১২ এপ্রিল ২০১২, বুধবার, ০৪:১৬:১৮ অপরাহ্ন


র‌্যাবের গুলিতে নিহত বৃদ্ধের সঠিক ঘটনা জানতে চায় এমএসএফ
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ২২-০৩-২০২৩
র‌্যাবের গুলিতে নিহত বৃদ্ধের সঠিক ঘটনা জানতে চায় এমএসএফ


সোনারগাঁওয়ে আসামি ধরতে গিয়ে র‌্যাবের গুলি, বৃদ্ধ আবুল কাসেম নিহতের ঘটনায় মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ) এর ক্ষোভ ও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এব্যাপারে এমএসএফ মনে করে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে এ ধরনের মৃত্যু অনাকাংক্ষিত ও অগ্রহণযোগ্য। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আসামী কিংবা সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে আটক কিংবা গ্রেফতারের সময় বন্দুকযুদ্ধের মত ঘটনায় জড়িয়ে পড়ছে এবং যা হতাহতের মত ঘটনার সৃষ্টি করছে। এমএসএফ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিশেষ করে র‌্যাবের বিরুদ্ধে বলপ্রয়োগ ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে এবং নিরপেক্ষ তদন্তও দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানিয়েছে এমএসএফ।

মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হলেন অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল। সংস্থারটির পক্ষ থেকে বলা হয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, গত ১৭ মার্চ শুক্রবার সকালে পার্শ্ববর্তী গজারিয়াপাড়া এলাকায় রোজিনা আক্তার নামের এক পোশাক শ্রমিককে হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে মো. সেলিমকে আটকের উদ্দেশ্যে দিবাগত রাত দেড়টার দিকে সাদা পোশাকে র‌্যাব সদস্যরা অভিযান চালায়। ফলে এলাকাবাসীর সন্দেহ হয়। একপর্যায়ে তাদের ডাকাত বলে দাবি করে চ্যালেঞ্জ করলে র‌্যাবের সঙ্গে এলাকাবাসীর তর্ক শুরু হয়।

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গুলি ও হতাহতের ঘটনা ঘটে। ঘটনার বিষয়ে নিহত আবুল কাসেমের স্ত্রী রমিজা বেগম জানান, শার্ট ও গেঞ্জি পরা একদল লোক গার্মেন্ট শ্রমিক সেলিমকে ধরে নিয়ে যাওয়ার এক পর্যায়ে আবুল কাসেম তাদের কাছে গিয়ে কেন সেলিমকে ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে জানতে চান। তারা তাকে মারধর ও গালাগাল করে এবং একজন নিজেকে র‌্যাব সদস্য পরিচয় দিয়ে তার স্বামীর পেটে গুলি করে। গুলিবিদ্ধ আবুল কাসেমকে সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কম্পপ্লেক্সে নিয়ে গেলে রাত ২টার সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। অপরদিকে হুমায়ুন কবিরের স্বজনেরা জানান, বৃদ্ধ আবুল কাসেমকে গুলি করায় এলাকাবাসী ক্ষেপে উঠে সাদা পোশাকের লোকদের ঘিরে ফেলে। হুমায়ুন কবির এগিয়ে যায় ও এ সময় ছয়-সাত রাউন্ড গুলি চলে। এতে তিনি বাম পায়ে দুটি ও ডান পায়ে একটি  গুলিবিদ্ধ হন। ঘটনার পর রাত ২টার পর গাড়ি ভর্তি পুলিশ এসে গ্রামের কযেকটা ঘর ভাঙচুর করে এবং গ্রামের অন্তত ২২ জনকে আটক করে নিয়ে যায়।

ঘটনার বিষয়ে র‌্যাব-১১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তানভীর মাহমুদ পাশা দাবি করেন, রোজিনা ইসলাম নামের এক পোশাক শ্রমিকের হত্যা মামলার আসামি সেলিমকে গ্রেফতার করে গাড়িতে তোলার সময় সে চিৎকার দিলে লোকজন জড়ো হয়ে দেশি অস্ত্রশস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে র‌্যাবের ওপর হামলা চালায়। এ সময় স্থানীয় লোকজন র‌্যাবকে গুলি করে আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। আত্মরক্ষার্থে র‌্যাবও পাল্টা গুলি ছোড়ে। এ ঘটনায় হতাহতের কোনো ঘটেনি। তবে সকালে জানতে পারেন একজন মারা গেছেন। সে কার গুলিতে মারা গেছে, তা এখনও নিশ্চিত নয়। নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল জানান, শুক্রবার রাতে হত্যা মামলার আসামি ধরতে গিয়ে সোনারগাঁয় লোকজনের সঙ্গে র‌্যাবের সংঘর্ষ হয় এবং একজন নিহত হয়েছেন। বৃদ্ধ আবুল কাসেম কীভাবে মারা গেছেন, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ) ক্ষোভ ও গভীর উদ্বেগ করছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিশেষ করে র‌্যাবের বিরুদ্ধে বিচারবর্হিভূত হত্যাকান্ডের এমন অভিযোগ খতিয়ে দেখতে ও নিরপেক্ষ তদন্তের জোর দাবি জানাচ্ছে এমএসএফ।

শেয়ার করুন