২৫ এপ্রিল ২০১২, বৃহস্পতিবার, ০৮:৩১:৪৩ অপরাহ্ন


কঙ্কাল বেড়িয়ে পড়লো প্রস্তুতি ম্যাচে
সালেক সুফী, অস্ট্রেলিয়া থেকে
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৮-১০-২০২২
কঙ্কাল বেড়িয়ে পড়লো  প্রস্তুতি ম্যাচে বাংলাদেশ দলের টেকনিক্যাল কনসালট্যান্ট শ্রীধরন শ্রীরাম অস্ট্রেলিয়া পৌছেই পড়েছিলেন মিডিয়ার সম্মুখে। কিন্তু তার আস্থার প্রতিফলন নেই অন্তত এ ম্যাচে/ফাইল ছবি


ঠিক যেমনটা ভাবা হয়েছিল টি ২০ বিশ্বকাপ ২০২২ এ বাংলাদেশ কী করবে সে বিষয়টা। প্রথম অনুশীলন ম্যাচেই বাংলাদেশ ক্রিকেটের কংকাল বেড়িয়ে পড়লো। প্রতিপক্ষ এশিয়ার দেশ আফগানিস্তান। খেলার মাঠ ব্রিসবেনের অ্যালেন বর্ডার ওভাল। সেদিন ভাষ্যকার আলফাজুদ্দিন ভাইয়ের সঙ্গে শামসুল ইসলাম সংযোজিত ডিজিটাল আলোচনায় বলেছিলাম “মেষ শাবকদের পাঠানো হয়েছে কসাইখানায়” । কাল আফগান দলের স্বাভাবিক নৈপুণ্যে করা ১৬০/৭ স্কোরের মোকাবিলায় ৯৮/৯ করে বাংলাদেশ প্রমান করলো ওই মন্তব্য যথার্থ হতে শুরু চলেছে।


মনে হচ্ছে অপ্রস্তুত আনকোরা দল নিয়ে তামাশা করতে এসেছে বাংলাদেশ। বিশ্ব দেখছে নামিবিয়া বা স্কটল্যান্ড কতটা প্রস্তুত বিশ্বকাপ ক্রিকেট আসরে। সেখানে বাংলাদেশ দলের কী দুর্দশা। ভালো ক্রিকেট খেলে ওরা শ্রীলংকা আর ওয়েস্ট ইন্ডিজ থেকে জয় ছিনিয়ে নিয়েছে। বাংলাদেশের না আছে ব্যাটিং দক্ষতা, না আছে অস্টেলিয়ান উইকেটে ভালো বোলিং করার যোগ্যতা। এই দল নিয়ে মূল পর্বে কি করবে বাংলাদেশ, সেটি আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

ভালো হয়েছে অনুশীলন ম্যাচগুলোতে দর্শক যেতে পারেনি। কাল আমি ছেলেকে নিয়ে খেলা দেখতে যাওয়ার পূর্ব ক্ষনে শুনলাম খেলাগুলোতে দর্শক যেতে পারবে না। গেলে আরো বেশি কষ্ট পেতাম। 

টস জয় করে মোহাম্মদ নবি ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। উইকেটে যথেষ্ট পেস আর বাউন্স ছিল। তরুণ পেসার হাসান মাহমুদ ( ২/২৪) আর তাসকিন ( ৩/৩০) ভালো বোলিং করে ১৬.২ ওভার পর্যন্ত ৫/১১৩ স্মিত রেখেছিলো আফগানদের। কিন্তু ওই সময় আফগান অধিনায়ক মোহাম্মদ নবীর ব্যাট খোলা তলোয়ার হয়ে ওঠায় শেষ ৩.৪ ওভারে যোগ হলো মূল্যবান ৪৭ রান। ১৬০/৭ রান আফগানদের তুখোড় বোলিংয়ের মোকাবেলায় হিমালয় পর্বত মালার উপরে সোলাং পাস পায়ে হেটে অতিক্রম করার মতো দুরূহ হয়ে গেলো। মোহাম্মদ নবী ৫ টি প্রচন্ড ছক্কা আর এক চারে অপরাজিত ৪১ রান করে স্কোর বাংলাদেশের ধরা ছোয়ার বাইরে নিয়ে গেলো। 

যে উইকেটে তাসকিন ভালো করেছে সেখানে উদীয়মান তরুণ ফজল হক ফারুকী আগুন ঝরাবে অনুমিত ছিল। ওর সঙ্গী হয়ে ওপর পেসার ফরিদ বাংলাদেশের ভীত নাড়িয়ে দিলো। ১০.২ ওভারে ৭/৪৬ দলের ইনিংস নিয়ে খেলার আর কি থাকতে পারে? 

সূচনায় নাজমুল শান্ত যথারীতি ব্যর্থ। এই ম্যাচেও শান্ত-মিরাজকে দিয়ে এক্সপেরিমেন্ট। ফলাফল শুন্য। সৌম্য (১) , সাকিব  (১) , আফিফ (০) , ইয়াসির (০) । আর কিছু কি বলার আছে? বাংলাদেশ ১০০ রানের কাছাকাছি যেতে পেরেছে মোসাদ্দেকের ৩৩ বল খেলে ২৯ রানের সুবাদে। ৯৮/৯ উইকেট। অজুহাত তোলার কোনো অবকাশ নেই। বাংলাদেশকে কেন অস্ট্রেলিয়া সেদেশে ক্রিকেট খেলার আমন্ত্রণ জানায় না সেটি নিজেরা প্রমান করে দিলো আরো একবার। মাঠ থেকে দলের সাথে থাকা একজন বার বার খেলার আপডেট দিচ্ছিলো।

বাংলাদেশের এই শোচনীয় অবস্থা দেখে আমার হৃদয় ভেঙেছে বার বার। ফারুকী (৩/৪২) ,ফরিদ (২/১২) ধসিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশকে।  রাশিদ খান খেললে হয়তো আরো সঙ্গিন হতো বাংলাদেশের অবস্থা। 

পরের ম্যাচে খেলবে বাংলাদেশ শক্ত প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে। যারা কি- না নিউজিল্যান্ডকে গুড়িয়ে দিয়েছে তাদের প্রস্তুতি ম্যাচে।  কিছুই বলার নেই। অপ্রস্তুত আনকোরা নবীনদের দিয়ে তামশা করতে আশা বাংলাদেশের এটিই হওয়ার কথা। 

বাংলাদেশ দলের টেকনিক্যাল কনসালট্যান্ট শ্রীধরন শ্রীরাম অস্ট্রেলিয়া পৌছেই বলেছিলেন, ‘অনেক কিছু শিখেছি (নিউজিল্যান্ড সফরে), নিজেদের খেলোয়াড়দের ব্যাপারে জেনেছি, কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছি। আমরা এই ব্যাপারে পরিষ্কার, জানি কোন দলটা সেরা। সেরা দল একটা না, এটা বদলায়। সঠিক দলের বিপক্ষে ঠিক ম্যাচ-আপটা দরকার। কিন্তু আমাদের মাথায় সেরা কম্বিনেশনের ব্যাপারটা পরিষ্কার।’

প্রস্তুতি ম্যাচে অন্তত আফগানিস্তানের মত একটা দলের সঙ্গে ওই কথার কী কোনো মিল কেউ খুজে পাবেন? 

শেয়ার করুন