২৮ এপ্রিল ২০১২, রবিবার, ০৬:২৩:৫৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জের, বিএনপির বহিস্কার ৭৬ থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান ‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়


অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বললেন
সরকার দেশের মানুষের সম্মতি ব্যতিরেকে ক্ষমতাসীন হয়েছে
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৩-০৯-২০২৩
সরকার দেশের মানুষের সম্মতি ব্যতিরেকে ক্ষমতাসীন হয়েছে বক্তব্য রাখছেন অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী


প্রথিতযশা শিক্ষাবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, সরকার দেশের মানুষের সম্মতি ব্যতিরেকে ক্ষমতাসীন হয়েছে। তাই জনগণের জীবন রক্ষায় তাদের কোন দায়বোধ নেই। ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপে ব্যাপক প্রাণহানি সত্ত্বেও সরকারের নির্বিকার ভূমিকার প্রতিবাদে গত ১১ সেপ্টেম্বর সোমবার সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত অনশন করেছেন সিপিবি কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম নেতা, নব্বইয়ের স্বৈরাচার বিরোধী অন্দোলনের অন্যতম ছাত্রনেতা আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন ও রাগীব আহসান মুন্না। সোমবার ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘বিচলিত মর্মাহত ক্ষুব্ধ নাগরিকবৃন্দ’ নামে তারা এ অনশন করেন। বেলা বাড়ার সাথে সাথে সংবেদনশীল বিশিষ্ট নাগরিকবৃন্দ এই অনশনের প্রতি একাত্ম হয়ে উপস্থিত হতে থাকেন। সন্ধ্যায় সিপিবির সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ ডাবের পানি পান করিয়ে অনশনকারীদের অনশন ভঙ্গ করান। সকাল ১১টায় প্রথিতযশা শিক্ষাবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী অনশন স্থলে উপস্থিত হয়ে সংহতি বক্তব্য রাখেন। 

অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী আরো বলেন, এই অনশন কেবলই দুজনের নয়, এটা সারা দেশের মানুষের পক্ষে একটা প্রতিবাদ। এই প্রতিবাদে সাড়া দিয়ে সরকার ও সিটি করপোরেশন সারা দেশে ডেঙ্গু মশা নিধনের পাশাপাশি চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি আরও বলেন, এখন ঘরে ঘরে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এই মুহূর্তে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম না হলে সরকারের কোনো দায়িত্ববোধের পরিচয় পাওয়া যাবে না।

সিপিবির সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, মানুষ আজ নানা ভাবে মৃত্যুবরণ করছে, যে গুলো মৃত্যু নয় বরং হত্যাকা- হিসেবে গণ্য হওয়া উচিৎ। স্বাধীনতা সংগ্রামে হানাদারদের ভাতে মারবো, পানিতে মারবো বক্তব্য জনপ্রিয় হয়েছিল। আজ স্বাধীন দেশে ক্ষমতাসীনরা জনগণকে ভাতে-পানিতে-ডেঙ্গুতে-বিনাচিকিৎসায় মারছে। তিনি আরো বলেন, সরকারের যদি ডেঙ্গু মোকাবেলায় আর কিছুই করণীয় না থাকে তবে এখনই পদত্যাগ করুক। তিনি দেশের অবনতিশীল সার্বিক পরিস্থিতি পুনরুদ্ধারে গোটা ব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর কথা বলেন।

অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, দেশে অধিকারের দাবিতে প্রতিবাদী মানুষের কন্ঠরোধ ও দমনপীড়নের ক্ষেত্রেই সরকারের অস্তিত্ব টের পাওয়া  যায়। অন্য কোন সময়, যখন ডেঙ্গুতে মানুষ মৃত্যুবরণ করে তখন সরকার আছে বলে মনে হয় না। তিনি বলেন, মানুষের মৃত্যুতেও বাণিজ্যের উপলক্ষ্য তৈরি হয়। ভারতের পশ্চিম বাংলার স্বল্প ব্যয়ে ডেঙ্গু নিরোধ মডেল অনুসরণ না করে সরকার বিশ্ব ব্যাংকের হাজার কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন করেছে। তিনি মানুষের সংঘবদ্ধ লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে চলমান দুঃশাসন মোকাবেলা করার আহ্বান জানান।           

অনশনে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন স্বাধীন বাংলাদেশে চাকসুর প্রথম নির্বাচিত ভিপি, বিশিষ্ট কথা সাহিত্যিক বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুজ্জামান হীরা, এরশাদ স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম ছাত্রনেতা ডাকসুর সাবেক সাধারণ সম্পাদক ডা. মুশতাক হোসেন, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ বিশিষ্ট চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. হারুন উর রশীদ, ডক্টরস ফর হেলথ এন্ড এনভায়রনমেন্টের সাধারণ সম্পাদক ডা. মাহমুদ হাসান ফারুকী, ডা. জয়দ্বীপ ভট্টাচার্য্য, ইঞ্জিনিয়ার্স এন্ড আর্কিটেক্টস ফর ডেভলাপমেন্ট এন্ড এনভায়রনমেন্টের সহ-সভাপতি প্রকৌশলি নিমাই গাঙ্গুলী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের এপিলেট বিভাগের আইনজীবী আইনুননাহার লিপি, শ্রমিকনেতা সাদেকুর রহমান শামীম, কৃষকনেতা আবিদ হোসেন, ক্ষেতমজুরনেতা কল্লোল বণিক, শিশু-কিশোর সংগঠক তাহমিন সুলতানা স্বাতী, ছাত্র ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক তামজীদ হায়দার চঞ্চল প্রমুখ উপস্থিত হয়ে অনশনে সংহতি এবং দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে বক্তব্য রেখেছেন।

রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের মধ্যে অনশনে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, সিপিবি নেতা সাজ্জাদ জহির চন্দন, বাসদ (মার্কসবাদী)র  মানস নন্দী, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ, সম্পাদকম-লীর সদস্য অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার, গণসংহতি আন্দোলনের তাসলিমা আখতার, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির শহীদুল ইসলাম সবুজ, ন্যাপের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন প্রমুখ।

শেয়ার করুন