২৬ এপ্রিল ২০১২, শুক্রবার, ০৪:৩৬:২০ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :


গণরোষে সরকারের মাথা খারাপ হয়ে গেছে - জোনায়েদ সাকি
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৪-০৮-২০২২
গণরোষে সরকারের মাথা খারাপ  হয়ে গেছে - জোনায়েদ সাকি


গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকির বলেছেন, এই সরকার কেবল ত্রাস সৃষ্টি করছে না তার উন্নয়নের নামে নিজেদের কাজকে জায়েজ করারও চেষ্টা করছে। কিন্তু তাদের উন্নয়নের ফানুষ ফুটো হয়ে গেছে। বৈশ্বিক পরিস্থিতির সামান্য ধাক্কায় দেশের অর্থনীতি ভেঙে পড়েছে। 

‘‘পুলিশি হত্যাকাণ্ড ও আয়নাঘরে’র নির্যাতনের বিচার, চা শ্রমিকদের ৩০০ টাকা মজুরি ঘোষণা এবং জ্বালানি তেলের বর্ধিত দাম প্রত্যাহার ও দ্রব্যমূল্য কমানোর দাবিতে গণসংহতি আন্দোলনের উদ্যোগে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশে তিনি একথা বলেন। সমাবেশ শেষে সচিবালয়ের সামনে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। পুলিশী বাধা অতিক্রম করেও এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জননেতা জোনায়েদ সাকির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে বক্তব্য রাখেন রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য তাসলিমা আখ্তার, মনির উদ্দীন পাপ্পু, সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূইয়া, জুলহাসনাইন বাবু, দীপক রায়, ইমরাদ জুলকারনাইন ইমন, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আলিফ দেওয়ান, মিজানুর রহমান মোল্লা, অঞ্জন দাসসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। সমাবেশ পরিচালনা করেন গণসংহতির নগরের সংগঠক গোলম মোস্তফা ।

জোনায়েদ সাকির আরো বলেন, চা শ্রমিকদের মজুরির দিকে তাকালেই তা দেখা যায়। তাদের ন্যায্য দাবি না মেনে মাত্র ২৫ টাকা বৃদ্ধি করে দেয়া হিসেবে দেখাতে চায়। যারা সম্পদ তৈরি করে তাদের বেঁচে থাকার অধিকার কেড়ে নিতে চায় এই সরকার। চায়ের দাম, চালের দামসহ সকল পণ্যের দাম যদি বেড়ে থাকে শ্রমিকদের মজুরি কেন বাড়বে না? সরকারের লুটের কারণেই অর্থনৈতিক সংকট তৈরি হয়েছে। সরকার নিজেদের লোকদের দিয়েই এই লুটপাটকে জারি রেখেছে। আর এই ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে যখনই মানুষ রাস্তায় নামে তখনই ছাত্রলীগ, যুবলীগ দিয়ে হামলা চালানো হয়। গুম-খুন করা হয়। সারাদেশে বর্তমানে মানুষের ন্যায্য আন্দোলনে পুলিশ দিয়ে গুলি চালাচ্ছে।

জোনায়েদ সাকি বিদ্যুখাতে দায়মুক্তি আইন বাতিল করে অনিয়ম ও অব্যবস্থাাপনার জন্য দায়ীদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনতে একটি স্বাধীন জাতীয় কমিশন গঠন করার দারি করেন। মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিতে জ্বালানি তেলে দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। মেহনতি মানুষের আয় বাড়ানোর কোনো ব্যবস্থা নেই। অথচ বাজার ঊর্ধ্বমুখী। মানুষ যখন রাস্তায় নামছে সরকার দমনের নীতি নিয়েছে। পরিস্থিতি দেখে বুঝা যায়, সরকার উন্মাদ হয়েছে। তারা এখন ভারতের কাছে সাহায্য চাইছে। ক্ষমতায় টিকে থাকতে যা যা করা দরকার তা যেন করে।

দমন পীড়ন করতে ভারত যেন তাদের সহায়তা করে! এরা জনগণের সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে দেশদ্রোহীতার অপরাধ করেছে। এদের হাতে দেশ আর নিরাপদ নয়। ভারত সরকার আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতায় রাখতে সহায়তা করেছে! ভারত সরকারকে বলি, এদেশের জনগণকে ভারতের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে দিয়ে, জবরদস্তি করে আওয়ামী লীগকে বেশিদিন টিকিয়ে রাখতে পারবেন না। বাংলাদেশের শাসন ব্যবস্থা কীভাবে চলবে, সরকার কারা গঠন করবে তা এদেশের জনগণ ঠিক করবে। আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখার নীতি থেকে যদি ভারত সরকার না সরে আসেন তাদের বলবো, আমরা পিন্ডির জিঞ্জির ছিন্ন করছি দিল্লীর দাসত্ব কারার জন্য নয়।

জোনায়েদ সাকি আরো বলেন, এই সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু হয়েছে। এই আন্দোলন লক্ষ লক্ষ জনতার আন্দোলনে পরিণত হবে। শাবিপ্রবির শিক্ষার্থীদের সাথে প্রতারণা করা হয়েছে। একই কাজ যদি চা শ্রমিকদের সাথেও করা হয় তাহলে এর পরিণতি খুবই ভয়াবহ হবে। ডিজিআইএফ এর আয়নাঘর কোন আইনে তৈরি করা হয়েছে? তার ব্যাখ্যা দিতে হবে। কোন আইনে মানুষের ওপর নির্যাতন চালান তার ব্যাখ্যা দিতে হবে। বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ শাসন আর আগের মতো হবে না। সংবিধানের স্বৈরাচারী ক্ষমতা ভবিষ্যতে আর কেউ কায়েম করতে পারবে না। আমরা এই স্বৈরাচারী কাঠামোকে বদলে দিয়ে জনগণেরর শাসন কায়েম করবো। 

তাসলিমা আখ্তার বলেন, দ্রব্যমূল্য যেভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে আজকে শুধু সাধারণ মানুষই নয় হিমশিম খাচ্ছে মধ্যবিত্তরাও; এই যখন অবস্থা তখন পোষাক শ্রমিক, চা শ্রমিক খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষের চাল কেনার টাকা নাই, মাছ-ভাতের কথা বাদই দিলাম। মানুষের দুর্ভোগ দিনে দিনে মাত্রা ছড়াচ্ছে। 

নেতা মনির উদ্দিন পাপ্পু বলেন, আজকে সরকার এমন এক পরিস্থিতি তৈরি করেছে মানুষের জীবনযাত্রা নাজেহাল। আজকে চা শ্রমিকদের দিকে তাকান তারা বলছে তারা যে বেতন পায় সেই পয়সা দিয়ে মাছভাত দূরের কথা সবজিও পাওয়া যায় না। শাক-পাতাই তাদের বেচে থাকার জন্য ব্যবহার করা হয়। এই হচ্ছে দেশের বর্তমান অবস্থা।


শেয়ার করুন