৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ৬:১৫:৩২ অপরাহ্ন


জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে মুক্তিযুদ্ধের মুখোমুখি দাঁড় করানোর প্রচেষ্টা
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৬-০৩-২০২৫
জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে মুক্তিযুদ্ধের মুখোমুখি দাঁড় করানোর প্রচেষ্টা সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র নেতৃবৃন্দ


সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নির্মিতব্য মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণ প্রকল্পের নকশা পরিবর্তন করে মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের স্মারক পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের ভাস্কর্য নির্মাণ বাতিলের সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন। গণমাধ্যমে দেওয়া মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজমের বক্তব্য অনুসারে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনার সাথে সংগতিপূর্ণ না হওয়ায় নকশা পরিবর্তন করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের ভাস্কর্য নির্মাণ বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে মুক্তিযুদ্ধের মুখোমুখি দাঁড় করানোর প্রচেষ্টার নিন্দা জানিয়ে তা রুখে দিতে ছাত্র-জনতার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ছাত্র ইউনিয়ন।

বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি মাহির শাহরিয়ার রেজা এবং সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন শুভ ২৫ মার্চ মঙ্গলবার এক যৌথ বিবৃতিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কর্তৃক গৃহীত পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের ভাস্কর্য নির্মাণ বাতিলের সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। নেতৃবৃন্দ বলেন, “১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের ভেতর দিয়ে আমরা স্বাধীনতা লাভ করেছি। 

এটি আমাদের জাতীয় গৌরবের ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধের বিজয় স্মারক। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণ প্রকল্পের নকশা পরিবর্তন করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের ভাস্কর্য নির্মাণ বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। পতিত স্বৈরাচার আওয়ামীলীগ দীর্ঘদিন ধরে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে কুক্ষিগত করে দলীয় সম্পত্তি বানাবার চেষ্টা করেছিল। স্বৈরাচারের পতনের পরে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জনগণের সামনে উন্মোচনের সুযোগ থাকলেও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। 

পাঠ্যপুস্তক সংশোধন করে ৩০ লক্ষ শহীদের স্থলে লাখ লাখ শহীদ, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর স্থলে শুধু হানাদার বাহিনী, মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা পরিবর্তন এমন কর্মকাণ্ড অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্য নিয়ে জনগণের মনে ধোঁয়াশা সৃষ্টি করেছে ও একইসাথে ক্ষোভের সঞ্চার করেছে। 

আমরা দেখলাম, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম গণমাধ্যমে দেওয়া বক্তব্যে বলেছেন জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনার সাথে সংগতিপূর্ণ না হওয়ায় নকশা পরিবর্তন করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের ভাস্কর্য নির্মাণ বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। আমরা এই বক্তব্যের নিন্দা জানাই, একইসাথে এই বক্তব্য প্রদানের জন্য মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টাকে ক্ষমাপ্রার্থনার আহ্বান জানাই। জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিয়ে মুক্তিযুদ্ধকে ঢেকে দেওয়া যাবে না। জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে তার স্বমহিমায় থাকতে দিতে হবে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে মুক্তিযুদ্ধের মুখোমুখি দাঁড় করানোর যেকোন হীন প্রচেষ্টা বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা রুখে দিবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। আমাদের জাতীয় গৌরব মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কোন বিতর্ক তৈরির চেষ্টা করা হলে ছাত্র ইউনিয়ন তার পালটা প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।

শেয়ার করুন