২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ০৯:২৯:৪৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
সরকার ও বেসরকারি উদ্যোগে দরিদ্রমুক্ত দেশ গড়ে উঠবে - আসাদুজ্জামান খান কামাল ৭০ শতাংশ মৃত্যু অসংক্রামক রোগে, বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি ‘বিদেশে দেশবিরোধী অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় আইনে ব্যবস্থা নিন’ ভূল স্বীকার করে সরে দাড়ানোয় একজনের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার বাফেলোতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে দুই বাংলাদেশী নিহত ‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জের, বিএনপির বহিস্কার ৭৬ থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান


সেমিনারে নেতৃবৃন্দ
বাংলাদেশের সভ্যতার সাথে আছে নদীর সর্ম্পক
বিশেষ প্রতিবেদক
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৬-১১-২০২২
বাংলাদেশের সভ্যতার সাথে আছে নদীর সর্ম্পক


বরেণ্য ইতিহাসবিদ অধ্যাপক ড. আবদুল মমিন চৌধুরী বলেছেন, আমার নিজের দেশের পুরো সভ্যতার সাথে নদীর একটা সর্ম্পক আছে। এনিয়ে ইতিহাসবিদদের ব্যপক গবেষণা প্রয়োজন। বাংলাদেশ ইতিহাস সমিতির ২০তম আন্তর্জাতিক দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন উদ্বোধন করে অধ্যাপক ড. আবদুল মমিন চৌধুরী একথা বলেন। 

অধ্যাপক ড. আবদুল মমিন চৌধুরী আরো বলেন, এই নদী আর মানুষ এই নিয়ে বাংলাদেশ। আর এই নদীই সৃষ্টি করেছে একটা বিরাট ব-দ্বীপ। এক দু-বছরে না নয়, সহস্রাধিক বছরে। এবং প্রধান প্রধান নদীগুলি তৈরি করেছে পৃথিবীর অন্যতম এই ডেল্টা। আর এই যে ডেল্টাফিকেশন? এতে নদীর যে অবদান-এটা নিয়ে গভীর গবেষণার সুযোগ রয়েছে। এবং এই ডেল্টা অংশের আয়তন বাড়ছে। এইভাবে আয়তন বাড়ার সাথে সাথে কিন্তু ভাষা সংস্কৃতি সব কিছুর মধ্যে ভিন্নতার সৃষ্টি হয়েছে। বাংলা আমরা বলি বটে, কিন্তু বাংলার প্রতিটি জেলায় নিজের একটা আঞ্চলিকতা আছে। এই বাংলা ভাষায় মধ্যে নদীর প্রভাব আছে। এটা নিয়ে গবেষণা করতে গেলে দেখা যাবে একেকটা জোনের মধ্যে একেকটা ভাষা আছে। এবং এই জোনগুলি তৈরি করেছে নদী। বড় নদী জন্ম দিয়েছে অসংখ্য নদী, খাল-বিল-নদী নালা, হাওড়-বিল। আর এগুলি নিয়ে যথেষ্ট গবেষণার প্রয়োজন আছে। তিনি বলেন, বর্তমান ইতিহাস এখন আর রাজা-বাদশা শ্রেণীর ইতিহাস নেই। ইতিহাসবিদদের উচিৎ জনজীবনের উপর ভিত্তি করে ইতিহাস চর্চায় নবীনদের উৎসাহিত করা।

শুক্রবার জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমি (নায়েম) ঢাকায় শুরু হয়ে শনিবারে শেষ হয়। 

এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমান বক্তব্য রাখেন। তিনি ইতিহাসবেত্তাদের এই সম্মিলনীর মধ্য দিয়ে নিজেদের আন্ত:সম্পর্ক যেমন বৃদ্ধি পাবে তেমনি ইতিহাস চর্চা, এর লিখন, গবেষণার পরিসর বৃদ্ধিরও নতুন নতুন সুযোগ ঘটবে বলে আশা করেন। তিনি গবেষণার মাধ্যমে বিশেষত মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস রচনা ও জাতির জন্য বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের জন্য এই ইতিহাসের প্রতি অনুরাগ ও সচেতনতা তৈরির জন্য ইতিহাসবিদদের প্রতি আহবান জানান। 

সম্মেলনে মূখ্য বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ ভারতের নেতাজি সুভাষ মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রঞ্জন চক্রবর্তী। তিনি উল্লেখ করেন যে কীভাবে ব-দ্বীপের রাজনৈতিক অর্থনীতি, উৎপাদন, ফসলের ধরণ, অভ্যন্তরীণ ও বিদেশী বাণিজ্য, জনসংখ্যার বিন্যাস, সংস্কৃতি এবং অর্থনীতির বিকাশ ঘটেছে এবং জলবায়ু, বন, নদী ব্যবস্থা এবং জলবিদ্যার পরিবর্তনের মাধ্যমে রূপান্তরিত হয়েছিল। এতে প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন সুপার সাইক্লোন, প্রচন্ড বজ্রঝড় এবং বন্যার সমৃদ্ধ ইতিহাসের সাথে মানবসমাজের মিথস্ক্রিয়ার জটিল গতিশীলতার একটি অন্বেষণ জড়িত। যার ফলে জীবন, সম্পত্তি, গবাদিপশু, মানব বসতি এবং বন্যপ্রাণীর ক্ষতির পাশাপাশি বড় পরিবর্তন ঘটে ঔপনিবেশিক বাংলার ইতিহাসে। জলবায়ু পরিবর্তনের ঐতিহাসিক প্রভাব মানুষের জীবনকে উন্নত করতে পারে এবং সমাজের উন্নতি ঘটাতে পারে, বা সভ্যতার সামাজিক পতনে সহায়ক হতে পারে।  

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে ইতিহাস সমিতির সভাপতি অধ্যাপক শরিফ উল্লাাহ্ ভুঁইয়া ইতিহাস বিকৃতির মহোৎসব বন্ধে অতি দ্রুত স্কুল ও কলেজে ১০০ নম্বরের বাংলাদেশ অধ্যায়ন কোর্স চালু করার প্রস্তাব রাখেন। তিনি বলেন, এর কোন বিকল্প নেই। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আশা ইসলাম নাঈম সমিতির কার্যক্রম তুলে ধরেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সমিতির যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক এ টি এম আতিকুর রহমান। 

দু’দিন ব্যাপী এ সম্মেলনে দেশ বিদেশের প্রায় তিনশত ইতিহাস অনুরাগী ব্যক্তি ও ডেলিগেট অংশ নিচ্ছেন। এ সম্মেলনে প্রায় একশটি ইতিহাস গবেষণামূলক প্রবন্ধ পাঠ করা হয়। 

দু’দিনব্যাপী দ্বি বার্ষিক সম্মেলন বাংলাদেশ ইতিহাস সমিতির নতুন পরিচালনা কমিটি গঠন বরা হয়। এতে সভাপতি: অধ্যাপক আবুল কাশেম, ইতিহাস বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী সহ-সভাপতি: (৫ জন) অধ্যাপক আবু মোঃ দেলোয়ার হোসেন, চেয়ারম্যান, ইতিহাস বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী চৌধুরী, ইতিহাস বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, অধ্যাপক এ টি এম. আতিকুর রহমান, ইতিহাস বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, অধ্যাপক ডালিয়া আহমেদ, অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক, ইতিহাস বিভাগ, সরকারি তিতুমীর কলেজ, অধ্যাপক মোছাঃ খোদেজা খাতুন, ইতিহাস বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, সাধারণ সম্পাদক : অধ্যাপক সুরমা জাকারিয়া চৌধুরী, ইতিহাস বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, যুগ্ম-সম্পাদক: (৪ জন) অধ্যাপক আরিফা সুলতানা, ইতিহাস বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, অধ্যাপক আকসাদুল আলম, ইতিহাস বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, অধ্যাপক মোহাম্মদ মাহবুবুল হক, ডিন, কলা ও মানবিক অনুষদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, ড. মোঃ আব্দুল কুদ্দুস সিকদার, সহযোগী অধ্যাপক, ঢাকা কলেজ, ঢাকা, কোষাধ্যক্ষ : অধ্যাপক প্রদীপ চাঁন দুগার, ইতিহাস বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা, সদস্য : (২৭ জন) অধ্যাপক শরিফ উল্লাহ্ ভুঁইয়া, ইতিহাস বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, অধ্যাপক আহমেদ আবদুল্লাহ জামাল, ইতিহাস বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, অধ্যাপক নুরুল হুদা আবুল মনসুর, ইতিহাস বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, অধ্যাপক চিত্তরঞ্জন মিশ্র, ইতিহাস বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, অধ্যাপক আশা ইসলাম নাঈম, ইতিহাস বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, অধ্যাপক মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ, ইতিহাস বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, অধ্যাপক আশফাক হোসেন, ইতিহাস বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, অধ্যাপক মর্ত্তুজা খালেদ, ইতিহাস বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, অধ্যাপক সুফি মোস্তাফিজুর রহমান, প্রতœতত্ত্ব বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, অধ্যাপক আনোয়ারুল ইসলাম, ইতিহাস বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, অধ্যাপক আবু মোঃ ইকবাল রুমী শাহ, ইতিহাস বিভাগ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, অধ্যাপক মাহফিল আরা বেগম, ইতিহাস বিভাগ, ইডেন কলেজ, অধ্যাপক সরদার আকবর আলী, সরকারি বি এম কলেজ, অধ্যাপক মোঃ শামসুজ্জামান, ইতিহাস বিভাগ, সরকারি মহিলা কলেজ, অধ্যাপক টি. এম. সোহেল, অধ্যক্ষ, সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজ, অধ্যাপক বীপা চৌধুরী (অব.), ইতিহাস বিভাগ, ঢাকা কলেজ, হোসনে আরা, ইতিহাস বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল, পরিচালক, বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড, ড. মো. আবদুল বাতেন চৌধুরী, সহযোগী অধ্যাপক, ইতিহাস বিভাগ, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, ড. এস এম রেজাউল করিম, সহযোগী অধ্যাপক, ইতিহাস বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ড. সাহিদুর রহমান, সহযোগী অধ্যাপক, ইতিহাস বিভাগ, সরকারি মুজিবুর রহমান মহিলা কলেজ, ড. মিলটন কুমার দেব, সহযোগী অধ্যাপক, ইতিহাস বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, আলী আকবর, সহকারী পরিচালক, বাংলাদেশ জাতীয় আরকাইভস, আগারগাঁও, শহিদুল হাসান, সহকারী অধ্যাপক, ইতিহাস বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, সানজীদা পারভীন, চেয়ারম্যান, ইতিহাস বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ড. শুধাংশু রঞ্জন রায়, উপ প্রকল্প পরিচালক, মাউশি, ড. কাজী জাহেদ ইকবাল, এ্যাডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট-কে মনোনয়নের মধ্য দিয়ে ১২ নভেম্বর ২০২২ বিকেলে শেষ হয়।

শেয়ার করুন