২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ০১:৪৩:০৬ অপরাহ্ন


দেশকে রুনা খান
এক জীবনে আমি সব পেয়েছি
আলমগীর কবির
  • আপডেট করা হয়েছে : ২২-০২-২০২৩
এক জীবনে আমি সব পেয়েছি রুনা খান


নাটক কিংবা সিনেমা, সব জায়গায়ই সমানতালে এগিয়ে চলছেন অভিনেত্রী রুনা খান। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া এই অভিনেত্রী। ওজন কমিয়ে নতুন নতুন ফটোশুটে নিয়মিত অংশ নিচ্ছেন। নতুন করে তাই তাকে নিয়ে আলোচনা হচ্ছে প্রতিনিয়ত। সম্প্রতি তিনি কাজ করেছেন ’আন্তঃনগর’ নামের একটি ওয়েব সিনেমাতেও। এসব নিয়ে তিনি কথা বলেছেন দেশ পত্রিকার সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আলমগীর কবির

প্রশ্ন: ব্যক্তি রুনা খান বরাবরই স্পষ্টভাষী। বিষয়টি আপনার ক্যারিয়ারের উপর কেমন প্রভাব ফেলেছে?

রুনা খান: আমার মনে হয় যতটুকু সফল হয়েছি তার অনেকটা জুড়ে রয়েছে স্পষ্ট ভাষায় কথা বলার বিষয়টি। আপনি যখন ভালো এবং মন্দকে আলাদা করতে শিখবেন তখন দেখা যাবে লুকিয়ে অস্পষ্টভাবে কথা বলার মধ্যে কোনো আনন্দ নেই। যখন যেখানে যেটা প্রয়োজন সেটা সরাসরি বলাটাই উত্তম। এই বিষয়টি আমার ক্যারিয়ার গঠনে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করেছে।

প্রশ্ন: আপনি কি নিজেকে একজন সফল মানুষ দাবি করেন?

 রুনা খান: অবশ্য আমি পৃথিবীর সফল মানুষদের একজন। এটা আমার নিজেকে নিয়ে নিজের ভাবনা। আমি বিশ্বাস করি, মানুষের একটাই জীবন। এটা আমি নিজের মতো করে যাপন করতে চাই। ধরুন আমি পৃথিবীর ১ নম্বর নায়িকা, কিন্তু আমার সংসারজীবন নেই, আমার পারিবারিক জীবন নেই, মানসিকভাবে আমি সুখী নই, এমন জীবনযাপনটা আমি চাই না।

প্রশ্ন: আপনার কাছে জীবনটা কেমন?

রুনা খান: একজন কন্যা, মা, মেয়ে, স্ত্রী হিসেবে আমি ধন্য। আমার মা-বাবা মনে করেন আমি পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সন্তান, মেয়ের কাছে আমি শ্রেষ্ঠ মা। স্বামী মনে করেন অসাধারণ স্ত্রী। পাশাপাশি কর্মজীবনের জন্যও কিছু মানুষ আমাকে ভালোবাসেন। নিজের মতো জীবনটা চালিয়ে নিচ্ছি। এক জীবনে সুখে থাকার জন্য আর কী লাগে বলেন?

প্রশ্ন: সম্প্রতি ওয়েব সিরিজে যুক্ত হয়েছেন। ’আন্তঃনগর’ ওয়েব সিনেমার কোন বিষয়টি ভালো লেগেছে?

রুনা খান: প্রথমত গল্প ও চরিত্র পছন্দ হয়েছে। নির্মাতা গৌতম কৌরির আগের কাজ দেখেছি। প্রতিটি সিনেমার নির্মাতা নিজের মতো করে গল্প দেখানোর চেষ্টা করেন। সেদিক থেকে আন্তঃনগরে গল্প বলায় এক ধরনের ভিন্নতা রয়েছে। এই নগরের ইটপাথরে মিশে থাকা আনন্দ-বেদনার কিছু গল্প উঠে এসেছে ছবিতে।

প্রশ্ন: এখন কি শুধু ওয়েব মাধ্যমের কাজ নিয়েই ব্যস্ত?

রুনা খান: বিষয়টি সে রকম নয়। ভালো গল্প পেলে টিভিতেও কাজ করছি। তবে ওয়েবের কাজ বেড়েছে।

প্রশ্ন: হাতে থাকা সিনেমার কী খবর?

রুনা খান: এরই মধ্যে চারটি সিনেমার কাজ করেছি। এগুলো হলো- কৌশিক শংকর দাসের ’দাফন’, রুবেল আনুশের ’উধাও’, পঙ্কজ পালিতের ’একটি না বলা গল্প’ ও তৌফিক এলাহির স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ’নীলাম্বরী’।

প্রশ্ন: ওটিটির সব কাজ আপনাকে আত্মতুষ্টি দেয়?

রুনা খান: ভালো কাজের আশা যে সব সময় পূরণ হয় তা নয়; অনেক সময় আশাহতও হই। যতটা ভালো আশা করি হয়তো সেভাবে পারি না। অনেক সময় দেখা যায়, চিত্রনাট্যে যে গল্প পাই বা নির্মাতারা যে গল্প সম্পর্কে মুখে বলেন- তা হয় না।

প্রশ্ন:  আবার কবে মঞ্চে দেখা যাবে আপনাকে?

রুনা খান: মঞ্চে কাজ করার জন্য আমি সব সময় প্রস্তুত। কিন্তু নিজেও জানি না আবার কবে মঞ্চে অভিনয় করতে পারব। দলের দুটি নাটকে অভিনয় করছি। নাটক দুটি শিগগিরই মঞ্চস্থ হবে কিনা, তা বলতে পারছি না।

প্রশ্ন: নিজেকে নতুনরূপে উপস্থাপনের ভাবনা এলো কখন?

রুনা খান: নাটক, ওটিটি কনটেন্ট বা সিনেমার কাজের জন্য নয়; নিজে শারীরিকভাবে সুস্থতার জন্য ফিট থাকার চেষ্টা করছি। অনেক অনেক চেষ্টা করেও পারিনি। গত বছর পেরেছি। পঞ্চাশবার ব্যর্থ হয়েছি, কিন্তু হাল ছেড়ে দিইনি। এই গল্প কেউ জানে না। আমার এই চেষ্টা যদি কারও ভালো লাগে, কাউকে অনুপ্রাণিত করে, তাহলে আমি আনন্দিত হবো। তবে এখানে একটি কথা বলতে হয়, আমার এই পরিবর্তন নিয়ে এত মাতামাতি হয়েছে, যা ভালো লাগেনি। শুধু আমাদের দেশে নয়, কলকাতার গণমাধ্যমেও এ নিয়ে কথা হয়েছে। আমি বিব্রত।

প্রশ্ন:  দীর্ঘ ক্যারিয়ারে কোনো আফসোস আছে?

রুনা খান: আমার কোনো আফসোস নেই। যতটুকু পেয়েছি, তাতেই খুশি। আমি কেন প্রথম সারিতে নই, আমাকে এটা করতে হবে, সেটা করতে হবে, এটা ভাবি না। শুরুটা কোথা থেকে করেছি, সেটা মনে করি। এক জীবনে আমি সব পেয়েছি। এর বেশি কিছু আমি চাই না। আমি কৃতজ্ঞ মানুষ। 

শেয়ার করুন