২০ এপ্রিল ২০১২, শনিবার, ০২:১৮:০০ অপরাহ্ন


গণতন্ত্র ফেরানোর আন্দোলন-- জনগনকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান মির্জা ফখরুলের
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৬-০৩-২০২৩
গণতন্ত্র ফেরানোর আন্দোলন-- জনগনকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান মির্জা ফখরুলের


গণতন্ত্রকে নির্বাসিত করে সরকার দেশে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার চক্রান্ত করছে বলে অভিযোগ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রোববার সকালে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে পুস্পমাল্য অর্পনের পর বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ‘‘ আজকে দুর্ভাগ্য আমাদের ১৯৭১ সালে ৫১ বছর আগে যে মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে দেশ স্বাধীন হয়েছিলো সেই আশা-আকাংখা যা ছিলো আমাদের মানুষের যে সত্যিকার অর্থেই একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণ করা। সেই গণতন্ত্র আজকে সম্পূর্ণভাবে নির্বাসিত হয়েছে এবং গণতন্ত্রের অধিকারগুলো কেড়ে নেয়া হয়েছে। আজকে বাংলাদেশের মানুষের ভোটের অধিকার নেই, কথা বলার অধিকার নেই, লেখার অধিকার অধিকার নেই। মোট একথায় গণতান্ত্রিক কোনো অধিকার নেই।আজকে সুপরিকল্পিতভাবে রাষ্ট্রের সমস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভেঙে ফেলা হয়েছে। আজকে নির্বাচনে সমস্ত ব্যবস্থাকে ধবংস করে দিয়ে এক দলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করবার একটা হীন চক্রান্ত নিয়ে এই আওয়ামী লীগ তারা আজকে ফ্যাসিবাদী প্রতিষ্ঠা করে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা বাকশাল প্রতিষ্ঠা করতে চলেছে।”


এই অবস্থা থেকে উত্তরণে গণতন্ত্র ফেরানোর আন্দোলনের জনগনকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ আজকে বাংলাদেশের মানুষ জেগে উঠেছে, বাংলাদেশের মানুষ আজগে গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করবার জন্য, তাদের অধিকারকে ফিরে পাবার জন্য, তাদের ভোটের অধিকারকে ফিরে পাবার জন্য এবং শান্তিতে বসবাস করবার জন্য আজকে তারা আন্দোলন শুরু করেছে সারা দেশে। আপনারা সবাই সবাই লক্ষ্য করছেন যে, দ্রব্যমূল্য এতো বৃদ্ধি পেয়েছে, তেল-গ্যাস-বিদ্যুতের দাম এতো বৃদ্ধি হয়েছে এই অবস্থার প্রেক্ষিতে এই সরকার শুধুমাত্র নিজেদের দুর্নীতিকে বহাল রাখার জন্যে নজিরবিহীন দুর্নীতি করছে, ক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখার জন্য তারা গুম-খুন-অন্যায় অত্যাচারের মধ্য দিয়ে মানুষের অধিকারগুলোকে কেড়ে নিয়েছি।



মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে আমরা শপথ নিয়েছি বিএনপি গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করবার জন্যে গণতন্ত্রের মাতা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবার জন্য, আমাদের নেতা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনবার জন্যে এবং একই সঙ্গে ৩৫ লক্ষ মানুষের বিরুদ্ধে যে মিথ্যা মামলা রেেয়্ছ সেই মামলাগুলো প্রত্যাহার ও সর্বোপরি এই সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্ত এবং একটা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে নতুন নির্বাচনের ব্যবস্থা ও নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করাসহ ১০ দফা দাবি ও ২৭ দফা রাষ্ট্র সংস্কারের আন্দোলন করে পরিবর্তন আনব।”



মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বিএনপির পক্ষ থেকে, খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে, তারেক রহমানের পক্ষ থেকে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান বিএনপি মহাসচিব।


‘সাভার স্মৃতি সৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন’


প্রথমে সকালে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে নেতা-কর্মীরা সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে  পুস্পস্তবক অর্পন করেন। পুস্তবক অর্পনের পরে মূলবেদীর সামনে কিছুক্ষন নিবর দাঁড়িয়ে নেতৃবৃন্দ মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।


সেখানে সাংবাদিকদের বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘‘ ৫১ বছর আগে আমাদের জাতীয়তাবাদী দলের নেতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ঘোষণার মাধ্যমে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হয়েছিল। দীর্ঘ নয় মাস রক্তাক্ত সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছিল। আমরা যখন জিয়াউর রহমানের ঘোষণার মাধ্যেম স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলাম তখন আমাদের স্বপ্ন ছিল, আশা আকাঙ্ক্ষা ছিল একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণের। দুর্ভাগ্য আমাদের আজকে ৫১ বছর পরেও গণতন্ত্রের জন্য মানুষকে প্রাণ দিতে হচ্ছে, সংগ্রাম করতে হচ্ছে, লড়াই করতে হচ্ছে। আমাদের কথা বলার অধিকার, ভোটের অধিকার আজকে হারিয়ে গেছে, সাংবাদিকদের সত্য কথা লিখার অধিকার হারিয়ে গেছে। দেশে প্রকৃতপক্ষে একটি কর্তৃত্ববাদী ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা পেয়েছে।”


ঢাকা জেলা, যুব দল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দল, ছাত্র দলসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের কয়েক হাজার নেতা-কর্মী নিয়ে জাতীয় স্মৃতি সৌধে বিএনপি শ্রদ্ধা নিবেদন করে।


সাভার থেকে সকাল ১০টায় বিএনপি মহাসচিব দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খানকে নিয়ে শেরে বাংলা নগরে জিয়ার সমাধিস্থলে আসেন। প্রয়াত নেতার কবরে পুস্পমাল্য অর্পন করে শ্রদ্ধা জানান এবং নেতার আত্মার মাগফেরাত কামনা করে ফাতেহা পাঠ করেন।


এ সময়ে দলের ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর, এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, জয়নুল আবদিন ফারুক, যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকন, খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, কেন্দ্রীয় নেতা শ্যামা ওবায়েদ, মীর নেওয়াজ আলী, শামীমুর রহমান শামীম, নাজিম উদ্দিন আলম, তাইফুল ইসলাম টিপু, মহানগরের আমিনুল হক, মহিলা দলের আফরোজা আব্বাস, সুলতানা আহমেদ, হেলেন জেরিন খান, যুব দলের সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, শফিকুল ইসলাম মিল্টন, মতস্যজীবী দলের রফিকুল ইসলাম মাহত্বা, আবদুর রহিম, উলামা দলের শাহ নেছারুল হক, নজরুল ইসলাম তালুকদার, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাদেক আহমেদ খান এবং সম্মিলিন পেশাজীবী পরিষদের কাদের গণি চৌধুরী, অধ্যাপক লুতফর রহমান, অধ্যাপক শামসুল আলম, অধ্যাপক নুরুল ইসলামসহ পেশাজীবী নেতা উপস্থিত ছিলেন।





শেয়ার করুন