২৮ এপ্রিল ২০১২, রবিবার, ০২:৪৬:৪৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জের, বিএনপির বহিস্কার ৭৬ থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান ‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়


বন্যপ্রাণির লাল তালিকা দীর্ঘায়িত হচ্ছে
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ০১-০২-২০২৩
বন্যপ্রাণির লাল তালিকা দীর্ঘায়িত হচ্ছে প্রাণিবিজ্ঞান সমিতির জাতীয় সম্মেলনে পুরস্কার বিতরণ


ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব ন্যাচার (আইইউসিএন) ২০১২ সাল পর্যন্ত পৃথিবীতে প্রায় ৬৪ হাজার প্রজাতির প্রাণির বর্তমান অবস্থা মূল্যায়ন করেছে। এর মধ্যে অনেক প্রাণি মহাবিপন্ন, বিপন্ন ও সংকটাপন্ন প্রাণির তালিকায় আছে। পৃথিবীতে বন্যপ্রাণি ও দেহাবশেষ পাচারের পরিমাণ মাদকদ্রব্য, অস্ত্র ও সোনা চোরাচালান একই পর্যায়ে চিহ্নিত হয়েছে। আইভরির জন্য দাঁতাল হাতি ও গন্ডার মারা হচ্ছে। চামড়া ও হাড়ের জন্য বাঘ মারা হচ্ছে। মাংসের জন্য হরিণ ও পাখি মারা হচ্ছে। আর এতে করে বন্যপ্রাণির লাল তালিকা দীর্ঘায়িত হচ্ছে। 

বাংলাদেশ প্রাণিবিজ্ঞান সমিতির ২৩তম জাতীয় সম্মেলন ২০২২ এ এসব তথ্য উঠে আসে। এতে আরো বলা হয়, বাংলাদেশ এক সময় বন্যপ্রাণির স্বর্গরাজ্য ছিল। সাম্প্রতিক জরিপে দেখা যায়, বাংলাদেশে বর্তমানে ৬৪টি উভচর, ১৭১ সরীসৃপ, ৬৯০টি পাখি ও ১৩৮টি স্তন্যপায়ী প্রাণি রয়েছে। আইইউসিএনের ২০১৫ সালে প্রতিবেদনে দেখা যায়, গত শতবর্ষেও ব্যবধানে আমাদের দেশ থেকে ৩১ প্রজাতির বন্যপ্রাণি বিলুপ্ত হয়েছে। বিলুপ্ত বন্যপ্রাণির তালিকায় রয়েছে গন্ডার, বারশিংগা, দাগি হায়েনা, বনগরু, কৃষ্ণ ষাড়, ধূসর নেকড়ে বাঘ, নীল গাই, শ্বেত ভল্লুক, বুনো মহিষ, মিঠা পানির কুমির, ময়ূর, বাদি হাঁস, সারস, রাজ শকুন ও পেলিকান ইত্যাদি। 

আলোচনায় উঠে আসে বন্যপ্রাণির প্রাকৃতিক বাসস্থান অরণ্য। কিন্তু বর্তমানে আধুনিক মানুষ গ্রাম ও শহরের সীমা প্রসারের চেষ্টায় এবং চাষোপযোগী জমি বাড়াবার নেশায় অপরিকল্পিতভাবে বৃক্ষ কর্তন করে অরণ্যকে করে তুলেছে বন্যপ্রাণি বাসের অনুপযোগী। ছোট ছোট বন ও বনভূমি কেটে শস্যক্ষেত্র, রাস্তাঘাট, কলকারখানা গড়ে উঠেছে। এছাড়া কম পরিশ্রমে বেশি উপার্জনের নেশায় মেতে উঠেছে একশ্রেণির মানুষ। বন্যপ্রাণিদের তারা যথেচ্ছভাবে হত্যা করে চলেছে। বনের মধ্যে দিয়ে অনিয়ন্ত্রিতভাবে রাস্তাঘাট নির্মাণ হচ্ছে। 

এতে আরো বলা হয় সুন্দরবনে বাঘ ও হরিণের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়েছে। বাঘের চামড়ার ভালো বাজার দর থাকায় শিকারীরা চোরাপথে বনের বাঘ শিকার করে থাকে। চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহ অঞ্চলে হাতির দল খাদ্যের অভাবে লোকালয়ে হানা দিচ্ছে বারবার। মানুষ-হাতি দ্বন্দ্বের কারণে প্রতি বছর প্রাণহানির ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিনেট ভবনে ২৮ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয়েছে সমিতির জাতীয় সম্মেলন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রেলমন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজন এমপি। বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রধান বনসংরক্ষক আমীর হোসাইন চৌধুরী। এসিআই অ্যাগ্রো বিজনেস লি.-এর প্রেসিডেন্ট ড. এফ এইচ আনসেরী এবং ডিপ সি ফিশার’স গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এনাম আহমেদ চৌধুরী। এছাড়া অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের সভাপতি মুকিত মজুমদার বাবু। সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান। এ সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল ‘জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ : বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট’ এবং প্রতিপাদ্য বিষয়ে উপস্থাপনা করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ড. মোস্তফা ফিরোজ। এতে প্রায় পাঁচ শতাধিক প্রাণিবিজ্ঞানী অংশগ্রহণ করে।

রেলমন্ত্রী বলেন, অপরিকল্পিতভাবে বন ধ্বংস না করে বন্যপ্রাণিদের উপযোগী বনায়ন তৈরি করা আমাদের কর্তব্য। তিনি বলেন, একসময় বন্যপ্রাণিদের হত্যা করা হতো। হরিণ, বাঘের চামড়ার চড়াদামের কারণে কিছু অসাধু ব্যক্তি বন্যপ্রাণি শিকার করে ইকোসিস্টেমকে হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে। এ বিষয়ে বনবিভাগের পাশাপাশি সাধারণ মানুষকেও সতর্ক থাকবে হবে।

ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে প্রাণিকুলের আবাসস্থল সংরক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর কার্যকর ভূমিকা পালনের জন্য গবেষকদের প্রায়োগিক দিক খেয়াল রাখতে হবে। জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে নীতিমালা প্রণয়নের ক্ষেত্রে এ পদক্ষেপ সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

শেয়ার করুন