২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ০৪:৫২:১৮ পূর্বাহ্ন


বাংলাদেশ আর এশিয়া কাপ
খন্দকার সালেক
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৫-০৯-২০২২
বাংলাদেশ আর এশিয়া কাপ এশিয়া কাপ জয়ের পর শ্রীলংকার উল্লাস


সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল! বিসিবি সভাপতির ধারণা বাংলাদেশ শ্রীলংকার বিরুদ্ধে ম্যাচটি জিতলে নাকি ফাইনাল খেলতে পারতো। সবাই জানেন, শ্রীলংকা প্রথম ম্যাচে আফগানদের বিরুদ্ধে বিপর্যয়ের পর দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এরপর একে একে বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, ভারত এবং পাকিস্তানকে দুইবার পরাজিত করে দাপটের সঙ্গে শিরোপা জিতে নিয়েছে। বাংলাদেশ আফগানিস্তান আর শ্রীলংকার সাথে পরাজিত হয়ে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিয়েছে। মনে রাখতে হবে শ্রীলঙ্কা সেই দল যাদের ৬টি এশিয়া কাপের সাফল্য ঝুলিতে। আর ভারতের সাতটি। এ ক্ষেত্রে ঢের পেছনে পাকিস্তান (২ বার)।   

বিসিবি সভাপতি বা টীম ডিরেক্টর নানা কথায়- নানা সময় হাস্যরসের অবতারণা করেন। যেমন খালেদ মাহমুদ সুজন বলেছিলো শ্রীলংকা দলে নাকি কোনো ভালো বোলার দেখেন না। অথচ সেই দলটি শিরোপা জিতেছে সেরা দলগুলোকে পেছনে ফেলে। বর্তমানে তলানিতে থাকা বাংলাদেশ নাকি বিশ্বকাপ জিততেও পারে। আশা থাকা ভালো, তবে বর্তমান দল নিয়ে বিশ্বকাপ যেটা ছেড়া কাঁথায় শুয়ে বিশ্ব জয়ের স্বপ্ন দেখার মতোই অলীক কল্পনা  বা হুইল চেয়ারে চড়ে এভারেস্ট চূড়ায় ওঠার স্বপ্ন। দলকে নানাভাবে চাঙ্গা করা যায়। কিন্তু আকাশ কুসুম কল্পনা করে নিজেদের হাসির পাত্র করা অর্থহীন প্রলাপ।

বাংলাদেশ দলে টুর্নামেন্টের সবচেয়ে অভিজ্ঞ তিন খেলোয়াড় মুশফিক, সাকিব, মাহমুদুল্লাহ ছিল। ছিল না তামিম (অবসরে), লিটন দাস (আনফিট) । বাংলাদেশ ছাড়া অন্য সব দল শ্রীলংকা, পাকিস্তান, ভারত, আফগানিস্তান টি- ২০ ক্রিকেটে অনেক পরিণত দল। বাংলাদেশ দল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে আফগানিস্তান আর শ্রীলংকার বিরুদ্ধে।  কিন্তু ম্যাচ জয় করার মতো নিশ্চিত পরিবেশ সৃষ্টি করেছে বললে সত্যের অপলাপ হবে। যদি বাংলাদেশ গ্রুপ ফোর এ যেত তাহলে, বাকি তিনটি দলের বিরুদ্ধে দাঁড়াতেই পারতো না। দলের ওপেনিং পার্টনারশিপ বলতে কিছুই ছিল না। সাকিব, মুশফিক, রিয়াদের মাঝে ম্যাচ জয়ের ক্ষুধা দেখা যায়নি। আফিফকে কেন মাঝ পথে সহ অধিনায়ক করা হয়- সেটি বোঝা যায়নি। বোলিং ডিপার্টমেন্ট আদৌ ম্যাচ জয়ের মতো ছিল না। সাকিবের অধিনায়কত্বে স্বেচ্ছাচার আর অবহেলা ছিল। দৃষ্টি ভঙ্গির আমূল পরিবর্তন না হলে এই দল অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিতব্য টি-২০ বিশ্ব কাপে হলে পানি পাবে বলে মনে হয় না। 

এশিয়া কাপের পর এখন চিন্তা বিশ্বকাপের প্রস্তুতি বা দল গঠন। এখানে লিটনের প্রত্যাবর্তন হয়তো ওপেনিংয়ে কিছুটা স্বস্তি দিবে। প্রচন্ড চতুরমুখী চাপের মুখে মুশফিক টি- ২০ থেকে অবসর ঘোষণা করেছে। জানিনা নুরুল হাসান সোহান মুশফিকের স্থানে কতটুকু প্রমাণ করবে। মাহমুদুল্লাহ হয়তো অস্ট্রেলিয়ায় ভালো খেলবে। কিন্তু পরন্ত বেলায় ওর ম্যাচ জয়ী ইনিংস খেলার সামর্থ নিঃশেষ হবার পথে। সাকিব যথাযথ দায়িত্ব নিয়ে ব্যাটিং করছে বলা যাবে না। বোলিং নিয়ে আশাহত হবার কারণ আছে। মুস্তাফিজ, তাসকিন টি -২০ সুলভ বোলিং করছে না। ইবাদাতকে বরং মূল পেসার ধরা যায়। অস্ট্রেলিয়ান উইকেটে পিসি বাউন্স দুটোই থাকবে। ব্যাটিং ছাড়াও মূল চ্যালেঞ্জ থাকবে পিসি বোলিং নিয়ে। হাতে সময় সীমিত। প্রতিপক্ষ সবাই তুখোড়। এডিলেডে প্রস্তুতি, নিউজিল্যান্ডে ট্রাই দেশীয় সিরিজ দেখতে মুখিয়ে অস্ট্রেলিয়া নিউজিল্যান্ড প্রবাসী বাংলাদেশীরা। বাংলাদেশ ভালো করলে সব সময় উল্লসিত হয়। কিন্তু সত্যি বলতে কি বাংলাদেশ অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপে বর্তমান মুহূর্তে একটিও ম্যাচ জয়ের মতো প্রস্তুত বলে মনে হয়না। তবে এ ক্ষেত্রে এ আগাম ধারণা সেটা ভুল প্রমাণিত হলে অনেক পুলকিত হবো।

শেয়ার করুন