০৩ মে ২০১২, শুক্রবার, ১০:৩০:৫৬ পূর্বাহ্ন


বঙ্গখ্যাত ৭১ মনীষী বইয়ের মোড়ক উন্মোচন
ইমা এলিস
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৯-১২-২০২২
বঙ্গখ্যাত ৭১ মনীষী বইয়ের মোড়ক উন্মোচন বই হাতে অতিথিবৃন্দ


নিউইয়র্কে জমকালো আয়োজনে ‘বঙ্গখ্যাত ৭১ মনীষী’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে। গত ২৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের একটি রেস্তোরাঁর পার্টি হলে অনুষ্ঠিত হয় এ অনুষ্ঠান। হিমাঙ্কের নিচে তাপমাত্রা উপেক্ষা করে সাংবাদিক আবুল কাশেম সম্পাদিত উক্ত বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রবাসী কবি, লেখক, সাংবাদিক, বীর মুক্তিযোদ্ধা, রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। প্রকাশিত ‘বঙ্গখ্যাত ৭১ মনীষী’ বই নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা করেন উপস্থিত গুণী ব্যক্তিরা। চলতি বছর ঢাকায় অমর একুশে গ্রন্থমেলায় গ্রন্থটি প্রকাশিত হয়। গ্রন্থটির প্রকাশক বেহুলা বাংলা এবং পরিবেশক রকমারি ডটকম। অনুষ্ঠানটির যৌথ আয়োজক ছিলেন সাদেক আলী ফাউন্ডেশন ও নিউ ইয়র্কস্থ শেরপুর জেলা সমিতি।

নিউইয়র্কস্থ শেরপুর জেলা সমিতির মামুন রাশেদের সভাপতিত্বে এবং আশরাফুল হাসান বুলবুলের চমকপ্রদ উপস্থাপনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন ‘বঙ্গখ্যাত ৭১ মনীষী’ সংকলিত বইয়ের লেখক সাংবাদিক আবুল কাশেম, সাপ্তাহিক বাঙালির সম্পাদক কৌশিক আহমেদ, প্রবীণ সাংবাদিক সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহ, লেখক ও সাংবাদিক মইনুদ্দিন নাসের, কবি, লেখক ও প্রকাশক এবিএম সালেহ উদ্দিন ও কবি ও লেখক ফকির ইলিয়াস, সাপ্তাহিক প্রবাসের সম্পাদক মোহাম্মদ সাঈদ, মূলধারার রাজনীতিবিদ, মোর্শেদ আলম, সাবেক সচিব এ কেএম বদরুল মজিদ, ড. সুদীপ্ত দেব, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মুকিত চৌধুরী, লেখক ও রাজনীতিবিদ শামসুদ্দিন আজাদ, প্রকৌশলী ও ব্যবসায়ী মাহফুজুল হক, ব্যবসায়ী মাহবুবুর রহমান টুকু, বাংলাদেশ সোসাইটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মহিউদ্দিন দেওয়ান, প্রবাসী আইন বিশেজ্ঞ এন মজুমদার, সাবেক সচিব এ কেএম বদরুল মজিদ, আয়েশা বেগম ও সাংবাদিক আবুল কাশেমের বড় মেয়ে শায়লা শারমিন শতাব্দী। অনুষ্ঠানের শুরুতে কোরআন তেলাওয়াত করেন মওলানা শহীদুল্লাহ।

আলোচনা সভায় সাংবাদিক আবুল কাশেম তার স্বাগত বক্তব্যে বলেন, ২০২০ সালের শুরুর দিকে বিশ্ব যখন কোভিড-১৯ এর কবলে পড়ে যখন নাস্তানাবুদ অবস্থা, নিউইয়র্কের মানুষরা কর্মহীন হয়ে ঘরে বসে দিন কাটাচ্ছিল। স্থবির হয়ে পড়েছিল বিশ্বর বড় বড় শহর। নিউইয়র্কে দিনরাত সাইরেন বাজিয়ে কেবল রোগীদের জরুরি যানবাহনের ছুটে চলা। ঘরবন্দি সময় কাটানো যখন অনেকটা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ছিল ঠিক তখনই আমি রাজনীতিবিদ, শহিদ বুদ্ধিজীবী, সমাজসেবক, শহিদ বীরশ্রেষ্ঠ, কবি, মহাকবি, লেখক, গবেষক, বিজ্ঞানী, সাংবাদিক, গীতিকার, সুরকার, নাট্যকার, জমিদার, নওয়াব, স্বাধীনতা সংগ্রামী, শিক্ষাবিদ, ইতিহাসবিদ, বিপ্লবী, দানবীর, চলচ্চিত্রকর, চিত্রকর ও ভাস্করদের জীবন বৃত্তান্ত পড়ে তা সংগ্রহ করেন। এরপর মনীষীদের জীবনী নিয়ে একটি সংকলন প্রকাশ করার চিন্তা মাথায় আসে। তিনি বলেন, এই বইয়ে সকল মনীষীদের জীবনী তুলে ধরা সম্ভব হয়নি। দেশ ও প্রবাসের পাঠকরা যদি আমার এ ক্ষুদ্র প্রয়াসকে গ্রহণ করেন, তাহলে আগামীতে আরো ৫২ এবং ২১ মনীষীর জীবনী সংবলিত বই বের করার পরিকল্পনা রয়েছে। এ সংকলনে প্রথমেই ১০১ জন মনীষীর তালিকা তৈরি করা হয়েছিল, কিন্তু সব দিক বিবেচনা করে পরে ৭১ জান মনীষীর জীবনী প্রকাশের সিদ্ধান্ত নিই। এটি আমার প্রথম প্রয়াস। বইয়ে ভুলত্রুটি থাকাটা স্বাভাবিক। পাঠকরা যদি এমন কোনো ভুল পেয়ে যান তা ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখার আহ্বান জানান তিনি।  

অনুষ্ঠানের আলোচক সাপ্তাহিক বাঙালির সম্পাদক কৌশিক আহমেদ তার বক্তব্যে ‘বঙ্গখ্যাত ৭১ মনীষী’ বইয়ের নানা দিক উল্লেখ করে বলেন, বাংলা সাহিত্যের অনেক কবি লেখক ও সাধকের জীবনী এই বইয়ে প্রকাশ করা হয়নি। হয়তো লেখক আগামীতে তার নতুন কোনো সংকলনে তা তুলে ধরবেন।

লেখক ও সাংবাদিক মইনুদ্দিন নাসের দু’জন বীর মুক্তিযোদ্ধা কবির কথা উল্লেখ করে বলেন, তাদের জীবনী এ সংকলনে আসা জরুরি ছিল, কিন্তু এ সংকলনে লেখক তার নিজের পছন্দের মনীষীদের জীবনী নিয়ে যেহেতু সংকলনটি প্রকাশ করেছেন সেখানে আমার বলার কিছুই নেই। তিনি আগেই উল্লেখ করেছেন আগামী আরো কয়েকটি সংকলন করবেন।

কবি ও লেখক ফকির ইলিয়াস তার বক্তব্যে প্রকাশিত গ্রন্থটির ভালো-মন্দ নানা বিষয়ে আলোচনা তুলে ধরেন এবং গ্রন্থে প্রকাশিত ৭১ জন মনীষীর নাম পড়ে শোনান।

কবি, লেখক ও প্রকাশক এবিএম সালেহ উদ্দিন বলেন, একটি সংকলন বা বই প্রকাশ করতে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। বিশেষ করে প্রবাসে বলে এ কাজ করা একটি কষ্ট সাধ্য ব্যাপার। বইয়ের ভুল-ত্রুটি থাকাটা স্বাভাবিক, এসব বিষয় আলোচনা করে লেখকের মনকে দুর্বল না করে তাকে আরো উৎসাহিত করাই আমাদের মূল লক্ষ্য। 

অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন প্রবাসের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী কৌশলী ইমা ও শাহরিন সুলতানা। শিল্পীদের তবলায় সঙ্গত করেন প্রবাসের জনপ্রিয় তবলাবাদক স্বপন দত্ত।

শেয়ার করুন