০১ মে ২০১২, বুধবার, ০৩:৩১:১০ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
যুক্তরাষ্ট্রে এবার বন্দুকধারীর গুলিতে তিন আইনশৃংলাবাহিনীর সদস্য নিহত ‘বিশেষ চাহিদা সম্পন্নদের প্রতিভা বিকাশে কোন ধরনের প্রতিবন্ধকতা রাখা যাবে না’ সরকার ও বেসরকারি উদ্যোগে দরিদ্রমুক্ত দেশ গড়ে উঠবে - আসাদুজ্জামান খান কামাল ৭০ শতাংশ মৃত্যু অসংক্রামক রোগে, বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি ‘বিদেশে দেশবিরোধী অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় আইনে ব্যবস্থা নিন’ ভূল স্বীকার করে সরে দাড়ানোয় একজনের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার বাফেলোতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে দুই বাংলাদেশী নিহত ‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ


ইরানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বাড়ানোর আহ্বান
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৮-০৪-২০২৩
ইরানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বাড়ানোর আহ্বান


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ ও ইরানের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও ব্যবসা বৃদ্ধির জন্য আরও বেশি উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। ইরানের প্রেসিডেন্ট সাইয়্যেদ ইব্রাহিম রাইসি সোমবার বিকেলে তাকে ফোন করে আলাপকালে প্রধানমন্ত্রী এ অভিমত ব্যক্ত করেছেন।  

দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ প্রকৃত সম্ভাবনার অনেক নিচে রয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কথোপকথনের সময় দুই দেশের চেম্বার সংস্থার মধ্যে একটি জয়েন্ট বিজনেস কমিশন (জেবিসি) গঠনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে। 

প্রধানমন্ত্রী নিয়মিত যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের (জেইসি) বৈঠকের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।

বাংলাদেশ চলতি বছরের কোনো এক সময়ে তেহরানে ষষ্ঠ বৈঠক আহ্বান করার জন্য কাজ করছে জানিয়ে তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, জেইসি প্ল্যাটফর্ম উভয় পক্ষকে বাণিজ্য বাধা, বিদ্যমান আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা এবং ব্যাংক লেনদেনে বিধিনিষেধগুলি কাটিয়ে ওঠার উপায় অন্বেষণ করতে সহায়তা করবে। 

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ও ইরানের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের দৃঢ় ভিত্তি হচ্ছে উভয় দেশের অভিন্ন ইতিহাস, বিশ্বাস ও সংস্কৃতি।  

বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান উৎপাদন সক্ষমতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, তার দেশ পরিমাণগত মূল্যে মানসম্মত আমদানির উৎস হতে পারে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ পশ্চিমা দেশে বিশেষ করে ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য দেশের বাজারগুলোতে বিশ্বমানের পোশাক/টেক্সটাইল পণ্য, চীনামাটির বাসন, ওষুধ, হিমায়িত মাছ ও সামুদ্রিক খাবার, চামড়াজাত পণ্য, পাট/কেনাফ সুতা, আইটি, হালকা প্রকৌশল, ছোট ও মাঝারি আকারের জাহাজ, কৃষি পণ্য এবং আরও অনেক কিছু রপ্তানি করে আসছে। 

তিনি ইরানেও সেইসব পণ্য রপ্তানি করতে বাংলাদেশের আগ্রহ ও সক্ষমতার কথা ব্যক্ত করেন। টেলিকনফারেন্স চলাকালীন প্রধানমন্ত্রী স্মরণ করেন যে, বাংলাদেশ ও ইরান ওআইসি এবং ডি-৮ এর সদস্য হওয়ায় অনেক সময় একে অপরকে সমর্থন করেছে।

তিনি বহুপাক্ষিক প্ল্যাটফর্মে, বিশেষ করে জাতিসংঘে ইরানের প্রতি সমর্থন বাড়ানোর জন্য বাংলাদেশের প্রস্তুতির কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি মানবাধিকার কাউন্সিলে কানাডার প্রস্তাবের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের ভোটের কথা উল্লেখ করেন।

জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদের (ইসিওএসওসি) প্রস্তাবে বাংলাদেশ নারীর মর্যাদা কমিশন থেকে ইরানকে অপসারণ করার বিষয়ে ভোটদান থেকে বিরত থেকেছে। ইসলামে নারী-পুরুষের সমান আচরণের বিষয়ে শেখ হাসিনা ইরানের নারীরা যাতে শিক্ষার সমান সুযোগসহ মর্যাদা ও সম্মানের সঙ্গে জীবনযাপন করতে পারে এবং তাদের পুরুষ সহকর্মীদের সঙ্গে কাজ করতে পারে তা নিশ্চিত করার জন্য ইরানের প্রেসিডেন্টের প্রতি আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী ইসরায়েলের সাম্প্রতিক আগ্রাসন, আল-আকসা মসজিদের অপবিত্রতা এবং ফিলিস্তিনি মুসল্লীদের ওপর হামলার নিন্দা করেন। তিনি ইরানের প্রেসিডেন্টকে বলেন যে, তার সরকার ইসরায়েলি বাহিনীর এই ধরনের বেআইনি কাজের নিন্দা করে আসছে।

তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আর্থিক সহায়তা হ্রাস সত্ত্বেও পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রতি দেয়া মানবিক আচরণ সম্পর্কে প্রেসিডেন্ট রাইসিকে অবহিত করেন। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য একটি অগ্রাধিকার হওয়া উচিত বলে তিনি ওআইসি সহ আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে বাংলাদেশের পক্ষে সমর্থন দেয়ার জন্য ইরানের প্রতি আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী টেলিফোনে প্রেসিডেন্ট রাইসিকে ধন্যবাদ জানান। তিনি প্রশংসা ব্যক্ত করেন যে, ইরানের নতুন প্রশাসন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক সম্প্রসারণ ও সুসংহত করতে বাংলাদেশের সাথে যোগাযোগ করছে। সৌদি আরবের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য ইরানকে অভিনন্দন জানান শেখ হাসিনা।

তিনি প্রশংসা ব্যক্ত করেন যে, এটি সফল কূটনৈতিক কৌশলের একটি ক্লাসিক উদাহরণ যা উপসাগরীয় অঞ্চলে এবং তার বাইরেও বৃহত্তর আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার দিকে পরিচালিত করবে। তিনি আরো বলেন, তিনি তেহরানে প্রেসিডেন্টের শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে পাঠিয়েছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী ১৯৯৭ সালে ৮ম ওআইসি শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে এবং ২০১২ সালে আগস্ট তেহরানে ১৬তম ন্যাম শীর্ষ সম্মেলনে যোগদানের জন্য তার ইরান সফরের কথাও স্মরণ করেন।

তিনি ইরানের প্রেসিডেন্ট ও সেদেশের ভ্রাতৃপ্রতিম জনগণকে একটি রহমতপূর্ণ ও শান্তিপূর্ণ রমজান মাস কামনা করেন এবং নওরোজ উৎসবের শুভেচ্ছা জানান। বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসে উষ্ণ শুভেচ্ছা জানানোর জন্য তিনি তাকে ধন্যবাদও জানান। দীর্ঘ ২২ মিনিট টেলিফোন কথোপকথন শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইরানের প্রেসিডেন্টকে তার সুবিধামত সময়ে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। তিনি তাকে এবং ইরানের ভ্রাতৃপ্রতিম জনগণকে ঈদুল ফিতরের অগ্রিম শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। খবর বাসস’র। 


শেয়ার করুন