০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ১০:২৯:২২ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
স্ন্যাপ সুবিধা ফিরলেও কঠোর নিয়মে বিপাকে ৪০ মিলিয়ন মানুষ মসজিদে ধারাবাহিক হামলা, উদ্বেগে মুসলিম সম্প্রদায় ফেব্রুয়ারি ১ থেকে রিয়েল আইডি ছাড়া বিমানযাত্রায় লাগবে ৪৫ ডলারের ফি নিউইয়র্কে শীতকালে ঘর গরম রাখার জন্য এনার্জি সহায়তার আবেদন শুরু দারিদ্র্যপীড়িত দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন স্থায়ীভাবে বন্ধের আহ্বান ট্রাম্পের ১৯ দেশের গ্রিনকার্ডধারীদের পুনর্মূল্যায়ন শুরু তারেকের ‘ফেরা ইস্যু’ ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে চেষ্টা বিডিআর বিদ্রোহের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কমিশন রিপোর্টে তোলপাড় রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ মর্যাদায় খালেদা জিয়া ১১ মাসে ২৮ জন বাংলাদেশী ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী কর্তৃক নিহত হয়েছে


পতিত সরকারের মামলা-হুমকি
দীর্ঘ ২০ বছর পর বিএনপির প্রবাসী নেতৃবৃন্দ দেশে যাচ্ছেন
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২১-০৮-২০২৪
দীর্ঘ ২০ বছর পর বিএনপির প্রবাসী নেতৃবৃন্দ দেশে যাচ্ছেন শেখ হাসিনার পতনের পর নিউইয়র্কে সর্বস্তরের মানুষের উল্লাস


স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা বাংলাদেশে এমনভাবে ক্ষমতায় বসেছিলেন কেউ কোনোদিন স্বপ্নেও ভাবেননি তাকে দেশ থেকে পালিয়ে যেতে হবে। ১/১১-এর অবৈধ সরকার ম. ইউ আহমেদ ও ফখরুদ্দীনের সঙ্গে সমঝোতা করে শেখ হাসিনা ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসে ক্ষমতায় আসেন। ক্ষমতায় এসেই মইন-ফখরুদ্দীনসহ তাদের সরকারের সবাইকে দায় মুক্ত করেন। এ দুই প্রধানকে বিদেশে পাঠিয়ে দেন। বর্তমানে তাদের দুই জনই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন। ২০০৯ সালের পর থেকেই শেখ হাসিনা বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতায়। টানা ১৫ বছর তিনি ক্ষমতায় ছিলেন। ক্ষমতায় থাকার জন্য তিনি প্রথমেই টার্গেট করেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে। ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি বিডিআর ম্যাসাকারের মাধ্যমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৫৭ জন দেশপ্রেমিক মেধাবী সেনা অফিসারকে হত্যা করা হয়। অনেক অফিসারকে জোরপূর্বক বিদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। যাতে করে কেউ ভবিষ্যতে ক্যু করার সাহস না পায়। সেই সঙ্গে অবৈধ সংসদের মাধ্যমে আইন করা হয়, ক্যু করে ক্ষমতা দখল করলে ফাঁসি। প্রথমেই সেনাবাহিনীতে শুদ্ধি অভিযান চালানো হয়। অন্যদিকে নিজের ক্ষমতাকে পোক্ত করার জন্য নিজের পোষ্য প্রধান বিচারপতি খায়রুল হককে ব্যবহার করে। তার মাধ্যমেই ২০১১ সালের ১০ মে রায়ের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বাতিল করে। এটা ছিল তার দ্বিতীয় পরিকল্পনার অংশ। যদিও ইতিমধ্যে বিচারপতি খায়রুল হকের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। ক্ষমতায় থাকার রাস্তা একে একে সূক্ষ্ম পরিকল্পনামাফিক কাজ করতে থাকেন। বিরোধীদলীয় নেত্রীকে প্রতিহিংসার কারণে জেলে রাখেন, দলের সেকেন্ড ইন কমান্ডকে বিদেশে রাখেন। বিচারালায় থেকে শুরু করে প্রতিটি সরকারি প্রতিষ্ঠানকে দলীয় কার্যালয়ে পরিণত করেন। ভারতের নীলনকশা অনুযায়ী, ভোটারবিহীন, প্রার্থীবিহীন এবং ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে ২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকেন। রাস্তায় দাঁড়াতে দেননি কোনো শক্তিকে। কেড়ে নেওয়া হয় মানুষের বাক্্স্বাধীনতা। কণ্ঠরোধ করা হয় মিডিয়ার।

অবশেষে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে তিনি গত ৫ আগস্ট ভারত পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। এ ১৫ বছরে শেখ হাসিনার সরকার শুধু দেশে অবস্থারত বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মিথ্যা মামলা করেছেন এবং তাদের ওপর হামলা করা হয়েছে। সেই তাদের বাড়িতে আক্রমণ করা হয়েছে। বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা মামলা শুধু দেশে ছিল না প্রবাসের বিএনপির নেতারাও তার হামলা মামলার শিকার হয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির শীর্ষ কয়েকজন নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়, কারো বাড়িঘরে হামলা করা হয়, অনেককেই ফোনে হুমকি-ধমকি দেওয়া হয়। যে কারণে তারা দীর্ঘ ১৫ থেকে ২০ বছর পর্যন্ত দেশে যেতে পারেননি। ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর তাদের অনেকেই প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশে যাচ্ছেন। আবার অনেক বাংলাদেশে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ইতিমধ্যেই বিএনপির জাতীয় কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম সদস্য মিজানুর রহমান মিল্টন ভূইয়া বাংলাদেশে গিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছিল পালিয়ে যাওয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদকে অপহরণের মামলা। বাংলাদেশে পৌঁছার পর মিজানুর রহমান মিল্টন ভুইয়াকে দলীয় কর্মীরা ফুলেল অভিনন্দন জানিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল পাশা বাবুলও বাংলাদেশে গিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং বর্তমানে বিএনপির জাতীয় কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম সদস্য জিল্লুর রহমান জিল্লু বাংলাদেশে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তার বিরুদ্ধেও আইসিটি অ্যাক্টে মামলা দেওয়া হয়েছে। শেখ হাসিনার পতনের সংবাদ পেয়ে এসব নেতার পরিবার-পরিজনের মধ্যে উল্লাস পরিলক্ষিত হয়। যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সভাপতি ও বর্তমানে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আব্দুল লতিফ সম্রাট, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি, সাবেক আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক এবং বর্তমানে কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম সদস্য গিয়াস আহমেদও বাংলাদেশে যাবার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তিনি প্রায় ১৪ বছর ধরে বাংলাদেশে যেতে পারেননি। তাদের আরো অনেক বিএনপি নেতৃবৃন্দ দেশে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। শেখ হাসিনার পতনে তারা হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছেন। কারণ তারা তাদের আত্মীয়- স্বজনকে দেখতে পারবেন।

শেয়ার করুন