০৩ মে ২০১২, শুক্রবার, ০৮:১৬:১৭ পূর্বাহ্ন


বাসের ধাক্কায় প্রাণ গেল সাদের
স্কুটার আর কত মায়ের বুক খালি করবে?
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৯-০৮-২০২৩
স্কুটার আর কত মায়ের বুক খালি করবে? রাস্তায় পড়ে রয়েছে সাদ মোহাম্মদের স্কুটারটি


সাদ মোহাম্মদ। বয়স মাত্র ১৮। কোরআনে হাফেজ। প্রবাসে বাংলাদেশীদের নতুন প্রজন্ম। গত ৭ আগস্ট সন্ধ্যায় জ্যামাইকায় এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে গত ৭ আগস্ট বাংলাদেশী অধ্যুষিত জ্যামাইকার ১৬৮ স্ট্রিট এবং ৮৯ এভিনিউতে। নিউইয়র্ক পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রাত সাড়ে ৯টা সময় সাদ মোহাম্মদ স্কুটার নিয়ে ৮৯ এভিনিউ দিয়ে ১৬৮ স্ট্রিটে রেড লাইট অতিক্রম করছিলেন। এই সময় একটি বাস (কিউ-২০) ১৬৮ স্ট্রিট দিয়ে যাচ্ছিলো। সাদ মোহাম্মদের স্কুটারটি বাসের সাথে ধাক্কা খায় এবং সে বাসের নিচে চলে যায়। সাথে সাথে কে বা কারা পুলিশ কল করলে কয়েক মিনিটের মধ্যে পুলিশ এবং এ্যাম্বুলেন্স আসে। সাদ মোহাম্মদকে তুলে নেয়া হয় এ্যাম্বুলেন্সে। সেই সময় কয়েকজন পথচারি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে লাইভ দিচ্ছিলেন। সেখানে দেখা যায়, এ্যাম্বুলেন্সে তুলে সাদ মোহাম্মদকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার চেষ্টা করা হয়। সেই সাথে তাকে জ্যামাইকা হাসপাতালে নেয়া হয়। জ্যামাইকা হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত ডাক্তার পরীক্ষা করে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

পুলিশ আরো জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার পর বাস সেখানেই দাঁড়ানো ছিলো। বাসের মধ্যে কোন যাত্রী ছিলো না। ৩৩ বছর বয়সী বাস ড্রাইভার সুস্থ্য রয়েছেন। তিনি কোন আঘাত পাননি এবং তার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ আনা হয়নি।

জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটির সভাপতি এবং মূলধারার রাজনীতিবিদ ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার এই প্রতিনিধিকে জানান, সাদ মোহাম্মদ একজন হাফেজ। সে জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টার থেকেই কোরআনে হাফেজ হয়েছে। তার বাবার নাম আব্দুস সালাম। তারা জ্যামাইকাতেই বসবাস করে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তার জানাজার সময়সূচি জানা যায়নি।

সাদ মোহাম্মদের এই মর্মান্তিক মৃত্যুতে পুরো বাংলাদেশী কম্যুনিটিতে শোকের ছায়া নেমে আসে। অনেকেই অভিমত ব্যক্ত করে বলেছেন, নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধিরা ইদানিং নিউইয়র্কে সাইকেল এবং স্কুটার চালাচ্ছেন। এই সব বাহনের কোন লাইসেন্স থাকে না। আবার সব রাস্তায় বাইক চালানোর কোন নিয়মও নেই। যদিও কিছু কিছু রাস্তায় রয়েছে। গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকজন নতুন প্রজন্মের বাংলাদেশী মৃত্যুবরণ করেছেন। কিন্তু এরপরেও কোন প্রতিকার হচ্ছে না। অনেক সময় বাবা-মাও ছেলেমেয়েদের অবদার ফেলতে পারে না। তাদের শখ পূরণ করতেই অনুমতি দেন। কিন্তু এই শখ পূরণ করতে গিয়ে যে বুকের মানিককে হারাচ্ছেন- সেই ক্ষতিপূরণ কীভাবে পোষাবেন? বাবার কাধে ছেলের লাশ- এরচেয়ে বড় বোঝা আর কিছুই হতে পারে না। ছোট বেলা থেকে একটি ছেলে বা মেয়েকে লালন পালন করা চাট্টিখানি কথা নয়, আর সামান্য শখ পূরণ করতে গিয়ে অকালেই ঝরে যাচ্ছে বুকের ধন। এভাবে আর কত মায়ের বুক খালি হবে? এই ধরনের দুর্ঘটনা রোধে সচেতনতা প্রয়োজন। বাংলাদেশ সোসাইটিসহ প্রবাসের বিভিন্ন সংগঠনের এগিয়ে আসা উচিত।

শেয়ার করুন