০২ জুলাই ২০১২, মঙ্গলবার, ৬:০৭:৩০ পূর্বাহ্ন


সাবেক সেনা প্রধানকে স্যাংশন দেয়া হয়েছে, এটা জাতির লজ্জাজনক- মির্জা ফখরুল
নিজস্ব প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ২২-০৫-২০২৪
সাবেক সেনা প্রধানকে স্যাংশন দেয়া হয়েছে, এটা জাতির লজ্জাজনক- মির্জা ফখরুল মির্জা ফখরুল/ফাইল ছবি


সাবেক সেনা প্রধান জেনারেল্ আজিজ আহমেদের ওপরে যুক্তরাষ্ট্রের স্যাংশন ‘সরকারই কারণেই’ বলে মন্তব্য করেছে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বুধবার বিকালে নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘‘দেখুন কতবড় লজ্জার কথা… সাবেক সেনা প্রধানকে আমেরিকা থেকে স্যাংশন দেয়া হয়েছে। এটা জাতির জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক, শেইম।  এরজন্য দায়ী কে? এরজন্য (স্যাংশন) দায়ী তো এই সরকারই, এই শাসকগোষ্ঠি… তারা সেনাবাহিনীকে অন্যায়ভাবে ব্যবহার করার চেষ্টা করার জন্য এই ঘটনাটা ঘটেছে। আমরা আগেই বলেছি, এর জন্য দায়ী এই শাসকগোষ্ঠি এই সরকার। তারাই তাদেরকে বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করেছে।”

‘সেজন্য এদেরকে(সরকার) সরিয়ে দেয়া ছাড়া জনগনের সরকার প্রতিষ্ঠা ছাড়া কোনো বিকল্প নাই…. এটাই একমাত্র পথ।’ বলেন বিএনপি মহাসচিব।

তিনি বলেন, ‘‘ আজকে অনেকবার বলা হয়েছে বিভিন্ন জায়গায় থেকে, মিডিয়াগুলো থেকে বিশেষ করে বাইরের মিডিয়া থেকে  ্এই আজিজ(আজিজ আহমেদ)কথা। কিন্তু সরকার ব্যবস্থা গ্রহন করেনি। শুধু তাই নয়, এখনো যেটা বলছে যে, এটা নাকি রাজনৈতিক কথা-বার্তা। এভাবে দেশকে একটা জাতিকে তার মর্যাদা থেকে ধবংস করে দেয়া, তার অনারকে কেড়ে নেয়া... এটা্র অধিকার কারো নেই।”

 ‘‘ সেনাবাহিনী হচ্ছে আমাদের  একটা সবচেয়ে ভরসার স্থল, একটা প্রতিষ্ঠান। সেই সেনা বাহিনীকে সরকারের কারণে হেয় প্রতিপন্ন করা হয় সেটা কখনই এদেশের মানুষ মেনে নেবে না।”

র‌্যাবের ওপর অতীতে নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ আমরা দেখলাম র‌্যাবের যেসব কর্মকর্তার উপরে নিষেধাজ্ঞা আসলো তা থেকে তো তারা(সরকার) কোনো শিক্ষা নিলেন না। তাদের থেকে একজন পুলিশ বাহিনীর আইজি হয়ে গেলেন… এখন বোধহয় আইজি আছেন। এটার কতটুকু ইমপ্যাক্ট পড়ে এব্যাপারে আমার ধারণা নাই।”

‘‘ এজন্য নাই যে, এই ধরণের সরকারগুলো যারা গায়ের জোর করে দখল করে রাষ্ট্রকে ব্যবহার করে এই বাহিনীগুলোকে ব্যবহার করে ক্ষমতায় টিকে থাকে, যারা তাদের ক্ষমতাটাকে চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে তারা এই বাহিনীগুলোকে ব্যবহার করে। এটা বাংলাদেশের জন্য একটা চরম দুর্ভাগ্য, আনফুরচুনেট শুধু নয়, এটা লজ্জার কথা শেইম।”

অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘‘ আজকে এ্ই সরকার পরিকল্পিতভাবে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার চেষ্টা করছে। আজকে আন্তর্জাতিক বিশ্বে বাংলাদেশের যে গণতন্ত্রের সূচকে যে অবস্থানে গিয়ে পৌঁছেছে… দুর্ণীতির ব্যাপারে যে অবস্থানে পৌঁছেছে সেটা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক, দূঃখজনক… দেশের মাথা নিচু হয়ে আসে।”

‘উপজেলা ভোট: জনগনের কোনো আগ্রহ নাই’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ এই ইলেকশন(উপজেলা) নিয়ে আমি তো জনগনের মধ্যে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখি না। কেউ লক্ষ্যও করছে না কোথাও ইলেকশন হচ্ছে… এটা কোথাও দেখছি না।”

‘‘ আপনারা মিডিয়ার কিছু কিছু দেখছি প্রতিদিন এটাকে(উপজেলা নির্বাচন) বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন… ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াতেও প্রিন্টিং মিডিয়াতেও। এছাড়া জনগনের কোথাও এটা নিয়ে কথা-বার্তা নেই, কোনো আলোচনা নেই। কারণ নির্বাচনী ব্যবস্থাটার ওপরই মানুষের আস্থা চলে গেছে… এই সরকার সেটা করেছে… সাকসেসফুলি করেছে…. এই জায়গাগুলো আমাদের রিকভার করতে হবে।”

তিনি বলেন, ‘‘ আমাদের খুব কষ্ট হয় যখন দেখি, আমাদের কিছু কিছু মিডিয়া আছেন যারা সরকারের সমালোচনা করেন না… হয়ত ভয়ে করেন না অথবা বিভিন্ন কারণে করেন না। কিন্তু বিএনপির সমালোচনা করতে একেবারে সিদ্ধহস্ত। খুঁজে খুঁজে বের করছেন কোথায় কি আছে না আছে।”

‘‘ জাতির সামনে সেটা কোনো সমস্যা না, জাতির সামনে সমস্য এই সরকার, এই শাসকগোষ্ঠি। আমাদের গোটা জাতি আজকে ধবংস হয়ে যাচ্ছে, গোটা জাতির আত্মা তারা ধবংস করে দিয়েছে, এটাকে বিক্রি করে দিয়েছে… পরনির্ভরশীল দেশে নতজানু রাষ্ট্রে পরিণত হচ্ছে। আজকে গোটা জাতিকে তারা… আপনারা খুব ভালো করে জানেন, কিভাবে ঋণের বোঝা চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। তথাকথিত উন্নয়নের নামে গোটা জাতির ওপর যে ঋণের বোঝা চাপানো হচ্ছে, জিনিসপত্রের দাম যেভাবে বাড়ছে তাদের ব্যর্থতার কারণে মানুষ যাবে কোথায়?”

‘নিখোঁজ সাংসদের মৃতদেহ : সরকারের সক্ষমতা কোথায়’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ আপনারা কি এখনো এই সরকারের সক্ষমতা দেখেন আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে, নাগরিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে। বাংলাদেশের সাধারণ নাগরিক নয়, তাদের তথাকথিত একজন সংসদ সদস্য বিদেশী যেয়ে নিখোঁজ হয়ে গেলেন… তার কোনো খবর দিতে তারা পারলেন না।না পারলেন বাংলাদেশ সরকার, না পারলেন তাদের বন্ধু রাষ্ট্র ভারত। তাহলে আমরা কি মনে করব?”

‘‘ এটা একমাত্র করছে দুর্নীতি করা, টাকার পাহাড় তৈরি করা বিদেশের মাটিতে… এটাই কোনো ঘটনা কিনা আমরা জানি না।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সড়কে সাবেক সাংসদ গোলাম মাওলা রনিকে তার জীবননাশের উদ্দেশ্যে  তার গাড়িতে হামলা এবং সেগুনবাগিচায় ছাত্র দলের সাবেক সভাপতি কাজী রওনুকুল ইসলাম শ্রাবণের ওপরে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার নিন্দা জানান বিএনপি মহাসচিব।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির আবদুস সালাম, ফরহাদ হালিম ডোনার, রুহুল কবির রিজভী, মজিবুর রহমান সারোয়ার, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, আবদুস সালাম আজাদ, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, মীর সরাফত আলী সপুসহ অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।



শেয়ার করুন