২০ এপ্রিল ২০১২, শনিবার, ১১:০৩:৫৯ পূর্বাহ্ন


জিয়াউর রহমানের জন্মদিনে মির্জা ফখরুল
‘গণতন্ত্র ফেরানোর আন্দোলন’ সফল করার শপথ নিয়েছে বিএনপি
নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৯-০১-২০২৩
‘গণতন্ত্র ফেরানোর আন্দোলন’ সফল করার শপথ নিয়েছে বিএনপি


শেরে বাংলা নগরে বৃহস্পতিবার সকালে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মাঝারে ৮৭তম জন্মবার্ষিকীতে পুস্পমাল্য অর্পন করে এই শপথ নেয় নেতা-কর্মীরা।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘‘ আজকে যখন সমগ্র জাতি অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়েছে, সমগ্র জাতি আবার আওয়ামী লীগেরই একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করবার যে চক্রান্ত সেই চক্রান্তের বিরুদ্ধে যখন সমগ্র জাতি জেগে উঠেছে। আমাদের নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে সমগ্র জাতি আবার জেগে উঠতে শুরু করেছে এবং গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করবার যে সংগ্রাম সেই সংগ্রামে আজকে সমগ্র মানুষ জেগে উঠেছে।


আমরা আশা করি, বিশ্বাস করি আজকের এদিনে আবার নতুন করে শপথ নিয়ে অতি দ্রুত সমগ্র মানুষকে সংগঠিত করে আমরা এই সংগ্রাম এই লড়াই, গণতন্ত্রের যে সংগ্রাম, বহুদলীয় গণতন্ত্র রক্ষঅ করবার যে সংগ্রাম, বাংলাদেশকে রক্ষা করবার যে সংগ্রাম,স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করবার যে সংগ্রাম সেই সংগ্রামে আমরা অবশ্যই জয়ী হবো।”

তিনি বলেন, ‘‘ জিয়াউর রহমান একজন ক্ষনজন্মা মানুষ ছিলেন। তার স্বাধীনতার ঘোষণার মধ্যে দিয়ে এই জাতির স্বাধীনতা যুদ্ধ-মুক্তিযুদ্ধ যুদ্ধ শুরু হয়নি, তিনি সেই যুদ্ধে নিজে নেতৃত্ব দিয়েছেন সামনে থেকে এবং প্রায় ৯ মাস পরে দেশ স্বাধীন হয়েছে। পরবর্তিকালে জাতির এক ক্রান্তিলগ্নে যখন এই জাতির সামনে একটা সংকট উপস্থিত হয়েছিলো, যখন জাতির নেতৃত্ব শূণ্য ছিলো, দিক-নিদের্শনা ছিলো না, হতাশায় নিমজ্জিত হয়েছিলো সমগ্র জাতি সেই সময়ে আবার এই মহান পুরুষের যে আহ্বান তার সামনে এগিয়ে আসা এবং তার ঘোষণার মধ্য দিয়ে একটা নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছিলো, নতুন স্বপ্ন দেখেছিলো বাংলাদেশের মানুষ দেশটিকে নির্মাণ করবার।”

‘‘ খুব অল্প সময়ের মধ্যে জিয়াউর রহমান বিভক্ত জাতিকে একত্রিত করেছিলেন এবং একদলীয় শাসনের অন্ধকার থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্রের আলোতে নিয়ে এসেছিলেন। তিনি একটি সীমাবদ্ধ, সীমিত, ভ্রান্ত সমাতান্ত্রিক অর্থনীতি থেকে জাতিকে একটা মুক্তবাজার অর্থনীতি, মিশ্র অর্থনীতির আলোতে ফিরিয়ে নিয়ে এসেছিলেন এবং বাংলাদেশের যে সমৃদ্ধি যে উন্নয়ন তার ভিত্তি তিনি রচনা করেছিলেন একটা অভূতপূর্ব অসাধারণ নেতৃত্বে মধ্য দিয়ে। কৃষিখাতে, শিল্পখাতে উন্নয়ন ঘটিয়ে মানুষের আয়ের পরিবর্তন করেছিলেন, মানুষের মধ্যে একটা প্রেরণা সৃষ্টি করেছিলেন। বহুদলীয় গণতন্ত্রের মধ্য দিয়ে জিয়াউর রহমান মানুষের অধিকারকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিয়েছিলে, বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে ফিরিয়ে নিয়েছিলেন। আমাদের দুর্ভাগ্য এই নেতাকে আমরা বেশিদিন ধরে রাখতে পারিনি।দেশের শত্রুদের হাতে তিনি শহীদ হয়েছিলেন। আজো আমরা তাকে স্মরণ করি এবং তার জীবন-আদর্শকে অনুসরণ করে, তার ১৯ দফা কর্মসূচিকে সামনে নিয়ে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে চলেছি।”

সকাল ১১টায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে স্থায়ী কমিটির খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু শেরে বাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়ার কবরে পুস্পমাল্য অর্পন করে শ্রদ্ধা জানান। তারা প্রয়াত নেতার আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন।

এই সময়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, বরকত উল্লাহ বুলু, মীর নাসির, আহমেদ আজম খান, এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, ফরহাদ হালিম ডোনার, রকিবুল ইসলাম বকুল, কেন্দ্রীয় নেতা হাবিব উন নবী খান সোহেল, আবদুস সালাম আজাদ, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, মীর সরাফত আলী সপু, শাম্মী আখতার, হারুনুর রশীদ, মীর নেওয়াজ আলী, রফিক শিকদার, এসএম জাহাঙ্গীর, ঢাকা মহানগরের আমিনুল হক, নবী উল্লাহ নবী, মুক্তিযোদ্ধা দলের ইশতিয়াক আাজিজ উলফাত, শ্রমিক দলের আনোয়ার হোসাইন, যুব দলের মামুন হাসান মোনায়েম মুন্না, মহিলা দলের হেলেন জেরিন খান, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, শহিদুল ইসলাম বাবুল, মতস্যজীবী দলের আবদুর রহিম, তাঁতী দলের কাজী মনিরুজ্জামান, ড্যাবের অধ্যাপক হারুন আল রশিদ, অধ্যাপক আব্দুস সালাম, জাসাসের জাকির হোসেন রোকন, ছাত্র দলের কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমূখ নেতারা ছিলেন।

পরে দুপুরে নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচ তলায় বিএনপির উদ্যোগে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ও রক্তদান কর্মসূচি উদ্বোধন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। দিনব্যাপী এই কর্মসূচির বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আব্দুল কুদ্দুস, সিরাজউদ্দিন আহমেদ, স্বাস্থ্য সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, সহ সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, ড্যাবের সভাপতি হারুন আল রশিদ, মহাসচিব অধ্যাপক আব্দুস সালামসহ চিকিতসকরা ছিলেন।   

কর্মসূচির মধ্যে ১৯ জানুয়ারি ভোরে কেন্দ্রীয়সহ সারাদেশে দলীয় কার্যালয়ে দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। বিকাল তিনটায় রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে হবে আলোচনা সভা।

দিবসটি উপলক্ষে জিয়ার ছবি সম্বলিত পোস্টার প্রকাশ করেছে দলটি। ১৯৩৬ সালের ১৯ জানুয়ারি জিয়া বগুড়ার গাবতলীর বাগবাড়ী গ্রামে জন্ম গ্রহন করেন।


শেয়ার করুন