২৫ এপ্রিল ২০১২, বৃহস্পতিবার, ০৮:৩৩:৫২ অপরাহ্ন


সিলেটের বিএনপির জনসভায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল
‘হুমকি ধমকি দিয়ে লাভ হবে না মানুষ জেগে উঠেছে’
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৯-১১-২০২২
‘হুমকি ধমকি দিয়ে লাভ হবে না মানুষ জেগে উঠেছে’ সিলেট আলীয়া মাদ্রাসা মাঠে বিএনপির জনসভায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বক্তব্য রিচ্ছেন/ছবি সংগৃহীত


বিএনপির অণ্য বিভাগের মত সিলেটেও মানুষের ঢল নামে মহাসমাবেশে। একই চিত্র যানবাহনে ধর্মঘট আহ্বান। চেকপোষ্টে পুলিশের তল্লাশী,বাধা। মানুষও এগুলো উপেক্ষা করে দুদিন আগ থেকেই সিলেট আলীয়া মাদ্রাসা মাঠে উপস্থিত হয় সমাবেশে, বিভিন্ন উপায়ে। পায়ে হেটে, সাইকেলে, অটো, নৌকা বিভিন্নভাবে। সিলেটের এ সমাবেশও নির্ধারিত সময়ের অন্তত আড়াই ঘন্টা আগেই শুরু হয়ে যায় বিপুল মানুষের উপস্থিতি মাঠ ছাড়িয়ে আশপাশের রাস্তাঘাটে ঠাই নেয়ার জন্য।

কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হওয়া এ মহাসমাবেশে স্থানীয় ও বিভিন্নস্তরের নেতৃবৃন্দের বক্তব্যের পর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তার বক্তব্য শুরু করেন। 

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আবার খেলা শুরু হয়েছে। কোন খেলা। মামলা মামলা খেলা। গায়েবি মামলা। বলেদিল এখানে নাকি নাশকতা হয়েছে। এ নাশকতার মামলার আসামী ১১৪, ২১৪, ৪০০, সারে চারশ। জানেই না কেউ, কিছু যে হয়েছে। তারা এইভাবে ১৪টা বছর ধরে এ দেশের মানুষের উপর অত্যাচার, নির্যাতন, নীপিড়ন চালিয়ে আসছে। যারা ধর্মের কথা বলে। মানুষদেরকে সহজ সরল পথে নিয়ে যেতে চায়- তাদেরকে মিথ্যা মামলা করে তাদেরকে আজ কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। তাই নয়, আবার হুমকি দেয় খেলাফত মজলিসের  (হেফাজত) মত অবস্থা হবে। হেফাজতের মত অবস্থা হবে- হুমকি দেন প্রধানমন্ত্রী। বলেছেন, আমরা যদি আন্দোলন করতে যাই তাহলে হেফাজতের মত অবস্থা হবে।’


মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা পরিস্কার করে বলতে চাই, এবার হুমকি ধমকি দিয়ে লাভ হবে না। মানুষ জেগে উঠেছে। এবার এই যে ঘর থেকে বেড়িয়ে এসেছে, এ মানুষ আর ঘরে ফিরবে না। আমাদের লক্ষ্য একটাই আমরা আমাদের হারিয়ে যাওয়া অধিকার ফিরিয়ে নেব। আমরা আমাদের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে নেব। আমরা আমাদের সরকার আমরা তৈরী করতে চাই। জনগন তৈরী করতে চায়। আমার ভোট আমি দেব। যাকে খুশী তাকে দেব।’

তিনি বলেন, ‘তারা বলে সংবিধান অনুসারে নাকি নির্বাচন হবে। কোন সংবিধান? যে সংবিধান নিজেরা নিজেরা ১০-১২ বার কাটাছেড়া করেছ। বিচার বিভাগকে পকেটস্থ করে সংবিধান থেকে তত্বাবধায়কটাকে বাদ দিয়ে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করেছে।’ তিনি বলেন,‘ তত্বাবধায়ক সরকারের অধীন ছাড়া বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন অনুষ্টিত হবে না। যারা এর বিরোধীতা করবে, তারা গণশত্রু হিসেবে ধিকৃত হবে। তাদেরকে চিহ্নিত করা হবে গণশত্রু হিসেবে।’ তিনি বলেন, ‘শুধু সিলেটে নয়। সারা বাংলাদেশে মিথ্যা মামলা দিয়ে মানুষকে, গ্রেফতার করা হচ্ছে, নির্যাতন করা হচ্ছে, হয়রানি এসব বন্ধ করতে হবে।’  

বিএনপির মহাসচিব বলেন, এই সিলেটের মাটি থেকে আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হয়েছিল  সিলেটের যুদ্ধ থেমে থামেনি। আপনাদের নেতা সাইফুর রহমান বাংলাদেশের অর্থনীতিকে মুক্ত করতে নতুন যুদ্ধ শুরু করেছিলেন আজকের আধুনিক বাংলাদেশ সেটাও তিনি করেছিলেন আপনাদের ইতিহাস হচ্ছে গর্বের ইতিহাস যুদ্ধের ইতিহাস এজন্য বললাম যুদ্ধ এ পূণ্যভূমি  থেকেই শুরু হলো। এর যুদ্ধে অবশ্যই আমরা জয়লাভ করবো।’ 

সিলেটে নিখোঁজ বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলীর প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনাদের প্রিয় নেতা ইলিয়াস আলী খান আমাদের মাঝে নাই আমরা জানি না তিনি বেঁচে আছেন নাকি নেই তার সন্তান প্রতিদিন তাকিয়ে থাকি এই বুঝি বাবা ফিরবে ইলিয়াস আলী নিখোঁজ হওয়ার পর তার স্ত্রী দমে যাননি। তিনি এলাকার জনগণকে সঙ্গে নিয়ে লড়াই সংগ্রাম চালু রেখেছেন। তাকে আমরা সেলুট।’ 


মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের সাধারণ মানুষ খেটে খাওয়া মানুষ কৃষক-শ্রমিক-মেহনতী জনতা খেলা গাড়ি চালায় নৌকা বায় কৃষিতে ফসল ফলায় কিন্তু তারা এখন শান্তিতে নাই। গত তেলের দাম আবার বেড়েছে। চিনির দাম বেড়েছে। সবজির দাম বেড়েছে। আমার কৃষক ভাই কৃষক মা তার ছেলেকে একটা ডিম দিতে পারেনা।’


মির্জা ফখরুল বলেন, ‘১০ টাকা কেজি চাল খাওয়াবে বলেছিল। কত টাকা এখন? ৭০ টাকা ৮০ টাকা তার নিচে আসে নাই। এই যে একটা পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে শেখ হাসিনা। তিন কোটি মানুষ বেকার। আমার সামনে জিনিস ছেলেরা আছে প্রত্যেক যুবক তরুণ তারা প্রত্যেকে ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখে। তারা স্বপ্ন দেখেন, চাকরি করবেন। ব্যবসা করবেন মা-বাবার মুখে কিছু খাবার তুলে দিবেন কিন্তু এই সরকার তাদের স্বপ্ন চুরমার করে দিয়েছে।’ 

তিনি বলেন,‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছিল অধিকার আদায়ের জন্য গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণের জন্য। মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য। কথা বলার স্বাধীনতার জন্য। সেই অধিকারগুলো হরণ করার জন্য। চুরি করার জন্য। ডাকাতি করার জন্য। মানুষের স্বপ্নকে খানখান করে দেওয়ার জন্য হাসিনা সরকারের বিচার হবে  জনতার আদালতে।


সিলেটে বিএনপি মহা সমাবেশে আগত মানুষ/ছবি সংগৃহীত 

জেলা বিএনপি'র সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরীর সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, বিএনপির সহ-সাধারণ সম্পাদক ইমরান আহমেদ চৌধুরী মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব মিথ্যা সিদ্দিকী যুগ্ন আহ্বায়ক রেজাউল হাসান রেজাউল সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপি'র ভাইস চেয়ারম্যান এ জেড এম জাহিদ হোসেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার মুক্তাদির সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ফজলুর রহমান তাহসিনা রুশদির চৌধুরী  মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন প্রমুখ।



 


শেয়ার করুন