২৮ এপ্রিল ২০১২, রবিবার, ০৩:২০:৫৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম :


জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের অনুষ্ঠানে বক্তারা
স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় যারা বাংলাদেশের বিরোধিতা করেছে আজকে তারা ভবনের বিরোধিতা করছে
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২০-১২-২০২৩
স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় যারা বাংলাদেশের বিরোধিতা করেছে আজকে তারা ভবনের বিরোধিতা করছে মুক্তিযোদ্ধা শওকত আলী সম্মাননা প্রদান


বাংলাদেশের মানুষ যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছিল। আজকে আমরা জালালাবাদ ভবন নিয়ে যুদ্ধের মধ্যে আছি। স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় যারা বাংলাদেশের বিরোধীতা করেছিল আজকে তারা জালালাবাদ ভবনের বিরোধিতা করছে। গত ১৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় জালালাবাদ ভাবনে জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মইনুল ইসলাম এসব কথা বলেন।

জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহীন কামালীর সভাপতিত্বে হুমায়ুন চৌধুরী এবং সাবেক কোষাধ্যক্ষ আসাদুল গনি আসাদের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধ এবং সাবেক সভাপতি ওয়াহিদুর রহমান মুক্তা, বীর মুক্তিযোদ্ধা সুব্রত বিশ্বাস, অ্যাডভোকেট শেখ আক্তারুল ইসলাম, নজরুল ইসলাম, জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি সৈয়দ শওকত আলী, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আইরীন পারভীন, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ফজলুর রহমান, এখলাসুর রহমান, যুক্তরাষ্ট্র জাতীয় পার্টির সভাপতি হাজী আব্দুর রহমান, অনুষ্ঠানের আহবায়ক হেলিম উদ্দিন।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক কর্মকর্তা আকবর হোসেন স্বপন, সুনামগঞ্জ জেলা সমিতির সহ-সভাপতি মনির উদ্দিন, জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান চৌধুরী শেফাজ, রাবেয়া বখত, কমিউনিটি এক্টিভিস্ট মইনুজ্জামান চৌধুরী প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে সিলেট অঞ্চলের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা জানানো হয়। যার মধ্যে বেশ কয়েকজন প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন। যাদের মধ্যে সম্মাননা বিতরণ করা হয় তারা হলেন-বীর মুক্তিযোদ্ধা সুব্রত চৌধুরী, আজিজুর রহমান সাবু, ওহিদুর রহমান মুক্তা, রফিক উদ্দিন চৌধুরী রানা, মুকিত চৌধুরী, গোলাম মোস্তফা, আব্দুর রাজ্জাক, কমান্ডার মাসুক মিয়া, মুজাহিদুল ইসলাম, আব্দুল জলিল, আব্দুর রহমান, ডা. জিয়াউদ্দিন আহমেদ, কমান্ডার খলিলুর রহমান, বাবরুল হোসেন বাবুল, আবুল লেইস চৌধুরী, প্রায়ত আব্দুল খালিক মায়ান, প্রয়াত মুহিদুল ইসলাম রউফ, প্রয়াত খসরুজ্জামান চৌধুরী, প্রয়াত ফৈয়াজ আলী, প্রয়াত সিরাজউদ্দিন আলি, প্রয়াত সিরাজউদ্দিন আহমেদ, তোফায়েল আহমেদ চৌধুরী, সৈয়দ শওকত আলী, ওহিদুর রহমান মুক্তা, আব্দুন নূর, গিয়াস এ মজুমদার ও মোহাম্মদ টি আলী। জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তা এবং অতিথিবৃন্দ এসব সম্মাননা তুলে দেন।

সাধারণ সম্পাদক মইনুল ইসলাম সবাইকে বিজয়ে শুভেচ্ছা জানান এবং জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ-সকল মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সম্মান জানিয়ে বলেন, আমাদের কমিউনিটিতে নেগেটিভ মানুষের সংখ্যা বেশি। যাদের কাজই হচ্ছে নেগেটিভ প্রচারণা করে মানুষকে বিভ্রান্ত করা। আমরা সেই নেগেটিভ প্রচারণার শিকার। কিন্তু তাতে কোন লাভ নেই। কারণ আমরা সঠিকভাবেই কাজ করছি। জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের বহিষ্কৃত সভাপতি বদরুল হোসেন খান এবং গংরা এই নেগেটিভ প্রচারণা করে জালালাবাসীকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, এই চিহ্নিত ষড়যন্ত্রকারীরা আমাদের ভবনের ওপর লিন বসিয়েছে। এমন কি ল্যান্ডারের ওপর মামলা করেছে। ল্যান্ডার তার অর্থ সিকিউর করার জন্য পদক্ষেপ নিচ্ছে। আমরা নিয়মিত বাড়ির পেমেন্ট করে যাচ্ছি। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে আমরা ডিসেম্বরের পেমেন্ট দিয়েছি। ল্যান্ডারের সঙ্গে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে। তিনি বলেন, এই ভবন আমি জালালাবাদবাসীর জন্য ক্রয় করেছি। বদরুল হোসেন গংদের লিনের কারণে আমরা রিফাইন্স্যাসও করতে পারছি না। এই পরিস্থিতিতে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমার পরিচিত বন্ধু-বান্ধব এবং আপনাদের সহযোগিতা নিয়ে ল্যান্ডারের অর্থ দিয়ে দিবো। আরো খুশির খবর হচ্ছে আমাদের পাশের দুটি বাড়ির মালিক একজন বাংলাদেশি। তার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তিনি যদি বিক্রি করেন তাহলে আমাদের কাছেই বিক্রি করবেন। তখন এখানে জালালাবাদ ভবনের পাশাপাশি কমিউনিটি সেন্টার হবে। তিনি আরো বলেন, এই ভবন নিয়ে আমরা এখন যেন যুদ্ধের মধ্যে আছি। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানপন্থীরা বাংলাদেশের বিরোধিতা করেছিলেন। আজকে তারাই জালালাবাদ ভবন নিয়ে বিরোধিতা করছে। তিনি বহিষ্কৃত সভাপতির প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, যারা জিয়াউর রহমানের সময় গ্রাম সরকার হয়। তারা কীভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আসলে মুক্তিযোদ্ধাদের কাতারে বসেন? তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেন, মামলা-মোকদ্দমা করে লাভ নেই। কারণ আমি আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় করি না। আমি জালালাবাদবাসীকে সঙ্গে নিয়েই এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করে তাদের স্বপ্ন পূরণ করবো ইনশাআল্লাহ।

অন্যান্য বক্তারা জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের এই সুন্দর অনুষ্ঠানের প্রশংসা করে বলেন, আজকে আমাদের ভবন আছে বলেই আমরা এখানে অনুষ্ঠান করতে পারছি। তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ গড়ার আহবান জানান। চমৎকার অনুষ্ঠানের জন্য ধন্যবাদ জানান ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহীন কামালী, সাধারণ সম্পাদক মইনুল ইসলাম, হেলিম উদ্দিনসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের।

অনুষ্ঠানের শুরুতে কোরআন তেলওয়াত করেন আসাদুল গনি আসাদ। অনুষ্ঠানে পরিবশন করা হয় বাংলাদেশ ও আমেরিকার জাতীয় সংগীত। দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয় মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সম্মান জানিয়ে।

অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন প্রবাসের জনপ্রিয় শিল্পী প্রমি তাজ। তিনি দেশাত্মবোধক গানসহ জনপ্রিয় গানগুলো পরিবেশন করে সবাইকে বিমোহীত করে রাখেন।

শেয়ার করুন