বক্তব্য রাখছেন আব্দুর রব মিয়া
জাতিসংঘের এবারের ৭৯তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে আগামী ২২ সেপ্টেম্বর রোববার নিউইয়র্ক আসছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান নোবেলজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এ সফরকালে তিনি আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিউইয়র্ক অবস্থান করবেন বলে জানা গেছে।
তার নিউইয়র্ক সফরকালীন সময়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশিদের ‘মাদার সংগঠন’ হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশ সোসাইটি, নিউইয়র্ক একটি অরাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে ড. ইউনূসকে নাগরিক সংবর্ধনা দিতে চায়। সোসাইটির দাবি ড. ইউনূস একজন বিশ্ব বরণ্যে সম্মানিত এবং নিরপেক্ষ ব্যক্তি। তাই প্রবাসীদের পক্ষ থেকে তাকে সংবর্ধিত করার দাবিদার বাংলাদেশ সোসাইটি। এজন্য সোসাইটির সকল প্রস্তুতি রয়েছে বলেও সংগঠনের কর্মকর্তারা দাবি করেছেন। সেই সঙ্গে তারা প্রবাসী বাংলাদেশিদের দাবি দাওয়াও তুলে ধরতে চান বাংলাদেশ সোসাইটির কর্মকর্তাবৃন্দ। গত ৬ সেপ্টেম্বর শনিবার সন্ধ্যায় সিটির এলমহার্মস্টস্থ সোসাইটির নিজস্ব অফিসে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমীন সিদ্দিকী। এ সময় সোসাইটির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুর রহিম হাওলাদারসহ , বাংলাদেশ সোসাইটির সহ-সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম চৌধুরী, কোষাধ্যক্ষ নওশেদ হোসেন এবং প্রচার ও জনসংযোগ সম্পাদক রিজু মোহাম্মদ উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে সোসাইটির সভাপতি মোহাম্মদ আব্দুর রব মিয়া বলেন, প্রতি বছরই সেপ্টেম্বর মাসে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে বাংলাদেশের সরকার প্রধান যোগ দেন। অন্যান্য বছরগুলোতে রাজনৈতিক সরকার থাকায় সরকার প্রধানের যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে সংশ্লিষ্ট দলের মাধ্যমেই তাদের সফর সংক্রান্ত সব আয়োজন করা হয়। এমনকি সংবর্ধনার আয়োজনও করা হয় দলীয়ভাবে। এতে সাধারণ প্রবাসী তাদের দাবি-দাওয়া ও মনের কথা সরকার প্রধানের সামনে বলার সুযোগ কখনই পান না। তাছাড়া দলীয় প্রধান হিসেবে তিনি সব সময় দলীয় নেতাকর্মী বেষ্টিত থাকেন। আমরা কখনো তার সামনে প্রবাসীদের অধিবার নিয়ে কথা বলতে পারি না বা সুযোগ থাকে না।
আব্দুর রব মিয়া আরো বলেন, বর্তমানে পরিবর্তিত একটি পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে। সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, বিশ্ববরেণ্য ব্যক্তিত্ব নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস আগামী ২২-২৭ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্র সফর করবেন। তার এই সফর অন্যান্য সরকার প্রধানের সফরের চেয়ে একেবারেই ভিন্ন। আমরা আশা করছি, নিরপেক্ষ, নির্দলীয় এ সরকারের প্রধানের কাছে সব প্রবাসী বাংলাদেশি তাদের দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত মনের কথাগুলো সহজে বলার সুযোগ পাবেন। বাংলাদেশ সোসাইটি ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের পক্ষ থেকে সেই সুযোগটি গ্রহণ করতে চায়। আমরা প্রবাসীদের আমব্রেলা সংগঠন হিসেবে বাংলাদেশ সোসাইটির পক্ষ থেকে এবারের নাগরিক গণসংবর্ধনার আয়োজন করতে আগ্রহী। এই সরকারকে আমরা সমর্থন করি। তারা গত এক মাসে যা করছে তা আমরা সমর্থন করি। আমরা চাই রাষ্ট্র সংস্কার। এই কাজ ড. মূহাম্মদ ইউনূস নিশ্চয় করবেন।
প্রসঙ্গক্রমে তিনি বলেন, বাংলাদেশের সাম্প্রতিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বাংলাদেশ সোসাইটি প্রাথমিকভাবে ৩০ লাখ টাকার একটি তহবিল প্রদান করেছে। আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে সেই স্মারকও প্রধান উপদেষ্টার হাতে হস্তান্তর করতে চাই।
আব্দুর রহিম হাওয়াদার বলেন, বিমানসহ প্রবাসীদের বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে কথা বলেছি, বিমান নিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর সঙ্গে বার বার কথা বলেছি, বৈঠিক করেছি, তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি তারা রক্ষা করেননি। আশা করি, বর্তমান আন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রবাসীদের দাবি পূরণ করবেন।
সংবাদ সম্মেলনে সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমীন সিদ্দিকী বলেন, সবাই সহযোগিতা করলে সোসাইটি এককভাবেই বাংলাদেশের সরকার প্রধান ড. ইউনূসকে নাগরিক সংবার্ধনার আায়োজন করবে।
