২৫ এপ্রিল ২০১২, বৃহস্পতিবার, ১০:৪৬:৩৬ অপরাহ্ন


বিশ্বকাপ ফাইনালের উত্তেজনা আটলান্টিকের এপারেও
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২১-১২-২০২২
বিশ্বকাপ ফাইনালের উত্তেজনা আটলান্টিকের এপারেও আমেরিকায় বিশ্বকাপের ফাইনাল দেখছেন বাংলাদেশিরা


গত ১৮ ডিসেম্বর ছিলো এবারের বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলা। প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছিলো আর্জেন্টি এবং গতবারের চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স। অবশ্য কাতার বিশ্বকাপের ঢেউ শুরু থেকেই আটলান্টিকের এপারে আছড়ে পড়েছিলো। বিশ্বকাপ ফুটবলের প্রথম থেকেই উত্তেজনা ছিলো উত্তর আমেরিকায়। বিশেষ করে নিউইয়র্কে। বিশ্বকাপ ফুটবলে দেশের ন্যায় প্রবাসেও বাংলাদেশিরা অনেকটা দু’ভাগে বিভক্ত ছিলেন। অধিকাংশ বাংলাদেশির পছন্দের দল ছিলো আর্জেন্টিনা এবং ব্রাজিল। আর্জেন্টিনা এবং ব্রাজিলের সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করতো সবসময়। তবে বাংলাদেশে যে উন্মাদনা সেটা ছিলো না। কারণ আর্জেন্টিনা এবং ব্রাজিলের খেলা নিয়ে বাংলাদেশে মারামারি হয়েছে, অনেককে জীবন দিতে হয়েছে। তবে প্রবাসে তা ছিলো না। প্রবাসে ছিলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে খোঁচা মারা আর আড্ডায় ছিলো টিপ্পনি কাটা। তর্ক-বিতর্ক করা।

এবারের ফাইনাল খেলাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে প্রবাসী বাংলাদেশিরা বিশেষ আয়োজন করেছিলেন। বিশেষ করে জ্যামাইকা এবং ব্রঙ্কসে। ভাড়া করা হয় হলরুম এবং নতুন করে ক্রয় করা হয় বিশাল আকারের টিভি। বিশেষ আয়োজন করে সবাই মিলে একত্রে বিশ্বকাপ খেলা উপভোগ করেছেন, হাসি-আনন্দ এবং কষ্ট ভাগাভাগি করে নিয়েছেন। জ্যামাইকার মান্নান বেকারির অডিটোরিয়াম ভাড়া করা হয়। উদ্যোগে ছিলেন জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা এবং বর্তমান সভাপতি ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী এবং জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মইনুল ইসলাম, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী বিলাল চৌধুরী, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মঈনুজ্জামান চৌধুরী, বাংলাদেশ সোসাইটির প্রচার সম্পাদক রিজু মোহাম্মদ, বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক কর্মকর্তা জে. মোল্লা সানি, নেট ক্যাবলের মালিক। মূল দায়িত্বে ছিলেন ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার এবং ৮৫ ইঞ্চির টিভির ব্যবস্থা করেছিলেন মইনুল ইসলাম। কথা ছিলো বন্ধুবান্ধবরা একসাথে বসে খেলা দেখবেন। পরিবেশন করা হবে সকালের নাশতা এবং দুপুরে খিচুড়ির সাথে গরুর মাংস। সবই ঠিক ছিলো কিন্তু খেলা শুরুর পর পুরো অডিটোরিয়াম কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। দাঁড়ানোরও জায়গা ছিলো না।

খেলার শুরু থেকেই আর্জেন্টিনা চাপ সৃষ্টি করে খেলতে থাকে। চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সকে যেন খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছিলো না। সেই সুযোগে আর্জেন্টিনা ২-০ গোলে এগিয়ে যায়। আর্জেন্টিনার সমর্থকরা উল্লাস করতে থাকে। অন্যদিকে ফ্রান্স সমর্থকরা একেবারেই চুপসে যান। দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরু হলে গণেশ পাল্টে যায়। ফ্রান্সের মুহুর্মুহু আক্রমণে আর্জেন্টিরা রক্ষণভাগে তছনছ হয়ে যায়। এই সুযোগে এমবাপ্পে ১ মিনিটের মধ্যে ২ গোল করে খেলায় সমতা নিয়ে আসেন। ফ্রান্সের সমর্থকরা দীর্ঘক্ষণ চুপ থাকলেও একসময় তারা খোলস থেকে বেরিয়ে পড়েন। খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়। আবারো মেসির গোলে আর্জেন্টিনা এড়িয়ে যায়। কিন্তু তারা তা ধরে রাখতে পারেনি। আবারো ফ্যান্স খেলায় সমতা নিয়ে নিয়ে আসে। ফলে খেলা গড়ায় পেনাল্টিতে। ৩৬ বছর পর আর্জেন্টিনার গোল রক্ষক মার্টিনেজের দৃঢ়তায় বিশ্বকাপ ওঠে মেসির হাতে। আবারো উল্লাস, আনন্দ নৃত্য। জ্যামাইকা ছাড়াও বাংলাদেশি অধ্যুষিত ব্রঙ্কসের গোল্ডেন সেন্টারে ফাইনাল খেলা দেখার আয়োজক করা হয়। সেখানেও মেসির জয়ে সবাই ছিলো উল্লসিত।

শেয়ার করুন