২৫ এপ্রিল ২০১২, বৃহস্পতিবার, ১০:৪০:৩৭ পূর্বাহ্ন


বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন
বিএনপি ও যুক্তরাষ্ট্রের দাবি এক অভিন্ন
মাসউদুর রহমান
  • আপডেট করা হয়েছে : ২১-০৪-২০২২
বিএনপি ও যুক্তরাষ্ট্রের দাবি এক অভিন্ন সম্প্রতি অনুষ্টিত বিএনপির ইফতার মাহফিলে বিদেশী কুটনৈতিকবৃন্দের একাংশ, ছবি/সংগৃহীত


আগামী জাতীয় নির্বাচন কেন্দ্র করে চলছে নানামুখী তৎপরতা। প্রায় দেড় যুগ ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপির ক্ষমতা ফিরে পাওয়ার তৎপরতা দোষের কিছু না। বর্তমান সরকারের টানা তৃতীয় মেয়াদের এখনো প্রায় দুই বছরের মত বাকি। তবু ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, আগামী নির্বাচন কেন্দ্র করে যেন নিদ্রাহীন সময় অতিবাহিত করছে। 

বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিএনপি খোশ মেজাজে থাকলে, প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগের কাটে অস্থিরতায়। আবার আওয়ামী লীগের খোশ মেজাজ মানেই বিএনপির অস্থিরতা। যুগ যুগ ধরে এমনটাই চলে আসছে। কিন্তু এ মুহূর্তে এ দুইয়ের পাশাপাশি যুক্ত হয়েছে ভিনদেশি পলিটিক্সও। বাংলাদেশে বিদেশিদের খোশ মেজাজেরও গুরুত্ব পাচ্ছে। আর এ তালিকায় কোন কোন দেশ, সেটা রাজনীতির সামান্যতম খবরও যারা রাখেন, তারা বুঝে যাবেন। 

তবে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে বিদেশিদের বিভিন্ন তৎপরতার চিত্রের সঙ্গে এখন বিএনপি-আওয়ামী লীগের হাসি-কান্না কাউন্ট হচ্ছে। বিদেশিরা এসে সরাসরি দেশ চালাবে না। দেশের এ শীর্ষ দুই দলের কারোর মাধ্যমেই নিজেদের অস্তিত্ব প্রকাশ করে, নিজেদের স্বার্থ বজায় রাখবে। এভাবেই তো হয়ে আসছে।

এখন প্রশ্ন, তাহলে এ দুই দলের কোনটার মাধ্যমে ভিনদেশিরা এ মুহূর্তে তাদের অস্তিত্ব দেখতে উৎসাহবোধ করছেন। আসলে এ উত্তর এখানে দেয়ার প্রয়োজন নেই। একটু চোখ খুলে তাকালেই স্পষ্ট হয়ে যায় সব। দীর্ঘ তিন মেয়াদ ক্ষমতায় থাকার পর আওয়ামী লীগে আস্থা বেড়ে যাবার কথা। সরকারে ছিল। নিজেরা তো অবশ্যই সুসংগঠিত ও বিদেশিদের খুশি করার উপায়ন্তও তাদেরই ছিল সবচেয়ে বেশি। কিন্তু কেন যেন সে আস্থায় কিছুটা ভাটা। 

যার প্রমাণ মিলে আওয়ামী লীগের বর্তমান অস্থিরতায়। আর এ অস্থিরতার মূলে কিছুদিন আগে বিশ্বের অন্যতম শক্তিধর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার প্রসঙ্গে কিছু সিদ্ধান্ত। অবশ্যই সেটা একটা আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সংস্থা ও তার শীর্ষ সাত কর্মকর্তার ওপর দিয়ে মার্কিনিদের নিষেধাজ্ঞা গেলেও অস্বস্থি ক্ষমতাসীনদের। 

কারন মার্কিনিরা ইশারা ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দিয়েছেন, সরকারের কিছু কর্মকাণ্ডকে বাস্তবতায় রূপদানের জন্যই সংস্থা ও তাদের কর্মকর্তাদের ওপর অমন নিষেধাজ্ঞা। যা আরো খোলাসা করেছেন তারা সদ্য মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের ২০২১-এর যে বার্ষিক প্রতিবেদন। সেখানে বাংলাদেশকে নিয়ে বেশকিছু তোলা প্রশ্ন নিয়ে। সেখানে ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা কিছু কর্মকর্তার কাজকর্ম নিয়েও তারা কথা বলেছেন এবং সেগুলো বর্তমান বাইডেন প্রশাসনের যে নির্বাচনী অঙ্গীকার- গণতন্ত্রের বিকাশ ঘটানো প্রতিটা দেশে, সেটার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

প্রমাণ করে দিয়েছেন তারা যে বাইডেনের গণতন্ত্র সম্মেলনে প্রথমবার না পাওয়া এবং ভবিষ্যতে আমন্ত্রণ পেতে হলে অবশ্যই যে বিষয়গুলোর অবতারণা করেছেন ওই রিপোর্টে, সে বিষয়গুলোর সমাধান করা বাঞ্ছনীয়। প্রশ্ন জাগতে পারে, বাইডেনের গণতন্ত্র সম্মেলনে আমন্ত্রণ না পেলে এমন কী। কিন্তু হ্যাঁ। এ মুহূর্তে ওই সম্মেলনে আমন্ত্রণ পাওয়ার অর্থ হচ্ছে সে দেশে গণতন্ত্র ঠিক আছে। আর না পেলে গণতন্ত্র ঠিক করতে নিজ থেকেই উদ্যোগী হবেন, মার্কিনিরা। সেখানে অন্য কারোর হস্তক্ষেপ পছন্দও করেন না তারা। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে সম্ভবত সেটাই তাদের মূল মিশন। 

বাংলাদেশ মার্কিনিদের চোখে এমন একটা অবস্থানে। আসলে মার্কিন নীতির সঙ্গে বিশ্বের অনেক প্রভাবশালী দেশের ঐকমত্য রয়েছে। প্রকাশ্যে না হলেও তারা একই সুরে কথা বলেন। যেমনটা ন্যাটোভুক্ত দেশগুলো। আরেকটু খোলাসা করে বললে যুক্তরাজ্য সহ ইউরোপীয় ইউনিয়ন, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, কানাডাসহ ওই নীতিতে ভাবাপন্ন দেশসমূহ। বাংলাদেশ মূলত এসব দেশের সঙ্গে বিভিন্নভাবে ব্যাবসা-বাণিজ্যে জড়িত।

বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের মার্কেট ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের সাহায্য সহযোগিতা ওই সব দেশের কাছেই পেয়ে থাকে বিপদ-আপদে। ফলে মার্কিন বলয়ের বাইরে যাবার সুযোগ নেই অন্তত বাংলাদেশের মত একটা অর্থনৈতিক দুর্বল দেশের। এর বাইরে যেতে পারে চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে। কিন্তু সেটার পরিণাম কী তার সংক্ষিপ্তভাবে বললে ছোট্ট একটা উদহরণই যথেষ্ট। পাকিস্তানের সদ্য বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। বিনা বজ্রপাতে, বিনা মেঘে বা প্রচণ্ড রোদের মধ্যেও তুমুল বৃষ্টিতে ভাসিয়ে দেয়া হয়েছে ইমরানকে।

বাংলাদেশে দলমত নির্বিশেষে এক থাকলে আবার এমনটা হয়তো সম্ভব হতো না। কিন্তু পাকিস্তানের মত বাংলাদেশের রাজনীতিতেও বিশাল বিভাজন। একপ্রান্তে বিএনপি ও সমমনা দল। অন্যপ্রান্তে আওয়ামী লীগ ও সমমনা দল। যারা দীর্ঘ ১৪-১৫ বছরে এক মুহূর্তের জন্য অন্তত দেশের স্বার্থে হলেও এক টেবিলে এক কাপ চা পর্যন্ত খাওয়ার জন্য একমত হননি। সুযোগটা তো বিদেশিরা নেবেই, নিচ্ছেও। 

এক্ষেত্রে

নির্বাচন কমিশন ভবন , ছবি/সংগৃহীত  


উদ্যোগী বা দায়িত্ব নেয়ার কথা ছিল থ্রি টাইম ক্ষমতায় থাকাদের। কিন্তু সেটা করেনি। স্বাভাবিকভাবেই যা ঘটছে, সব যাচ্ছে তাদের ওপর দিয়েই। মার্কিনিদের ২০২১ সনের প্রতিবেদনে এমন সব বিষয়ের অবতারণা করেছে, সেগুলোর উত্তর দিতে গিয়ে বেশকিছু বিষয়ে ক্ষমতাসীন ওই দেশের বিভিন্ন নীতি-নৈতিকতা নিয়েও প্রশ্ন করেছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র দফতর। অবশ্যই সেটা ভালো নজরে নেবে না মার্কিনিরা। বিএনপি এখানে একেবারেই দর্শক।

বরং মার্কিনিরা সরাসরিও কিছু কিছু এমন বিষয়ের কৈফিয়ত তলব করছে যেগুলো সরকার বাধ্য হচ্ছে তাদেরকে দিতে। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেছেনও যে, আমাদের অভ্যন্তরীণ অনেক বিষয় তথ্য-উপাত্ত যা আমরা শেয়ার করি না কারো সঙ্গে। কখনো করাও হয়নি। কিন্তু সেগুলোও আমরা তাদের (মার্কিন) দিয়েছি। কতটা প্রেশারে থাকলে এটা করছেন তারা সেটা আর বোঝানোর প্রয়োজন নেই। 

তবে দৃশ্যমান যে বিষয়টার স্পষ্ট সমাধান চায় মার্কিন ও তাদের মিত্ররা। সেটা আগামী জাতীয় নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণমূলক অংশগ্রহণ। এবং সুষ্ঠু একটি অবাধ নির্বাচন। উদহরণও টানছেন তারা, যে অবশ্যই ২০১৪ ও ২০১৮ সনে যে ধরনের নির্বাচন হয়েছে বাংলাদেশে সেভাবে হলে চলবে না। এখানেই আপাতত আটকা পড়ে গেছে আওয়ামী লীগ সরকার। কারণ বিএনপি ও সমমনা দল নির্বাচনে অংশ নেবে তত্ত্ববধায়ক সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য একটা নির্বাচন কমিশনের অধীনে। আওয়ামী লীগ কোনোভাবেই ওই প্রক্রিয়াতে রাজি না।

বিএনপি ও সমমনারা বলেই দিয়েছেন, যদি তাদের দাবি মতো না হয়, তাহলে তারা নির্বাচনেই অংশ নেবে না। যা আবারও গণতন্ত্রের জন্য হুমকি। আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলের কাছে অগ্রহণযোগ্য। ফলে বিএনপির দাবি মানবে না কী করবে এটা নিয়ে প্রচণ্ড প্রেশারে এখন ক্ষমতাসীনরা। এ পর্যায়ে চলছে পর্যবেক্ষণ-নিরীক্ষণ। সময় যত ঘনিয়ে যাচ্ছে নির্বাচনের দিকে। ততোই বাড়ছে ওই উৎকণ্ঠা। 

বিএনপিতে কোনো দুশ্চিন্তা নেই। তারা ওই একদফা দাবি করে বসে আছে। ক্ষমতাসীনদের পদত্যাগ ও নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন। দীর্ঘ দেড় যুগে দলটির ওপর অনেক ঝড় তুফান গেছে, এ মুহূর্তে এমন একটা পজিশনে চলে আসতে তাদের প্রচণ্ড আন্দোলন, রক্তক্ষরণ করতে হতো। কিন্তু বিনা যুদ্ধেই ওই পরিবেশ তৈরি হয়ে যাওয়ায় বিএনপি রিল্যাক্স মুডে, বসে আছে। দেশে যদি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা পায়, সেটাই তাদের দাবি। আর সে দাবি তো মার্কিন মুল্লুকসহ তাদের মিত্রদেরও। তাহলে বিএনপির দাবির সঙ্গে মার্কিনি ও পশ্চিমাদেশসমূহের চাওয়াও এক হয়ে গেলো। এতেই তারা মাঠের আন্দোলন না করেও এখন নির্ভায় সময় কাটাচ্ছে। 

এটাও ঠিক, গত তিন টার্মে আওয়ামী লীগ দেশে বেশ কিছু মেগা প্রজেক্টসহ বেশ কিছু উন্নয়ন করেছে। কিন্তু পাশাপাশি বিভিন্ন মহলে ব্যাপক দুর্নীতিরও অভিযোগ উঠেছে। বিশেষ করে সাধারণ মানুষ পর্যায়ে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়ার একটা বড় সাফল্য রয়েছে দলটির। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎও প্রায় নিশ্চিত করেছে। পর্যাপ্ত খাবারের জোগান রয়েছে মার্কেটে। মানুষের আর্থিক অবস্থারও আগের চেয়ে কিছুটা উন্নতি। এরপরও মানুষের মধ্যে একটা ক্ষোভ। সেটা মার্কেট সিন্ডিকেট। ও নিত্যপণ্যের প্রতিনিয়ত মূল্যবৃদ্ধি। তেল, গ্যাস, বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি।

এছাড়াও একটা দল দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকলে তাদের নেতা-কর্মীদের সমাজে প্রভাব-প্রতিপত্তিও বেড়ে যায়। যা বাংলাদেশের সাধারণ মানুষও যারা প্রচণ্ডরকম স্বাধীনচেতা, তারা পছন্দ করে না। ফলে নানা সমস্যায় জর্জরিত দলটির অবস্থান তৃণমূলে। সব মিলিয়ে প্রত্যাশিত গণতন্ত্রের ধারায় বা বিরোধীদলের দাবি করা প্রক্রিয়ায় যেতে কিছুটা ভয়, শঙ্কা কাজ করছে তাদের। প্রশাসনেও রয়েছে বিভাজন। হয়তো অনেকেই ধরা দিচ্ছে না।

কিন্তু ভেতরে ভেতরে ক্ষোভ। একটা সরকার সবাইকে খুশি করতে পারেন না। একজন খুশি হলে অন্যরা অসন্তুষ্ট। চাহিদার যেখানে শেষ নেই। সেখানে সবাইকে সন্তুষ্ট রাখা মুশকিল। ফলে এমন নানা জটিলতা ও হিসাব-নিকাশ মিলিয়ে চাহিদা মোতাবেক গণতন্ত্রের পথে হাঁটতে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব দলটিতে। 

তবে পরিস্থিতি দিনে দিনে জটিলতার দিকেই যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। বিশেষ করে মার্কিনিদের সর্বশেষ প্রতিবেদনে যে ব্যাপক অভিযোগের কথা তুলে ধরা হয়েছে সেগুলোর সমাধান করে ফেলা রাতারাতি সম্ভবপর নয়। বিশেষ করে নির্বাচনের যে সময়টুকু আর বাকি তার আগে। একইসঙ্গে অবাধ-নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের আয়োজনের যে চ্যালেঞ্জ সেটাও কষ্টসাধ্য। বিশেষ করে বিএনপি যে দাবিটা করে আসছে যে তাদের প্রচুর পরিমাণ নেতা-কর্মীকে গুম খুন করা হয়েছে। মার্কির তথ্য মোতাবেক যা ছয় শতাধিক। বিএনপি তথ্য দিচ্ছে তাদের নেতা-কর্মীদের ওপর রয়েছে প্রায় ৩৫ লাখ মামলা।

 বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে এক মামলায় সাজা দিয়ে কারাগারে রেখেছিল দীর্ঘদিন। এখন বাসায় থাকার সুযোগ করে দিলেও কার্যত গৃহবন্দি। খালেদা জিয়ার ইস্যুটাকে মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত বলছেন না বিদেশিরা। তারা দেখছে এটাকে গৃহবন্দি হিসেবে। মামলায় সাজা দেয়াটা তারা আমলে নিচ্ছে না। দলটির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানও মামলায় শাস্তি নিয়ে পরবাসে। আওয়ামী লীগের ভাষায় পলাতক আসামী।

তার স্ত্রী জোবাইদা রহমান একজন অরাজনৈতিক মানুষ ও পেশায় ডাক্তার। তাকেও ছাড় দেয়া হয়নি। দুদক দিয়ে মামলা। খালেদা জিয়ার নাতনি ও তারেক জোবায়দার সন্তান জাইমা রহমানকে নিয়েও প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগের এক এমপির কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য। সব মিলিয়ে বাংলাদেশে বিএনপি আওয়ামী লীগের যে ঐক্যের রাজনীতি এ একটা প্ল্যাটফর্মে এসে দেশের স্বার্থে এক হবে- সে অবস্থা আর নেই। 

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ চাইলেও পারছেন না একটা সমঝোতার চেষ্টা করতে। এমন এক প্রেক্ষাপটে বিএনপিকে যখন একেবারেই রাজনৈতিক দেউলিয়া ভেবে বাদের তালিকায় ফেলে দিয়েছে আওয়ামী লীগ। দলটির অস্তিত্ব নিয়েও বারবার প্রশ্ন তুলে উপহাস করছিল। ঠিক তেমনি মুহূর্তে বিএনপির ইফতার মাহফিলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ পশ্চিমা সব দেশের রাষ্ট্রদূতের উপস্থিতি এবং তাদের উপস্থিতিতে দলটির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ভার্চুয়াল বক্তব্য প্রদানটা বিএনপির বড় অর্জন। এতে দুশ্চিন্তার নতুন মাত্রা যোগ করেছে আওয়ামী পন্থীদের। একইসঙ্গে ভারতের দূতাবাসে আয়োজিত ইফতার পার্টিতে বিএনপি নেতৃবৃন্দকে আহ্বান ও বিএনপির নেতাদের সঙ্গে ভারতীয় কর্মকর্তাদের আলাপ-আলোচনাও মোটেও ভালো চোখে দেখার মতো নয়। 

এটাও দুশ্চিন্তার মাত্রা বেড়ে গেছে। এর সঙ্গে বিএনপির তরুণ নেতা ইশরাক হোসেনকে হঠাৎ করে পুরোনো এক মামলায় আটক করে জেলে নেয়া ও দ্রুততম সময়ে নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত স্থাপন করে আবার ছেড়ে দেয়া। পাশাপাশি র‌্যাব ও তার কর্মকর্তাদের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পর দীর্ঘ চার মাস বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ার ঘটনা কূন্যের কোঠায় থাকার পর যেখানে মার্কিনিদের স্বস্তি প্রকাশ করতে দেখা গিয়েছিল এবং তারা বারবার বলছিল নিষেধাজ্ঞায় যে ফল সেটা। এরই মাঝে হঠাৎ এমন এক ঘটনা কুমিল্লায় ঘটে যাওয়া (আবার বন্দুকযুদ্ধে নিহত)। যা সরকারের নীতির সঙ্গে মিলছে না, নাকি অতিউৎসাহী কারো কারো জন্য এমনটা, যা সরকারকে আরো বিব্রতের দিকে ঠেলে দিবে- সেটা নিয়েও আলোচিত হচ্ছে। 

সব মিলিয়ে একপ্রান্তে স্বস্তি ও নির্ভার ও অন্যপ্রান্তে অস্বস্তি ও দুর্ভাবনা যা সূচনায় বলা হয়েছে- সেটাই স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। 


শেয়ার করুন