২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ১০:৪০:৩৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
সরকার ও বেসরকারি উদ্যোগে দরিদ্রমুক্ত দেশ গড়ে উঠবে - আসাদুজ্জামান খান কামাল ৭০ শতাংশ মৃত্যু অসংক্রামক রোগে, বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি ‘বিদেশে দেশবিরোধী অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় আইনে ব্যবস্থা নিন’ ভূল স্বীকার করে সরে দাড়ানোয় একজনের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার বাফেলোতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে দুই বাংলাদেশী নিহত ‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জের, বিএনপির বহিস্কার ৭৬ থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান


`পেনশন স্কীমের নামে সরকারের নির্বাচনী ফান্ড তৈরির ফন্দি ' অভিযোগ বিএনপি মহাসচিবের
ভয়ে মুখ শুকিয়ে গেছে, আগের মতো হাসি নাই- মির্জা ফখরুল
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৮-০৮-২০২৩
ভয়ে মুখ শুকিয়ে গেছে, আগের মতো হাসি নাই- মির্জা ফখরুল


পেনশন স্কীমের নামে সরকারের নির্বাচনী ফান্ড তৈরির ফন্দি এঁটেছে বলে অভিযোগ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শুক্রবার রাজধানীর দয়াগঞ্জে গণমিছিলপূর্ব সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব এই অভিযোগ করেন।

তিনি বলেন, ‘‘ আওয়ামী লীগ লুট করে শেষ করে দিয়েছে বাংলাদেশকে, ফোকলা বানিয়ে দিয়েছে… কিচ্ছু নাই।আবার নতুন আরেকখান কায়দা বাইর করছে.. দেখছেন।কি বলে… পেনশন দেবে, পেনশন স্কীম।  মানুষের টাকা চুরি করার আরেকটা ফন্দি বাইর করছে। ওই টাকা চুরি করে ওরা নির্বাচন করতে চায়। মানুষ এবার তাদেরকে দেবে না।”

সরকারের উদ্দেশ্যে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ পরিস্কার কথা আমাদের কাছে, বাংলাদেশের মানুষের কাছে এই দাবি আমাদের দাবি নয়, এই দাবি ১৮ কোটি মানুষের দাবি। যে ভালোয় ভালোয় শান্তিপূর্ণভাবে বিদায় হন। অন্যথায় এদেশের মানুষ জানে স্বৈরাচারি ফ্যাসিবাদী ডেক্টেটরকে কিভাবে সরাতে হয়। ৫২ সালে সরিয়েছে, ‘৬৯ সালে সরিয়েছে, ’৭১ সালে সরিয়ে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীকে, ‘৯০ সালে সরিয়েছে স্বৈরাচারকে, এবার আপনার পালা। তাই এখনো বলছি, সাবধান অবিলম্বে পদত্যাগ করুন, জনগনের দাবি মেনে নিন।”

‘অন্যায় জনগন উত্তাল আন্দোলনের মধ্য দিয়ে তরঙ্গের পর তরঙ্গ তুলে সমুদ্রে যেমন টেউ আসে সেই টেউ তুলে তুলে আপনাকে সুনামির মতো নিশ্চিহ্ন করে দেবে।’ বলে হুশিয়ারি দেন বিএনপি মহাসচিব।

আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী তারেক রহমানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘‘ আমাদের নেতা তারেক কি শ্লোগান দিয়েছেন… যদি ভালোয় ভালোয় শুনে ভালো। তা না হলে ফয়সালা হবে কোথায়?’

নেতা-কর্মীরা সমস্বরে বলে ‘রাজপথে’। ‘কি ফিরে আনবো আমরা? বাংলাদেশ, টেক ব্যাক বাংলাদেশ।’

সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্ত ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের একদফার দাবিতে যুপত আন্দোলনে মহানগর দক্ষিনের উদ্যোগে দয়াগঞ্জ থেকে গণমিছিল হয়। হাজার হাজার নেতা-কর্মীর এই  মিছিলটি সায়েদাবাদ মানিকনগর,কমলাপুর স্টেডিয়ামের সড়ক দিয়ে খিলগাঁও চৌরাস্তায় এসে শেষ হয়।


একই সময়ে মহাগর উত্তরের উদ্যোগে রাজধানীর গুলশান-১ থেকে ওয়ারলেস, তিতুমীর কলেজ সড়ক দিয়ে মহাখালী বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে শেষ হবে। এই বিশাল মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান এজেডএম জাহিদ হোসেন, উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, কেন্দ্রীয় নেতা আবুল খায়ের ভুঁইয়া, কামরুল ইসলাম, আতাউর রহমান ঢালী, মজিবুর রহমান সারোয়ার, রাশিদুজ্জামান মিল্লাত, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, নাজিম উদ্দিন আলম, এবিএম মোশাররফ হোসেন, তাবিথ আউয়াল, আামিনুল হক প্রমূখ নেতৃবৃন্দ ।

‘পানি পড়ায় কাজ হবে না’

উত্তরের গণমিছিল পূর্ব সমাবেশে স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘‘ আজকে শুনলাম পাশের দেশের কিছু কর্মকর্তা নেপালে গেছে পানি পড়পা আনতে। এই পানি পড়া দিয়ে কাজ হবে না। এই সরকারকে সরে যেতে হবে। আমাদের গ্রেফতার করে, মামলা দিয়ে, হয়রানি করে আন্দোলন থেকে দূরে রাখা যাবে না। আমাদের আর ভয় নাই, দেশের মানুষ গুম-হত্যাকে ভয় পায় না।”

গত ১২ জুলাই একদফার এই আন্দোলন শুরুর পর ঢাকায় মহাসমাবেশ, ঢাকার প্রবেশপথে অবস্থান কর্মসূচি এবং গণমিছিল করেছে বিএনপিসহ শরিক জোটগুলো। এবার চতুর্থ এই কর্মসূচিতে ঢাকাসহ বাইরের মহানগরগুলোতে গণমিছিল করলো তারা।

বিএনপি ছাড়া যুগপত আন্দোলরের শরিক গণতন্ত্র মঞ্চ জাতীয় প্রেসক্লাব, ১২ দলীয় জোট ফকিরাপুল পানির ট্যাংক, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট বিজয় নগর, গণফোরাম ও পিপলস পার্টি আরামবাগ, এলডিপির এফডিসির সামনে, লেবার পার্টি পুরানা পল্টনে মসজিদের সামনে, এনডিএম মালিবাগ মোড়, গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা সেগুন বাগিচার স্কু্লের সামনে, গণঅধিকার পরিষদ(রেজা কিবরিয়া) রামপুরা ব্রিজ, গণঅধিকার পরিষদ(নূর) ফকিরাপুর কালভার্ট রোড় এবং বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষন পরিষদ শাহবাগ মোড় থেকে গণমিছিল বের করে।



‘ভয়ে মুখ শুকিয়ে গেছে, আগের মতো হাসি নাই’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ আজকে এমন একটা পরিবেশ তৈরি করেছে যে, গোটা দেশটা একটা কারাগার। শত শত নেতা-কর্মীকে কারাগারে আটক করে রেখেছে। আমাদের নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদ, রবিউল ইসলাম রবি, রফিকুল ইসলাম মজনু, মোনায়েম মুন্না, শাহিনসহ আরও অনেকে আটক করে রেখেছে। কেনো? আটক করে রাখে কখন মানুষ যখন ভয় পায়।  ভয়ের এখন মুখ শুকিয়ে গেছে। টেলিভিশনে দেখবেন এখন আগের মতো হাসি নাই। আর চকচকে কাপড় এখন কম পড়ে।ঠিক নাই। আবার যাদের ‍যাদের বিদেশে বাড়িঘর তৈরি করছিলো ওদেরকে কেমন করে বাঁচাবে তার চেষ্টা করে।”

তিনি বলেন, ‘‘ ইতিমধ্যে দেখেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিসানীতি করেছে। সেখানে বলেছে যে, যারা যারা এই অবৈধ অর্থ উপার্জন করেছেন, যারা যারা সুষ্ঠু নির্বাচনে ভোট দিতে বাধা দেবে তাদের বিরুদ্ধে ভিসানীতি প্রয়োগ করা হবে। এই যে আমাদের পুলিশ ভাইয়েরা কথায় কথায় রাত্রের অন্ধকারে আমাদের ছেলেদেরকে গ্রেফতার করেন, আপনাদের ৯জন বড় বড় অফিসার তারা এখন আর আমেরিকা যেতে পারে না। তারা যে সহায়-সম্পদ তৈরি করেছিলো বিদেশে সেগুলোর কি হবে তার জন্য রাত্রে ঘুম হয় না। আমি খুব পরিস্কার করে বলি, পুলিশের যারা কর্মকর্তা, যারা পুলিশের লোক তারা কখনে্াই অন্যায়-চুরি-চামারির সাথে জড়িত না। জড়িত ওই বড়রা। তাদের সম্পূর্ণ বেআইনি নির্দেশে আজকে তারা পুলিশের রাজত্ব কয়েক করেছে… তাই।”

ফখরুল বলেন, ‘‘ অবস্থা এখন আরো খারাপ। আমেরিকান মানুষেরা, বিভিন্ন সংস্থা, মানবাধিকার সংস্থা তারা আপনার এখন তাদের সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে বলতে শুরু করেছে যে, বাংলাদেশের ওপরে একটা শুনানি হোক। একটা লং ড্রাইভ কমিশন আছে। সেখানে বলেছে যে, বাংলাদেশে এখন বিরোধী দলগুলোর উপরে অত্যাচার হচ্ছে, নির্যাতন হচ্ছে, গ্রেফতার করা হচ্ছে, হত্যা করা হচ্ছে এবং সুষ্ঠু নির্বাচন এই অবৈধ সরকার বাধা প্রদান করছে। তাই এদেরকে আবার নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা হোক। এতো সোজা না।”

‘ভারত-বঙ্গোসাগর বলে কাজ হবে না’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ এখন নিয়ে এসেছেন কি? ভারত মহাসাগর, বঙ্গোপসাগর…আরে ভারত মহাসাগর, বঙ্গোপসাগর বললে তো লাভ হবে না। কোনো দিকে পথ নাই।  উত্তরে উত্তঙ্গ পর্বতমালা আর দক্ষিনে বঙ্গোপসাগর… কোনো দিকে যাবে তুমি কোনো দিকে পালাবার পথ নাই।”

ঢাকা মহানগর দক্ষিনের আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে ও ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিনের সঞ্চালনায় সংক্ষিপ্ত সমাবেশে স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্র্রমূখ বক্তব্য রাখেন।

গণমিছিলে মির্জা ফখরুল, গয়েশ্বর, আমির খসরু, আবদুস সালাম ছাড়াও জয়নুল আবেদীন মনিরুল হক চৌধুরী, জয়নাল আবেদীন ভিপি জয়নাল, আসাদুজ্জামান রিপন, ফজলুল হক মিলন,শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, কামরুজ্জামান রতন, শিরিন সুলতানা, নাসির উদ্দিন অসীম, আব্দুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল,  রাকিবুল ইসলাম বকুল, যুব দলের সুলতান সালাউদ্দিন টুকুসহ কেন্দ্রীয় ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা ছিলেন।



শেয়ার করুন