২৮ এপ্রিল ২০১২, রবিবার, ৬:২২:২০ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জের, বিএনপির বহিস্কার ৭৬ থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান ‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়


প্রধানমন্ত্রী অনর্গল মিথ্যা কথা বলেছেন : রিজভী
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ০১-১১-২০২৩
প্রধানমন্ত্রী অনর্গল মিথ্যা কথা বলেছেন : রিজভী রুহুল কবীর রিজভী


গত ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশের ঘটনা প্রবাহ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী যে বক্তব্যে রেখেছেন তা ‘মিথ্যা ধারাবর্ষণ’ বলে মন্তব্য করেছেন রুহুল কবির রিজভী। গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনের পর এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, আজকে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।এটা নিছকই তিনি (প্রধানমন্ত্রী) একটা মিথ্যা অনর্গল ধারাবর্ষণ দিলেন শ্রবাণের যেমন ধারাবর্ষণ হয় ঝর ঝর করে পানি পড়ে। ঠিক ঝর ঝর করে প্রধানমন্ত্রী একের পর এক মিথ্যা কথা বলে গেলেন। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলতে চাই, সেদিন (২৮ অক্টোবর) যা ঘটানো হয়েছে আজ সব কিছুই ভিডিও করা হয়েছে। মানুষের হাতে হাতে ভিডিও পাবেন। টেকনোলজির যুগে কোনো ঘটনাই কিন্তু কারো দ্বারা অরক্ষিত থাকছে না যা মানুষের অগোচরে থাকতে পারছে।”

রিজভী বলেন, আমি সরকারের লোকজনকে বলতে চাই সব কিছুর তথ্য কিন্তু আছে। মানুষের বিশাল সমাবেশ, সমাবেশের একদিক ফকিরাপুল পার হয়ে নটরডেম কলেজ পর্যন্ত, আরেক দিকে কাকরাইল মসজিদ পেরিয়ে শাহবাগের কাছে ছুঁই ছুঁই। তাহলে সেখান দিয়ে আওয়ামী লীগের ট্রাক-বাস গেলো কি করে? কারা নিয়ে গেলো? পরিকল্পিতভাবে একটি ঘটনা ঘটানোর জন্য সরকার এবং সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এই কাজ করিয়েছে যেন যাওয়ার সময়ে উত্তেজনা তৈরি করবে এবং তারপরে তাদের যে সাজানো পরিকল্পনা আছে মহাসমাবেশকে পন্ড করার তারা সমাবেশ পন্ড করবে-এটা একেবারেই পরিকল্পিত এবং সাজানো। প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ভিডিওতে এটাও পাওয়া গেছে যে, প্রধান বিচারপতির বাসভবনের যে গেইট ভাংচুর করছে তারা পুলিশের প্রোটেকশনে করছে এটা প্রধানমন্ত্রী জানেন না। এটারও কিন্তু ভিডিও ফুটেজ সব কিছুই আছে। মিডিয়ার সমস্ত আলো নিচের দিকে প্রক্ষেপিত করে, সমস্ত আলো নিচের দিকে ঠেলে নিয়ে আপনি (শেখ হাসিনা) অনর্গল মিথ্যা কথা বলেছেন। কিন্তু সত্য ঘটনা লুকিয়ে রাখা যাবে না, সকল সত্য ধারণ করা আছে, সকল সত্য উন্মোচিত হচ্ছে, সব সত্য সংরক্ষিত আছে। এখান থেকে পার পাওয়ার উপায় নেই। আপনি ধমক দিয়ে, আপনি রক্তচক্ষু দেখিয়ে, আপনার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে লেলিয়ে দিয়ে আপনি হয়ত ভয় পাইয়ে দিতে পারেন কিন্তু সবাই পাইনি, সবাই ভয় পাবে না। অনেক চুপ থাকলেও ২৮ তারিখের মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে যা কিছু হয়েছে সব কিছুই কিন্তু ধারণ করা আছে।

হাইকোটের ঈদগাহ একটি তুলে ধরে রিজভী বলেন, আজকেই যে ঘটনাটি হয়েছে, হাইকোর্টের জাতীয় ঈদগাহ মাঠের মধ্যে একটি গাড়িকে নিয়ে যেয়ে  সব ছাত্র লীগ-যুব লীগের নেতা-কর্মীরা আসে আর ডাইভার সিটে আগুন লাগালো। হাতে নাতে তো ধরা পড়লো। প্রধানমন্ত্রী কৈ এই বিষয় তো আপনি কিছুই বললেন না। এটা আপনার অগোচরে চলে গেলো কিভাবে?

‘তোয়াজ সাংবাদিক’

রিজভী বলেন, সেখানে (প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনে) কারা প্রশ্ন করেছেন? একজন আওয়ামী লীগের চুইংগাম খাওয়া সাংবাদিক প্রশ্ন করছেন না কি বক্তৃতা করছেন বুঝতে পারলাম না। তখন মনে হলো যে, আওয়ামী লীগের চুইংগাম খাওয়া, শেখ হাসিনার মনোরঞ্জন করে তিনি বক্তৃতামার্কা প্রশ্ন করেছেন। সেসব সাংবাদিক সেখানে গেছেন একজন সাংবাদিক হিসেবে সাংবাদিকতার আমি প্রশ্ন দেখলাম না। যারা প্রশ্ন করছেন, তোয়াজ করে কথা বলছেন। বেছে বেছে তোয়াজ করাদের নেয়া হয়েছে। যারা সত্য কথা বলতে পারতেন তাদের আপনি দাওয়াত করেননি। তোয়াজকারীদেও দিয়ে প্রশ্ন করিয়ে নিজের খেয়াল খুশিমতো-চারিদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রটেকশনে ওইরকম নানা অসত্য কথা বলা যায়, কিন্তু সত্যকে ঢেকে রাখতে পারবেন না।

‘যুবদলের নেতাকে নাটক’

রুহুল কবির রিজভী বলেন, যুবদলের মহানগর দক্ষিণের সদস্য সচিবকে নিয়ে, তাকে নিয়ে কত নাটকই না করছে? তার ফুটেজ ভাইরাল হচ্ছে, সব কিছু হচ্ছে। তার গায়ে একটা ড্রেস ছিলো সেটাতে প্রেস লেখা ছিলো। অজস্র গোলাগুলি হচ্ছে, স্প্রিন্টারে অসংখ্য মানুষ কান্না-কাটি করছে। সেক্ষেত্রে সে হয়ত কোনো সাংবাদিক বন্ধুর কাছ থেকে ড্রেসটা নিয়েছে স্প্রিন্টার থেকে বাঁচার জন্য। আর তাকে দিয়ে আপনারা নাটক শুরু করলেন? তাকে আগুন সন্ত্রাসী বানাতে চেয়েছে। কিন্তু কৈ সে কোথাও আগুন দিচ্ছে বা ঘটনা ঘটাচ্ছে সেটা তো আমরা এতো কিছু করার পরেও কোনো ভিডিও দেখলাম না যে, সে নিজে কোথাও আগুন দিচ্ছে, কোনো ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করছে-আপনারা একটা পরিকল্পিত নাটক সাজিয়ে মানুষের কাছে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু এদেশের মানুষ এবং আন্তর্জাতিকভাবেও সবাই জেনে গেছে এই সরকার জোর করে সুষ্ঠু ভোটকে পদদলিত করছে, নির্বাচনকে পদদলিত করেছে, গোটা জনগণকে শত্রু পক্ষ বানিয়ে জনগণকে বোঝা বানানোর প্রচেষ্টায় আজকে জোর করে ক্ষমতায় রয়েছেন-এটা সারা বিশ্ব মানুষ জানে, বাংলাদেশের মানুষ জানে। তাই মিথ্যাচার করে, নাটক সাজিয়ে, ভিডিও বানিয়ে লাভ হবে না। সত্যিকার ভিডিও মানুষের হাতে হাতে আছে সেটা সবাই দেখছে, সবাই পড়ছে।

অবরোধ কর্মসূচিতে কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরসহ বিভিন্ন স্থানে পুলিশের গুলিতে নিহত ও আহতদের ঘটনা, ক্ষমতাসীন দলের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের চিত্র তুলে ধরেন। একই সঙ্গে সরকারি দলের সন্ত্রাস এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রতিবন্ধকতার মধ্যে অবরোধ কর্মসূচিতে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের জন্য বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতা-কর্মী ও দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

শেয়ার করুন