২৬ এপ্রিল ২০১২, শুক্রবার, ১১:১০:৪১ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ইউরোপে ভারতীয় ৫২৭ পণ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারি উপাদন শনাক্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি বিএনপির আন্দোলন ঠেকানোই ক্ষমতাসীনদের প্রধান চ্যালেঞ্জ বিএনপিকে মাঠে ফেরাচ্ছে আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে অদৃশ্য চাপে বিএনপি


পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচন ‘সরকারের ট্র্যাপ’- মির্জা ফখরুল
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ১০-০৪-২০২৩
পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচন ‘সরকারের ট্র্যাপ’- মির্জা ফখরুল


পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগকে ‘সরকারের ট্র্যাপ’ বলে অভিহিত করে তার প্রতিরোধের হুশিয়ারি দিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সোমবার সকালে রামপুরার ডেল্টা হেলফ কেয়ারে চিকিতসাধীন নাটোরের এক নেতাকে দেখার পর পাঁচ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে কিনা জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব এই হুশিয়ারি উচ্চারন করেন। তিনি বলেন, ‘‘এবার জনগন সরকারের কোনো ট্র্যাপে পা দেবে না, বিএনপি কোনো ট্র্যাপে পা দেবে না। আমাদের সরাসরি বক্তব্য- আমরা কোনো ট্র্যাপে যাচ্ছি না। তাদের ট্র্যাপকে উল্টে ফেলে দিবো।”


নির্বাচনে অংশগ্রহনের পূর্ব শর্ত তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ আমাদের আন্দোলন একটাই, এই আন্দোলন হচ্ছে এই সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে না এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না। আর স্থানীয় সরকার নির্বাচন তো অনেক আগেই বাদ দিয়েছি আপনারা জানেন।”


কেউ যদি স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে অংশ নিতে চায় সে ক্ষেত্রে কি হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘এটা তো উত্তর দিয়েছি।” সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনের ১৬তম সভা শেষে নির্বাচন কমিশনের সচিব জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘‘ আগামী জুনের মধ্যেই দেশের পাঁচটি সিটি করপোরেশনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আগামী ২৩ মে থেকে ২৯ জুনের মধ্যে তিন ধাপে হবে এই নির্বাচন।”


মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ সরকার জনগন থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। আজকে যদি  একটা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হয় তাহলে দেখবেন যে, আওয়ামী লীগ ত্রিশটা আসন খুঁজে পাবে না। এটা হচ্ছে বাস্তবতা। সেই কারণে আজকে তারা সন্ত্রাসের মাধ্যমে মামলা-মোকাদ্দমা, রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে আমাদের গণতান্ত্রিক কর্মসূচিকে পন্ড করে দেয়া এই করেই তারা আবারো ক্ষমতায় ফিরে আসতে চায়। আমরা খুব স্পষ্ট করে বলেছি, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান তারা যদি না নিয়ে আসে, তারা যদি পদত্যাগ না করে তাহলে এেেদ্শ কোনো নির্বাচন হবে না।”


‘নাফিজকে তুলে নেয়ার ঘটনা প্রসঙ্গে’


মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ নাফিজ মোহাম্মদ আলমকে(ডয়েচে ভেলের একটি ডকুমেন্টারি ‘ডেথ স্কোয়াড’ এ সাক্ষাতকার প্রদানকারী) তুলে নেওয়া ঘটনা থেকে প্রমাণিত হয় যে, র‌্যাব অসাংবিধানিক ঘটনাগুলোর সাথে জড়িত। এখানে যারা কথা বলছে তাকেই তারা মুখ বন্ধ করার চেষ্টা করছে। এটা শুধু র‌্যাব নয়, মূলত এর দায়-দায়িত্ব সরকারের। র‌্যাব হচ্ছে রাষ্ট্রের একটি প্রতিষ্ঠান। তারা সরকারের আজ্ঞাবহ, সরকার যেভাবে বলছে সেভাবে কাজ করছে, র‌্যাবকে তারা ব্যবহার করছে। এ্খানে মূল দায়িত্বটা এসে পড়ে সরকারের ওপর। সেজন্য আমরা এই সরকারের পদত্যাগসহ তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন চেয়েছি। একই সঙ্গে এসব অন্যায়-অপকর্মের বিষয়গুলো তদন্তের জন্য নিরপেক্ষ কমিশন গঠনের কথা বলেছি।”


শনিবার নাটোরের আলাইপুর এলাকায় দলের ‘অবস্থান কর্মসূচি’ পালনকালে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের হামলায় গুরুতর আহত হন নাটোর সদর উপজেলার সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন। তার অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় গতকাল নাটোর থেকে তাকে ঢাকার এই হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।


মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ এই ধরনের ভয়াবহ কর্মকান্ড তারা করছে। কিছুদিন আগে নাটোরের সাবেক সংসদ সদস্য রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুসহ তাকে এবং জেলা কমিটির নেতৃবৃন্দের ওপর তারা অতর্কিতে আক্রমন করে।সেখানেও ১৫ জনের বেশি নেতা-কর্মী আহত করেন, জেলা কমিটির সভাপতি শহিদুল ইসলাম বাচ্চুকে গ্রেফাতার করে। এভাবে একটা ত্রাসের রাজত্ব, সন্ত্রাসের রাজত্ব তারা নাটোরে চালিয়েছে। এসব কর্মকান্ড শুধু নাটোরে নয়, আপনারা দেখেছেন যে, একই দিনে খুলনা, হবিগঞ্জ, যশোর, হবিগঞ্জসহ সারা েেদ্শ একটা ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেছে। গত পরশু অবস্থান কর্মসূচিতে তারা একইভাবে ঢাকা মহানগরীসহ বিভিন্ন স্থানে সন্ত্রাসী কার্য্কলাপ করে একদিকে পুলিশের ছত্রছায়া, অন্যদিকে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা ভয়াবহ মারাত্মক অস্ত্রস্বস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়।”


তিনি বলেন, ‘‘ সরকারের মন্ত্রী ও নেতারা তারা মুখে এক কথা বলেন, কাজে করেন ঠিক উল্টোটা। তারা মুখে বলবেন গণতন্ত্রের কথা, তারা মুখে বলবেন ছাড় দিচ্ছেন।”


‘‘ এখানে ছাড় দেয়ার কি আছে? এটা আমাদের সাংবিধানিক অধিকার, সেই অধিকার আমি যখন প্রয়োগ করতে যাবো তখন তারা মারাত্মকভাবে বলপ্রয়োগ করে হত্যা করবেন, নির্যাতন করবেন, গ্রেফতার করবেন রাষ্ট্র যন্ত্রকে ব্যবহার করবেন-এটা কখনোই মানুষ অতীতে মেনে নেয়নি, মেনে নেবে না। আমি আমাদের সহকর্মী আবুল হোসনকে দেখতে এসেছি। আমি আল্লাহতালার কাছে অতি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠেন সেজন্য দোয়া করছি।”


আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী দল হিসেবে অবহিতি করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ আওয়ামী লীগ মূলত একটা সন্ত্রাসী দল, এই সরকার সম্পূর্ণ ভাবে একটা সন্ত্রাসী সরকারের পরিণত হয়েছে। জনগন আন্দোলনের মধ্য দিয়ে তার জবাব দেবে।”


মহাসচিব গুরুতর আহত আবুল হোসেনকে দেখার সময়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য অধ্যাপক আবদুল কুদ্দুস ও সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু উপস্থিত ছিলেন।


শেয়ার করুন