৩০ এপ্রিল ২০১২, মঙ্গলবার, ৬:১২:১৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
‘বিশেষ চাহিদা সম্পন্নদের প্রতিভা বিকাশে কোন ধরনের প্রতিবন্ধকতা রাখা যাবে না’ সরকার ও বেসরকারি উদ্যোগে দরিদ্রমুক্ত দেশ গড়ে উঠবে - আসাদুজ্জামান খান কামাল ৭০ শতাংশ মৃত্যু অসংক্রামক রোগে, বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি ‘বিদেশে দেশবিরোধী অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় আইনে ব্যবস্থা নিন’ ভূল স্বীকার করে সরে দাড়ানোয় একজনের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার বাফেলোতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে দুই বাংলাদেশী নিহত ‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জের, বিএনপির বহিস্কার ৭৬


মোমেন-ডেরেক-উজরা বৈঠক
আবারো অবাধ সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের তাগিদ
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ২০-০৯-২০২৩
আবারো অবাধ সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের তাগিদ উজরা জেয়ার সাথে মাসুদ বিন মোমেন


নির্বাচন নিয়ে মার্কিনীদের প্রত্যাশার কথা আরেকবার জানান দেয়া হলো। জাতিসংঘের সম্মেলনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন আমেরিকায়। তার সফরসঙ্গী পররাষ্ট্রমন্ত্রী, পররাষ্ট্রসচিবসহ সরকারী কর্মকর্তাবৃন্দ। এরই মধ্যে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সেখানেই মার্কিন প্রতিনিধি  বাংলাদেশের আগামী সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে আয়োজনের ওপর আবারও জোর দিয়েছেন। খুব বেশিদিন আগের কথা নয় (জুলাই), মার্কিন এ শীর্ষ কর্মকর্তা বাংলাদেশ সফর করেছেন। তার সে সময়ের কথা আবারও সুযোগ পেয়ে উচ্চারন করলেন পররাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে। 

এখানেই সব নয়। চলমান সেপ্টেম্বর মাসের ৬ তারিখে মার্কিন পররাষ্ট্রদফতরের নিয়মিত ব্রিফিংয়েও জন কিরবি একই বাক্য উচ্চারণ করেন। এক সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে কিববি বলেন, বাংলাদেশ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়নি- বলে জানিয়েছেন হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের কৌশলগত যোগাযোগবিষয়ক এ সমন্বয়কারী। তিনি বলেন, (বাংলাদেশে) আমরা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনকে সমর্থন করি। আমাদের এ অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়নি।

জন কিরবি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশি জনগণের ইচ্ছাকে সমর্থন করে। আমরা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সমর্থন করি। আমরা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তায় সমর্থন করি। আমরা দেখতে চাই বাংলাদেশের জনগণের উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে পুরোপুরি অনুধাবন করা হয়েছে। বাংলাদেশের জনগণের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে যুক্তরাষ্ট্র অব্যাহতভাবে কাজ করে যাবে বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, এসব ইস্যুতে আমাদের এ অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়নি। বাংলাদেশের জনগণের আকাংখাকে বাস্তবায়নে অব্যাহতভাবে কাজ করে যাবে যুক্তরাষ্ট্র।

ঠিক ওই বক্তব্যের সপ্তাহ দুইয়েকের মধ্যেই আবারও প্রসঙ্গটি তুলেছেন উজরা জেয়া।  

এদিকে নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় গত সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে উজরা জেয়া ও মাসুদ বিন মোমেনের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। এ আলোচনার পর উজরা জেয়া তাঁর এক্স অ্যাকাউন্টে (সাবেক টুইটার) আলোচনার বিষয়গুলো প্রকাশ করেন। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের সময় এ দুইয়ের বৈঠকটি অনুষ্টিত হলো। নির্বাচন ছাড়াও আরো অনেক কিছু বিষয় আলোচনা হয়েছে বলেও জানা গেছে। 

আলোচনার বিষয়বস্ত সম্পর্কে উজরা জেয়া তাঁর এক্স অ্যাকাউন্টে লিখেছেন, ‘জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে আমার ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতার গুরুত্ব নিয়ে আবার আলোচনার জন্য তাঁকে ধন্যবাদ জানিয়েছি।’ রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি তাদের আশ্রয়দানকারী স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য মানবিক সহায়তা অব্যাহত থাকবে বলে আজরা জেয়া তাঁর এক্স পোস্টে উল্লেখ করেছেন।

উল্লেখ্য,  উজরা জেয়া ও ডোনাল্ড লু সহ একটি প্রতিনিধি দল গত জুলাই মাসে ভারত হয়ে বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। সে সময় চার দিনের সফরে বাংলাদেশে এসেছিলেন। এর আগে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিংকেনের ঘোষণা দেয়া বাংলাদেশের জন্য নতুন মার্কিন ভিসা নীতি ঘোষণার পর উজরা জেয়া ও ডোনাল্ড লু’র মত মার্কিন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাগণ সফরে এসেছিলেন। ওই সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গেও বৈঠক হয় ওই প্রতিনিধি দলের। এ সফরে বিভিন্ন পর্যায়ে বৈঠকে বাংলাদেশে শ্রম অধিকার, মানবাধিকার, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন, মানব পাচার ও রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আলোচনা করেন।

বাংলাদেশে মার্কিন ভিসানীতি ও র‌্যাব ও তার শীর্ষ সাত (সাবেক বর্তমান) কর্মকর্তার বিপক্ষেও মানবাধিকার ইস্যুতে শ্যাংসন দেয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এরপর থেকে দুই দেশের মধ্যে কিছুটা সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছে। যদিও সেটা বুঝতে দিচ্ছেনা দুই পক্ষই।

মোমেন-ডেরেক শোলের বৈঠক

মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র সুরক্ষার গুরুত্ব নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে আলোচনা করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের কাউন্সেলর ডেরেক শোলে। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে তাদের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যেকার সহযোগিতা নিয়েও আলোচনা হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (আগের টুইটার) বিষয়টি ডেরেক শোলে নিজেই নিশ্চিত করেছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে নিজের একটি ছবি পোস্ট করে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের বিশেষ এই উপদেষ্টা লিখেছেনঃ জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮ তম অধিবেশনের ফাঁকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছে। আমরা অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে আমাদের সহযোগিতা এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র সুরক্ষার গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেছি।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ঢাকা সফর করেছিলেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রভাবশালী কর্মকর্তা ডেরেক শোলে। ওই সফরে তিনি রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন অব্যাহত রাখার পাশাপাশি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন এবং মানবাধিকার সুরক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরেছিলেন।

শেয়ার করুন