২৭ এপ্রিল ২০১২, শনিবার, ০৪:০৯:৪৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ইউরোপে ভারতীয় ৫২৭ পণ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারি উপাদন শনাক্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি বিএনপির আন্দোলন ঠেকানোই ক্ষমতাসীনদের প্রধান চ্যালেঞ্জ বিএনপিকে মাঠে ফেরাচ্ছে আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে অদৃশ্য চাপে বিএনপি


ভারতও ইসরায়েলকে সমর্থন করে : অধ্যাপক সিরাজুল
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৭-০৩-২০২৪
ভারতও ইসরায়েলকে সমর্থন করে : অধ্যাপক সিরাজুল বক্তব্য রাখছেন অপ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী


প্যালেস্টাইন সংহতি কমিটি, বাংলাদেশের উদ্যোগে ২৫ মার্চ ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে সংঘটিত গণহত্যার ঘটনা স্মরণ করে প্যালেস্টাইনে যে গণহত্যা ইসরায়েল কর্তৃক সংঘটিত হচ্ছে তার প্রতিবাদে আগারগাওয়ের জাতিসংঘ চত্বরে এক প্রতিবাদ সমাবেশ ও জাতিসংঘের আঞ্চলিক দপ্তরে স্মারকলিপি প্রদানের কর্মসূচি পালিত হয়। এই সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন প্যালেস্টাইন সংহতি কমিটি, বাংলাদেশের আহবায়ক ইমিরেটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চোধুরী। সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা: হারুণ অর রশীদ। এছাড়া সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আব্দুলাহেল কাফি রতন। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবীর জাহেদ, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, বাসদ (মার্কসবাদী)’র কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের সদস্য রাশেদ শাহরিয়ার, বাংলাদেশের সাম্যবাদী আন্দোলনের বেলাল চৌধুরী, ঐক্য ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ তারেক, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির শহীদুল ইসলাম সবুজ, নয়া গণতান্ত্রিক গণমোর্চার জাফর হোসেন, গণমুক্তি ইউনিয়নের নাসিরুদ্দিন নাসু এবং নতুন দিগন্ত পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক মাযহারুল ইসলাম বাবলা।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চোধুরী বলেন, আমরা গণহত্যা দেখেছি। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ আমাদের দেশে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী গণহত্যা করেছিল। তার চাইতেও ভয়াবহভাবে প্যালেস্টাইনকে একটা অবরুদ্ধ কারাগারে পরিণত করে সেই কারাগারে গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। আমরা জাতিসংঘ থেকে ইসরায়েলের বহিষ্কার দাবি করেছি। জাতিসংঘ যে উদ্দেশ্য নিয়ে গঠিত হয়েছিল তা পালন করতে তারা ব্যর্থ হয়েছে। জাতিসংঘ এখন রাষ্ট্রসংঘে পরিণত হয়েছে। আর এই রাষ্ট্রগুলো সাম্রাজ্যবাদী-পুঁজিবাদী। ফলে তারাই এর নীতি নির্ধারণ করে থাকে। ফলে এমন গণহত্যা চললেও জাতিসংঘ নীরব ভূমিকা নিয়ে আছে। হিটলার যেভাবে গণহত্যা চালিয়েছিল সেভাবেই আজকে ইসরায়েলের নেতানিয়াহু একই ভূমিকায় নেমেছে। প্যালেস্টাইনে যা হচ্ছে এটা কোন যুদ্ধ নয়, ধর্মযুদ্ধ তো নয়ই এটা নৃশংস, নির্মম গণহত্যা। সেই গণহত্যার বিরুদ্ধে আজকে আমরা প্রতিবাদ করছি, সারা বিশ্বজুড়েই প্রতিবাদ হচ্ছে। জাতিসংঘের মহাসচিব বলছেন, পৃথিবীর ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে চলে যাচ্ছে। যুদ্ধ, মাদক-অস্ত্র ব্যবসা, মহামারী ইত্যাদি নানা কারণে। কিন্তু আসল যে কারণ তা হচ্ছে পুঁজিবাদ। প্যালেস্টাইনে যে গণহত্যা চলছে তারও গভীরে গেলে আমরা দেখবো যে পুজিবাদই এই সংকটের মূল কারণ। আজকে আমরা যে স্মারকলিপি পেশ করব সেটা শুধু আমাদের বক্তব্য নয়, এটা গোটা দুনিয়ার মানুষের কথা। আমেরিকার যে তরুণ বৈমানিক নিজের শরীর আগুন দিয়ে এই গণহত্যার প্রতিবাদ করেছেন এটা তারও কথা। আমরা অবিলম্বে এই গণহত্যাকারী ফ্যাসিস্ট ইসরায়েলকে জাতিসংঘ থেকে এবং এর সকল সংস্থা থেকে বহিস্কার দাবি করছি। মানুষ এবং মনুষ্যত্বের পক্ষে অবস্থান নিয়েই আমরা আমাদের এই দাবি করছি।

অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, ইসরায়েল সকল আন্তর্জাতিক রীতিনীতি, মানবাধিকার ও আইনকে তোয়াক্কা না করে অবিশ্যাস্য কায়দায় প্যালেস্টাইনে বর্বর গণহত্য্যা চালাচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, অস্ট্রেলিয়া এমনকি আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতও ইসরায়েলকে সমর্থন করে চলায় ইসরায়েল এই ঔদ্ধত্য দেখাতে পারছে। গাজার নিরস্ত্র মানুষের উপর সশস্ত্র ইসরায়েলি বাহিনী যে আক্রমণ করছে তার মধ্যে নিহত মানুষদের অধিকাংশই হচ্ছে নারী ও শিশু। ৭ অক্টোবর থেকে এই দফায় গণহত্যা শুরু হওয়ার পর থেকে মার্কিন ও ইউরোপীয় অস্ত্র কোম্পানীগুলো বিপুল মুনাফা করছে। এরা ইসরায়েলকে অস্ত্র ও অর্থ দিয়ে সহযোগিতা করছে। একাত্তর সালের ২৫শে মার্চ বাংলাদেশে যে গণহত্যা হয়েছিল আজকে প্যালেস্টাইনে এই গণহত্যার পিছনেও একই দৃষ্টিভঙ্গি, মতাদর্শ ও একই রাজনীতি পৃষ্ঠপোষকতা করে যাচ্ছে। তাই এই গণহত্যা, নির্যাতন-নিপীড়নের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো পৃথিবীর সকল দেশের সকল মানুষের কর্তব্য। এই গণহত্যার প্রধান পৃষ্ঠপোষক হচ্ছে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ। এই মার্কিন সাম্রাজ্যবাদকেও একদিন যুদ্ধাপরাধী হিসেবে একদিন কাঠগড়ায় দাড়াতে হবে। যুদ্ধাপরাধী হিসেবে ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের সম্মুখীন করতে হবে এবং তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার দাবি আমরা এই সমাবেশ থেকে জানাই। আমরা গত ২৯ ডিসেম্বর প্যালেস্টাইনের স্বাধীনতা ও ইসরায়েলি দখলদারীত্ব ও গণহত্যা বন্ধের দাবিতে সমাবেশ করেছি। সারা দুনিয়ার মানুষ এই গণহত্যার বিরুদ্ধে সোচ্চার। তাই জাতিসংঘের প্রতিও বলতে চাই সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলোর প্রতিনিধি না হয়ে এই প্রতিবাদী মানুষের সাথে একাত্ম হোন। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন। প্যালেস্টাইনে অবিরামভাবে যাদের হত্যা করা হচ্ছে সেই শিশু এবং নারীদের স্মরণ করে বাংলাদেশের শিশু এবং নারীদের সংহতি সমাবেশ আগামী ২৬ এপ্রিল শাহবাগে বিকেল ৪টার সময় অনুষ্ঠিত হবে বলেও তিনি জানান।

শেয়ার করুন