২৯ মার্চ ২০১২, শুক্রবার, ০৯:১৩:৩৭ অপরাহ্ন


দেশকে নিপুণ আক্তার
এখন সবাই মিলে কাজ করে যাব
আলমগীর কবির
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৪-১১-২০২২
এখন সবাই মিলে কাজ করে যাব নিপুণ আক্তার


দীর্ঘ নয় মাস লড়াইয়ের পর চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদ পেলেন চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তার। এই সময়ে পদে না থেকেও শিল্পীদের বিভিন্ন কাজে অংশ নিতে দেখা গেছে এই অভিনেত্রীকে। আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব গ্রহণের পর সেখানে কি পরিবর্তন আসবে তা নিয়ে তিনি কথা বলেছেন নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত পাঠকপ্রিয় দেশ পত্রিকার সাথে। স্বাক্ষাতকার নিয়েছেন আলমগীর কবির।  

প্রশ্ন: আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব না থাকলেও আপনাকে শিল্পীদের বিভিন্ন কাজে অংশ নিতে দেখা গেছে। কোর্টের রায়ে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণের পর সেখানে কি পরিবর্তন আসবে। 

নিপুণ আক্তার: এখন থেকে স্বাধীনভাবে কাজ করা যাবে। কোর্টের রায়ের পর প্রথম অনুভূতিতে আমার এটিই প্রথম মনে হয়েছে। শিল্পী সমিতির ভোটে জয়লাভ করার পর থেকেই আমি সমিতির অন্য সদস্যদের সাথে ছিলাম। করোনার পর যেসব সিনেমা মুক্তি পেয়েছে সেগুলোর প্রচারণায় নিয়মিত অংশ নিয়েছি। শিল্পীদের দুঃসময়ে পাশে দাঁড়িয়েছি। এতো কিছুর পরও মাঝে মাঝে কটু কথা শোনতে হয়েছে। কারণ আমাদের নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে কোর্টে অনেক ঘটনা ঘটেছে। শেষ পর্যন্ত কে সাধারণ সম্পাদক হবে সেটি নিয়ে সন্দেহ জন্ম দিয়েছিল অনেকের মনে। সেই সন্দেহ দূর হওয়ায় এখন থেকে আরো বেশি মনোযোগ ও আন্তরিকতার সাথে সবার সাথে কাজ করতে পারবো। 

প্রশ্ন: কোর্টের রায়ের পর সহকর্মীদের কাছ থেকে কেমন প্রতিক্রিয়া পাচ্ছেন?

নিপুণ আক্তার: আমার চেয়েও বেশি খুশি হয়েছেন সহকর্মীরা। অনেকেই আমাকে ফোন দিয়ে অভিনন্দন জানিয়েছেন। এটি ভালো কাজ করার ক্ষেত্রে অনেক সহায়ক হবে। তারচেয়ে বড় কথা এই রায়ে মাধ্যমে দীর্ঘদিন পর রিলাক্সে সবার সঙ্গে কথা হচ্ছে, দেখা হচ্ছে। 

প্রশ্ন: দীর্ঘ এই সময়ে লড়ে যাওয়া আপনার জন্য কেমন ছিল?

নিপুণ আক্তার: আমাকে পদে পদে মানসিক প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। সবকিছুই কোনো না কোনোভাবে চলছিল। কিন্তু দীর্ঘ নয় মাস সব জায়গায় থেমে যাচ্ছিলাম। অনেক সময় বিব্রত হতে হয়েছে। যেখানেই গিয়েছি, ‘সবার প্রশ্ন ছিল, আসলে কী হচ্ছে। কবে এর শেষ হবে।’ সত্যের জয় হবে বুঝতে পারলেও মানসিকভাবে স্বস্তিতে ছিলাম না। কিন্তু সত্যের জন্য লড়ে গেছি। তবে জানতাম সত্যের জয় দেরিতে হলেও হয়। আমরা অনেক ধৈর্য ধরেছি। আজকের সেই ফল আমার সহকর্মী, সমিতির সব সদস্যের মুখে হাসি।

প্রশ্ন: কাঞ্চন ভাই এই বিষয়টাকে কিভাবে দেখছেন?

নিপুণ আক্তার: কোর্টের রায় শোনার পর প্রথম ফোনটা আমি আমার প্রেসিডেন্ট ইলিয়াস কাঞ্চন ভাইকে দিয়েছি। এই খবর শোনে তিনি মানসিকভাবে স্বস্তি পেয়েছেন। মানসিকভাবে তিনিও একটা সংশয়ের মধ্যে ছিলেন। কারণ, তিনি সবাইকে নিয়েই দায়িত্ব পালন করতে চেয়েছেন। এখন সেটা পূর্ণতা পাবে। এখন আমরা রিলাক্স আছি। কীভাবে সমিতিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়, সেটা নিয়ে পরিকল্পনা করব।

প্রশ্ন: আপনারা কোনো কাজগুলোতে গুরুত্ব দিয়ে এগোতে চান?

নিপুণ আক্তার: দেখুন, আমি কিন্তু একটা কারণেই নির্বাচন করেছি, সেটা শিল্পীদের জন্য। এখন গোছালোভাবে শিল্পীদের জন্য কাজ করে যাব। অনেক সময় নষ্ট হয়েছে। আর দেরি করতে চাই না। শিগগির আমরা মিটিং করে কাজ শুরু করব।

প্রশ্ন: মিশা-জায়েদ কমিটির অনেকের অভিমান আছে, তাঁদের নিয়ে কাজ করা কতটা শক্ত হবে?

নিপুণ আক্তার: শিল্পীদের মধ্যে মান-অভিমান থাকবেই। সেটা ভুলে আমরা একসঙ্গে শিল্পীদের জন্য কাজ করে যাব। তাঁদের কাউকে তো বলিনি, আসবেন না। মিশা ভাইয়ের সঙ্গে আমার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা হয়। কেউ ফোন করলে কথা বলব না-এমন মানুষ আমি না। এখন সবাই মিলে কাজ করে যাব। 

প্রশ্ন: আপনার কি মনে হয় শিল্পী সমিতির চেয়ারটা নিয়ে অনেক বেশি বাড়াবাড়ি হয়ে গিয়েছিল? 

নিপুণ আক্তার : সবাই আমাকে জিজ্ঞেস করছে এই চেয়ারটা নিয়ে কেন এত যুদ্ধ। আমি কিন্তু প্রথম থেকেই বলছি আমি এই চেয়ারটা নিয়ে যুদ্ধ করছি না। আমার যুদ্ধটা একজন অপশিল্পীর বিরুদ্ধে, অপশক্তির বিরুদ্ধে এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে। আমাকে এক সময় বলা হয়েছিল যে, কোর্টের বারান্দায় বারান্দায় না ঘুরে আমি যাতে অভিনয় করি। আমি কিন্তু কাজ করে যাচ্ছি, আমি খুব ভালো দু’টা ব্যবসা চালাই। আমাকে যখন আপনি কোর্টে নিতে বাধ্য করেছেন তখন তো আমি কোর্টে যাবই, আমি গিয়েছি এবং মহামান্য আদালত থেকে ন্যায় বিচার পেয়েছি।

শেয়ার করুন