২৬ এপ্রিল ২০১২, শুক্রবার, ০১:২৩:২৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ইউরোপে ভারতীয় ৫২৭ পণ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারি উপাদন শনাক্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি বিএনপির আন্দোলন ঠেকানোই ক্ষমতাসীনদের প্রধান চ্যালেঞ্জ বিএনপিকে মাঠে ফেরাচ্ছে আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে অদৃশ্য চাপে বিএনপি


রেকর্ড বিদ্যুৎ উৎপাদন রেকর্ড লোড শেড্ডিং
সালেক সুফী
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৯-০৪-২০২৩
রেকর্ড বিদ্যুৎ উৎপাদন রেকর্ড লোড শেড্ডিং


রমজান মাসের শেষ দশদিন ধর্মপ্রাণ মানুষ দোজখের আগুন থেকে পরিত্রানের জন্য বিধাতার কাছে এবাদত বন্দেগী করেন। কিন্তু কাকতলিও ভাবে এই সময়ে বাংলাদেশের বিশাল অংশ জুড়ে তীব্র গরমের সময় অসহনীয় বিদ্যুৎ লোড শেড্ডিংয়ে হাশফাঁস করছে বাংলাদেশিরা। বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় দাবি করেছে ১৪,১৫ ,১৬ পর পর তিন দিন প্রতিদিন পিক বিদ্যুৎ উৎপাদন নতুন মাইল ফলক অর্জন করেছে। অথচ এই দিন গুলোতে প্রতিদিন লোড শেড্ডিং ২০০০ মেগাওয়াট ছাড়িয়ে গেছে।


দেশ জুড়ে চলছে এখন তীব্র খরা, একই সঙ্গে রোজা এবং নিবিড় সেচ যোগ হয়ে বিদ্যুৎ চাহিদা তুঙ্গে। সর্বোচ্চ উৎপাদনের রেকর্ড করেও চাহিদা সামাল দেয়া সম্ভব হয়নি। সাধারণ মানুষ মনে করে ১৭ এপ্রিল রাতে ১৫,৬২৬ মেগাওয়াট পিক বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে , সরকার দাবি করে সর্বোচ্চ উৎপাদন ক্ষমতা ২২.৫৬৬ মেগাওয়াট। কিন্তু দেশের বিদ্যুৎ চাহিদা কত যে এতো ক্ষমতা ,এতো উৎপাদন সত্ত্বেও কেন রেকর্ড লোড শেড্ডিং করতে হচ্ছে? এই প্রশ্নের কিন্তু সরাসরি উত্তর নেই। 

বিদ্যুৎ সাপ্লাই চেনে উৎপাদন মাত্র একটি সেগমেন্ট। উৎপাদন পর্যায় থেকে সঞ্চালন, বিতরণ ব্যবস্থা মারফত বিপণন পর্যায়ে বিদ্যুৎ জনগণের কাছে পৌঁছায়। সবাই জানে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ সাপ্লাই চেনে সর্বত্র সুষম উন্নয়ন হয়নি। সর্বোপরি বিদ্যুৎ উৎপাদনে মূল নিয়ামক জ্বালানি সরবরাহে সংকট রয়েছে। বিদ্যুৎ বিতরণের সঙ্গে জনসচেতনতা এবং বিতরণ ইউটিলিটিগুলোর নিরংকুশ নিয়ন্ত্রণের অভাব রয়েছে।

মনে রাখতে হবে, উৎপাদন রেকর্ড কোন একঘন্টার পিক ধরে উল্লেখ করা হয়েছে। দুই এক ঘন্টার পিক বিবেচনায় নিয়ে সেটিকে সর্বোচ্চ চাহিদার বিপরীতে বিবেচনার সুযোগ নাই। এবারে প্রচন্ড গরম পড়ায় সমার্থবান মানুষ অনেক নতুন এসি , বৈদ্যুতিক পাখা এবং অন্যান্য বৈদুতিক সরঞ্জাম ব্যবহার করছে। গরমে জমি ফেটে যাওয়ায় সেচের পরিমান বৃদ্ধি পেয়েছে। বিপনী বিতানগুলোতে গভীর রাত পর্যন্ত বেচাকেনা চলছে। ফলশ্রুতিতে চাহিদা ১৭০০০ মেগাওয়াট পেরিয়ে গেছে। বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় এই ধরণের পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত ছিল বলে মনে হয়না। তাই পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে মনে হচ্ছে।

অনুসন্ধান করে জানা গেছে, শুধুমাত্র গ্যাস এবং জ্বালানি তেল সংকটে ৪১৫৬ মেগাওয়াট , মেরামত এবং সংরক্ষণের জন্য ২৬৪৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই যদি চাহিদা ১৭০০০ মেগাওয়াট ছাড়িয়ে যায় কিছুতেই ১৫৬০০ -১৬০০০ মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হবে না।

সরকারের উচিত ছিল বিপনী বিতানগুলো সপ্তাহে ১-২ দিন ছাড়া রাত ৮:০০ টার পর বন্ধ করা সহ যথাপ্রযোজ্য ডিমান্ড সাইড ম্যানেজ করে লোড নিয়ন্ত্রণ। সেটি না করা বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের দূরদর্শিতার অভাব। গ্যাস সংকটের দ্রুততম সমাধান নেই। কিন্তু তেল সংকট কেন, বোধগম্য নয়। এছাড়া কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ জেনারেশন শুরু হওয়ার পর বিশেষ করে উঁচু মূল্যে আদানির বিদ্যুৎ আমদানি করেও কেন পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটালো না।  সংকট কোথায়?

তীব্র গরম কেটে গেলে রমজানের পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে পারে। স্মরণে রাখতে হবে তীব্র গরমে কিন্তু থার্মাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র গুলোর উৎপাদন ক্ষমতা কমে যায়। 

পরিশেষে ১৫০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা অতিক্রম করে নতুন মাইল ফলক অর্জন করার জন্য বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়কে সাধুবাদ দেয়া যেতেই পারে। 


শেয়ার করুন