২৮ এপ্রিল ২০১২, রবিবার, ০১:০১:০৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জের, বিএনপির বহিস্কার ৭৬ থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান ‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়


ঈদকেন্দ্রিক নির্বাচনী রাজনীতি জমজমাট
খন্দকার সালেক
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৭-০৬-২০২৩
ঈদকেন্দ্রিক নির্বাচনী রাজনীতি জমজমাট


যতই ঘনিয়ে আসছে সময়, জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে রাজনীতির প্রেক্ষাপট পাল্টে যাচ্ছে। কোরবানি ঈদের সময় নির্বাচনে ইচ্ছুক প্রার্থীরা জনসংযোগের বিরাট সুযোগ পাচ্ছেন। নিজ নিজ অঞ্চলে কোরবানি উপলক্ষে অনেকেই জনসংযোগ করবেন। যাতায়াতব্যবস্থার আধুনিকায়নের কারণে দেশের প্রান্তিক অঞ্চলগুলোতেও এখন যেতে সময় লাগে না। জ্বালানি-সংকটে বিদ্যুতের সাময়িক সংকট অনেকটাই উন্নত এখন। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ। আম-কাঁঠালের সময় এখন। ঈদকেন্দ্রিক নির্বাচনী রাজনীতি এখন গ্রামগঞ্জেও জমজমাট। বিশ্ব পরিস্থিতির পাশাপাশি বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি দ্রুত পাল্টে যাচ্ছে। মনে হয় না বিরোধীদল সরকার বিরোধী আন্দোলনে সর্বস্তরের জনগণকে সম্পৃক্ত করতে পেরেছে। এখন পর্যন্ত যে পরিস্থিতি বর্তমান সরকারের অধীনেই নির্বাচন হবে। হয়তো শেষ পর্যন্ত অধিকাংশ দল নির্বাচনে আসবে। আর সেই নির্বাচনে সর্বদলীয় বিরোধী ঐক্য হলেও শাসক দলকে পরাস্ত করা সহজ হবে না।

নানাধরনের অভিযোগ থাকলেও স্বীকার করতে দ্বিধা নেই ক্রমাগত তিন টার্মে ক্ষমতায় থেকে বর্তমান সরকার দেশের খোল নলচে পাল্টে দিয়েছে। দেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। বিশ্ব মন্দা এবং ক্ষেত্রবিশেষে সিন্ডিকেটের কারণে বাজারে দ্রব্যমূল্য বেশি আছে, কিন্তু তাই বলে হাহাকার আছে বলা যাবে না। ১৮ কোটি মানুষের কারোই দুই বেলা খাবার জোগাতে কষ্ট হচ্ছে না। জ্বালানি-সংকটে মাঝে মধ্যে বিদ্যুৎসংকট হলেও ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ এক বিশাল অর্জন। কয়েকটি মেগা প্রকল্প যেমন পদ্মা সেতু, মেট্রো রেল, পায়রা এবং রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র অর্থনীতিতে বিপ্লব সৃষ্টি করছে। ডিসেম্বর নাগাদ পদ্মা সেতুতে রেল চলবে, কর্তফুলী নদীর তলদেশে সুড়ঙ্গ সড়ক খুলে যাবে, ঢাকা-কক্সবাজার রেলসংযোগ, এলিভেটেড এক্সপ্রেস সড়ক (বিমানবন্দর থেকে তেজগাঁও), মেট্রোরেল উত্তরা থেকে মতিঝিল, হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল চালু হবে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ জ্বালানি হাবের কার্যক্রম অনেক এগিয়ে থাকবে। জনগণ কিন্তু আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারে অনেক সচেতন। প্রতিদিনের বৈষয়িক এবং আঞ্চলিক ভূরাজনীতি বিষয়ে জনগণ খবর রাখে। সাম্প্রতিক সময়ে অনুষ্ঠিত সিটি কাউন্সিল নির্বাচন অনেকটাই স্বচ্ছ, অবাধ হয়েছে। মূল বিরোধীদল সরাসরি অংশ না নিলেও জনগণকে ভোট দিতে উৎসাহিত দেখা গেছে। আরো দেখা গাছে সঠিক প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়া হলে এবং সরকারি দল একতাবদ্ধ থাকলে যে কোনো নির্বাচনেই সরকারি দলের ভয়ের কারণ নেই। 

প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনে সরকারি দলের প্রার্থী নির্বাচন নিয়ে সুস্পষ্টভাবে বলেছেন শতফুল ফুটতে দিন আমি সেরা ফুলটি বেছে নেবো। শাসক দল দীর্ঘদিন ক্ষমতায়। সংগতভাবে ভুলত্রুটি আছে অনেক। কিন্তু সাফল্য ব্যর্থতার চেয়ে অনেক বেশি। তাই তৃণমূল পর্যায়ে এখনো সবচেয়ে সংগঠিত মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দেওয়া দলটি জনঘনিষ্ঠ প্রার্থী মনোনয়ন দিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচনে শামিল হলে জয় বিষয়ে দুশ্চিন্তার কারণ দেখি না। এছাড়া নির্বাচন ঘিরে কিছু সমমনা দলের সঙ্গে মেরুকরণ হবেই। 

আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিরোধী শক্তির ব্যাপক যোগাযোগের কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কিছু পশ্চিমাশক্তি সরকারের ওপর প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে চাপ সৃষ্টি করলেও ভারত, চীন, রাশিয়াসহ মধ্যপ্রাচ্যের বন্ধু দেশগুলোর প্রভাবে বাংলাদেশ স্বস্তির অবস্থানে আছে। বাংলাদেশ ব্রিকসে যোগ দিলে পরিস্থিতি পাল্টে যাবে। তবে নির্বাচন এবং রাজনীতি পেরিয়ে মূল সমস্যা হলো অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখা, জ্বালানি-নিরাপত্তার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা। বর্তমান পরিস্থিতিতে বিরোধীদলগুলোর উচিত ব্যাপক জনসংযোগ করে নির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা। জনগণ যদি বিকল্প হিসেবে ওদের ওপর আস্থা কোনো কারণে ফিরে পায়, তাহলেই ওরা ক্ষমতা ফিরে পাবে। বিদ্যমান অবস্থায় আমি সেই সম্ভাবনা খুব একটা দেখি না। এখন থেকে যত সময় যাবে, দেশ ততই নির্বাচনমুখী হয়ে পড়বে। সুধীজন সব পক্ষকে আলোচনার টেবিলে বসে নিজেদের সমস্যা নিজেরা সমাধান করতে উদ্বুদ্ধ করা সমীচীন বলে মনে করি। দেশে এখন আর রাজপথে এগুলোর সমাধান হওয়ার পরিস্থিতি নেই।

শেয়ার করুন