রাজধানীর কদমতলী এলাকায় ব্যাংক কর্মকর্তা লতিফা বিনতে মাহবুব (৩৪) হত্যা মামলার প্রধান আসামি মোতালেব হোসেন যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে গেছেন। হত্যার ঘটনায় মামলা হওয়ার পর গত ২৪ এপ্রিল তিনি দেশ ছাড়েন। আসামির পালিয়ে যাওয়া ঠেকাতে গিয়ে পুলিশ তার দেশ ছাড়ার বিষয়টি জানতে পারে। যদিও লতিফার পরিবারের অভিযোগ, পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার সুযোগে প্রধান আসামি দেশ ছাড়তে পেরেছেন।
গত ১০ এপ্রিল কদমতলীর দনিয়ার একটি বাসা থেকে অগ্রণী ব্যাংকের ফরেন এক্সচেঞ্জ শাখার কর্মকর্তা লতিফার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ঘটনার রাতে তিনি প্রতিবেশী মোতালেবের বাসায় ছিলেন। সেখান থেকেই তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ঘটনার পরদিন ১১ এপ্রিল কদমতলী থানায় হত্যা মামলা করেন নিহতের বাবা মাহবুবুর রহমান। এতে মোতালেবকে প্রধান আসামি করে মোট তিনজনের নাম উল্লেখ করা হয়।
পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, লতিফা হত্যা মামলা তদন্ত করে কদমতলী থানা-পুলিশ। আসামি মোতালেব তখন এলাকাতেই অবস্থান করছিলেন। কিন্তু পুলিশ তাকে গ্রেফতারে উদ্যোগ নেয়নি। ঘটনার ১৪ দিন পর ২৪ এপ্রিল তিনি যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি দেন।
পরে নিহতের বাবার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৩০ মে মেয়ে লতিফা হত্যা মামলার তদন্তের দায়িত্বভার পায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন ও তদন্তে উঠে আসে, সেই রাতে লতিফাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। এরপর তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় হত্যার রহস্যও উদ্ঘাটন করা হয়। এরপর হত্যা মামলার অপর দুই আসামি পাভেল ও রুহুলকে ২ আগস্ট কদমতলী এলাকা থেকে গ্রেফতার করে পিবিআই। তারা কারাগারে রয়েছেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের এসআই মাসুদ রানা জানান, লতিফার সঙ্গে মোতালেবের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ঘটনার দিন মোতালেবের বাসাতেই ছিলেন তিনি। সেখানে মোতালেবের মোবাইল ফোনে অন্য এক নারীর কল আসে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে লতিফাকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন মোতালেব। পরে আত্মহত্যার নাটক সাজানোর জন্য লতিফার মরদেহ হাসপাতালে রেখে পালিয়ে যান তিনি।
মামলার তদন্তভার পিবিআইয়ের কাছে আসার আগেই মোতালেব বিদেশে পালিয়ে গেছেন জানিয়ে এসআই মাসুদ বলেন, তার বিদেশযাত্রা ঠেকাতে উদ্যোগ নিতে গিয়ে জানতে পারি, তিনি গত ২৪ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে গেছেন।
অভিযোগের বিষয়ে কদমতলী থানার ওসি প্রলয় কুমার সাহা বলেন, লতিফার মরদেহ হাসপাতালে রেখে পালিয়ে যায় মোতালেব। পুলিশ তাকে গ্রেফতারের চেষ্টাও করেছে। কিন্তু পলাতক থাকায় গ্রেফতার করা যায়নি।