২৭ এপ্রিল ২০১২, শনিবার, ১১:৪৫:২৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ইউরোপে ভারতীয় ৫২৭ পণ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারি উপাদন শনাক্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি বিএনপির আন্দোলন ঠেকানোই ক্ষমতাসীনদের প্রধান চ্যালেঞ্জ বিএনপিকে মাঠে ফেরাচ্ছে আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে অদৃশ্য চাপে বিএনপি


৭ নভেম্বর কখনোই বিপ্লব ও সংহতি দিবস ছিলো না : ইনু
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৮-১১-২০২৩
৭ নভেম্বর কখনোই বিপ্লব ও সংহতি দিবস ছিলো না : ইনু বক্তব্য রাখছেন হাসানুল হক ইনু


জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেছেন, সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থানের মহান প্রচেষ্টাকে যারা খাটো করে তারা কার্যত অবৈধ দখলদারদের মহিমান্বিত করে। অবৈধ দখলের রাজনীতিকে উস্কে দেয়। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ ঢাকা মহানগরের উদ্যোগে ৭ নভেম্বর মঙ্গলবার শহীদ কর্নেল তাহের মিলনায়তনে জাসদ নেতা শহীদ কর্নেল তাহের বীরউত্তমের প্রতিকৃতিতে মাল্যদান এবং আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন। ঢাকা মহানগর জাসদের সমন্বয়ক মীর হোসাইন আখতারের সভাপতিত্বে এবং জাসদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রোকনুজ্জামান রোকন ও দফতর সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত এ আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাদের চৌধুরী, অধ্যাপক মোখলেছুর রহমান মুক্তাদির, শওকত রায়হান, নইমুল আহসান জুয়েল, ওবায়দুর রহমান চুন্নু, ঢাকা মহানগর উত্তর জাসদের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা শফি উদ্দিন মোল্লা, জাতীয় শ্রমিক জোট-বাংলাদেশ এর সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা সাইফুজ্জামান বাদশা, জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এড. মুহিবুর রহমান মিহির, জাতীয় আইনজীবী পরিষদের নেতা ও জাসদের আইন বিষয়ক সম্পাদক এড. মোঃ সেলিম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জাসদের সাধারণ সম্পাদক সোহেল আহম্মেদ, ঢাকা মহানগর পশ্চিম জাসদের নেতা এড. আবু হানিফ, জাতীয় যুব জোটের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ সামছুল ইসলাম সুমন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (ন-মা) কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি রাশিদুল হক ননী প্রমুখ। 

হাসানুল হক ইনু এমপি  কর্নেল আবু তাহের বীর উত্তমের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থান নিয়ে অহেতুক বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। সিপাহী বিদ্রোহের পর জেনারেল জিয়াউর রহমান ক্ষমতা কুক্ষিগত করে বিদ্রোহকে ‘বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ হিসাবে চিহ্নিত করে প্রথম অপপ্রচার চালায়। পরবর্তীতে কিছু মহল এটাকে ‘মুক্তিযোদ্ধা হত্যা’ দিবস হিসাবেও পালন করছে। তিনি বলেন, ৭ নভেম্বর কখনোই ‘বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ বা ‘মুক্তিযোদ্ধা হত্যা’ দিবস ছিলো না। তিনি বলেন, সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থান ছিলো ১৫ আগস্ট ও ৩রা নভেম্বরের অবৈধ ক্ষমতা দখলকারী সামরিক অফিসারদের সামরিক শাসন থেকে উচ্ছেদ করার মহান প্রচেষ্টা। সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছে সুমহান মুক্তিযুদ্ধের হৃতচেতনা পুনরুদ্ধারের প্রয়াসে। তিনি বলেন, ৭ নভেম্বর শহীদ কর্নেল আবু তাহের বীর উত্তমের নেতৃত্বে সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থান ছিলো ১৫ আগস্টের খুনী, ৩রা নভেম্বরের জেল হত্যার খুনী, কতিপয় উচ্ছৃঙ্খল সামরিক অফিসারদের অবৈধ ক্ষমতা দখল ও সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে। জিয়া অভ্যুত্থানের লক্ষ্যের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে দেশে সামরিক শাসনের ধারা অব্যাহত রেখে ইতিহাসে খলনায়কের স্থান দখল করেছে। তিনি বলেন, ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর জিয়া-খন্দকার মোস্তাকের নেতৃত্বে বাংলাদেশ পাকিস্তানী ভাবধারায় পরিচালিত হচ্ছিলো। ৩রা নভেম্বরের জেলাখানায় জাতীয় চার নেতাকে হত্যার মধ্য দিয়ে সেই ভাবধারা অব্যাহত রেখে জিয়া-খন্দকার মোস্তাকের সহযোগিতায় বঙ্গবন্ধুর খুনীদের নির্বিঘ্নে-নিশ্চিন্তে-শান্তিতে বিদেশে পাঠিয়ে দেয়ার মত দুষ্কর্ম ঘটায়। যারা বঙ্গবন্ধু এবং চার জাতীয় নেতার হত্যাকারীদের পরিবার-পরিজনসহ ২৯ জনকে থাইল্যান্ড পাঠানোর ব্যবস্থাও করে। তিনি বলেন, খালেদ মোশাররফ খন্দকার মোস্তাকের সাথে আপোষ করে ক্ষমতা পুনর্বন্টন করে ভাগবাটোয়ারা অব্যাহত রাখে। সুতরাং ৩রা নভেম্বর হচ্ছে ১৫ আগস্টের ধারাবাহিকতার একটি অবৈধ ক্ষমতা দখলের দুষ্কর্ম ছাড়া আর কিছুই না, যা সেনাবাহিনকে বিপর্যস্ত, খন্ড-বিখন্ড করে এবং সামরিক শাসনের ধারা অব্যাহত রাখে। তিনি বলেন, ৭ নভেম্বর সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থান ছিলো ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যা এবং ৩ নভেম্বর জেলখানায় জাতীয় চার নেতা হত্যার প্রতিবাদে খুনীদের বিরুদ্ধে সামরিক শাসন উচ্ছেদের মহান প্রচেষ্টা। কিন্তু জেনারেল জিয়া চক্রান্তকারীদের সহযোগিতায় অভ্যুত্থানকে ব্যর্থতায় পর্যবসিত করে জিয়া নিজেই রাষ্ট্র ক্ষমতা কুক্ষিগত করে দেশে পুনর্বার সামরিক শাসন জারি করে। তিনি বলেন, সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থানের লক্ষ্য ছিলো সর্বদলীয় সরকার গঠন, দ্রুত সাংবিধানিক রাজনৈতিক প্রক্রিয়া শুরু, ঔপনিবেশিক রাষ্ট্র কাঠমো পরিবর্তন এবং দ্রুত নির্বাচন অনুষ্ঠান করে নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। তিনি বলেন, সেই জিয়ার উত্তরসূরি বর্তমানের বিএনপি-জামাত চক্র আবারও দেশকে অবৈধ ক্ষমতা দখলের ধারায় ফেরত নেয়ার চক্রান্তের অংশ হিসাবে নির্বাচন বানচাল করার ষড়যন্ত্র করছে।

শেয়ার করুন