২৮ এপ্রিল ২০১২, রবিবার, ০৪:৫৭:১০ অপরাহ্ন
শিরোনাম :


বর্ডারে কয়েক শত বাংলাদেশীসহ অবৈধ অভিবাসীদের মানবেতর জীবনযাপন
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৩-১২-২০২৩
বর্ডারে কয়েক শত বাংলাদেশীসহ অবৈধ অভিবাসীদের মানবেতর জীবনযাপন


মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্তে আসা আশ্যয় প্রার্থী অভিবাসীরা চরম মানবেতর জীবনযাপন করছে। নিজ দেশে তাদের নিরাপত্তার অভাব, সংঘাত ও সহিংসতা থেকে বাঁচতে রাজনৈতিক, ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গির কারণে তারা নিপীড়নের শিকার হয়ে তাদের বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে দেশ থেকে পালিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র সীমান্ত পর্যন্ত আসতে তাদের দীর্ঘ পথ ও বিপজ্জনক যাত্রায় বাধ্য হয়েছেন। 

ইউএস-মেক্সিকো সীমান্ত একটি প্রত্যন্ত মরুভূমি অঞ্চল। আফ্রিকা, এশিয়া এবং ল্যাটিন আমেরিকা থেকে কাজ করার এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে পুনর্মিলনের আশায় হাজার হাজার অভিবাসী সীমান্ত এলাকায় আসছে। প্রতিদিনই তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্তে আসছেন। এই সীমান্ত এলাকা যেন একটি অস্থায়ী আন্তর্জাতিক আগমন এলাকা হয়ে উঠেছে। অ্যারিজোনার প্রত্যন্ত মরুভূমিতে বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আগত অভিবাসী প্রার্থীরা প্রচণ্ড শীতে ও খাবারের অভাবে মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন। এর ফলে সীমান্তে মানবিক সংকটকে বাড়িয়ে তুলছে।

বেশির ভাগ অভিবাসী পুরুষ গিনি, মৌরিতানিয়া, মরক্কো এবং সেনেগালসহ আফ্রিকান দেশগুলোর পাশাপাশি এশিয়ার কিছু দেশ যেমন-বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, পাকিস্তান এবং সিরিয়ার বাসিন্দা রয়েছেন। আর শিশু ও পরিবার নিয়ে অভিবাসীরা আসছেন প্রধানত মেক্সিকান এবং মধ্য আমেরিকার দেশ থেকে। অ্যারিজোনা মরুভূমির মাঝখানে আউটডোর স্টেজিং এলাকায় বিশৃঙ্খল এবং আকর্ষণীয় দৃশ্যগুলি দক্ষিণ সীমান্ত বরাবর সঙ্কটের ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের দিকে ধাবিত হচ্ছে। তবে অভিবাসী আগমনে সংখ্যা অন্য যে কোনো সময়ের তুলনায় বেশি।

গত কয়েকদিন ধরে অভিবাসী পুরুষ, মহিলা এবং শিশুদের নিয়ে কিছু পরিবার ইউএস-মেক্সিকো সীমান্তের এই রুক্ষ অংশে একটি অস্থায়ী তাঁবুতে রাত কাটাচ্ছেন। তাদের অভিবাসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য অ্যাপসের মাধ্যমে ইন্টারভিউয়ের জন্য সীমান্ত কর্মকর্তাদের জন্য অপেক্ষা করছেন। স্থানীয় বর্ডার পেট্রল এজেন্টদের দ্বারা যাচাই করার পরে অনেকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ছেড়ে চলে যাওয়ার কথা চিন্তা করেন। কারণ সময়মত সবাইকে স্ক্রিন করার জন্য রিসোর্সেস এবং জনবলের অভাব রয়েছে।

অভিবাসীরা তাপমাত্রা হ্রাসের মধ্যে উষ্ণ রাখতে রাতে এবং ভোরে আগুন জ্বালিয়ে নিজেকে উষ্ণ রাখেন। অনেকেই সীমানা প্রাচীরের পাশে ঘুমানোর জন্য কম্বল নিয়ে আসেন। অভিবাসন প্রক্রিয়াকরণের অপেক্ষা সাম্প্রতিক দিনগুলো এতো দীর্ঘ যে মেক্সিকান পরিবার এবং বিজনেসম্যানরা পানীয় এবং খাবার বিক্রির জন্য তাঁবুর মাঠে নিয়মিত যাতায়াত করেন।

রাতারাতি তাপমাত্রা কমে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে অভিবাসীরা বলেন, ‘আমরা আমাদের মতো ঘুমাতে পারি না। তবে মাঝেমধ্যে আমাদের ঘুম আসে। কারণ আমরা আমাদের বাচ্চাদের সঙ্গে অনেক হাঁটতে হাঁটতে সত্যিই ক্লান্ত হয়ে পড়ি। আমাদের ছেলেমেয়েরা আমাদের কোলে বা কাঁধে ঘুমিয়ে যায়।’ কিছু আফ্রিকান এবং ইকুয়েডরীয় পুরুষ অভিবাসী বর্ডার পেট্রল দ্বারা হেফাজতে নেওয়ার অপেক্ষায় আছেন। তারা বলেছেন উন্নত জীবনের আশায় তারা যুক্তরাষ্ট্রে আসছেন। নিজ দেশে তারা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার এবং ধর্মীয় বিদ্বেষের শিকার। যে কারণে তারা তাদের দেশ থেকে পালিয়েছেন। তাদের জীবনের পাশাপাশি তারা তাদের সন্তানদের উন্নত জীবনের কথাও চিন্তা করছেন। তারা যেন বন্দুকের গুলির শব্দ না শুনেই ঘুমাতে পারে।

রিপাবলিকানরা ইসরায়েল, ইউক্রেন এবং তাইওয়ানকে সহায়তাসহ রাষ্ট্রপতি বাইডেনের মাল্টিবিলিয়ন ডলার জাতীয় নিরাপত্তা তহবিল অনুরোধের ওপর চলমান আলোচনার অংশ হিসাবে ব্যাপক আশ্রয় বিধিনিষেধের দাবিতে সীমান্ত ক্রসিংয়ের অভূতপূর্ব স্তরকে পুঁজি করেছে। তারা জানিয়ে দিয়েছে সীমান্তে কঠোরতা এবং ডিপোর্টপেশন প্রক্রিয়াকে আরো কঠোর এবং তারান্বিত করতে হবে। তাহলে জাতীয় তহবিল পাওয়া যাবে।

শেয়ার করুন