২০ এপ্রিল ২০১২, শনিবার, ০৭:৩২:৪৬ অপরাহ্ন


মেয়র ফারুকুল হককে সার্বজনীন সংবর্ধনা
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৩-০৫-২০২৩
মেয়র ফারুকুল হককে সার্বজনীন সংবর্ধনা মেয়র ফারুকুল হককে ফুলেল অভ্যর্থনা


বিয়ানীবাজার পৌর সভার নির্বাচিত মেয়র ফারুকুল হক বলেন, আপনারা আমাকে আমেরিকা থেকে দেশে প্রেরণ করেছিলেন পৌর সভার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য। আমি দলীয় মনোনয়ন না পেলেও  আপনাদের  সাহায্য ও সহযোগিতায় আমি নির্বাচনে  জয়লাভ করে  মেয়র হয়েছি। মেয়র নির্বাচিত হয়ে গত আট মাসে  কি  কাজ করেছি। তা বলার জন্য আমি প্রথমে এখানে এসেছি। গত ১ মে  ওজনপার্কের দেশী সিনিয়র সেন্টারে প্রবাসী বিয়ানীবাজারবাসী আয়োজিত সার্বজনীন সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানে সম্বর্ধিত বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজের সাবেক জিএস নব নির্বাচিত মেয়র ফারুকুল হক এ কথা বলেন। সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক মোহাম্মদ আবুল কালাম এবং পরিচালনা করেন অনুষ্ঠানের যুগ্ম সদস্য সচিব ইফজাল আহমদ। তাকে সহযোগিতা করেন সদস্য সচিব ডাক্তার মাহফুজুর রহমান খালেদ।

মেয়র ফারুকুল হক বক্তব্যে বলেন, বিয়ানীবাজার পৌর সভা ২০০১ সালে গঠিত  হয়। আমি ২য় নির্বাচিত পৌর মেয়র। পৌর সভার কাজ  নিয়ে  মেয়র ফারুকুল হক বলেন, পৌর সভার কাজ হয়  পৌর সভার ট্যাক্সের টাকায়। বড় প্রকল্পের কাজের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়  থেকে  বরাদ্দ পেয়ে তবে কাজ করতে  হয়। তবুও দায়িত্ব গ্রহণের পর পৌর সভার ট্যাক্সের টাকা  দিয়ে  অগ্রাধিকারেরভিত্তিতে সমন্বয় করে কাজ করে যাচ্ছি। তিনি বলেন, দায়িত্ব নেওয়ার পর বিয়ানীবাজার বন্যায় আক্রান্ত  হয়। আমি ৫টি বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রে মানুষকে আশ্রয়ের ব্যবস্থা করি এবং তাদের সাহায্য করি। এটা সব সম্ভব হয়েছে আপনাদের সাহায্য ও সহযোগিতার জন্য। ফারুকুল হক বলেন, আজকে  এ অনুষ্ঠান প্রমাণ করেছে  ও আপনাদের আলোচনায়  প্রাধান্য পেয়েছে। আপনারা আমেরিকার মত দেশে থেকেও এলাকার খবর রাখেন কিন্তু দেশে থেকেও অনেকে খবর রাখেন না। মেয়র বলেন, দায়িত্ব গ্রহণের পর  দেখা যায় অনেকেই ১৭ বছর/ ৫ বছর ট্যাক্স  দেননি।  আমি  সভার সাথে আলাপ করে  সবাইকে ট্যাক্স দেয়ার জন্য উৎসাহিত করেছি। সবাই ট্যাক্স দিচ্ছে। গত ৮ মাসে প্রায়  ৩ কোটি টাকা ট্র্যাক্স আদায় হয়। তারমধ্যে ৪৫ লক্ষ টাকা  রাজস্ব ঋণ শোধ করা  হয়। পৌর উন্নয়নের কাজ নিয়ে তিনি বলেন, পৌর সভার মানুষের দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন পৌর শৌচাগার। ইতিমধ্যেই  কলেজ রোডের পাশে ২ শতক জমির উপর পুরুষ ও মহিলাদের জন্য পৌর  শৌচাগার নির্মিত  হয়েছে। একজন লোক  সার্বক্ষণিক থাকে। ২টি  শৌচাগারের জন্য  জমি অধিগ্রহণ করার কাজ  চলছে। অপর দিকে ১০ লক্ষ  টাকা খরচ করে  সবজী  বাজার  মাছ বাজার স্থানান্তরিত করা  হয়েছে। মানুষ জন  স্বাচ্ছন্দে বাজার  করছেন। বিশেষ  করে  মহিলারা। সবজী ও মাছ বাজার স্থানান্তরিত হওয়ার ফলে ২ টি কাজ এক  সাথে  হলো। একটি  হলো- যেখানে সেখানে সব্জি নিয়ে বসা বন্ধ হলো এবং যানজট মুক্ত হলো। সে  সাথে ট্যাক্স আদায় করে  পৌর উন্নয়নের কাজ হবে ট্যাক্সের টাকা  থেকে। পানি নিষ্কাশনের কাজ  সড়ক ও জনপথ বিভাগের। পূর্বে  যে  সমস্ত কালভার্ট  তৈরি  করা হয়েছিল, সব কালভার্ট  মাটির নিচে  চলে  গেছে। পরিষ্কার করা হয় না। পানি  নিষ্কাশনের অভাবে জলাবদ্ধতা  দেখা  দেয়। কালভার্ট  সংস্কার প্রয়োজন। এ সব কালভার্ট নতুন করে পুন:স্থাপন করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। জলাবদ্ধতা মুক্ত করার জন্য কলেজ রোড, ফতেপুর ও খাসার মধ্য দিয়ে  ড্রেন দিয়ে  পানি  নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে  হবে। এ জন্য অনেক টাকার দরকার। আমাদের সাবেক শিক্ষা  মন্ত্রী ও বর্তমান এমপি স্থানীয় সরকারের মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নুরুল ইসলাম নাহিদের সাথে আলাপ করেছি। এবং প্রকল্পও দিয়েছি। টাকা  বরাদ্দ হলে কাজ আরম্ভ করব। তখন জলা বদ্ধতা  থাকবে না। ফারুকুল হক বলেন, পৌর সভার বড় প্রকল্পের কাজ করার জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন। অর্থ পাওয়া গেলে  কাজ করে  পৌরসভাকে সুন্দর শহর গড়ে তোলা  হবে। মেয়র বলেন, আমার দায়িত্ব গ্রহণের এখনও  ১ বছর  হয়নি। আমি  স্বচ্ছ ও জবাবদীহীতায় বিশ্বাস করি। সে লক্ষ্যেই  কাজ করে. যাচ্ছি। পরিশেষে  সংবধর্নার আয়োজকদের ধন্যবাদ জ্ঞাপনের  সাথে সাথে  সকলের সহযোগিতার পাশা পাশি  করোনায় আক্রান্ত হয়ে পরিবারের বড় ভাই আব্দুল হক উতুলের কথা স্মরণ করেন এবং  মেয়র হওয়ার পেছনে বাকি সব ভাইদের অকুন্ঠ অবদানের কথা উল্লেখ করে আবেগ আপ্লুত হয়ে যান। 

বক্তব্য রাখেন প্রধান অতিথি বিভাগীয় প্রধান আর্জেন্ট কেয়ার  লিংকন  মেডিকেল সেন্টার ব্রঙ্কস, জালালাবাদ এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি আজমল হোসেন কুনু, বর্তমান  সভাপতি বদরুল হোসেন খান, বিয়ানীবাজার সমিতির সভাপতি আব্দুল মান্নান, সেক্রেটারী নাজমুল হক মাহবুব, বিয়ানীবাজার সমিতির সাবেক  সভাপতি আজিমুর রহমান বুরহান, বিয়ানীবাজার সমিতির উপদেষ্টা হাজী  সামছুল ইসলাম, বিয়ানীবাজার সমিতির সাবেক  সভাপতি বুরহান উদ্দীন কপিল, মোস্তফা কামাল, মাসুদুল হক ছানু, বিয়ানীবাজার সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিছবাহ আহমদ, প্রগেসিভ ফোরাম ইউএস এর সাধারণ সম্পাদক  গোলাম মর্তুজা, আব্দুল কুদ্দুস টিটো, বিয়ানীবাজার সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমদ, ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার, মাথিউরা ইউনিয়ন সামাজিক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কমর উদ্দীন, সাইদুর রব জামাল, জহির উদ্দীন জুয়েল, বিয়ানীবাজার সমিতির কোষাধ্যক্ষ আব্দুল হান্নান দুখু, রেজাউল আলম অপু, বেলাল আহমদ, ফয়সল আহমদ। মেয়র ফারুকুল হককে আয়োজকদের  পক্ষ  থেকে ক্রেস্ট ও  ফুলেল শুভেচ্ছা প্রদান করা  হয়। সভার প্রারম্ভে পবিত্র কোরআন পাঠ করেন ফুলতলি জামে মসজিদের সহকারী ইমাম হাজী  সুফিয়ান। বক্তব্যের প্রথমে স্বাগত  বক্তব্য প্রদান করেন, বাংলাদেশ সোসাইটির প্রচার সম্পাদক রিজু মোহাম্মদ। সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানের সভাপতি ও আহ্বায়ক আবুল কালাম সকলকে  ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে  সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

শেয়ার করুন