হয়তো দর্শক আরও বেশি খুশি হতো। এই অপ্রাপ্তি হয়তো সব শিল্পীর থাকে।

প্রশ্ন: অভিনয়ের পাশাপাশি বিভিন্ন দেশ ভ্রমণেও দেখা যায় আপনাকে। ভ্রমণটা কি উপভোগ করেন?

সাবিলা নূর: অবশ্যই। যুক্তরাষ্ট্র আমার অনেক পছন্দের দেশ। এ পর্যন্ত বেশ কয়েক বার যাওয়া হয়েছে দেশটিতে। টেক্সাস, ক্যালিফোর্নিয়াসহ অনেক জায়গায় গিয়েছি। টেক্সাসে আমার বড় বোন থাকেন। মেক্সিকোতেও গিয়েছিলাম। সুন্দর সুন্দর জায়গায় ঘুরেছি, ছবি তুলেছি। সব মিলে ঘোরাঘুরিটা ভালো লাগে। 

প্রশ্ন: ভ্রমণের কিছু অভিজ্ঞতা শেয়ার করা যাবে?

সাবিলা নূর: ঘুরতে গিয়ে মনে রাখার মতো অনেক অভিজ্ঞতা হয়েছে। ওয়াল্ট ডিজনি স্টুডিও ও ওয়ার্নার ব্রুর্স স্টুডিওতে গিয়েছিলাম। সেখানে হলিউডের বিখ্যাত সব সিনেমার চিত্রনাট্য, স্টোরিবোর্ড, অভিনেতা ও অভিনেত্রীদের কস্টিউমসহ সিনেমার নানা জিনিস সংরক্ষিত। ঘুরে ঘুরে সেসব দেখেছি। দি ব্যাটম্যান ছবির শিল্পীদের কস্টিউম দেখলাম। ম্যাট্রিক্সসহ বেশ কয়েকটি সিনেমার স্টোরিবোর্ড ও চিত্রনাট্য দেখেছি। এ ছাড়া ছোটবেলায় দেখা লুনি টিউনস কার্টুন তৈরিতে কীভাবে অ্যানিমেশনের কাজ করা হয়েছিল, সেসব দেখেছি।

শেয়ার করুন