২৭ এপ্রিল ২০১২, শনিবার, ০১:৫৯:০৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ইউরোপে ভারতীয় ৫২৭ পণ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারি উপাদন শনাক্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি বিএনপির আন্দোলন ঠেকানোই ক্ষমতাসীনদের প্রধান চ্যালেঞ্জ বিএনপিকে মাঠে ফেরাচ্ছে আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে অদৃশ্য চাপে বিএনপি


৪৮ ঘণ্টার গণঅনশন করবে ঐক্য পরিষদ
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ১২-০৭-২০২৩
৪৮ ঘণ্টার গণঅনশন করবে ঐক্য পরিষদ বক্তব্য রাখছেন রানা দাসগুপ্ত


বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে ঢাকায় ২২ ও ২৩ সেপ্টেম্বর ৪৮ ঘণ্টার কেন্দ্রীয় গণঅনশন ও গণসমাবেশ কর্মসূচি পালিত হবে। ক্ষমতাসীন দলের নির্বাচনী প্রতিশ্রুত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে একর্মসূচি পালন করা হবে। এর পাশাপাশি সংগঠনের পক্ষ থেকে একদিকে আলোচনা ও অন্যদিকে রাজপথের আন্দোলনকে তীব্রতর করার লক্ষ্যে সমমনা সকল ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর সংগঠনসমূহকে সমন্বয় করে রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের সকল জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ৮ সেপ্টেম্বর, একইভাবে ময়মনসিংহ ও রংপুর বিভাগে ১৫ সেপ্টেম্বর, সিলেট বিভাগে ১৬ সেপ্টেম্বর, চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগে ২২ সেপ্টেম্বর, ঢাকা বিভাগের সকল জেলা-উপজেলায় ২৩ সেপ্টেম্বর সকাল-সন্ধ্যা গণঅনশন এবং বিকেল ৩টা থেকে ৬টা পর্যন্ত  গণসমাবেশের কর্মসূচি পালন করবে। 

ঢাকায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশনের সেমিনার কক্ষে শুক্রবার অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয়। এতে বলা হয়  অতীতের যে কোন ক্রান্তিকালে বা নির্বাচনের পূর্বাপর সংঘটিত ঘটনার নির্মম অভিজ্ঞতার আলোকে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে শঙ্কা ও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। বলা হয়, ধর্মান্ধ-সাম্প্রদায়িক মহলবিশেষ আবারও এ দেশের ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর ওপর অব্যাহত হামলাকে অধিকতর জোরদার করতে পারে এবং এ ধরনের পরিস্থিতি আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বিপন্ন করতে পারে। এজন্য দেশের ও বিদেশের মানবতাবাদী দেশপ্রেমিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও জনগণের সবাইকে সজাগ, সতর্ক ও সচেতন থাকার উদাত্ত আহ্বান জানানো হয় সংগঠনের পক্ষ থেকে এর নেতারা। 

সভায় বিগত ২০১৮ সালের নির্বাচনের পূর্বে প্রতিশ্রুত  সংখ্যালঘু স্বার্থবান্ধব অঙ্গীকারসমূহ বাস্তবায়নে যথাযথ উদ্যোগ এখনো না নেয়ায় গভীর ক্ষোভ প্রকাশ করে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩-র মধ্যে তা বাস্তবায়নে সরকারের কাছে জোর দাবি জানানো হয়। সংগঠনের তিন সভাপতি সাবেক এমপি ঊষাতন তালুকদার, ড. নিমচন্দ্র ভৌমিক ও নির্মল রোজারিও’র পর্যায়ক্রমিক সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা, অঙ্গসংগঠনসমূহের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং ৭৪টি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক উপস্থিত ছিলেন। সভার শুরুতে মিহির রঞ্জন হাওলাদার কর্তৃক মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ সিরাজুল আলম খান দাদাভাই, পঙ্কজ ভট্টাচার্য, নূরে আলম সিদ্দিকী, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, ভাস্কর শামীম শিকদার, কক্সবাজারের উখিয়ায় সন্ত্রাসী হামলায় নিহত বৌদ্ধ ভিক্ষু ধর্মজ্যোতি এবং সংগঠনের প্রয়াত নেতৃবৃন্দের স্মরণে শোক প্রস্তাব উত্থাপনের পর এক মিনিট দাঁড়িয়ে নিরবতা পালন করা হয়। অতঃপর সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথ বিগত কেন্দ্রীয় সভাসমূহের প্রস্তবাবলী উত্থাপন করেন।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত তাঁর প্রারম্ভিক ভাষণে সরকারি দলের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের আন্দোলনের বিষয় সবাইকে অবহিত করার পর বিভিন্ন জেলা ও মহানগর নেতৃবৃন্দসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ আন্দোলনের পরবর্তী রূপরেখা প্রণয়নের উপরে জোর গুরুত্ব আরোপ করে বক্তব্য রাখেন।

সভায় গৃহীত প্রস্তাবেব ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস পালনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বান স্মৃতির প্রতি সুগভীর শ্রদ্ধা নিবেদনার্থে আগামী ১৪ আগস্ট ২০২৩ সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকাসহ সারাদেশে আলোর মিছিল বের করে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির সামনে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন’র সাথে সাক্ষাত করে শুভেচ্ছা জ্ঞাপন, চলমান আন্দোলনের কর্মসূচি ও সংগঠনের দাবিসমূহ নিয়ে গণতন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল রাজনৈতিক দল এবং বাংলাদেশে অবস্থানরত বিদেশী কূটনীতিক ও মিশন প্রধানদের সাথে মতবিনিময়ের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। একই সাথে সংগঠনের বিদেশী শাখাসমূহ ৭ দফা দাবিসম্বলিত স্মারকলিপি স্ব স্ব রাষ্ট্রের মিশন প্রধানদের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি যাতে প্রদান করে তজ্জন্যে প্রবাসী নেতৃবৃন্দের সাথে যোগাযোগের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

সভার আরেক প্রস্তাবে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর নির্বাচনের সকল পর্যায়ে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা, নির্বাচনকালীন, নির্বাচন পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সময়ে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন ও সহিংসতা প্রতিরোধ ও সুরক্ষা, নির্বাচনী প্রচারণায় সাম্প্রদায়িকতা ও ধর্মীয় বিদ্বেষ না ছড়ানো এবং সকলের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের সাথে সাক্ষাৎ করে স্মারকলিপি পেশের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এছাড়া আগামী ৬ অক্টোবর শুক্রবার বেলা ২টায় ঢাকায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সংখ্যালঘু ঐক্যমোর্চাসহ মহাসমাবেশের আয়োজনের সিদ্ধান্তও নেয়া হয়। 

অন্যদিকে সভায় অপর কয়েক প্রস্তাবে বেশকিছু সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাড. দিপংকর ঘোষ, অধ্যক্ষ সুখেন্দু শেখর বৈদ্য ও শ্যামল পালিত সামগ্রিক সভার সঞ্চালনা করেন। সভায় আলোচনায় অংশ নেন- মতিলাল রায় (ঢাকা মহানগর দক্ষিণ), অতুল চন্দ্র মন্ডল (ঢাকা মহানগর উত্তর), প্রদীপ কুমার দাস (ঢাকা জেলা), সুবীর চক্রবর্তী (মুন্সীগঞ্জ), রঞ্জন কুমার সাহা (নরসিংদী), প্রদীপ কুমার দাস (নারায়ণগঞ্জ জেলা), লিটন চন্দ্র পাল (নারায়ণগঞ্জ মহানগর), এ্যাড. বিমল চন্দ্র বাড়ৈ (মাদারীপুর), সুদীপ্ত ঘোষ রানা (শরীয়তপুর), দুলাল বিশ্বাস (গোপালগঞ্জ), অধ্যাপক আশুতোষ রায় (মানিকগঞ্জ), অধ্যাপক প্রণব কুমার সরকার (কিশোরগঞ্জ), বিশ্বজিৎ পালিত (চট্টগ্রাম মহানগর), এ্যাড. দীপংকর বড়ুয়া পিন্টু (কক্সবাজার), দীপেন কুমার ঘোষ (রাঙ্গামাটি), শুকদেব নাথ তপন (ফেনী), দিলীপ কুমার নাগ (ব্রাহ্মণবাড়িয়া), রণজিৎ রায় চৌধুরী (চাঁদপুর), শংকর মজুমদার (লক্ষ্মীপুর), চন্দন কুমার রায় (কুমিল্লা), এ্যাড. পাপ্পু সাহা (নোয়াখালী), গোপাল চন্দ্র সাহা (খুলনা মহানগর), বিশ্বজিৎ সাধু (সাতক্ষীরা), সন্তোষ কুমার দত্ত (যশোর), নারায়ণ চন্দ্র বিশ্বাস (ঝিনাইদহ), রণজিৎ কুমার টিকাদার (নড়াইল), অসিত কুমার ঘোষ (রাজশাহী জেলা), শ্যামল কুমার ঘোষ (রাজশাহী মহানগর), তপন কুমার চক্রবর্তী (বগুড়া), সুব্রত সরকার মুকুল (রংপুর মহানগর), স্বপন রায় (রংপুর জেলা), রণজিৎ বকসী সূর্য (গাইবান্ধা), প্রবীর কুমার রায় (ঠাকুরগাঁও), এ্যাড. প্রদীপ কুমার ভট্টাচার্য (সিলেট জেলা), প্রদীপ কুমার দেব (সিলেট মহানগর), দীপক চন্দ্র ঘোষ (সুনামগঞ্জ), দিলীপ কুমার মাঝি (পিরোজপুর), উত্তম কুমার দাস (পটুয়াখালী), গৌরাঙ্গ শিকদার শিবু (বরগুনা), ডা. সুজিত বর্মণ (ময়মনসিংহ জেলা), পবিত্র রঞ্জন রায় (ময়মনসিংহ মহানগর), এ্যাড. সীতাংশু বিকাশ আচার্য (নেত্রকোনা), রমেন চন্দ্র বণিক (জামালপুর), এ্যাড. অনুপ কুমার সাহা (আইনজীবী ঐক্য পরিষদ), শ্রীমতি সুপ্রিয়া ভট্টাচার্য (মহিলা ঐক্য পরিষদ), রবার্ট নিক্সন ঘোষ (যুব ঐক্য পরিষদ) ও সুদীপ্ত সরকার সূর্য (ছাত্র ঐক্য পরিষদ) প্রমুখ।

শেয়ার করুন