০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ০২:৫৮:২৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
স্ন্যাপ সুবিধা ফিরলেও কঠোর নিয়মে বিপাকে ৪০ মিলিয়ন মানুষ মসজিদে ধারাবাহিক হামলা, উদ্বেগে মুসলিম সম্প্রদায় ফেব্রুয়ারি ১ থেকে রিয়েল আইডি ছাড়া বিমানযাত্রায় লাগবে ৪৫ ডলারের ফি নিউইয়র্কে শীতকালে ঘর গরম রাখার জন্য এনার্জি সহায়তার আবেদন শুরু দারিদ্র্যপীড়িত দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন স্থায়ীভাবে বন্ধের আহ্বান ট্রাম্পের ১৯ দেশের গ্রিনকার্ডধারীদের পুনর্মূল্যায়ন শুরু তারেকের ‘ফেরা ইস্যু’ ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে চেষ্টা বিডিআর বিদ্রোহের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কমিশন রিপোর্টে তোলপাড় রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ মর্যাদায় খালেদা জিয়া ১১ মাসে ২৮ জন বাংলাদেশী ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী কর্তৃক নিহত হয়েছে


নিউইয়র্কে সংবাদপত্র আছে সাংবাদিক নেই!
হাবিব রহমান
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৯-০৩-২০২৫
নিউইয়র্কে সংবাদপত্র আছে সাংবাদিক নেই! হাবিব রহমান


কথাটা আড়ালে আবডালে অনেকে বলতেন। কেউবা ইশারা ইঙ্গিতে। তবে এবার হাটে হাঁড়িটা ভাঙলেন বর্ষীয়ান সাংবাদিক মনজুর হোসেন। গত ক’দিন আগে সাপ্তাহিক দেশ পত্রিয়ায় তার লেখা এক নিবন্ধে নিউইয়র্কের বাংলা সাপ্তাহিকগুলো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এসব পত্রিকার প্রিন্টার্স লাইনে যাদের নাম ছাপা হয়, যাদের সাংবাদিক পরিচয়ে তুলে ধরা হয় তারা কেউ সাংবাদিক নন।

আগে সাংবাদিকরাই মূলধন জোগাড় করে পত্রিকা বের করেছেন। পত্রিকার পাতায় তাদেরই নাম সম্পাদক এবং সাংবাদিকতা সংশ্লিষ্ট অন‍্যান‍্য পদে স্থান পেয়েছে। কিন্তু এখন আর সাংবাদিকরা পত্রিকায় মুখ‍্য নন। নিউইয়র্কের ধনাঢ‍্য মালিক-সম্পাদকরা তাদের পত্রিকায় সাংবাদিকদের নিয়োগ দিয়ে রেখেছেন কিন্তু পত্রিকায় তাদের অবস্থান খুবই গৌণ। প্রিন্টার্স লাইনে সাংবাদিকদের নাম নেই। মালিকরা হয় নিজের, নয়তো তাদের স্ত্রী, সন্তানসন্ততি ব‍্যক্তিগত কর্মচারীদের নাম ছাপছেন। তিনি আরো বলেন, প্রিন্টার্স লাইনে অনেকগুলো নাম ছাপছে ছবিসহ যা আর কোথাও দেখেছি বলে মনে পড়ে না।

তার এ কথাগুলো অপ্রিয় হলেও যে সত‍্য তা বলার অপেক্ষা রাখে না। নিউইয়র্কে এখন প্রতি সপ্তাহে অসংখ‍্য সংবাদপত্র প্রকাশিত হচ্ছে। কিন্তু মান সম্পন্ন বা পাঠকের চাহিদা পূরণ করতে পারছে ক’টি পত্রিকা! একটি পত্রিকা সে-ই পড়বে, যে তাতে নিজেকে খুঁজে পায়। নিজেকে খুঁজে পাওয়ার অর্থ হলো, যে তার আগ্রহের বিষয়টি সেখানে খুঁজে পায়, চিন্তাধারার মিল পায়, ভাবনার খোরাক পায়। প্রবাসে বাংলা পত্রিকাগুলো কি সে ভূমিকা পালন করে? বা করছে? করতে পারছে? প্রবাসের বাংলা পত্রিকাগুলো সংবাদের মান, সৃজনশীল লেখা, অঙ্গসজ্জা, বিন্যাস ইত্যাদিতে কি সত্যিকার ভূমিকা রাখতে সক্ষম হচ্ছে? স্বভাবত সবার সামনে বড় একটি প্রশ্ন বারবার ঘুরপাক খায়। সেটি হলো, পাঠক সমাজ এখনো যে পত্রিকা খুঁজছে সেই মানের পত্রিকা আমরা কেন করতে পারছি না!

নিউইয়র্ক বা প্রবাসের বাঙালি কমিউনিটির নানান সংকট ও চ্যালেঞ্জ আছে, আছে সাফল্যের গল্প। প্রবাসে বাঙালি অভিভাবক এবং তাদের সন্তানেরা বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপনে কী কী চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে, বিয়েগুলোর স্থায়িত্ব কেমন হচ্ছে, কী কী কারণে বৈবাহিক সম্পর্ক ভেঙে যাচ্ছে ইত্যাদি বিষয় অনেকেই জানতে চায়। জানতে চায় কোথায় বাড়িঘর আবাসস্থল ক্রয় করা ভালো, বসবাস করা ভালো। পেশাগত পরামর্শ, আইনগত পরামর্শগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কোন পেশায় কী দক্ষতা প্রয়োজন এবং তা কোথায় শেখা যাবে, কোনটি ভবিষ্যতের জন্য আকর্ষণীয় পেশা, প্রবাসে চাকরি-বাকরি ও জীবনধারণের জন্য কী কী আইনি সমস্যা ও প্রশ্ন মোকাবিলা করতে হয় এবং এর সমাধান ইত্যাদি নিয়ে রিপোর্ট হলে পত্রিকাগুলো আরো সহজে মানুষের মনের কাছে পৌঁছাতে পারতো।

সাংবাদিকতা কেবল একটি পেশা নয়, এটি সত্য ও ন্যায়ের সন্ধানে এক অসীম যাত্রা। মানবসভ্যতার অগ্রযাত্রায় বিশ্বব্যাপী সাংবাদিকতার ভূমিকা অপরিসীম। তথ্যের আলোকে সমাজকে আলোকিত করা, অন্যায়ের মুখোশ উন্মোচন করা এবং সাধারণ মানুষের কণ্ঠস্বর হিসেবে কাজ করা-এগুলো সাংবাদিকতার প্রধান লক্ষ্য।

যুক্তরাষ্ট্রের পাঠকের কাছে ‘নিউইয়র্ক টাইমস’, ‘ওয়াশিংটন পোস্ট’-এর গ্রহণযোগ্যতা অনেক। যুক্তরাষ্ট্রে এ দুটি পত্রিকা যে দলের বা ব্যক্তির পক্ষে অবস্থান নেয় সেই দলের বা ব্যক্তির যে কোনো নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা অনেক গুণ বেড়ে যায়। সিএনএনএর বিশ্বাসযোগ্যতাও মানুষের কাছে যথেষ্ট ভালো। অন্যদিকে ফক্স টিভিকে মনে করা হয় রিপাবলিকান দলের অন্ধ মুখপত্র। ব্রিটেনে গার্ডিয়ানে কিছু প্রকাশিত হলে তা মানুষ বিশ্বাস করে। বিবিসি আর চ্যানেল ফোরের বিশ্বাসযোগ্যতা এখনো ভালো। পাঠকের ধারণা, এসব বিশ্বাসযোগ্য গণমাধ্যম নিজস্ব কোনো গোপন এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য কাজ করে না। তারা যা পরিবেশন করে তা বস্তুনিষ্ঠভাবে প্রকাশ করার চেষ্টা করে।

আমরা নিউইয়র্ক টাইমস বা ওয়াশিংটন পোস্ট না হতে পারি আসুন না, আমাদের কমিউনিটি পত্রিকাগুলো মান সম্মতভাবে প্রকাশ করি এবং জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটিয়ে তাদের মনের দুয়ারে পৌঁছে দিই!

নিউইয়র্কে সাহরি পার্টি কালচার

এখন রোজার মাস চলছে। ব‍্যক্তিগত বা বিভিন্ন সংগঠনের ইফতার পার্টির পাশাপাশি এখন প্রবাসেও চালু হয়েছে জমজমাট সেহরি পার্টি। গত কয়েক বছর আগে দেখেছি জ‍্যাকসন হাইটসে ব‍্যক্তিগত বা জ‍্যাকসন হাইটস এলাকাবাসীর উদ্যোগে সীমিত আয়োজনে সাহরি পার্টি অনুষ্ঠিত হতে। কিন্তু এখন এর ব‍্যাপ্তি ঘটেছে। গত বছর থেকে এই আয়োজনটা ব‍্যাপক আকারে কমার্শিয়ালি শুরু করেন নিউইয়র্কের সুপরিচিত শেফ খলিলুর রহমান। ব্রঙ্কসে তার দুটি রেস্টুরেন্ট খলিল চাইনিজ এবং খলিল বিরিয়ানি হাউসের সুবিশাল পরিসর মিলিয়ে বুফে সাহরি পার্টির আয়োজন করে কমিউনিটিতে বিপুল সাড়া ফেলেন। এ বছর রমজানেও প্রতি শনিবার রাতে আয়োজিত হচ্ছে তার এই সাহরি পার্টি।

শেফ খলিলুর রহমান জানিয়েছেন রমজান শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই সাহরি পার্টি অব‍্যাহত থাকবে। প্রায় ২৫টি আইটেম নিয়ে অনুষ্ঠিত তার এখানে বুফেট সাহরি পার্টিতে পে করতে হয় ২৫ ডলার।

জ‍্যাকসন হাইটস এলাকার সান সাইন রেস্টুরেন্ট প্রতি শনি এবং রোববার নিয়মিত আয়োজন করছে সাহরি পার্টি। পাকিস্তানি ঘরানার এই রেস্টুরেন্টে সাহরি মেনুতে থাকছে হালুয়া, কিমা পুরি, গোট পায়া, চিকেন বিরিয়ানি, পরোটা, চানা, অমলেট, নিহারি, হালিম ইত‍্যাদি। তবে এ মেনু পরিবর্তনও হয়। সান শাইনে সাহরি খাবারের জন‍্য আপনাকে খরচ করতে হবে ১৫.৯৯ প্লাস টেক্স।

যোগাযোগ : সানসাইন,৭৩-১০ নর্দার্ন বুলেভার্ড, কুইন্স, নিউইয়র্ক-১১৩৭২। ফোন: ৭১৮ ৭৭৯ ৬৭০০

ব‍্যক্তি উদ্যোগেও এবার আয়োজিত হচ্ছে সাহরি পার্টি। এদের একজন কমিউনিটির পরিচিত মুখ অ‍্যাটর্নি মঈন চৌধুরী। তার ব‍্যবস্থাপনায় আগামী ২২ মার্চ জ‍্যাকসন হাইটসের আবু হোয়াররা মসজিদে (৭৮-৪, ৩১ অ্যাভিনিউ, ইস্ট এলমহার্স্ট, নিউইয়র্ক-১১৩৭০) অনুষ্ঠিত হবে সাহরি পার্টি। অংশগ্রহণকারীদের কোনো অর্থ পরিশোধ করতে হবে না। তবে মসজিদে যেহেতু আসন সংখ‍্যা সীমিত এজন‍্য আগে ভাগে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। মহিলাদের জন‍্য আলাদা বসার ব‍্যবস্থা থাকবে। প্রয়োজনে যোগাযোগ: অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী (৯১৭ ২৮২ ৯২৫৬)।

ওয়াশিংটন মনুমেন্ট

পবিত্র রমজান মাসের শেষ দিকে আমরা পৌঁছে গিয়েছি। আসছে ঈদ। ঈদের আনন্দকে আরো রাঙিয়ে তুলতে অল্প সময় নিয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে ঘুরে ঘুরে আসতে পারেন যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি থেকে। এক রাত থাকলেই যথেষ্ট।

ওয়াশিংটন ডিসি এমন এক শহর, যেখানে সময়ের চোখ আটকে যেতে পারে রূপ, সৌন্দর্যের জাদুময়তা দেখে। পৃথিবীর এক প্রাচীন শহর আমেরিকার রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি। নানা কারণে তাবৎ দুনিয়ার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুও এই নগরী। ব্রিটিশদের আক্রমণে এ নগরী ১৮১২ সালে আক্রান্ত হলে পরবর্তী সময়ে আবারও ঢেলে সাজানো হয় নতুন করে। ওয়াশিংটনে রয়েছে দেখার মতো অসংখ্য স্থাপনা। ওয়াশিংটন মনুমেন্ট যেন মাথা উঁচু করে ঠায় দাঁড়িয়ে আছে ইতিহাস হয়ে। দুপুরের কড়া রোদে মনুমেন্টের সামনে নীল জলের ওপর আছড়ে পড়ছে মায়াবী ছায়া। কী অপরূপ এ দৃশ্য!

ওয়াশিংটন ডিসিতে স্থাপিত ওয়াশিংটন মনুমেন্ট। ৫৫৫ ফিট উচ্চতার এই স্মৃতিস্তম্ভটি দেখতে নানান জায়গা থেকে সারা বছর পর্যটকরা আমেরিকার রাজধানীতে ভীড় করেন। স্মৃতিস্তম্ভটি নির্মাণ করা হয় আমেরিকার প্রথম প্রেসিডেন্ট জর্জ ওয়াশিংটনের স্মরণে। নির্মাণ কাল: ১৮৪৮-১৮৮৪। সে সময় এটি নির্মাণ করতে খরচ হয়েছিল এক মিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি। জনসাধারণের জন্য স্মারকস্তম্ভটি খোলা হয় ১৮৮৮ সালে।

এটি ওয়াশিংটন ডিসির দীর্ঘতম কাঠামো। আমেরিকার ৫০টি অঙ্গরাজ্যের প্রতীক হিসেবে ওয়াশিংটন স্মৃতিস্তম্ভের গোড়ায় ৫০টি পতাকা রয়েছে। লিংকন মেমোরিয়াল, হোয়াইট হাউস, টমাস জেফারসন মেমোরিয়াল এবং ক্যাপিটাল বিল্ডিংয়ের অনন্য দ্রস্টব্যস্থানসহ ওয়াশিংটন, ডিসির দর্শনীয় দৃশ্য দেখতে একটি লিফট শীর্ষে দর্শকদের ওপরে নিয়ে যায়। ওয়াশিংটন স্মৃতিস্তম্ভের গোড়ার কাছে অবস্থিত একটি আউটডোর অ্যাম্ফিথিয়েটার, সিভান থিয়েটার, ফ্রি কনসার্ট এবং লাইভ নাট্য পরিবেশনা, স্মরণীয় অনুষ্ঠান, সমাবেশ ও বিক্ষোভসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য একটি জনপ্রিয় স্থান। আছে অনেকগুলো মিউজিয়াম।

যারা ট্যুর কোম্পানির সহায়তা নিয়ে ওয়াশিংটন ডিসি ঘুরতে চান তারা ডিসির হায়াত রিজেন্সী হোটেলে যোগাযোগ করতে পারেন। প্রতিদিন সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে এখান থেকে ট্যুর পরিচালিত হয়। (৪০৯ নিউজার্সি অ্যাভিনিউ, এনডব্লিউ, ওয়াশিংটন ডিসি-২০০১)। ইউনিয়ন স্টেশন মেট্রো থেকে ৩ ব্লক। ১৬ মার্চ ২০২৫।

শেয়ার করুন