০৭ ডিসেম্বর ২০২৩, বৃহস্পতিবার, ০৩:৩৯:১৫ অপরাহ্ন


পরিস্থিতির সুযোগ নিতে পারে অগণতান্ত্রিক শক্তি
খন্দকার সালেক
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৫-১১-২০২৩
পরিস্থিতির সুযোগ নিতে পারে অগণতান্ত্রিক শক্তি


বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার দেশে অনেক উন্নয়নের মাইল ফলক অর্জন করেছে এটি সরকারের কট্টর সমালোচক স্বীকার করতে দ্বিধা করবে না। তার সাহসী কৌশলী ভূমিকার কারণে বাংলাদেশে সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী রাজনৈতিক আদর্শ এবং ভাবধারার বিদেশি দেশসমূহ বাঘ ছাগলের মতো একই ঘাটে পানি পান করছে। তবে একই সঙ্গে উন্নয়নের চোরাগলি পথে সীমাহীন দুর্নীতি প্রতিটি ক্ষেত্রেই জনদুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলোর সমন্বয়হীনতার কারণে রাজধানী এবং দেশব্যাপী সম্পাদিত মেগাপ্রকল্পসমূহের কাঙ্ক্ষিত সুফল জনগণ পাচ্ছে না। মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেস হাইওয়ে, পদ্মা বহুমুখী সেতুর সড়ক এবং রেল যোগাযোগের কাঙ্ক্ষিত সুফল খুব একটা দৃশ্যমান নয়। যদিও এর সুফল দৃশ্যমান হতে সময় লাগবে। অন্যদিকে ২৭ হাজার মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা অর্জন করেও ১৫ হাজার থেকে ১৬ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে সরকার।

জ্বালানি ক্রয়ের প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রা নেই, পরিশোধ করা যাচ্ছে না আইপিপিগুলোর বিদ্যুৎ বিল ও আইওসিদের গ্যাস মূল্য। বৈদেশিক মুদ্রার সংকটে আমদানি খাত সংকুচিত। শিল্পকারখানাগুলো বিশেষ করে রফতানিমুখী শিল্পগুলো মহাসংকটে। বাজারসিন্ডিকেটগুলোর কারসাজি সামাল দিতে ব্যর্থ সরকার। বহু নির্দেশনা দিয়েছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী। মানুষ সেই নির্দেশনা শুনে আশ্বস্ত হয়েছিলেন। কিন্তু মাঠ পর্যায়ে সেটা ছিটেফোঁটা বাস্তবায়ন না হওয়ায় মানুষ চরম হতাশায়। এমনকি সিন্ডিকেটের প্রভাবে ক্রিকেট, ফুটবলের মতো জনপ্রিয় খেলাগুলো আন্তর্জাতিক অঙ্গনে খাবি খাচ্ছে।

সরকারপ্রধান একের পর এক প্রকল্প আনুষ্ঠানিক অনুমোদনের আড়ালে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন। বিভিন্ন পর্যায়ের তৃণমূল মানুষের সঙ্গে সরেজমিনে কথা বলে অনুভব করা গেছে, সীমিত আয়ের মানুষের করুণ দশা। এমন না বিরোধী দলগুলোর আন্দোলনে সাড়া দিয়েছে জনগণ। এরপরও ক্ষমতাসীনদের ওপর আস্থা রাখতে পারছেন না তারা। বাজারব্যবস্থার কারণে মানুষ অসহ্য যন্ত্রণায়। তবে ইতিমধ্যে সরকারের মন্ত্রী এবং সংসদদের তৃণমূল বিচ্ছিন্নতা নিঃসন্দেহে সরকারপ্রধান অনুধাবন করছেন। তাই সরকারি দল অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে জয়ের বিষয়ে পুরোপুরি আস্থা রাখতে পারছে না। ওদিকে নিজেদের পরিকল্পনা সুস্পষ্ট না করে উদ্দেশ্যবিহীন রাজনৈতিক প্রোগ্রাম দিয়ে রুগ্ণ অর্থনীতিকে পঙ্গু করার জন্য জনগণের মধ্যে চাপা ক্ষোভ।

বিশ্ব পর্যায়ে নানা ভূরাজনৈতিক ঘটনা বিশ্ব অর্থনীতিকে সংকটাপন্ন করে ফেলেছে। বর্তমানে সবকিছুর বিশ্বায়নের কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতি মুদ্রাস্ফীতির কারণে ভঙ্গুর এবং জ্বালানিনিরাপত্তা অনিশ্চয়তায়। বর্তমান পরিস্থিতির আশু সমাধান না হলে, বাংলাদেশ দীর্ঘস্থায়ী মন্দার কবলে পড়তে পারে। ২০২৪ ও ২০২৫ কঠিন সময় যাবে বাংলাদেশের। এই সময় প্রকৃত জনসমর্থন নিয়ে দেশপ্রেমিক সরকার ক্ষমতায় না থাকলে দেশ মহাসংকটে পড়তে পারে। পরিস্থিতির সুযোগ নিতে পারে অগণতান্ত্রিক শক্তি। স্বাধীনতার আদর্শগুলো ভূলুণ্ঠিত হতে পারে। এমতাস্থায় স্বাধীন দেশপ্রেমিক গোষ্ঠীকে সচেতন এবং সক্রিয় থাকার বিকল্প নেই।

শেয়ার করুন