২৭ এপ্রিল ২০১২, শনিবার, ০১:৫৮:৫৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ইউরোপে ভারতীয় ৫২৭ পণ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারি উপাদন শনাক্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি বিএনপির আন্দোলন ঠেকানোই ক্ষমতাসীনদের প্রধান চ্যালেঞ্জ বিএনপিকে মাঠে ফেরাচ্ছে আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে অদৃশ্য চাপে বিএনপি


প্রতিবন্ধীদের চাহিদার তুলনায় বাজেট অপ্রতুল
নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৮-০৬-২০২৩
প্রতিবন্ধীদের চাহিদার তুলনায় বাজেট অপ্রতুল


অ্যাকসেস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন এর উদ্যোগে এক সংবাদ সম্মেলন বক্তারা বলেছেন, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের চাহিদার তুলনায় বাজেট খুবই অপ্রতুল। 

রবিবার প্রস্তাবিত  “জাতীয় বাজেট ২০২৩-২৪: প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অবস্থান” শীর্ষক বাজেট পরবর্তী প্রতিক্রিয়া সভা জাতীয় প্রেস ক্লাব, মাওলানা মোহাম্মদ আকরম খাঁ হল, ঢাকায় আয়োজন করা হয়। এতে অংশগ্রহণ করেন বেসরকারি সংস্থা, সাংবাদিক, পপ্রতিবন্ধী ব্যক্তি, সুশীল সমাজ, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সংগঠনের প্রতিনিধি।

বাজেট প্রতিক্রিয়াটি যৌথভাবে অ্যাকসেস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন, ডিজএ্যাবল্ড চাইল্ড ফাউন্ডেশন, প্রতিবন্ধী নারীদের জাতীয় পরিষদ, জাতীয় তৃণমূল প্রতিবন্ধী সংস্থা, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন, গ্লোবাল এফেয়ার্স কানাডা, সীতাকুন্ড ফেডারেশন, এসডিএসএল, টার্নিং পয়েন্ট ফাউন্ডেশন, মামা ক্যাশ ও উইমেন উইথ ডিজএ্যাবিলিটিজ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন এর আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়। ডিজএ্যাবল্ড চাইল্ড ফাউন্ডেশন এর নির্বাহী পরিচালক নাসরিন জাহান এর স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। অ্যাকসেস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন এর চেয়ারপারসন মহুয়া পাল এর সভাপতিত্বে আয়োজক সংস্থার পক্ষে অ্যাকসেস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন এর নির্বাহী পরিচালক আলবার্ট মোল্লা বাজেটে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের বরাদ্দের উপর বিশ্লেষণ উপস্থাপন করেন। 

আলবার্ট মোল্লা বলেন. প্রতিবন্ধিতা খাতে বরাদ্দ সামাজিক নিরাপত্তা খাতের মাত্র ২.৯৪% এবং মোট বাজেটের ০.৪৯% যা খুবই অপ্রতুল।প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মাসিক ভাতা অপরিবর্তিত (৮৫০ টাকা) রয়েছে যা বর্তমান দ্রব্য মূল্যের উর্ধ্বগতি ও জীবন যাত্রার ব্যয় বিবেচনায় খুবই সামান্য। বিগত ৫ বছর ধরে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির সংখ্যা অপরিবর্তিত রয়েছে (১ লক্ষ) যা যৌক্তিক নয়। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের বাজেট বরাদ্দ সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় কেন্দ্রিক। অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন ধারণায় মন্ত্রণালয় ভিত্তিক বাজেট বরাদ্দ খুবই প্রয়োজন। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের দক্ষতা উন্নয়ন ও আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টিতে কোন উদ্যোগ বাজেটে নেই। স্মার্ট সোসাইটি বিনির্মাণে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য “কাউকে পেছনে ফেলে নয়” এই অঙ্গীকার বাস্তবায়ন এবং সকলের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করার কথা অর্থমন্ত্রী বাজেট বক্তৃতায় উল্লেখ করেছেন। কিন্তু প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কিভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হবে তার প্রতিফলন এই বাজেটে নেই। বাজেটে প্রতিবন্ধিতা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সনদ, জাতীয় আইন, নীতিমালা, গ্লোবাল ডিজএবিলিটি সামিট ২০২২ এ দেয়া সরকারের প্রতিশ্রুতি ও কর্মপরিকল্পনা বাস্তায়নের প্রতিফলন নেই।

প্রতিক্রিয়া সভায় ডাব্লিউডিডিএফ এর নির্বাহী পরিচালক আশরাফুন নাহার মিষ্টি সরকারের কাছে ১১টি দাবি পুনর্বিবেচনার জন্য তুলে ধরেন। যার মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হলো, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মাসিক ভাতা জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশল এবং অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার ভিত্তিতে নির্ধারণ করা, অতি গুরুতর মাত্রার প্রতিবন্ধী ব্যক্তির জন্য কেয়ারগিভারের জন্য ভাতা কার্যক্রম চালু করা, কোভিড-১৯ পরবর্তী পরিবর্তিত পরিস্থিতি ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার কারণে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টিতে প্রকল্প গ্রহণ করা, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণের জন্য বরাদ্দ এবং প্রশিক্ষণ শেষে কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে সরকারের উদ্যোগ গ্রহণ, সরকারি চাকরিতে কোটা বাস্তবায়নের জন্য কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ এবং বেসরকারি নিয়োগকর্তাদের উদ্বুদ্ধ করতে বিভিন্ন ধাপে কর রেয়াতের সুবিধা রাখা, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের চলন ও যোগাযোগ সহজ করতে প্রতিবন্ধিতার ধরন ও চাহিদা মোতাবেক মানসম্পন্ন সহায়ক উপকরণ।

প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সঞ্চয়পত্র, এফডিআর, ডিপিএস এর উপর সকল প্রকার ভ্যাট-ট্যাক্স ও সার চার্জ প্রত্যাহার করা, সকল প্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষার আওতায় আনতে ও ঝরে পড়া রোধ করতে শতভাগ প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীকে শিক্ষা উপবৃত্তির আওতায় আনা, কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্যেও আলাদা উপবৃত্তি চালু করা, শিক্ষা ও কারিগরি প্রতিষ্ঠানের ভৌত অবকাঠামো ও তথ্যগত প্রবেশগম্যতা নিশ্চিত করা সহ শিক্ষা সহায়ক উপকরণ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের উপযোগী করা যেমন- ব্রেইল বই, এক্সেসিবল ই-বুক ইত্যাদি, একীভূত শিক্ষা কার্যক্রম বাস্তবায়নে শিক্ষক প্রশিক্ষণ কারিকুলামে ইশারা ভাষা ও ব্রেইল পদ্ধতি অন্তর্ভুক্ত করা এবং পাঠদান ও মূল্যায়ন পদ্ধতি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের উপযোগী করতে বাজেট বরাদ্দ রাখা, শ্রবণ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের উন্নয়নের জন্য বাংলা ইশারা ভাষা ইন্সটিটিউট স্থাপনে বাজেটে বরাদ্দ রাখা, সরকারি ও বেসরকারি সকল ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য অবকাঠামোগত ও তথ্যগত প্রবেশগম্যতা নিশ্চিত করা, প্রতিবন্ধী মানুষদের জন্য উপযোগী পাওয়ার র‌্যাম্প বা ম্যানুয়াল র‌্যাম্পযুক্ত বাস আমদানি এবং তৈরি, প্রবেশগম্য আশ্রয় কেন্দ্র ও গৃহহীনদের আবাসন, সাইনেজ ব্যবহার, রেলস্টেশন, বাস টার্মিনাল, লঞ্চ টার্মিনাল, যাতায়াত ব্যবস্থা ইত্যাদি প্রবেশগম্য করা। 


শেয়ার করুন