২৬ এপ্রিল ২০১২, শুক্রবার, ০২:১৮:১১ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ইউরোপে ভারতীয় ৫২৭ পণ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারি উপাদন শনাক্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি বিএনপির আন্দোলন ঠেকানোই ক্ষমতাসীনদের প্রধান চ্যালেঞ্জ বিএনপিকে মাঠে ফেরাচ্ছে আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে অদৃশ্য চাপে বিএনপি


নর্থ বেঙ্গলের সংবর্ধনায় মোশাররফ হোসেন এমপি
দিনের ভোট দিনে চাই -রাতে কোনো ভোট নাই
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৮-০৮-২০২২
দিনের ভোট দিনে চাই -রাতে কোনো ভোট নাই নর্থ বেঙ্গলের সংবর্ধনায় বক্তব্য রাখছেন মোশাররফ হোসেন এমপি /ছবি সৌজন্য


আগামী জাতীয় সংবাদ নির্বাচনে আমরা দিনের ভোট চাই, রাতে কোনো ভোট নাই। নর্থ বেঙ্গল ফাউন্ডেশন আয়োজিত এক সংবর্ধনা সভায় বগুড়া ৪ আসন থেকে নির্বাচিত বিএনপির সংসদ সদস্য মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন এ কথা বলেন।

নর্থ বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের সভাপতি রাফেল তালুকদারের সভাপতিত্বে এবং প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম ও বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আশরাফুজ্জামানের পরিচালনায় অনুষ্ঠানটি গত ১৩ আগস্ট সন্ধ্যায় জ্যাকসন হাইটসের নবান্ন পার্টি হলে অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জাসাস কেন্দ্রীয় কমিটির আহŸায়ক এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হেলাল খান। গেস্ট অব অর্নার ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি ও স্বাধীনতা সুবর্ণজয়ন্তী কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য গিয়াস আহমেদ।

বিশেষ অতিথি ছিলেন জেবিবিএ’র সাধারণ সম্পাদক ও নর্থ বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং নিউইয়র্ক সিটি মেয়রের উপদেষ্টা ফাহাদ সোলায়মান, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক কোষাধ্যক্ষ জসীম ভুইয়া, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক মাকসুদুল হক চৌধুরী, যুক্তরাষ্ট্র যুবদলের সভাপতি জাকির এইচ চৌধুরী, যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক এম বাতিন, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সুবর্ণজয়ন্তী কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব মোশাররফ হোসেন, নিউইয়র্ক স্টেট বিএনপির সভঅপতি মাহফুজুল মাওলা নান্নু, বিএনপি নেতা মার্শাল মুরাদ, নিউইয়র্ক স্টেট বিএনপির সভাপতি মওলানা অলিউল্যাহ আতিকুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান সাইদ, আশা হোম কেয়ারের প্রেসিডেন্ট আকাশ রহমান, নর্থ বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ আতোয়ারুল আলম, বগুড়া সমিতির সাবেক সভাপতি রাইসুল হক আসাদ, হযরত আলী, যুক্তরাষ্ট্র জাসাসের সদস্য সচিব জাহাঙ্গীর সরওয়ার্দী, নর্থ বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা আব্দুল মতিন, উপদেষ্টা ওয়াহেদ আলী মন্ডল।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন রকিবুজ্জামান নয়ন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মশিউর রহমান, যুক্তরাষ্ট্র ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মাযহারুল ইসলাম জনি, যুক্তরাষ্ট্র ছাত্রদল নেতা মেহরাব রাজা চৌধুরী, নিউইয়র্ক সিটি বিএনপির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল খালেক, বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি প্রার্থী কাজী আশরাফ হোসেন নয়ন, সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী মোহাম্মদ আলী প্রমুখ।

প্রধান অতিথি হেলাল খান বলেন, বগুড়া-৪ আসনটি গুরুত্বপূর্ণ আসন। এই আসনে থেকে শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান নির্বাচন করেছিলেন। আওয়ামী লীগ ভোট ডাকাতি করেও মোশাররফ হোসেনের বিজয় ছিনিয়ে নিতে পারেনি। তিনি বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে বলেন, বাংলাদেশের মানুষ বিএনপির দিকে তাকিয়ে আছে। বাংলাদেশের জনগণ এখন আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত। আমরাও আন্দোলনে আছি এবং কঠিন সময় অতিক্রম করছি। আমাদের ২ জন নেতা ভোলায় শহিদ হয়েছেন। দেশের মানুষের অধিকারের জন্যও প্রতিবাদ করা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, পিন্ডির কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করে আমরা আবারো দিল্লির কাছে পরাধীন হয়ে পড়েছি।

সংবর্ধিত অতিথি মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন এমপি বলেন, আজকে আপনারা আমাকে যে সম্মান দিয়েছেন, এটা আসলে নর্থ বেঙ্গলের সম্মান, বাংলাদেশের সম্মান। আমি এই আয়োজনে এবং আপনাদের ভালোবাসায় অভিভ‚ত। তিনি বলেন, আপনারা এখানে যুদ্ধ করছিন, আমরা বাংলাদেশে যুদ্ধ করছি। আমি যে আসন থেকে মনোনয়ন চেয়েছিলাম, সেই আসন থেকে ১৪ জন মনোনয়ন চেয়েছিলেন। আমি আমার নেতা তারেক রহমান এবং আমাদের মা খালেদা জিয়াকে বলেছিলাম বিএনপি যদি ১০টি আসন পায়, তাহলে আমি একটি আসন উপহার দেবো। মনোয়ন পাওয়া পর আমি যুদ্ধে নেমেছিলাম। আওয়ামী লীগের ভোট ডাকাতরা ভোট ডাকাতির করতে চেয়েছিলো, কিন্তু আমার এলাকার মানুষ তা হতে দেয়নি, এমনকি আমাকেও আক্রমণ করেছিলো। আল্লাহ এবং মানুষের ভালোবাসায় আমি বেঁচে যাই। তিনি বলেন, যুদ্ধে ছিলাম বলেই জয়ী হয়েছি।

আমি আপনাদের বলতে চাই আমার আসন থেকে যদি শেখ হাসিনাও নির্বাচন করেন, তাহলে তিনি পরাজিত হবেন। তিনি বলেন, আমাদের মাঠে থাকতে হবে এবং যুদ্ধে থাকতে হবে। আমি আমার কর্মীদের পাশে আছি। যারা জেলে আছে তাদের পরিবারকে আমি দেখি এবং তাদের মামলাতে আমি অর্থ দিই। কারণ দলই আমাকে সবকিছু দিয়েছে। আমি আমার নেতার রাজনীতি দেখেছি। সত্যি কথা বলতে কী ধানের শীষ ছাড়া আমি কচুরিপানা। তিনি বলেন, আমি দল এবং দেশকে ভালোবাসি। যে কারণ আমি পদত্যাগপত্র রেডি করে রেখেছি, যখনই আমার নেতা চাইবেন তখনই আমি তা পাঠিয়ে দেবো। তিনি আরো বলেন, বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া মূলত বন্দি। পার্থক্য একটি তিনি বাসায় আছেন। আমরা যখন অনুমতি নিয়ে দেখা করতে যাই, তখন দেখি তার পাশেই সরকারি লোক থাকে। বেগম খালেদা জিয়া প্রতিহিংসার শিকার। মাত্র ২ লাখ টাকার জন্য তাকে জেলে রাখা হয়েছে। এই অর্থ কিছুই না, চাইলে আমিও দিতে পারি। তাছাড়া তিনি কোনো দুর্নীতি করেননি। আসল বিষয় হলো সরকার তাকে ভয় পায়। যে কারণে তাকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার ষড়যন্ত্র করছে। তিনি আরো বলেন, আপনারাই আমাদের মূল যোদ্ধা। আপনারা অর্থ না পাঠালে অনেক আগেই আমরা মুখ থুবড়ে পড়তাম। অথচ আপনাদের দেশে গেলে অপমানিত হতে হয়। আগামী ২৮ আগস্ট সংসদ বসছে। আমি আপনাদের কথা বলবো। তিনি বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমরা দিনের ভোট দিনে চাই, রাতে কোনো ভোট নাই। দুর্নীতিবাজ পিকে হালদারকে পুলিশ ধরতে পারে না, আর ভোলায় মানুষের অধিকার আদায় করতে গেলে গুলি করে হত্যা করা হয়। তবে আমি পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, আমরা এবার সবাইকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন করে দেশকে আবারো স্বাধীন করতে চাই।

গিয়াস আহমেদ বলেন, গত নির্বাচন সুষ্ঠু হলে আওয়ামী লীগের ২টা আসনও পাওয়ার কথা ছিলো না, যে কারণে তারা ভোট ডাকাতি করেছে। ক্ষমতায় এসে তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিকিয়ে দিয়েছে। কারণ তারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে দল বা শক্তি নয়। তিনি বলেন, আন্দোলন করে শেখ হাসিনার পতন ঘটিয়ে আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে এখন কথা বলার অধিকার নেই, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নেই। গণতন্ত্র এবং ভোটাধিকার নেই। তিনি বলেন, আমরা প্রবাসীরা নির্বাচন করতে যাবো না, তবে দেশকে দেবার আমাদের অনেক কিছু আছে। দেশের গণতন্ত্র রক্ষায় এবং উন্নয়নে আমরা ভ‚মিকা রাখতে পারি। তিনি বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বলেন, আমাদের এখন আশঙ্কা বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার দিতে ধাবিত হচ্ছে। আর এই কারণ হচ্ছে দুর্নীতি। দুর্নীতির সাথে আওয়ামী লীগের ৯৯ শতাংশ নেতা জড়িত।

ফাহাদ সোলায়মান বলেন, সংসদ মানেই সংসদ সদস্য। এটাই তার একমাত্র পরিচয়। তারা পরিচয় দল হওয়া উচিত নয়। তিনি বলেন, আমি আপনাদের দোয়া এবং ভালোবাসায় নিউইয়র্ক সিটি মেয়রের উপদেষ্টা হিসাবে নিয়োগ পেয়েছি। মূলত নর্থ বেঙ্গল দিয়ে আমি যাত্রা শুরু করেছিলাম। অনুষ্ঠানে ফাহাদ সোলায়মানকে সংবর্ধনা জানানো হয় এবং ফুলের মালা দিয়ে অভিনন্দন জানানো হয়।

অনুষ্ঠানে সংবর্ধিত অতিথিকে ফুলের মালা দেয়া হয় এবং নর্থ বেঙ্গল ফাউন্ডেশষের পক্ষকে ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। ক্রেস্ট প্রদান করেন নর্থ বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের বর্তমান এবং সাবেক কর্মকর্তারা। অনুষ্ঠানের শুরুতে কোরআন তেলওয়াত করেন সংগঠনের কোষাধ্যক্ষ সাইফুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানে সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন রাফেল তালুকদার। এ ছাড়াও সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুজ্জামানের স্ত্রী লিজার জন্ম দিন উপলক্ষে কেক কাটা হয়।


শেয়ার করুন