৩০ এপ্রিল ২০১২, মঙ্গলবার, ০৭:৫৮:৫২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
‘বিশেষ চাহিদা সম্পন্নদের প্রতিভা বিকাশে কোন ধরনের প্রতিবন্ধকতা রাখা যাবে না’ সরকার ও বেসরকারি উদ্যোগে দরিদ্রমুক্ত দেশ গড়ে উঠবে - আসাদুজ্জামান খান কামাল ৭০ শতাংশ মৃত্যু অসংক্রামক রোগে, বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি ‘বিদেশে দেশবিরোধী অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় আইনে ব্যবস্থা নিন’ ভূল স্বীকার করে সরে দাড়ানোয় একজনের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার বাফেলোতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে দুই বাংলাদেশী নিহত ‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জের, বিএনপির বহিস্কার ৭৬


উত্তর আমেরিকায় ঈদুল ফিতর উদযাপন
মুসলিম সম্প্রদায়কে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে দাঁড়ানোর আহ্বান
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৭-০৪-২০২৪
মুসলিম সম্প্রদায়কে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে দাঁড়ানোর আহ্বান জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারে ঈদ জামাতে ওয়াজ করছেন মাওলানা মির্জা আবু জাফর বেগ


ধর্মীয় ভাবগম্ভীর পরিবেশ এবং যথাযোগ্য মর্যাদায় উত্তর আমেরিকায় মুসলিম সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়েছে। উত্তর আমেরিকায় চাঁদ দেখার মারপ্যাঁচে দুই দিনে রমজান শুরু হলেও একই দিনে গত ১০ এপ্রিল ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়েছে। ঈদ উপলক্ষে বিভিন্ন মসজিদে একাধিক ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। আবার আবহাওয়া ভালো থাকায় খোলা আকাশের নিচে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসব ঈদ জামাতে হাজার হাজার মুসল্লি অংশগ্রহণ করেছে। স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকার কারণে বাবা-মায়ের সঙ্গে নতুন প্রজন্মের শিশু-কিশোররাও ঈদ জামাতে অংশগ্রহণ করেন। এবারও সবচেয়ে বড় ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের উদ্যোগে। অধিকাংশ ঈদ জামাতে মূলধারার রাজনীতিবিদরা বক্তব্য রাখেন। অন্যদিকে খুতবা এবং মোনাজাতে মুসলিম সম্প্রদায়সহ সারা বিশ্বের সুখ-শান্তি এবং সমৃদ্ধি কামনা করা হয়েছে। আবার বক্তা এবং ইমামরা ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি হামলার নিন্দা জানিয়ে যুদ্ধ বন্ধ করে মানবতার পক্ষে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন। আবার ফিলিস্তিনিদের পক্ষে দাঁড়ানোর জন্য মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে ঈদের বিশেষ মোনাজাতে ফিলিস্তিনিদের ওপর আল্লাহর রহমত কামনা করা হয়।

দারুস সালাম মসজিদ

জ্যামাইকার দারুস সালাম মসজিদে ঈদের চারটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রথম জামাত সকাল ৭টা ৩০ মিনিটে, দ্বিতীয় জামাত সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে, তৃতীয় জামাত সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে এবং শেষ জামাত সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে। প্রতিটি জামাতে জামাতেই ছিল মুসল্লিদের ভিড়। প্রথম জামাত ব্যতীত অন্য তিনটি জামাতে মহিলাদের নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা করা হয়। স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় নতুন প্রজন্মের শিশু-কিশোরদের উপস্থিতিও ছিল লক্ষণীয়। প্রতিটি জামাতে ফিলিস্তিনি মুসলিমসহ সারা বিশ্বের সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ দোয়া করা হয়। প্রথম জামাতে ইমামতি করেন মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা আব্দুল মুকিত। দ্বিতীয় জামাতে ইমামতি করেন হাফেজ আশরাফ আহমেদ, তৃতীয় জামাতে মাওলানা মোহাম্মদ আলী এবং চতুর্থ জামাতে হাফেজ মাওলানা মইনুল ইসলাম।

জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টার 

ধর্মীয় ভাবগম্ভীর পরিবেশে ফিলিস্তিনসহ মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনায় উত্তর আমেরিকায় গত ১০ এপ্রিল বুধবার পবিত্র ঈদুল ফিতর পালিত হয়েছে। উত্তর আমেরিকার মধ্যে নিউইয়র্কের জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টার (জেএমসি) আয়োজিত ঈদেও জামাত সবেচেয়ে বড় অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে জানা গেছে। এতে সর্বস্তরের কয়েক হাজার মানুষ অংশ নেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের ধারণা। ঈদের নামাজ আদায় শেষে বিশেষ মোনাজাতে মহান আল্লাহ তায়ালার দরবারে সমগ্র মুসলিম জাহান তথা, মানব জাতির সুখ-সমৃদ্ধি কামনা করা হয়েছে। বিশেষ প্রার্থনা করা হয়েছে ফিলিস্তিনের নিপীড়িত নির্যাতিত মানুষের মুক্তির জন্য। ঈদের দিন ছিল চমৎকার আবহাওয়া। ফলে খোলা আকাশের নিচে খোলা মাঠে বা রাস্তার ওপর ঈদের নামাজ আদায়ে কোনো সমস্যা হয়নি। খবর ইউএনএ’র। 

দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর রংবেরঙের বাহারি পোশাক পরে মুসলিম কমিউনিটি ঈদের জামাত শেষে একে অন্যের সঙ্গে কোলাকুলির মাধ্যমে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এছাড়াও ফোনকল, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন প্রবাসীরা। কেউ কেউ সপরিবারে আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধবের বাসায় গিয়েও ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। 

নিউইয়র্কের বাংলাদেশি মুসলিম কমিউনিটির শীর্ষস্থানীয় ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টার (জেএমসি)-এর উদ্যোগে একটি জামাত অনুষ্ঠিত হয় বুধবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে থমাস এডিশন হাইস্কুলের খেলার মাঠে। এতে ইমামতি ও বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করেন জেএমসির খতিব ও পেশ ইমাম মির্জা আবু জাফর বেগ এবং খুতবা পাঠ করেন ইমাম শামসে আলী। এই জামাতে শিশু-কিশোর-কিশোরী আবালবৃদ্ধবণিতাসহ-সর্বস্তরের ১০ হাজার থেকে ১২ হাজার মুসল্লি অংশ নেন বলে জানা গেছে। ঈদের জামাতের আগে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন নিউইয়র্ক স্টেট সিনেটর জন সি ল্যু, স্টেট অ্যাসেম্বলিম্যান ডেভিড উয়েপ্রিন, নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল নাজমুল হুদা, নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিলম্যান জিম জিনারো ও জোহরান মামদানী, কুইন্স ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি মেলিন্ডা কার্টজ, জাজ সোমা সাঈদ, জেএমসির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ডা. নাজমুল এইচ খান, জেএমসি পরিচালনা কমিটির সভাপতি ডা. মাহমুদুর রহমান ও সেক্রেটারি আফতাব মান্নান প্রমুখ। এদিকে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে জেএমসি ভবন আলোকসজ্জা করা হয়। 

এদিকে জেএমসি আয়োজিত ঈদুল ফিতরের জামাতে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান এমপি নামাজ পড়তে এলে বিব্রত পরিস্থিতির শিকার হন। নানাজ শুরুর আগে জেএমসির পক্ষ থেকে তাকে পরিচয় এবং কিছু বলার অনুরোধ করতেই কতিপয় মুসল্লি ‘ভুয়া ভুয়া’ বলে হইচই শুরু করে এবং কেউ কেউ তার সঙ্গে সেলফি তুলতে গেলে সাকিব বিব্রতবোধ করেন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তিনি আর বক্তব্য রাখার সুযোগ পাননি। পরে তিনি ঈদের নামাজ শেষে বিশেষ মোনাজাতের সময় দ্রুত ঈদের মাঠ ত্যাগ করে চলে যান। এ সময় কেউ কেউ তার পিছু নেয় এবং ‘ভুয়া ভুয়া’ ধ্বনি তুলতে থাকে। 

অন্যদিকে আমেরিকা মুসলিম সেন্টারের (এএমসি) উদ্যোগে ঈদের পাঁচটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম তিনটি জামাত অনুষ্ঠিত হয় যথাক্রমে-সকাল ৭টা, ৮টা ও ৯টায় মসজিদ প্রাঙ্গণে এবং অন্য দুটি জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল ১০টা ও সকাল ১১টায় যথাক্রমে-মসজিদসংলগ্ন রুফস কিং পার্কে। 

জ্যামাইকার আল-আরাফাহ ইসলামিক সেন্টারের উদ্যোগে এ বছর প্রথম ঈদুল ফিতরের দুটি জামাত অনুষ্ঠিত হয় যথাক্রমে-সকাল ৭টা ও সাড়ে ৮টায় সেন্টারের নিজস্ব নতুন ভবনে (৮৮-৪৯ ১৭৯ প্লেস, জ্যামাইকা)। এই জামাতে মহিলাদেরও নামাজ পড়ার ব্যবস্থা রাখা হয়। 

হলিসউডের মসজিদ আল রায়ানের উদ্যোগে ঈদের দুটি জামাত অনুষ্ঠিত হয় যথাক্রমে-সকাল সাড়ে ৮টায় ও সকাল সাড়ে ৯টায়। এই জামাতে মহিলাদেরও নামাজ পড়ার ব্যবস্থা রাখা হয়। 

এস্টোরিয়ার আল আমিন জামে মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল সাড়ে ৮টায় ৩৬ স্ট্রিটে (৩৬ ও ৩৭ অ্যাভিনিউয়ের মধ্যে) জামাত হয়। 

জ্যাকসন হাইটসের বাংলাদেশ স্ট্রিট নামে স্বীকৃত ৭৩ স্ট্রিটের ওপর জেবিবিএর উদ্যোগে ঈদের জামাত হয়েছে সকাল সাড়ে ৮টায়। এতে বিভক্ত জেবিবিএর নেতৃবৃন্দ ও মুসলিম ব্যবসায়ীরাসহ বিপুলসংখ্যক মুসল্লি অংশ নেন। 

ম্যানহাটনের ইসলামিক কাউন্সিল অব আমেরিকা (মদিনা মসজিদ)-এর উদ্যোগে ঈদুল ফিতরের একটি জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল ৯টায় মসজিদ-সংলগ্ল ওপেন রোড পার্কে। 

ব্রুকলিনের বায়তুল জান্নাহ জামে মসজিদ অ্যান্ড মুসলিম কমিউনিটি সেন্টারের উদ্যোগে ঈদের একটি জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল সাড়ে ৮টায় ম্যাকডোনাল্ড অ্যাভিনিউতে (চার্চ অ্যাভিনিউ ও অ্যাভিনিউ সির মধ্যে)। এখানেও সর্বস্তরের শত শত মুসলিম নরনারী জামাতে অংশ নেন। 

এসব জামাতে সমগ্র মুসলিম উম্মার সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি আর ঐক্য কামনার পাশাপাশি ফিলিস্তিনসহ দেশে দেশে নিপীড়িত-নির্যাতিত জনগণের কষ্ট দূরের পাশাপাশি স্বস্তি ও শান্তি কামনা করা হয়।

ওজনপার্কে ঈদের জামাত

আল-আমান মসজিদ : সিটি লাইনের ফরবেল স্ট্রিটে অবস্থিত আল-আমান মসজিদের ঈদের জামাত স্থানীয় ডিওটি পার্কে অনুমতি না পাওয়ায় মসজিদে তিনটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম জামাত সকাল ৮টায়। ইমামতি করেন মওলানা আহমদুল হক। ২য় জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল ৯টায়। ইমামতি করেন মসজিদের ইমাম মোহাম্মদ আলী। সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত ৩য় জামাতে ইমাম ছিলেন মোহাম্মদ ফয়জী।

ফুলতলী জামে মসজিদ : ৮৪ স্ট্রিট ও ১০১ অ্যাভিনিউর ওপর অবস্থিত ফুলতলী জামে মসজিদের ঈদের জামাত স্থানীয় স্কুল-সংলগ্ন পার্কে সকাল সাড়ে ৮ বিশাল একটি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। ঈদের জামাতে ইমামতি করেন মসজিদের খতিব ইমাম মওলানা মোহাম্মদ আবদুল আলীম।

আল-ফোরকান মসজিদের ঈদের তিনটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম জামাত সকাল সাড়ে ৮টায়। নামাজে ইমাম ছিলেন মওলানা সায়ফুল ইসলাম। ২য় জামাতের হাফেজ নাইম এবং ৩য় জামাতে মওলানা সাইম ইমামতি করেন। 

জ্যাকসন হাইটসে মুনা ঈদগাহে বিশাল জামাত

নিউইয়র্কে বাংলাদেশিদের বাণিজ্যিক রাজধানীখ্যাত জ্যাকসন হাইটসে ৩৫-৩৫, ৭১ স্ট্রিটে মুনা ঈদগাহে বিশাল ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। মুনা সেন্টার অব জ্যাকসন হাইটস (মসজিদ নামিরাহ) আয়োজিত সেন্টার পাশে নিজস্ব জায়গায়, খোলা আকাশে নিচে অনুষ্ঠিত ঈদের নামাজের ইমামতি করেন কোরআন একাডেমি ফর ইয়াং স্কলারের অন্যতম পরিচালক আহমদ আবু উবায়দা। এর আগে উপস্থিত মুসল্লিদের শুভেচ্ছা জানান, সেন্টারের ইমাম সাইয়্যেদ আবু সালেহ রফিকুল্লাহ। মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মমিনুল ইসলাম মজুমদার। জামাতে আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন নিউইয়র্ক সিটি ডিস্ট্রিক্ট-২৫ কাউন্সিলম্যান শেখর কৃষ্ণান। ঈদ জামাতের সাবির্ক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন কায়কোবাদ কবির, নাসির উদ্দিন আহমেদ, ফখরুল ইসলাম মাছুম, ইকবাল মান্নান, লোকমান হোসেন, আলমগীর হোসাইন, আজগর আলী, আতাউর রহমান, আবু হক রুমি, প্রফেসর সোলায়মান, সিদ্দিকুর রহমান, হামিমুর রহমান, আরাফাত রহমান, আব্দুর রহমান, ফকির গোলাম মোস্তফা, আশরাফুল আলম মিলন, ফেরদৌস আলম, আকলিম চৌধুরী, আব্দুর রশিদ সানা, মিজানুর রহমান, আহসান খান, মো. আবু সাদেক, নূরুল ইসলাম, সাঈদ আহমেদ, আনোয়ার হোসেন, মোস্তাক আহমেদ প্রমুখ।

উল্লেখ্য, ‘জ্যাকসন হাইটস মুনা ঈদগাহে’ খোলা আকাশের নিচে এ বারই প্রথম ঈদের নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। বিপুল সংখ্যক মুসল্লিদের মধ্যে মহিলাদের জন্য নামাজের ব্যবস্থা করা হয় মসজিদে ২ ও ৩ তলায়। জামাত শেষে উপস্থিত সব মুসল্লিকে খেজুর ও সেমাই দিয়ে আপ্যায়িত করা হয়। জামাতে শিশু-কিশোরদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।

নিউইয়র্ক ঈদগাহ

নিউইয়র্কের মুসলিম কমিউনিটিকে নবী মুহম্মদের (সা.) সাহাবা, তাবিয়িন, তাবে তাবিয়িন, আয়িম্মা ও আউলিয়ায়ে কেরাম এবং জামহূর ওলামায়ে কেরাম দ্বারা প্রতিষ্ঠিত ঈদগাহ সংস্কৃতি যা ইসলামের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তাহজিব ও তমদ্দুন সংবলিত এক সংস্কৃতি, তা উপহার দেওয়ার জন্য মোহাম্মদী সেন্টার কর্তৃক ২০১১ সন থেকে প্রতিষ্ঠিত হয়ে আসার আজ ১৩ বছর। জ্যাকসন হাইটসের ডাইভারসিটি প্লাজায় এবারের ঈদুল ফিতর জামাতের পাঁচ জন ইমাম-১) শায়খ কারি ইমাম আবুল খাইর, ২) শাইখ ইমাম ফয়সল জালালী, ৩) শাইখ ইমাম কারী হাফিজ সায়্যিদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানী, ৪) শাইখ ইমাম কারী হাফিজ সায়্যিদ মুসতাঈন বিল্লাহ রব্বানী ও ৫) আয়োজক ইমাম কাজী কায়্যূম সকাল ৭টার প্রথম জামাত থেকে ১১টার ৫ম ও শেষ জামাতটি পর্যন্ত স্ট্যান্ডবাই থেকে একই সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবকের ভূমিকাও পালন করেছেন। মুসল্লিরা নতুন প্রজন্ম ও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে জ্যাকসন হাইটস ডাইভারসিটি প্লাজার নিউইয়র্ক ঈদগাহর ঈদ জামাতে অংশগ্রহণ করতে পেরে ধন্য ও আনন্দিত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন।

ব্রঙ্কসে ঈদ জামাত

ব্রঙ্কসে বাংলাবাজার জামে মসজিদের উদ্যোগে খোলা মাঠে পবিত্র ঈদুল ফিতরের বিশাল দুটি জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়। মসজিদের নিকটবর্তী খোলা মাঠে (পিএস ১০৬, ২১২০ সেইন্ট রেমন্ডস অ্যাভিনিউ, ব্রঙ্কস, নিউইয়র্ক ১০৪৬২) বুধবার সকাল সাড়ে ৮টা ও সকাল সাড়ে ৯টায় এ জামাত দুটি অনুষ্ঠিত হয়। কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গসহ বিপুল মুসল্লি এই ঈদ জামাতে অংশ নেন।

প্রথম জামায়াতে ইমামতি করেন বাংলাবাজার জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা আবুল কাশেম মোহাম্মদ ইয়াহইয়া এবং দ্বিতীয় জামায়াতে ইমামতি করেন হাফিজ বদরুল আলম।

মসজিদের সভাপতি ডা. আবদুস সবুরের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক লালন আহমেদের পরিচালনায় জামাতের পূর্বে মসজিদের সংক্ষিপ্ত আর্থিক বিবরণ তুলে ধরেন কোষাধ্যক্ষ ইকবাল হোসেন। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন উপদেষ্টা মোহাম্মদ এন মজুমদার।

মসজিদের সভাপতি ডা. আবদুস সবুর বলেন, নিউইয়র্কের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজসেবী মরহুম আলহাজ গিয়াস উদ্দিনের প্রচেষ্টায় ব্রঙ্কসে বাঙালিদের অন্যতম ব্যবসাকেন্দ্র স্টার্লিং-বাংলাবাজার এলাকায় ২০১২ সালের ভাড়াবাড়িতে বাংলাবাজার জামে মসজিদের যাত্রা শুরু হয়। পরবর্তী সময়ে মসজিদের বর্তমান নিজস্ব ভবনটি ক্রয় করা হয়। স্থান সংকুলানের অভাবে দীর্ঘদিন ধরে মসজিদে জুমার নামাজে দুটি পৃথক জামাতের আয়োজন করা হয়। তার পরও স্থান সংকুলান না হওয়ায় মুসল্লিদের বাইরে জুমার নামাজ আদায় করতে হয়। বিগত ২০২৩ সালে বাংলাবাজার জামে মসজিদের জন্য ১.৫২৫ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ে মসজিদের পার্শ্ববর্তী ৫ হাজার স্কয়ারের খালি জায়গা ১.৫২৫ মিলিয়ন ডলারে ক্রয় করা হয়। বিপুলসংখ্যক মুসল্লির একসঙ্গে নামাজ আদায়, মাদ্রাসাসহ ধর্মীয় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য মসজিদের বহুতল ভবণ নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি মসজিদের আর্থিক সহযোগিতায় এগিয়ে আসার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান।

ঈদ জামাতে সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন মসজিদের কার্যকরি কমিটির সদস্যরা। এর মধ্যে ছিলেন মসজিদ কমিটির সহ-সভাপতি মো. আহসান রাসুল নাসির, মোহাম্মদ এ হাসান ও মোহাম্মদ আবু সাঈদ, সহ-সাধারণ সম্পাদক শামিম উদ্দিন, কোষাধ্যক্ষ ইকবাল হোসেন, সহ কোষাধ্যক্ষ সোহেল চৌধুরী, কার্যকরি সদস্য মোহাম্মদ শাহজাহান, আজিজুল হক, মিজানুর রহমান, ওয়ালিউর রহমান, জাফর তালুকদার, সেবুল খান, ফারুক আহমেদ ও মো. জসিম উদ্দিন। বক্তারা বাংলাবাজার জামে মসজিদের বহুতল ভবণ নির্মানে সকলের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।

নামাজ শেষে বাংলাবাজার জামে মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আলহাজ গিয়াস উদ্দিনের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তার আত্মার মাগফিরাতসহ ফিলিস্তিনি নির্যাতিত মুসলিম, বিশ্বমানবতার কল্যাণ ও শান্তি কামনায় বিশেষ দোয়া করা হয়। 

নর্থ ব্রঙ্কস ইসলামিক সেন্টার অ্যান্ড জামে মসজিদের উদ্যোগে মসজিদ নিকটবর্তী ওভাল পার্কের খোলা মাঠে ঈদুল ফিতরের বিশাল ঈদ জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়। ১০ এপ্রিল বুধবার সকাল ৯টায় অনুষ্ঠিত এ ঈদ জামাতে বিপুল সংখ্যক মুসল্লি এই অংশ নেন।

নামাজে ইমামতি এবং ঈদুল আজহার গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন মসজিদের ইমাম ও খতিব হাফিজ মুসাদ্দেক আহমেদ।

মসজিদের সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ ইকবাল হোসাইনের পরিচালনায় নামাজের পূর্বে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন মসজিদ কমিটির সভাপতি সৈয়দ জামিন আলী, সিনিয়র সহ-সভাপতি মাওলানা সৈয়দ জুবায়ের আহমেদ, সহ-সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া শাহ, হাফিজ কামরান শাহ প্রমুখ।

নামাজ শেষে মিলাদ ও মুসলিম বিশ্বসহ সমগ্র মানবতার কল্যাণ কামনায় বিশেষ দোয়া পরিচালনা করেন হাফিজ মুসাদ্দেক আহমেদ।

সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন মসজিদ কমিটির কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ মাহবুব হুসেইন, সহ-কোষাধ্যক্ষ সৈয়দ রাহুল ইসলাম, কার্যকরি সদস্য সৈয়দ ইসতিয়াক আলী, মো. আব্দুল হক হেলাল, মো. মহি উদ্দিন, হারুনুর রশিদসহ কমিটির কর্মকর্তারা।

পার্কচেস্টার জামে মসজিদে ঈদের দুটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। জামাতে মহিলাদের নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা ছিল। প্রথম জামাতে ইমামতি করেন মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা জুবাইর রাশিদ। দ্বিতীয় জামায়াতে ইমামতি করেন মৌলভি নূরুল ইসলাম।

ব্রঙ্কস ইসলামিক কালচারাল সেন্টার মসজিদে বিলালে ইমামতি ও দোয়া পরিচালনা করেন মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা মইনুল ইসলাম।

ব্রঙ্কসের গাউসিয়া মসজিদের সামনে খোলা জায়গায় ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল ৯টায়। ঈদ জামাতে কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিসহ মুসল্লিরা অংশ নেন।

এছাড়াও নিউইয়র্ক সিটির কুইন্সের জ্যামাইকার হিলসাইড ইসলামিক সেন্টার, জ্যাকসন হাইটসের মসজিদ আবু হুরায়রা, দারুস সুন্নাহ মসজিদ, আল ফোরকান মসজিদ, ব্রুকলিনের বাংলাদেশ মুসলিম সেন্টার, আসসাফা মসজিদ, গাউসিয়া মসজিদের উদ্যোগে ঈদুল ফিতরের একাধিক জামাত অনুষ্ঠিত হয় বলে জানা গেছে। 

এছাড়া ওয়াশিংটন ডিসিসহ যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সি, কানেকটিকাট, ম্যারিল্যান্ড, পেনসিলভানিয়া, ভার্জেনিয়া, ওয়াহিও, ফ্লোরিডা, নর্থ ক্যারোলিনা, সাউথ ক্যারোলিনা, জর্জিয়া, মিশিগান, ক্যালিফোর্নিয়া, টেক্সাস, এরিজোনা প্রভৃতি স্টেটে ধর্মীয় ভাবগম্ভীর পরিবেশে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। 

শেয়ার করুন