১৯ এপ্রিল ২০১২, শুক্রবার, ০৩:২৫:৫৯ পূর্বাহ্ন


নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে গণতন্ত্র মঞ্চ
৪ ফেব্রুয়ারি আবারো ঢাকাসহ সারাদেশে সমাবেশ ও বিক্ষোভ
নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৫-০১-২০২৩
৪ ফেব্রুয়ারি আবারো ঢাকাসহ সারাদেশে সমাবেশ ও বিক্ষোভ যুগপত আন্দোলনের অংশ হিসেবে সরকারের দমনপীড়নসহ ১০ দফা দা্বেিত আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি আবারো ঢাকাসহ সারাদেশে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচী ঘোষণা করেছে/ফাইল ছবি


যুগপত আন্দোলনের অংশ হিসেবে সরকারের দমনপীড়নসহ ১০ দফা দা্বেিত আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি আবারো ঢাকাসহ সারাদেশে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলেন নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে গণতন্ত্র মঞ্চ।


 


বুধবার সকালে বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, ‘‘ দেশব্যাপী আওয়ামী সন্ত্রাস, সরকারের দমন-নিপীড়ন-নির্যাতন,বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি, বিদ্যুত গ্যাস ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য কমানোসহ ১০ দফা দা্বেিত  আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি আমরা ঢাকাসহ সারাদেশে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করছি।”


 


সরকারের পতন আন্দোলন প্রসঙ্গ মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘‘ কতগুলো বিভ্রান্তি আমি দূর করতে চাই। এরকম না আপনি আজকে বললেন, কালই একটা অভ্যুত্থান হয়ে গেলো। আন্দোলনও গড়ে তুলতে হয়। আন্দোলনকে ধীরে ধীরে তার পরিণতিতে নিজের জায়গায় নিতে হয়। সেটা হয়ত একদিনে হয় না। তখন কী রকম হয় কর্মসূচির। রিপিটেশন হয়। আজকে যে কর্মসূচি করি হয়ত ১০দিন পরে একই কর্মসূচি থাকে। কিন্তু সেই কর্মসূচির থেকে আজকের চাইতে বেশি দৃঢ়তা, আরো বেশি জঙ্গিত্ব, লড়াকু মনোভাব থাকে।” আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘‘ আমরা বলতে চাই, আমাদের কর্মসূচি চলবে। ৪ তারিখ আবারো কর্মসূচি ঘোষণা করব। ওই যে বলেছি, এই দিনকে নিয়ে যাবো সেই দিনের কাছে যেদিন আমাদের বিজয়ের দিন। আমি মনে করি এই বছর এই সরকারের পতন হবে।”


 


মান্না বলেন, ‘‘ গণতন্ত্র মঞ্চ একটা কথা স্পষ্ট ঘোষণা করেছে, আমরা কেবল একদলকে সরিয়ে আরেক দলকে বসাবার লড়াই করছি না। আমরা মানুষের ভাগ্য বদলের লড়াই করছি, আমরা দেশ বদলের লড়াই করছি, আমাদের প্রশাসন বদলের লড়াই করছি, আমরা এদেশকে গুনগনভাবে একটা উন্নত দেশ বানাতে চাই এজন্য আমরা ১৪ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছি। এই ১৪ দফার ভিত্তিতে ৪ ফেব্রুয়ারি সমাবেশ হবে।”

 


জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গণতন্ত্র মঞ্চের উদ্যোগে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে এই সমাবেশ হয়। সমাবেশে নেতা-কর্মীরা ‘জনগনের ভোট নাই, এই সরকার দরকার নাই’, চাল, ডাল, তেল ও চিনির দাম কমাতে হবে কমাতে হবে’ দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ব্যবসায়িক সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে’ ইত্যাদি প্লাকার্ড হাতে ছিলো সমাবেশ যোগ দেয়।


 


বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘‘ পর্যায়ক্রমে ধাপে ধাপে আমরা আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করব। ইতিমধ্যে গণতন্ত্র মঞ্চের সাথে বিএনপি যুগপত আন্দোলনের যৌথ ইশতেহার কি হবে এটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে, কথাবার্তা হয়েছে। সম্ভব স্বল্পতম সময়ে আমরা দেশ ও জনগনকে রক্ষা করবার জন্যে যুগপত আন্দোলনের যৌথ ইশতেহার আশা করি সেটা আমরা ঘোষণা করতে পারবো।”


 


‘‘ এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সকল অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক দেশপ্রেমিক সমাজের সকল রাজনৈতিক দল চিন্তার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে আমরা আগামীতে এই ফেব্রুয়ারি মাস থেকে ধারাবাহিক কর্মসূচি করব।সরকারের তাতে যদি কানে পানি না যায়..। আমি পরিস্কার করে বলেছি, সরকার যদি কিভাবে নির্বাচনের আগে পদত্যাগ করবেন, নির্বাচনকালীন অন্তবর্তীকালীন সরকার হবে- এ ব্যাপারে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিয়ে তারা যদি সমাধানে এগিয়ে না আসেন যে গণজাগরণ শুরু হয়েছে, গণ বিপ্লব শুরু হয়েছে এই গণবিপ্লবের মধ্য দিয়ে আরেকটা শীত সরকার পার করতে পারবে না। আরেকটা শীত আসার আগেই এই সরকারকে জনগন বিদায় দেবে, বিদায় দিয়ে দেশকে রক্ষা করবে।”


 


তিনি বলেন, ‘‘ সরকার দেশ চালাতে পারছে না। সবার জন্য আপনারা একটা সার্বজনীন বীমার ব্যবস্থা চালু করার কথা বলছেন। ১০ বছর মানুষ টাকা সেখানে জমা দেবে। তারপরে আপনারা দেবার ব্যবস্থা করবেন।”


 


‘‘ কই এর তেল দিয়ে কই বাচার ব্যবস্থা সেটা আপনারা চালু করছেন।”


 


গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘‘ পায়ের তলায় মাটি নেই- এটা অবশ্য তারা(সরকার) বুঝেন। যার ফলে ১০ তারিখের (১০ ডিসেম্বর) কিভাবে ভয়ে কম্পমান হয়ে গেলো, গ্যাটাবো কায়দায় দলের নেতৃবৃন্দ, বিরোধী দলের নেতৃবৃন্দকে গ্রেফতার করলেন, বিএনপির মহাসচিবকে পর্যন্ত বাড়ি থেকে তুলে আনলেনৃ এটা তারা চালান।”


 


‘‘ আরো নানা কিছু করেন, আন্দোলনে বিভক্তি ধরানোর চেষ্টা করেন, লোকজনকে কিনে ফেলার চেষ্টা করেন-এসব চেষ্টা কোনো কালেই সফল হয় নাই। সরকার বিরোধী দলের আন্দোলনে নানাভাবে বিভক্তির সৃষ্টি করবে, সরকার বিরোধী দলের আন্দোলনে নানা বিভ্রান্তি ছড়াবে। আমরা যেন তার ফাঁদে না পড়ি। রাজনৈতিকভাবে একটা পরিণত চিন্তা হবে সরকারের এই সমস্ত নানা রকম কর্মকান্ডকে কোনোভাবে সাহায্য না করা, রাজনৈতিকভাবে সরকারের ষড়যন্ত্রকে কিভাবে উন্মোচন করতে পারি সেই চেষ্টা আমাদের করতে হবে এবং সেই লড়াই যদি আমরা করতে পারি দেশে অতি দ্রুত জনগন ঐক্যবদ্ধ হবে।”


 


গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নূর বলেন, ‘‘ আজকে তারা(সরকার) উন্নয়নের কথা বলেছে, উন্নয়নের ফানুস এখন ফুটো হয়ে গেছে। গতকালকে পত্রিকায় এসেছে বিএসএমএমইউ‘র একটা গবেষণা করে দেখিয়েছে দেশের ১২% জেলায় এবং ৫৯% উপজেলায় এক্সরের সুবিধাটা নাই, ৪২% উপজেলায় রক্ত পরিসঞ্চালন সেবা নাই। তাহলে এই উন্নয়ন দিয়ে কি হবে যেখানে আমাদের জনগন জেলা-উপজেলা পর্যায়ে চিকিতসা পায় না, যেখানে আমাদের দেশের তরুনদের কর্মসংস্থান নাই, আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা বেকার উতপাদনের কারখানা সেখানে এই উন্নয়ন দিয়ে কি হবে?”


 


‘‘ আজকে মুক্তিযুদ্ধের কথা বলে আওয়ামী লীগ উল্টোপথে চলছে। তাদের কাছ থেকে এদেশের মানুষের অধিকার আজকে আমাদেরকে ফিরিয়ে আনতে হবে। এই সরকারকে হটাতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।”


  


নাগরিক ঐকের মাহমুদুর রহমান মান্নার সভাপতিত্বে ও মোমিনুল ইসলামের সঞ্চলনায় সমাবেশে বাংলাদেশ ভাসানী পরিষদের শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, হাবিবুর রহমান রিজু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের হাসিব উদ্দিন হাসান, জেএসডির শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, সিরাজ মিয়া, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার, গণসংহতি আন্দোলনের আবুল হাসান রুবেল, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির আকবর খান, গণঅধিকার পরিষদের রাশেদ খান প্রমূখ নেতারা বক্তব্য রাখেন।


 


‘গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য’


 


জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সকালে বিক্ষোভ সমাবেশের একই কর্মসূচি পালন করে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য।


 


বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের(মার্কবাদী-লেলিনবাদী)সাধারণ সম্পাদক গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের হারুন চৌধুরী, সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টির আহ্বায়ক কমরেড আবুল কালাম আজাদ, সমাজতান্ত্রিক মজদুর পার্টির সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম ও প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দলের হারুন আল রশিদ বক্তব্য রাখেন।


 


পরে তারা বিক্ষোভ মিছিল করে কর্মসূচির সমাপ্তি টানে।


 





শেয়ার করুন